আজ আবারও একটি NEW BHUTER GOLPO BANGLA নিয়ে চলে এলাম। এই BANGLA HORROR STORY র মূল কেন্দ্রে রয়েছে মিলন এবং তনু। তনুর পরিবার জানত যে, তনুর উপর কোনো খারাপ আত্মার দৃষ্টি পড়েছে কিন্তু তা সত্যেও তারা তনুর বিয়ে ঠিক করে, মিলনের সাথে।
NEW BHUTER GOLPO BANGLA. বাংলা নতুন ভুতের গল্পঃ-
আজ থেকে কয়েক বছর আগের ঘটনা। তখন আমি কলেজে পড়ি। আমার ক্লাসের পড়ত মিলন নামের একটি ছেলে। তনুও ছিল আমাদের সহপাঠী। কিভাবে যে দুইজনের মধ্যে প্রেম-পিরিতির ব্যাপার ঘটে যায় কি জানি! একদিন শুনলাম তাদের নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। তাদের আশীর্বাদটাও হয়ে গেল। এদিকে আবার তনুর পরিবার তনুর পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এর পিছনে কি কারণ ছিল তা আমি তখনও খুঁজে পাই নি। আবার তনুর পরিবার কোনো প্রশ্ন ছাড়াই কিভাবে এই ভালোবাসাটা মেনে নিল সেটিও বুঝিনি আমি।
যেহেতু আমি মিলনের একদম কাছের বন্ধু ছিলাম সেহেতু মিলনের অনেক গোপান কথাও সে আমার সাথে ভাগ করে নিত। তাদের আশীর্বাদ হওয়ার পর থেকে শুরু হয় দুইজনের মধ্যে মোবাইলের মাধ্যমে কথা বলা। মিলন নাকি অনেক রাত তার সঙ্গে কথা বলেই কাটিয়ে দিয়েছে।
এরকমই একদিন মিলন তনুর সাথে কথা বলছিল। হঠাৎ করেই নাকি তনু গলাটা অন্যরকম করে বলেছিল- “আরে ওই বেশী কথার প্যাঁচাল বাড়াস না, আর যদি কথা না মানিস তোকে আমি জিন্দা কবর দেব।“ মিলন ভেবেছিল তনু বুঝি এমনই ইয়ার্কি করে সেই কথাটা বলেছিল। তাই সেও বলে ফেলে- “যাও যাও দেখব ক্ষণ কেমন জিন্দা কবর দাও। কবর তো দূরের কথা, সাহস থাকলে আমার সামনে এসে তো দাড়াও।“ মিলনের এই কথাটা বলার পড়েই তনু ফোন কেটে দেয়।
সেই রাতেই মিলনের সাথে ঘটে গেল এক অঘটন। মিলন আমাকে জানায় তখন রাত 2.30 কি-3.00 হবে হঠাৎ করেই তার প্রচণ্ড ঠাণ্ডা লাগতে শুরু করে। গরমের দিন থাকায় কম্বল-লেপ সব আলমারিতে। এই গরমের দিনে তার এমন ঠাণ্ডা লাগতে শুরু করে যেন মনে হয় বাইরে বরফ পড়ছে। সে আর থাকতে না পেড়ে তার মাকে ডাকতে চায়। কিন্তু এত রাতে মাকে আর বিরক্ত করবে না ভেবে, নিজেই আলমারির কাছে যায়।
কম্বল হাঁতে নিতেই তার মনে হল, কেউ তার পিছনে দাঁড়িয়ে, সে ঘুরে তাকাতেই দেখে, সাদা শাড়ি পড়া এক পুরুষ দাঁড়িয়ে আছে। সাদা শাড়িটির আচল হাওয়ায় দুলছে। পুরুষটির মুখ কিছুতেই বোঝা যাচ্ছে না, শুধু দেখা যাচ্ছে তার চকচক করতে থাকা সাদা দাঁত গুলি। এমন দৃশ্য দেখার জন্য মিলন মোটেই প্রস্তুত ছিল না। সে আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে থাকে। সে শোনে যে, কিরে তোর সামনে আসতে বলেছিলিস যে, এই নে এসেছি। এরপর তার আর কিছুই মনে নেই। যখন তার জ্ঞান ফিরে তখন সে দেখে, মা কান্না-কাটি করছে আর বাবা ও পাড়ার কয়েকজন তার মাথায় জল ঢালছে।
আগের রাতের কোনো ঘটনাই সে কাউকেই বলে নি। কিন্তু আমাকে বলেছিল। সেদিন রাতে তনু আবার ফোন করে। মিলন তাকে বলে- “কাল, কি তুমি সত্যি সত্যি চলে এসেছিলে নাকি?”
