ekti bangla golpo/বাংলা গল্প/facebook story/

ekti bangla golpo:-

বন্ধুদের কাছে বারবার শোনার পর অরুনিতাও আগ্রহী হলো সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর । তাই খুলে ফেললো ফেসবুকে একটা একাউন্ট। সুন্দর করে এডিট করা একটা ফটো প্রোফাইলে দিয়ে দিল । তারপর শুরু হলো নোটিফিকেশন আসার পালা । যে ফোন টা একসময় ঘরের এককোনায় পড়ার টেবিলের ওপর নামানো থাকতো সেখানে এখন সবসময় নিতার হাতেই ফোন টা থাকে। এক অদ্ভুত নেশায় পেয়েছে ওকে ।

সারাদিন ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম টুইটার এসব দিয়েই যেন ওর জীবন ঘেরা। এসবের আনন্দে মেতে ও ভুলতে বসেছে যে সামনেই তার পরীক্ষা ।

ekti bangla golpo
ekti bangla golpo

রেজাল্ট বেরিয়েছে ক্লাসের প্রথম হওয়া মেয়েটা প্রথম দশের মধ্যেও নেই দেখে স্যার ম্যাডামরা এমনকি ওর বন্ধু বান্ধবীরা সবাই অবাক হয়েছে । তবে এতেও ওর শিক্ষা হয়নি ও পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেসবুকের দুনিয়াতে ডুব দিয়েছে। ক্লাসের গুটি কয়েক বন্ধু নিয়ে আর ও খুশি নয় এখন নিত্য নতুন বন্ধুদের সমাগম ওর জীবনে। ম্যাসেঞ্জার এর ম্যাসেজ এর মাঝে আসল জগৎ টাকেই ভুলতে বসেছে নিতা। বাড়ীতে গাইড করার মতো লোকের অভাবে মেয়েটা অবাধ স্বাধীনতা বোধ করেছে।

পরীক্ষা তে ফেল করার পরেও নিতা ভীষণ খুশি কারণ ওর জীবনে একটি এমন মানুষ এসেছে যে নির্দ্বিধায় ওর সব ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে শুধু ওকে পেতে চায়। তাই এসব পরীক্ষাতে পাস ফেল ওর কাছে তুচ্ছ বিষয়। মামার বাড়িতে মানুষ হওয়া মেয়েটা মান হুশ ভুলে অমানুষে পরিণত হয়েছে ওর মামা মামীর চোখে। একদিন ওর মামা ওর কাছ থেকে ফোন টা কেড়ে নিতে চাইলে ও কাউকে তোয়াক্কা না করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে চায় আর ফেসবুকে একটি পোস্ট করে – ” আমার এই শ্যামলাবর্ণটা নিয়ে মামা মামীর খুব চিন্তা ছিল, আমাকে আদৌ কোনো ছেলের পছন্দ হবে কিনা এই নিয়ে মামী সারাদিন খোটা দিতো।

আমি খেতে বসলে মামা হাজার বার খোটা দিত কোন সবজির কত দাম আর কত কষ্ট করে সেই সবজি কেনার পর যখন আমি নিজে না খেয়ে ওগুলো কুকুর কে খাওয়াই তখন মামার টাকার ঠিক কতটা ধ্বংস করি। পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার পরেও যখন মামার ছেলে সবার সামনে বোন বলে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করতো তখন আত্মসম্মানটা যেন মাটিতে লুটিয়ে পড়তো। শরীরের রঙ আর কুৎসিত চেহারা দিয়ে যারা আমায় বিচার করে তাদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেওয়াটা ভুল নয়। আমিও এমন একজন কে পেয়েছি যে আমার সব ভুল ত্রুটি উপেক্ষা করে শুধু আমায় চায় শুধু আমায় ।

পড়ুনঃ- বাংলা শিক্ষণীয় গল্প 

মজার গপ্পো- সপ্পো

১০ দিন পর নীতার মামা মামী আর তার ভাইকে অ্যারেস্ট করা হলো । এক প্রতিবেশী তাদের বাড়ির পেছন দিয়ে পেরোনোর সময় এক বিকট দুর্গন্ধ পান তারপর আসে পাশে খুঁজে কিছু না পেয়ে আরো কয়েকজন কে নিয়ে নীতার মামাবাড়িতে হানা দেন। বাড়ির পেছনের বাগান থেকে আবিষ্কার হয় নীতার গলা পঁচা মৃত দেহ। পুলিশ তদন্ত করার পর, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানতে পারে নীতার শরীরের বেশ কিছু অংশ নেই ( চোখ কিডনি লিভার লাংস, ইত্যাদি) ।

