আজ একটি মেয়ের জীবনের গল্প নিয়ে আসা হয়েছে। কিভাবে মেয়েটি নানান সামাজিক বাঁধা পেরিয়ে মায়ের ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিখরে পৌঁছানোর অক্লান্ত পরিশ্রম করছে তারই বহিঃপ্রকাশ আজকের গল্পটি।

একটি মেয়ের জীবনের গল্পঃ- ‘মা এক অপ্রকাশ্য ভালোবাসা’

আজকালের ব্যস্ত জীবনে কে কার খবর রাখে… মা ছোট বেলায় আমায় বলতো জীবন টা নাকি কঠিন বাস্তব তাই যেন সেটাকে মানিয়ে চলি, আজগুবি কল্পনার জগৎ নাকি কল্পনাতে স্বর্গ কিন্তু বাস্তবেতা নরক সমতুল্য। বুঝতাম না তখন আমি , শুধু বলতাম হুমম মা আমি সব বুঝি । দেখতে দেখতে ১৮ টা বছর পেরিয়ে গেলো ,আমার এই পৃথিবীতে মানুষ রূপে স্থান পাওয়ার সময় কাল আজের দিনে হিসেব করতে গেলে ২২ বছর ৬ মাস হবে।

ছোটবেলায় মায়ের বলা কথা গুলো বুঝতাম না তাই কল্পনার জগতেই বেশি বাস ছিল আমার। আজগুবি সব চিন্তা , এটা করবো ওটা করবো , এই হবো সেই হবো , সেসব নিয়ে কত অলীক কল্পনা আমার তবে এতদিনে এসে সত্যি বুঝতে সক্ষম আমি বাস্তব টা কঠিন হলেও সুন্দর ,কারণ সেটা একবারেই কষ্ট দেয় কিন্তু মনের মধ্যে কল্পনার জগতে বেড়ে ওঠা না পূরণ করতে পারা স্বপ্ন গুলো তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে শেষ করতে চায়।

তবে না হার মানলে চলবে না , আমি নিজেই নিজের গল্পের নায়ক ,আবার নিজেই নায়িকা । তাই একার দায়িত্বে এই জীবনের গল্পকে আমায় সবার সামনে সুপারহিট করে তুলতে হবে।

একটি মেয়ের জীবনের গল্প
একটি মেয়ের জীবনের গল্প

পাওয়া না পাওয়া নিয়েই আমাদের এই জীবন , কিছু ব্যার্থতা আবার কিছু অপ্রত্যাশিত জিনিসের সাফল্যতা । কখনো মুখে আনে হাসি আবার কখনো অশ্রু বিন্দু গড়িয়ে পড়ে রাশি রাশি।

আমি কে ? আমার পরিচয় কি ? সেসব নিয়ে কারুর মাথা ব্যাথা নেই , কী করে এই এত বড় সমাজ ,এত বড় রাষ্ট্র ,এত বড় পৃথিবীতে জায়গা পেলাম আমি মানুষ রূপে ,সে নিয়েও কারুর মাথা ব্যাথা নেই ।

মাথা ব্যাথাটা তাদের কি নিয়ে জানেন , ‘ওই যে প্রতিদিন জিন্স টপ পরা মেয়েটা’ , ‘আর হুমম হুমম সেই মেয়েটা তো যে কথার মাঝে মাঝে ইংলিশ ওয়ার্ড ব্যবহার করে’, ‘হ্যাঁ বুঝলাম সেই মেয়েটা তো যার মেয়ের চেয়ে ছেলে বন্ধু বেশি, মানে প্রায় বন্ধুদের বাইক এ করে বাড়ি ফেরে সেই মেয়েটা তাই তো’ , ‘আরে হ্যাঁ ঠিক বলেছেন ওই মেয়েটাই তো ওর মুখের কথা শুনেছেন বড়দের মুখের ওপর তর্ক করে’ , ‘কারুর কথা শুনে না’ , ‘এমনকি ওর বাবার কথাও না’ ,’অবাধ্য মেয়ে কোথাকার তাই তো এমন হলো ওর সাথে ।’

