কল্পনাকে আঁকড়ে, প্রেমের পরশের স্মৃতিকে বেষ্টন করে অন্তর আত্মার শান্তি খোঁজার এক অন্যতম ‘শান্তির নীড়’ হল আজকের এই সংক্ষিপ্ত প্রেমের গল্প দুটি।

সংক্ষিপ্ত প্রেমের গল্পঃ- এটা গল্প হলেও পারতো

আমি সচরাচর বাসে তেমন উঠিনা। কারন, বমি পায়, কিন্তু আমার কলেজ সেই বাসের রুটেই পড়লো। তবে তা যে ভালোই হয়েছিল সেটাই বলছি। বয়স ১৯-২০ হবে, ভর্তি হয়েছিলাম একটি বি.এড কলেজে। প্রানবন্ত সেই কিশোর জীবনে পড়াশোনা ছাড়াও অনেক শিল্প ছিল। ভালোবাসতাম তবলা বাজাতে, তবে তবলায় আমি ছিলাম নেহাতই অবলা। গান শুনতেও বেশ ভালো লাগত। তবে প্রেমের বিষয়ে একটু সংবেদনশীল আমি।

এখনকার সময়ে ভালোবাসা না ভালো মতন ফাঁসা সেটাও তো যাচাই এর বিষয় তাই তো ? আমি খোলা মনেই ক্লাস করতাম। ক্লাসের এক মধ্যমনিও হয়ে উঠেছিলাম সবার কাছে। তবে সেই কলেজেও আমার চোখ খুঁজতো এক নিষ্পাপ ভালোবাসার খোঁজে। এমনি একদিন কলেজের প্রোগ্রামে গান করতে আসা এক মেয়েকে খুব ভালো লাগল, এমনকি, বাসে তার সঙ্গে আসা যাওয়াও করতাম কিন্তু তেমন কথা হতো না। হয়তো তার জন্যই বাসকে ভালোবাসতে শুরু করলাম। আমাদের কলেজের প্রোগ্রামে তাকে প্রথম দেখি শাড়িতে, সেই হলুদ আভায় সূর্যাস্তের পীতবর্ণও হয়তো লজ্জা পাবে। তার কেশবন্ধনী দেখে মনে হয় জীবনানন্দের বিদিশা যেন ওর চুলেই সমাদৃত।

ভালোবেসে ফেলেছিলাম সেদিনই। তবে আহা মরি সুন্দরী সে নয়, তবে আমার চোখে শ্রেষ্ঠ। গান করেছিল সেদিন, তার স্বরের প্রতিধ্বনি আজও কানে বাজে, সুরগুলো এক মদনবাণের মতো লেগেছিল, প্রেমে তো সেদিনই পড়েছিলাম, যেদিনে প্রথম দেখি হারমোনিয়ামে তার আলতো হাতটি বেলোটা টানছিল স্নিগ্ধ কন্ঠধ্বনিতে। তবে নিয়তির কাছে আমরা বাধা পড়ে যাই, কারন গোলাপ সুন্দর হলেও তার কাঁটা আমাদের ব্যথা দেবে এটা শাশ্বত।

সংক্ষিপ্ত প্রেমের গল্প
সংক্ষিপ্ত প্রেমের গল্প

কিছুদিন পর আমি জানতে পারি, ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে এক ধনী ব্যবসায়ীর সঙ্গে আর তাই ও আর কলেজ কমপ্লিট করতে পারবে না। ওর বিয়ের দিনটাও আমি জানতে পারি, সেদিন বুকের পাঁজরটা কেমন নিঃশব্দে মুজড়ে উঠেছিল। অনেকে বলেছিল, ভুলে যেতে কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। বিয়ের দিন ওকে দেখতে খুব ইচ্ছা করলো, ছুটে গেলাম ওদের বাড়ি, দূর থেকে দেখলাম সেই হলুদ শাড়িটা পড়ে ওকে প্রথম দিনের মতোই মায়াবী লাগছে।

চোখ যেন বাঁধ মানলো না। কথা হলো না আমার, যেন মনে হলো ও যেন এক পলকে আমার দিকে তাকাল, কিন্তু পরক্ষনে সে নিশ্চয় ভালোথাকার কাছে ভালোবাসাকে সস্তা ভেবেছিল। আমি কাঁপা কাঁপা গলায় নীরবেই তাকে বলছিলাম, “আমি তোমায় ভালোবাসি” কিন্তু তুমি ভালো থাকো আর মনে রেখো, সারাজীবন কেউ তোমায় অগোচরে ভালোবেসে যাবে তার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত।।


পড়ুনঃ- 
অবহেলা থেকে ভালোবাসা

অদ্ভুত প্রেমের গল্প

কলজে জীবনের প্রেম কাহিনী- সিনিয়রের সাথে প্রেম 

ছোট প্রেমের গল্পঃ-অলিক প্রেমের গল্প

সত্যি জীবনটা কেমন বাসি পাঁউরুটি হয়ে গেছে। সকাল থেকে কলেজ, আর তারপর সেই প্রথাগত পড়াশোনা, সারাদিন পুরো বনগাঁ লোকাল, ছুটেই যাচ্ছি। কিন্তু রাতটা, একটু অদ্ভুত লাগে। আমি সাধারনত দেড়িতে ঘুমাই, কারন এমনিতেই ফুটবলের বড়ো ভক্ত। খেলা দেখি তাই ঘুমাতে যেতে মধ্যরাত্রি পার হয়ে যায়। তবে ঘুমাতে গেলেও ঘুম আসে না চোখে। মনে অনেক ভাবনা আসে। চোখেও নানা রঙিনতা। সেই শুরু এক অলীক কল্পনা। বিছানার খাটের পাশে মনে হয় কেউ আছে আমার অপেক্ষায়। ভূত ভাববেন না, হয়তো আমার কোনো অলীক প্রেম।