কোর্টের বিচারের শেষ দিন প্রমাণ হয় – ওই শ্যমলবর্ণ কুৎসিত চেহারার মেয়েটা মামা মামীর ওপর বোঝা ছিল, তাই বোঝা থেকে মুক্তি পেতে যেদিন নিতা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল সেদিনই ওনারা মোটা টাকায় নীতাকে বিক্রি করে দেন একটি বেনামী গুন্ডার কাছে তবে এতটা টাকা দিতে সেই গুন্ডাও রাজি ছিল না । তাই সে কিছু টাকা দিয়ে পরে বাকি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নীতাকে জোর করে নিয়ে যায়। তারপর নীতার শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে বিক্রি করে আর বাকি দেহটা ওর মামাবাড়ির পেছন দিকে ফেলে দিয়ে যায় । তাই ওর মামা মামীর আগে পাড়ার লোকই বিকট গন্ধের হদিস পায়।

বিচারক সবটা শুনে তাদের উচিত শাস্তি দেন তবে যিনি নিজের প্রাণপণ করে নীতার এই রহস্যময় কেসটির সত্য উদঘাটন করেন তার ও বাহবা দেন । তখন নীতার হয়ে লড়া উকিকবাবু বলেন – মাই লর্ড এই অরুনিতা মেয়েটির সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিলো ফেসবুকে তারপর আস্তে আস্তে পরিচয় হওয়ার পর মেসেঞ্জারে কথা হতো। বাপ মা হারা মামা বাড়িতে মানুষ হওয়া মেয়েটা ওর জীবনের সব দুঃখ আমায় বলতো । আমি ওকে কথা দিয়েছিলাম ওর সব ভুল ত্রুটি উপেক্ষা করে মেয়ের মর্যাদা দেবো , দেশে ফিরেই আমি ওকে দত্তক নেবো ।

বাংলা গল্প বাবা নিয়ে গল্প
বাংলা গল্প বাবা নিয়ে গল্প

কিন্তু তা আর পারলাম কই…! দেশে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করেছি এমন সময় হটাৎ করে একটা নোটিফিকেশন ঢুকলো। নীতার এক বন্ধু ম্যাসেজ করেছিল। ম্যাসেজটা পড়ে জানতে পারলাম আমার কর্মব্যস্ততা ঘেরা একার জীবনে যে মেয়েটা কিছুদিনের মত ভালোবাসার প্রদীপ জ্বেলে অন্ধকার দূর করেছিল। আর নিস্বার্থ ভাবে ভালোবেসে বাবার জায়গা দিয়েছিল নিজের জীবনে, সে আর নেই ! তখন দিশেহারা হয়ে সব কাজ ফেলে দেশে ফিরে এলাম। মেয়েটাকে একবারও সামনে থেকে দেখার সুযোগ পেলাম না ! চোখেরজল কে আশ্রয় করে ওর চিতার সামনে দাড়িয়ে ওকে কথা দিলাম নিজে ওর কেস টা লড়বো।

ওকে বললাম জানেন ” চাইলেও তোকে আর মেয়ের মর্যাদা দিতে পারবনা তবে তোর ন্যায় বিচার টুকু তোকে দেবই দেবো” । মেয়েটা জীবিত নেই ঠিকই কিন্তু ও আমার কাছে মৃত নয়। আমি ওর অসম্পূর্ণ বাবা, এটা বলতে বলতে উকিল বাবু নিজেও অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। পরের দিন কাগজে বেরোলো বিদেশ ফেরত বিখ্যাত উকিল সমরেশ মজুমদারের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে।

এভাবেই অসম্পূর্ণ বাবা হয়েও প্রকৃত বাবা হওয়ার নজির গড়ে দিয়ে গেলেন সমরেশ বাবু।।

আলোরানি মিশ্র

গল্পটি পাঠিয়েছেন- যিনি
আলোরানির আরও কয়েকটি গল্প- 

মাকে নিয়ে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গল্প 

one love story

হাসির গল্প- রোগা মানুষের উপাখ্যান 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

ekti bangla golpo/বাংলা গল্প/facebook story/ বাবা নিয়ে গল্প

Spread the love

Leave a Reply