ব্যর্থ প্রেমের হাতছানির অনুভূতি জাগানো এই ছোট ছোট লাভ স্টোরি গুলি লিখিত হয়েছে কিছু বাস্তবতা কে সামনে রেখে। আশা রাখছি এই নতুন সংকলন টি পাঠকের পছন্দ হবে।

ছোট ছোট লাভ স্টোরিঃ-

১. পার্কের পাশের ওই শূন্য বেঞ্চ টা দেখে নিজের অজান্তেই থেমে যায় ছেলেটা। মনে পরে যায়, এই বেঞ্চে বসেই একজন তার কাঁধে মাথা রেখে অনেক দুঃখের কথা শোনাত। সুখ দুঃখে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিত, সারাটা জীবন হাতে হাত রেখে চলার কথা দিত। আজ দশ বছর পর সবই মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। মেয়েটা আজ অন্য জনের সাথে ঘড় বেঁধেছে। কিন্তু ছেলেটা আর বিয়ে করে নি, শুধু একটা কারণে, একজনই যে তার মনে সর্বদা জায়গা দখল করে ছিল, সেই জায়গা সে অন্য কাউকে দেবে কিভাবে!

২. কথায় কথায় “তোর জন্য মরে দেবো ” বলা ছেলেটাও, মেয়েটা চলে যাওয়ার পর সুখে সংসার করছে। আর ” তোর জন্যই তো বেঁচে আছি ” বলা মেয়েটা কবেই সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে।

৩. বাসে পাশের সীটে বসা মেয়েটার সাথে বেশ জমে উঠে ছেলেটার। কিছুদূর পর মেয়েটা নেমে গেলেও ছেলেটার মনে ফেলে দিয়ে গেল একরাশ কুসুমের মত সুন্দর স্মৃতি। মেয়েটা হয়ত কিছুক্ষণ পর বাসের এই স্মৃতি ভুলে যাবে। কিন্তু ছেলেটা! সে সহজে ভুলতে পারবে না। এই ক্ষণিকের স্মৃতি তার সঙ্গে রয়ে যাবে আজীবন।

ছোট ছোট লাভ স্টোরি
ছোট ছোট লাভ স্টোরি

৪. মেয়েটার অভিমান হয়েছে। খুব অভিমান। ছেলেটা ওর অভিমান বুঝে ওকে বুকে জড়িয়ে ধরল আর বলল, “পাগলী, তোমরা মেয়েরা এত অভিমান কেন করো সবসময়? এত অভিমান তোমাদের হৃদয়ের কোথায় থাকে? তোমরা মেয়েরাই শুধু অভিমান করো, আমরা ছেলেরা কি অভিমান করতে পারি না?” 

মেয়েটা বলে, “অভিমান তো নারীজাতির ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। আমরা তোমাদের মতো করে ভালোবাসতে পারি না , কিন্তু অভিমান করতে পারি। অভিমানী, অভিমানিনী সবই স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ, গোটা পৃথিবী খুঁজলেও এর পুংলিঙ্গ শব্দ তুমি খুঁজে পাবে না। তাই খুব সহজেই প্রমাণিত রাগ, অভিমান মেয়েদের সম্পদ , যা তাদের ভালবাসা বোঝায়। যতক্ষণ নারী তোমার উপর অভিমান করছে ততক্ষণ বুঝবে তার হৃদয়ে তুমি আছো”

৫. সবসময় ভাবত বলবে কিন্তু কিছুতেই বলা হতো না “ভালবাসি তোমায়” এই কথাটা। কিন্তু ছেলেটার চাহনি, ব্যবহার, আচার আচরণই নয়নাকে বুঝিয়ে দিত, ছেলেটা ওকে ভালোবাসে। অনেকদিন এই লুকোচুরি প্রেমের পর নয়না নিজেই ঠিক করে সেই বলবে যে ও ওকে ভালোবাসে। যেই ভাবা সেই কাজ। নয়না বলে, কাউকে ভালোবাসলে তাকে বলে দাও, না বললে সে হারিয়ে যাবে যে… 

কিন্তু ছেলেটা নয়নাকে ভালোবাসি বলার পরেও নয়না হারিয়ে গিয়েছিল। তবে ছেলেটা আজকেও পাগলের মতো মনে রেখে দিয়েছে নয়নার সেই কথাটা, “কাউকে ভালোবাসলে তাকে বলে দাও, না বললে সে হারিয়ে যাবে যে…” সে তো নয়নাকে বলেছিল, সে নয়নাকে ভালোবাসে, তাহলে হারাবে কেন সে? 