‘যেমন মেয়ে তার সাথে ঠিক তেমন এই হয়েছে। সব নষ্টের গোড়া হলো ওর মা , সেই তো ওকে প্রশ্রয় দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলেছে তাই আজ এমন পরিণতি । আজ মায়ের দোষে মা মেয়ে দুজনেই সমাজচ্যুত না হয়।’

একটি মেয়ে যে জন্মানোর পর তার মায়ের ছায়ায় বড়ো হয়েছে , সরকারি অফিসে কর্মরত বাবার কাছে মেয়েকে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় ছিল না তাই মাঝে মাঝে জামা পুতুল খেলনা এসব দিয়ে বাবার কর্তব্য জাহির করতেন । মা আমার উচ্চশিক্ষিত কিন্তু বিয়ের পর বাবার মর্জি মেনে নিয়ে মা চাকরি ছেড়ে দেয় আর সেদিন এই মনে মনে স্থির করে আমার মেয়ে হলেও আমি তাকে সেরার সেরা করে তুলবো। তাকে আমি ছেলেদের থেকে কোনো অংশে দমিয়ে রাখবো না।

পড়ুনঃ- 
ভাই বোনের ভালোবাসা- 'আমার দিদি' 

রবি ঠাকুরের শিক্ষণীয় বানী 

ঠিক তাই হলো ,মা আমায় সবটুকু দিয়ে শিক্ষা জ্ঞান খেল ধুলা সবকিছুতেই পারদর্শী করতে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণকারিনি রূপে আমার হাতে পুতুলের বদলে তুলে দিল বন্দুক । মা বললো মা তুই বড়ো হয়ে যাবি আর্মিতে , সেখানে ওই বর্ডারের সামনে গিয়ে দেশকে করবি রক্ষা ,সেদিনই হবে আমার জয়, আমি তোকে দেশের মেয়ে দশের মেয়ে রূপে দেখতে চাই মা , তুই পারবি তো আমার স্বপ্ন পূরণ করতে ?

তখন আসলে মানেটা বুঝিনি আমি ,শুধু বললাম হুমম মা করবো আমি সেসব কিছু ,বলবে তুমি যেটা , তুমি আমার জননী মা আমার ভাগ্য বিধাতা । মা হেসে বললো পাকা বুড়ি একটা এসব কোথায় শিখলি , বললাম মা ওই মায়ের poetry গুলো পড়ি ওখান থেকেই শুনেছি । মা হেসে জড়িয়ে ধরলো আমায়।

আমি আর পাঁচটা মেয়ের মতো করে বড়ো হয়ে উঠিনি, আমাকে মা শিখিয়েছে নিজের ওপর আত্মনির্ভরশীল হতে, রক্ষার জন্য কোনো পুরুষ নয় নিজের ওপর নির্ভর করতে , অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে , মানুষের মঙ্গল করতে আর সবাই কে ভালোবাসতে। তাই হয়তো মায়ের ইচ্ছেতে আমি জন্মে নারী হলেও সমাজের মতে আমি পুরুষ হয়ে উঠলাম । সবার প্রয়োজন এর সময় সাহায্য নিত ঠিকই কিন্তু আমি ঘুরে ২ পা হাঁটার পরেই , আমায় নিয়ে কটূক্তি আর নিন্দার সুর ও বেশ সুরে বয়ে আনতে বাতাস আমার কানে। বাড়ি ফিরে মা কে বলতাম মা সবার সাহায্য করার পরেও সবাই আমাকে নিয়েই খারাপ বলে ,আমি আর কারুর সাহায্য করবো না মা ।

মা বলত ‘না মা এমন বলতে নেই , তুমি তো আমার অগ্নিশিখা, তোমার আভা ওরা বোঝে না তাই ওরা এরকম বলে ,যেদিন তুমি জ্বলে উঠবে সেদিন তোমার আভা তোমার শিখার উজ্জ্বলতা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে সেদিন ওরা নিজেরাই সব বুঝে যাবে।’ আমি মায়ের কথা কাটব এমন সাধ্য নেই আমার , তাই আমিও উৎফুল্ল হয়ে বলতাম ,নিন্দুকেরা নিন্দা করুক , বুঝবো না ভুল আমি । তুমি শুধু পাশে থেকো , আমার মা আমার জন্মভূমি।