তনু- “আমি আবার কোথায় যাব?”
মিলন- “তুমি যে কাল আমাকে ফোনে বললে, তুমি নাকি আমার এখানে আসবে!”
তনু- “কাল! পাগল কাল তো আমি তোমাকে ফোনই করিনি। কারণ কাল আমি সারাদিন অসুস্থ ছিলাম। তাই আর ফোন করিনি।“
কথাটা মিলনের কেমন যেন লাগে। সে ঠিক করে, সে তার প্রেমিকা কে দেখতে যাবে, কারণ তার নাকি কিছু একটা গণ্ডগোল লাগছে। আর তার সাথে গেলাম আমি। আমরা যেতেই সে এসে দরজা খুলে দেয়। মিলনের দিকে বড় বড় চোখ করে সে বলে- “তুই আবার আমার সামনে এসেছিস কেন?” আওয়াজটা শুনে আমি ভীষণ ভড়কে গেলাম। একদম রাগী পুরুষ মানুষের মতন কথা বেরুচ্ছে কেন তনুর গলা দিয়ে!
মিলন-“আরে তনু, তোমার হলটা কি বলতো? তুমি হঠাৎ করেই এরকম করছ কেন?”
তনু আবার সেই ভয়ংকর গলাতে খিকরে বলে উঠে- “এত কৈফিয়ত তোকে দিতে যাব কেন রে?” কথা শেষ হতে না হতেই, তনুর হাঁতে থাকা চিনামাটির কাঁপটা মিলনের মাথায় ছুঁড়ে মারে। মিলনের মাথা দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। এদিকে তনুর দাদা এসে তনুকে ধরে ফেলে।
তনুর দাদু আমাদের জানায় যে- “কয়েকদিন থেকেই তনু এমন অদ্ভুত আচরণ করছে। তনুর ভিতরে কোনো খারাপ আত্মার প্রবেশ করেছে। কিন্তু বাড়ির কেউই আমার কথা বিশ্বাস করতে…” তনুর দাদুর কথা সম্পূর্ণ হতে না হতেই, তনুর বাবা তাকে থামিয়ে দেয়।
এদিকে সেদিনই রাতে মিলনের কাছে ফোন আসে, তনুর শরীর একদম ভেঙ্গে পড়েছে, তাকে ইমারজেন্সি হসপিটালে ভর্তি করানো হয়েছে। পরের দিন সকাল হতে না হতেই, আমি আর মিলন হসপিটালে যাই, কিন্তু সেখানে ডাক্তার যা বলেন তা শুনে আমরা রীতিমত অবাক হয়ে যাই।
ডাক্তার বলেন-“তনুর কোনো অসুখই তারা ধরতে পাড়ছেন না, তনুর সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিক মত কাজ করছে। প্রেসার লেভেল ঠিকঠাক আছে। হার্টবিট ঠিক আছে। অনেক পরীক্ষা করার পড়েও তারা তনুর আসল অসুখ ধরতে পাড়েন নি, আর তনুকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।“
পড়ুনঃ- অ্যাকসিডেন্টে মরা ভূত। ভালো ভূতের গল্প
এদিকে চিন্তায় মিলনের ঘুম আসেনা। আর কয়েক মাস পড়েই যার সাথে তার বিয়ে হবে, তার এমন অবস্থা হলে মন ভাল না থাকাটাই স্বাভাবিক। মিলন আর থাকতে না পেড়ে তনুর বাড়িতে যায়। তনু সেদিন বিছানায় শুয়ে ছিল।
আমি এবং মিলন কাছে যেতেই সে বলে- “আমি হয়ত আর বেশিদিন বাঁচব না, কি জানি কেন শরীরে মনে হচ্ছে একটুও শক্তি নেই, এমনকি উঠে বসার শক্তিটুকুও নেই আমার। কি জানি কোথা থেকে কি হয়ে গেল, আমি কিছুতেই বুঝছি না। মাঝে মাঝেই আমার দমটা বন্ধ হয়ে আসে।“ এরপর তনু আমাকে বলে- “বন্ধুর খেয়াল রাখিস অসীম।“
এরপর আমি তনুর দাদুর কাছে এইসবের ব্যাপারে জানতে চাই। তিনি বলেন- “তনুর উপর অশুভ শক্তির দৃষ্টি পড়েছে। কিন্তু বাড়ির কেউই আমার কথা বিশ্বাস করছে না। তোমরা বরং, আমাদের নিমতলা শ্মশানের অঘোরি বাবার কাছে যাও।”