৬. হঠাৎ করেই কোন কারণ না দেখিয়েই মেয়েটা কথা বলা বন্ধ করে দেয়। ছেলেটা এর পেছনে থাকা কারণ খুঁজে পায় না। সে অনেক চেষ্টা করেছে মেয়েটার সঙ্গে কথা বলার। কিন্তু মেয়েটা তাকে আর পাত্তা দেয় নি। এভাবে হঠাৎ করে ছেড়ে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারে নি ছেলেটা। সে মেয়েটার বাড়িতে হাজির হয়, আর খবর পায় মেয়েটার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, পাত্র সেই ছেলেটার তুলনায় শতগুণে ভাল।

পড়ুনঃ- ১০+ টি কয়েক লাইনের প্রেমের গল্প 

কয়েক লাইনের স্যাড লাভ স্টোরিঃ-

৭. বিয়েবাড়িতে প্রচুর লোকের মাঝে প্রনব লুকিয়ে সায়নীর ঘরে ঢুকে পড়ে। খাটের মধ্যে দেখতে পায় কিছু এলোমেলো কাগজ, দেখে বুঝতে পারে সায়নীর বিয়ের বিবাহবন্ধন আইনী কাগজ। এই সময় সায়নী এসে বলে, “তুই লুকিয়ে এলি কেনো?” প্রনব কি বলবে না বুঝেই বলে ওঠে, “তুই আমাকে বিয়ে করবি না?” সায়নী খুব হেসে বলে, “তুই আবার মজা করছিস, যাই তোর জন্য লস্যি নিয়ে আসি, দাঁড়া চলে যাস না যেন।” প্রনব এক দীর্ঘশ্বাসে নিজেকে জানায় তার অকথিত ভালোবাসার এক ক্ষন বড়োই নিরীহ।

৮. মেয়েটার বয়স বেড়ে চলছে। অনেক ভাল ভাল পাত্রকে ফিরিয়ে দেয় মেয়েটা, শুধু একটা কারণে, যদি তার প্রিয় জন কোন একটা কাজ পায় তাহলে তাদের বাড়িতে ওদের সম্পর্কটা মেনে নিবে। সেই আশায় দিন গুনছে এক প্রেমে আসক্ত এক প্রেমিকা।

৯. দু ঘন্টা বাড়ির বাইরে থাকলে যে মেয়েটা বারবার কল করে খোঁজ নিতো সেইই হঠাৎ করে নিজেই নিখোঁজ হয়ে গেছে। ছেলেটাও ব্যস্ততার অজুহাতে পিছুটান মুক্ত হতে , খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেনি ।
হঠাৎ রাস্তার ধারে মেয়েটাকে একটি অচেনা ছেলের হাত ধরে হাঁটতে দেখে , ছেলেটা অবাক হয়ে গেলো । তবে সাহস করে আর মুখোমুখি হতে পারলো না । দূর থেকে প্রাণ ভরে শুভেচ্ছা জানালো মেয়েটাকে আর ধন্যবাদ জানালো ভগবান কে ব্লাড ক্যান্সার নামের মারণ রোগ তাকে উপহার দেওয়ার জন্য।

bnegali short emotional love story
bnegali short emotional love story

১০. মেয়েটার জন্য  অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করে ছেলেটা। আজকেই নয় শেষ নয় শুরু। আজ মেয়েটার সাথে ছেলেটার দেখা হওয়া খুব দরকার। তবেই দুইজনের বাড়ি থেকে জোর করে হওয়া বিয়ে আটকানো যাবে তা না হলে সব শেষ। 

কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করার পরেও দিশা আসেনা শুভর কাছে। শুভ রাগে, দুঃখে, অভিমানে বারবার ফোন করলেও দিশা ফোন ধরেনা। মনে মনে বলে, তুমি এটা আমার সাথে করতে পারলে দিশা‌। বেশ ভালো থেকো।  

ওদিকে দিশা হসপিটালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে করতে বেঁচে যায়। আর জানতে পারে শুভর বিয়ে হয়ে গেছে। হঠাৎ পথে দেখা দুজনের। শুভ বলে, তুমি সেদিন আসোনি বলে আমার তোমার চেয়ে ভালো মেয়ের সাথে বিয়ে হয়েছে। 

বেশ তো। ভাল থেকো, আর ভালো থাকুক আমার প্রতি তোমার ভুল বোঝাটা।।

১১. চাকরী পেয়ে ফোন করে সুজন, কিন্তু রিয়ার ফোন সুইচ অফ ছিল। একজন সুজনকে জানালো, ওই ফোন নম্বরটি আর রিয়া ব্যবহার করে না, বলে সে তার এখনকার ফোন নাম্বারটি দিল। সুজন ফোন করে যখন হ্যালো বলে, নিজের নাম বললো, তখন অপর দিক থেকে ভেসে এল এক পুরুষ কন্ঠ। সে বললো,”আপনি কি বলছেন? আমি রিয়ার স্বামী আমাকে বলতে পারেন?” পাশ থেকে রিয়া বলে ওঠে, “ওই বেকারটার ফোনটা রেখে আমার কাছে আসো”। সুজন ফ্যাকাসে মুখেই কিছু বিড়বিড় করে বলে ওঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে।