দেখতে দেখতে বেশ কয়েকটা বছর কেটে গেলো , স্কুল কলেজের গণ্ডি পেরোলাম আমি । তবে আমার পরিচয় বদলালো না সমাজের চোখে , তাদের কাছে আমি দুশ্চরিত্র , অভদ্র মেয়ে হয়েই রইলাম।

সংগ্রামী নারী
সংগ্রামী নারী

এর মধ্যেই আমাদের কলোনির একটি দাদা আর্মি তে কাজ পেলো তাই তাকে নিয়ে পাড়ায় ধন্য ধন্য রব । সেদিন মা এসে আমায় জিজ্ঞাসা করলো মা তুই কবে আমার স্বপ্ন টা পূরণ করবি ?

আমি বললাম মা আমি কি করে করবো? বাবা তো আমার বিয়ে দিতে চান আর সমাজ এই সমাজ তো আমায় আমার লক্ষ্য পূরণ করতে দেবে না।

মা জিজ্ঞাসা করলো আমায়, তোকে আমি এরকম ভাবে মানুষ করেছি যেটাতে কারুর সাপোর্ট ছিলো না তাহলে সেটা কি ভুল ছিল আমার ? তুই কি তাহলে আর পাঁচটা মেয়ের মত বিয়ে করেই জীবনটা নরক করতে চাস ? আর তাহলে কি তোকে নিয়ে দেখা সব স্বপ্ন গুলো আমার ,সমাজের কাছে সেগুলো ছোট হয়ে গেলো ? তার মানে আমি নয় ওই সমাজ এই তোর কাছে বড়ো হলো তাই তো মা, আজ আমার সব স্বপ্ন সব আসা সব ভরসা , বেচেঁ থাকার কারণ টাই বৃথা করে দিলিমা ,এমন টা কেন করলি ?

মায়ের এই কথা গুলো শুনে আমি নিরুত্তর হয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে কিছু বলার সাহস পেলাম না , মাথা নিচু করে রইলাম ।
জন্মের পর থেকে আমার মা আমায় ছেড়ে কোথায় যায়নি ,কিন্তু সেদিন মা ব্যাগ বাগিয়ে হঠাৎ করে কিছু না জানিয়ে বেরিয়ে পড়লো , আর একটা চিঠিতে লিখে গেলো আমি তোর ভরসায় এই সংসারে এতদিন সব কষ্ট সহ্য করে সব সয়ে ছিলাম কিন্তু আজ আমার সব স্বপ্ন শেষ , তাই আমি তোদের জীবন থেকে বিদায় নিলাম । বিয়ে করে সুখে সংসার করিস ,ভালো থাকিস । আর যদি আমায় কোনোদিন ও আবার ফিরে পেতে চাস তাহলে জেনে রাখ যেদিন ইউনিফর্ম পরে হাতে বন্দুক আর দেশের পতাকা নিয়ে আমার সামনে থাকবি সেদিন এই আমি তোর কাছে ফিরে আসব।

আমার জীবনে মা ছাড়া আর কেউ নেই আমি মাকেই ঈশ্বর, বন্ধু , প্রেম সবটাই ভাবতাম । তাই এবার মা কে ফিরে পাবার লড়াই এ আমি একাই নিজের নিজেই সঙ্গী হলাম । পরিশ্রম এর ফল পেলাম ও আমার CDS ক্লিয়ার হয়ে গেলো । কিন্তু মায়ের হটাৎ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে আমি বাইরে বেরতাম না কারণ সমাজের ওই মানুষ গুলো আমার মা কে নিয়ে আজে বাজে বলতো এমনকি আমার বাবাও বললেন মা কে ডিভোর্স দেবেন । তাও আমি ভেঙে পড়িনি কারণ আমি জানি আমার মা আমার কাছে ঠিক কি।