চোখটা কখনো খুলে রাখতাম, আবার কখনো বন্ধ, কিন্তু ভালোবাসার এক আবেশ তৈরি হতো। এক আর্দ্র পোশাকে বালিশের পাশে এসে দাঁড়াত সে। অশান্ত হয়ে উঠতাম, তার চুলের অবাধ্য ঝাপটায়। আমি তাকিয়ে থাকতাম তার দিকে। রাতের আঁধারে যেন এক চন্দ্রিমা আমার তরে এ ঘরে। তার সারা দেহ ঘাম আর জলে আবৃত, তবে তার আঁখি কাজল যেন রাতের তমসাকে নিদ্রিত করেছে। তার ঠোঁট গোলাপের রঙিন পাপড়িকেও আজ ফিকে করে দেয়। আমি তার দিকে তাকিয়ে চোখ ফেরাতে পারিনি। তার ঘামের গন্ধ পদ্মকেও হার মানায়। পায়ের মলে এক তিমির সুর ভেসে গেছে নিশিযাপনে প্রতিদিন।

ছোট প্রেমের গল্প
ছোট প্রেমের গল্প

এমনই কয়েকদিন ধরে চলছে, একদিন রাতে আমি শুয়ে আছি ঘুম আসছে না, কিন্তু এর কয়েক মুহূর্ত পর মনে হলো সে এসেছে। আমার মাথায় তার কোমল হাত এসে বুলিয়ে যাচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলাম, “তোমার পরিচয়টা জানা হয়নি, তুমি কে? সে খুব আলতো করে বললো, “ভেবে নাও তোমার প্রেমিকা” শুনে খুব অবাক হলাম। বললাম, “আমি তোমায় চিনিনা তো, তুমি আমার প্রেমিকা হলে কিভাবে ?” উত্তরে সে বলল, “তোমার হৃদয়েই আমি থাকি, ভালোবাসি তোমায়” শুনে খুব ভালো লাগল। ভাবলাম, প্রেম এলো এমনভাবে !

পড়ুনঃ- স্কুল লাইফের প্রেমের গল্প 

একদিন বললাম “তোমার বাড়িতে কে কে থাকে? সে বলল, “শুধু তুমি”। আমি কোনো উত্তর দিতে পারিনি। কোনোদিন আমি ঘুমিয়ে পরি কিন্তু বুঝতে পারি, সে এসেছে গান করছে গুনগুন করে। এভাবে চলতে থাকে দিনের পর দিন। কিছুদিন পর বললাম, তুমি আসো কীভাবে ? দরজা বন্ধ তো, আর কেউ দেখে নিলে কি হবে? সে বললো,” আমি তো আসিনি, তোমার ভালোবাসা আমায় এখানে আসতে বাধ্য করে”।

আমি অবাক হয়ে গেলাম তার কথা শুনে। সে আরো বললো,”আমি আর কেউ নই তোমার ভাবনার এক অলীক নারী যাকে তুমি ভালোবাসো প্রেমিকা বানাও আর ওই বুকে আগলে রাখো, একটু একটু করে। আমি নিজেকে আর সামাল দিতে পারি না, তাকে জড়িয়ে ধরলাম, কিন্তু স্পর্শ কোথায় ?

bengali sad love story
bengali sad love story
<

আরো দেখলাম, মেয়েটার চোখে জল। আমি হাত দিয়ে মোছার চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুতেই ছুঁতে পারছি না। সে বলল,

“মনের মধ্যে রেখো আমায়
প্রেমেরই মন্দিরে-
হোক না সে ভালবাসার,
অলীক চিন্তনে।।”

সৌগত প্রামাণিক

গল্পের ভাবনায়-
আপনার গল্প WhatsApp-এর মাধ্যমে আমাদের পাঠাতে এখানে ক্লিক করুন অথবা আপনার গল্পটি আমাদের ই-মেল করুন- charpatrablog@gmai.com -এ। চাইলে, আপনার প্রেমের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে ভাগ করে নিতে পারেন, আমরা আপনার সেই অভিজ্ঞতাকে একটি নতুন রূপে গল্পের আঁকারে সবার সামনে তুলে ধরব। আপনার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে এখানে ক্লিক করুন
সৌগত-এর কলমে পূর্ণতা-প্রাপ্ত আরও কিছু গল্প- 

দুঃখের প্রেমের গল্প 

জীবন যুদ্ধের গল্প 

কয়েকটি বাছাই করা ছোট গল্প 
আমাদের সমস্ত আপডেটের জন্য- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

সংক্ষিপ্ত প্রেমের গল্প। ছোট প্রেমের গল্প। 2 new bengali sad love story

Spread the love

Leave a Reply