এরপর আমরা দ্রুত সেখানে যাই। তিনি আমাদের বলেন- “এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল একমাস আগেই, তনু একাকী, এক কবরস্থান দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। সে হঠাৎ করেই কোনো কিছুতে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। সাধারণ পড়ে যাওয়াতেও সে অনেক ব্যাথা অনুভূত করতে থাকে। কিন্তু সে তখনও কিছুই বুঝতে পারেনি। সে যেখানে পড়ে যায়, সেখানে এক চোরের কবর ছিল। অনেক বছর আগে চুরি করতে এসে সে ধরা পড়ে যায়। গ্রামের মানুষ রাগে-ক্ষোভে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। আর তাকে একটি সাদা শাড়ি পড়িয়ে সেখানে কবর দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তার আত্মার শান্তি রক্ষার কোনো নিয়ম মানা হয়নি। সেদিকে কেউই যায় না, কিন্তু তনু যাওয়াতে সেই খারাপ আত্মা তনুর শরীরে প্রবেশ করে।“
আমি বলি- “ এই আত্মা থেকে রক্ষা পাবার কি কোনো উপায় নেই বাবা?”
পড়ুনঃ- রান্নাঘরের ভুত।
সেই সাধুটি বলেন- “এখান থেকে কয়েক মাইল দূরে একটি গুহা রয়েছে, সেখানে আমার গুরুদেব ভোলে-অঘোরী বাবা বাস করেন। তার কাছে গেলেই তোমার সুরাহা হবে। কিন্তু যে তনুর একান্ত কাছের সেইই যেন তনুর সাথে যায়। নাহলে বিপদ ঘটবে। আর যাওয়ার সময় সাবধানে যেতে হবে, কারণ যে কোনো সময় তনুর ভেতরে থাকা খারাপ আত্মা জেগে উঠতে পাড়ে।” এরপর মিলন জানায় সেইই তনুকে নিয়ে যাবে। “আমি তোমাকে একটি কবজ দিচ্ছি এটি সাথে করে নিয়ে যেও, তাহলে তোমার কোনো ক্ষতি হবে না। আরেকটি কথা, ভোলে-অঘোরী বাবা এই সব কাজ সূর্য উঠার পর করেন না। তাই তোমাকে রাত থাকতেই বেড়িয়ে পড়তে হবে।“
পরের দিন ভোর ৩ টে হতে না হতেই, মিলন এবং তনু বেড়িয়ে পড়ে, মিলনের বাইক নিয়ে। আর আমি ঠিক করি, মিলনের ঘরেই আজ থাকব। আজ আর বাড়ি যাব না। কিন্তু মিলনের ঘড়ে যেতেই আমি ঘাবড়ে যাই, কারণ সেই সাধু বাবা তাকে যে কবজটা দিয়েছিল সেটি সে টেবিলের উপর রেখেই চলে গেছে।
পরের দিন ভোর হতেই খবরে দেখি, একছেলে এবং মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাদের বাইক নাকি এক গাছে গিয়ে ধাক্কা মারে, আর সেখানেই তারা মারা যায়। কিন্তু আমার বিশ্বাস যে, তারা অ্যাকসিডেন্টে মারা যায় নি। এই সব কিছুই সেই শয়তান আত্মার কীর্তিকলাপ।
কিন্তু তাদের সাথে আসলে কি হয়েছিল তা আজও সবার কাছে ধোঁয়াশা হয়েই রয়েছে। তনুর পরিবার ভেবেছিল, বিয়ে দিয়ে দিলেই তনুর সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। আর বিয়েটা ভেঙ্গে যাবে এই ভয়ে তারা আগে মুখ খুলতে চাননি।
“NEW BHUTER GOLPO BANGLA. ভয়ানক ভুতের গল্প। বাংলা নতুন ভুতের গল্প। HAR HIM KORA VUTER GOLPO”
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।