পড়ুনঃ- 
সফল ও অসফল ব্যক্তিদের পার্থক্য 

আমি ট্রেনিং এ যাচ্ছি আজ , আজই আমি শেষ এখানে লিখে যাচ্ছি কিছু কথা , এর পর ফিরলে নিজের হাতে লিখব নয়ত আপনারা সবাই আমার বাকি জীবন সম্বন্ধে খবরের কাগজ বা রিপোর্টে পড়ে নেবেন। আজ আমি সকাল দিকে বাজার গেছিলাম তখন এই শুনলাম কলোনি এর লোকেরা নাকি আমাদের সমাজ চুত্য বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি একটা মেয়ে হয়ে ছেলেদের সাথে ট্রেনিং করবো এরপরেও যে আমার আর কোনো চরিত্রের গুন থাকবে বলে ওরা মনে করে না । তাই সবাই মিলে বাবাকে বলতে এলো দুপুর বেলায় , ২ টি শর্ত রাখলো প্রথম শর্তটি হলো, আমায় বিয়ে করতে হবে আর ট্রেনিং এ যাওয়া যাবে না তাহলে তারা আমাদের সমাজে স্থান দেবে।

দ্বিতীয় শর্তটি হলো , আমি ট্রেনিং এ গেলে আমাকে আর আমার মা কে সমাজ চ্যুত করা হবে । বাবা আমায় ডেকে বললেন কি চাও তুমি , আমি হেসে উত্তর দিলাম স্বাধীনতা । তারপর গোছানো ব্যাগ টা পিঠে নিয়ে সবার সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেলাম , ডাইরি টা ঘরে পড়ে রইলো।

এবার বাকি অংশটুকু আমি আপনাদের বলি ,নইলে আপনাদের কৌতুহল যে চরম মাত্রায় পৌঁছেছে সেটা বোধয় আর বলে বোঝাতে হবে না।

মেয়েটি ট্রেনিং এ গেলো তারপর ট্রেনিং কমপ্লিট করে আসার পর জয়েন্ট করার আগে সে এবার মায়ের সাথে দেখা করতে চাইলো কিন্তু তার মা কোথায় আছে ? কেমন আছে সে কিছুই জানে না ? অনেক চেষ্টা করেও সে মায়ের খোঁজ পায়নি এই ৫ বছর । সে জানতো তার মা এক কথায় মানুষ তাই সে ইউনিফর্ম পরে পতাকা বন্দুক নিয়ে যেদিন যাবে সেদিন ঠিক তার মা তাকে গ্রহণ করবে।

পড়ুনঃ- সফলদের ব্যর্থতার গল্প 

তারপর সে জয়েন্ট করল ,ফেরার মতো কোনো জায়গা নেই তাই সে ছুটি নেয় না। তার কলোনি এর যে দাদাটি আর্মি তে গেছিলো সে এখন মেয়েটির টিম এই আছে একজন সৈন্য রূপে । হটাৎ করে ভারত পাকিস্তানের বর্ডারের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে উঠলো , পাকিস্তানি জঙ্গি দল বারবার হানা দিচ্ছে । এরকম অবস্থায় কর্নেল মেয়েটিকে যেতে দিতে চাইলেন না তিনি বললেন মেয়ে হয়ে এত বড়ো টিম সামলাতে পারবে না তাই তার জায়গায় অন্য কাউকে যেতে । কিন্তু মেয়েটি জোর পূর্বক নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিলো আর বললো স্যার আমার টিমের একটি সৈন্য এরও আমি কিছু হতে দেবো না আপনাকে কথা দিলাম ,জয় হিন্দ ।

মেয়েটির কথাতে বিশ্বাস করে কর্নেল তাকে যেতে দিলেন । মেয়েটি পুরো টিমটিকে লিড করছিলো , প্রথম দিক থেকেই ভালো অভিযান করলো তারা তারপর সন্ধের সময় আবছা আলোতে কিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। তখন তার কলোনি এর সেই দাদাটি কেই যে একজন বন্দুক তাক করেছে সেটি সে দেখতে পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লো তার সামনে, সোজা এসে বুক বৃদ্ধ করে লাল করে দিলো চতুর পার্শ্ব। আর যে বন্দুক তাক করেছিল তার বুকেও একটি গুলি আঘাত করলো সেও মাটিতে ছিটকে পড়ল।