পড়ুনঃ- বাসে হঠাৎ প্রেমের গল্প 

১২. আমি তোমাকে ভালবাসি, এই কথা ছাড়া আর কোনো কথা তোমার মুখে নেই? সমীর বলে উঠলো, স্কুল লাইব্রেরীতে। সুমি অবাক হয়ে মাথা নীচু করে দেখলো, সমীর বইটা ছুঁড়ে বেরিয়ে গেলো সেই ঘর থেকে। এরপর কিছুদিন সমীর স্কুলে আসেনা। তাই সুমি কিছু বান্ধবী নিয়ে ওর বাড়ি যেতে চাইলে সমীরের এক বন্ধু বলে, সমীরের তো ব্রেন ক্যান্সার হয়েছে। সুমির চোখের কোনটা ভিজে আসে, বুঝতে পারে সেদিন সমীরের রাগের কারণটা।

১৩. তুমি আমাকে কিছু কিনে দাও না! কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাও না! আমার জন্মদিনেও কোনো উপহার দাও না, আমি তোমার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখব না, রিয়া অভিকে ধাক্কা মেরে বলে ওঠে কথাটা। 

অভি আজকালকার দিনের শুধু ওই সিনেমাটিক ভালোবাসা তে কিছু হয় না, একটু ইনভেস্টমেন্ট করতেও হয়। যাই হোক তুমি এসব বুঝবে না। তোমার সাথে আমি ব্রেকাপ করলাম। বাই। 

আজ পাঁচ বছর হয়ে গেছে অভির সাথে বিচ্ছেদের। রিয়ার এখন নতুন প্রেমিক, যে তাকে তার পছন্দ মতো সব কিছু কিনে দেয়, ঘুরতে নিয়ে যায় আরো কত কি করে কিন্তু তবুও রিয়ার চোখে জল কারণ এই ছেলের কাছে সব থাকলেও, তার প্রতি কোনো সম্মান বা সেই সিনেমাটিক ভালোবাসা টা নেই অভির মতো। যেটাকে রিয়া একসময় সিনেমাটিক বলেছিল সেটাই যে খাঁটি ভালোবাসা ছিল তা আজ রিয়া বুঝতে পারে!! 

কয়েক লাইনের স্যাড লাভ স্টোরি
কয়েক লাইনের স্যাড লাভ স্টোরি
<

১৪. পিহু…. কেমন আছো?
পাঁচ বছর পর আবার দেখা কথা বলবে না ? অনেক কিছু বলার আছে জানো। কতদিন আর এভাবে দূরে দূরে সরিয়ে রাখবে নিজেকে , পারলে একবার করে কাছেও তো আসতে পারো।
আশেপাশের মানুষ গুলো ছেলেটির দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে। বছর তিরিশের একটি ছেলে এক গোছা গোলাপ নিয়ে , বাস স্ট্যান্ডের ওই চেয়ার টা সাথে কথা বলছে। সবাই হাসাহাসি করলেও , ছেলেটির চোখে জল , কারণ শেষ বারের মত তার প্রিয় মানুষটা এখানেই তাকে অপেক্ষা করতে বলে গিয়েছিল।

১৫. ‘চাকরি টা পেলেই সরাসরি তোমার বাবাকে গিয়ে আমাদের বিয়ের কথা টা বলব’ বলে যে প্রতিশ্রুতি ছেলেটা দিয়েছিল, তা আজও পুরন করতে পারেনি সে। সে চেষ্টার কোন সীমানা রাখেনি। কিন্তু সে সমাজের চোখে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে মেয়েটাও আশা নিয়ে বসে আছে যে, ছেলেটা একদিন একটি ভাল জব পাবে আর তাদের বিয়ের কথা তার বাবাকে জানাবে।

গল্প গুলির চিত্রকলায় রয়েছে-  অনন্যা, আলোরানি, কৌশিক, সুস্মিতা, সৌগত ও ছাড়পত্র।
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

পড়ুনঃ- 
দুঃখের লাভ স্টোরি- মৃত 

দুটি দুঃখের ভালবাসার গল্প 

বিচ্ছেদের বড় গল্প 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

ছোট ছোট লাভ স্টোরি। কয়েক লাইনের স্যাড লাভ স্টোরি। bnegali short emotional love story.

Spread the love

Leave a Reply