মেয়েটি হাসি মুখে সেই দাদা টি কে বলে গেলো। আমি আমার একটা মিশন কমপ্লিট করে গেলাম , কিন্তু বড়ো মিশনটা শেষ করতে পারলাম না আর বোধহয় , দাদা তুমি আমার লাশ টা যখন নিয়ে যাওয়া হবে তখন বন্ধুক টা হাতেই রেখে দিও আমার আর স্যার কে বলে দীও আমি আমার কথা রেখেছি আর হ্যাঁ আমার একটা শেষ কাজ করে দেবে , আমার ইউনিফর্ম বন্দুক নেওয়া এই শরীরটা যেন শেষবারের মত হলেও মায়ের সামনে নিয়ে যেও । আর মা কে জানিও তার অগ্নিশিখা আজ তার আভা দিয়ে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষণ হয়েছে । আমি পেরেছি মা , আমি তোমার অগ্নিশিখা হতে পেরেছি মা , আমি পেরেছি , জয় হিন্দ বলতে বলতে সে ওই দাদার কোলে মাথা রেখে হাসি মুখে ভারত মাতার কোলে আশ্রয় নিল ।

রিপোর্ট এ জানা গেলো সে মোট ৩০ টি জঙ্গিকে নিহত করেছে নিজ হস্তে তাই তার এই মহান বিজয় এর জন্য তাকে ভারতরত্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হবে। কিন্তু পুরস্কার নেওয়ার মানুষ টা কই ?

মা কে নিয়ে কষ্টের গল্প
মা কে নিয়ে কষ্টের গল্প
<

মেয়েটির শব দেহ নিয়ে গিয়ে ওই কলোনির মোড়ে সুভাষ চন্দ্র বসুর মূর্তির সামনে রাখা হলো ,চারিদিক থেকে লোকের সমাগম , ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের মানুষ ও এসেছেন আজ এই অগ্নিশিখা কে শেষ বারের মত দর্শন করতে , আজ কলোনি ,সমাজ , তার বাবা কেন আজ পুরো রাষ্ট্র এই অগ্নিশিখার জন্য চোখের জল ফেলছিল , তাদের মধ্যে থেকে ভিড় ঠেলে এক সাদা বস্ত্র পরিহিত মহিলা সামনে এলেন , এসে চিৎকার করে বলে উঠলেন কিসের জন্য এই চোখের জল ? কার জন্য এই চোখের জল ? কে এই মেয়ে ? তার কি পরিচয় আজ ?

সব দেহ টা কে জড়িয়ে ওই মহিলা চিৎকার করে বলে উঠলেন আমার অগ্নিশিখা আজ পেরেছে তার শিখা প্রজ্জ্বলিত করতে , সে আজ বিদীর্ণ করে দিয়েছে সমাজের নিন্দুকদের বুক ,আজ পুরো দেশ আমার অগ্নিশিখার জন্য গর্ব বোধ করছে কি চাই মা আর, তুই আমার কথা রেখেছিস মা , রেখেছিস , আমি জানতাম তুই পারবি , আজ তোর হাত ধরেই তুই জানিস না কত অগ্নিশিখা বেরিয়ে আসবে আর সমাজের মুখ লিন করে দেবে তাদের জ্বলন্ত শিখা।

এক বিন্দু ও জল পড়েনি সেদিন ওই মায়ের চোখে কারণ তিনি কোনোদিন শুধু নিজের নয় মেয়েকে গড়ে তুলেছিলেন দেশের মেয়ে বলে তাই দেশের মেয়ে ভারত মাতার কোলে আশ্রয় নিয়েছে , অগ্নিশিখা জলে উঠেছে তার হাত দিয়ে , এতেই তার জীবনে বেচেঁ থাকার এতদিনের সব স্বপ্ন পূরণ হয়েছে । প্রতি ঘরে ঘরে জন্মনি়ন্ক এমন অগ্নিশিখা , তারাই চালাবে সমাজ ,তারাই দেখবে রাষ্ট্র , তারাই হবে ভুত আবার তারাই হবে ভবিষ্যত।

আলোরানি মিশ্র

অসাধারণ গল্পটির ভাবনায়-

সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 
আলোরানির কিছু লেখা- 
একটি গাছের শেষ বিচার- পথিক জনের ছাতা 

ফিরে পাওয়া ভালবাসা- মনের মানুষ  

সামাজিক ছোট গল্প- রক্ষাকর্ত্রী 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

একটি মেয়ের জীবনের গল্প। মা কে নিয়ে কষ্টের গল্প। সংগ্রামী নারী

Spread the love

Leave a Reply