অসাধারণ দুটি নতুন দুঃখের ভালোবাসার গল্প আজ নিয়ে আসা হয়েছে। এই দুঃখের ছোট গল্প দুটিতে লেখকের লিখন কৌশল সুচারুভাবে ফুটে উঠেছে।

দুঃখের ভালোবাসার গল্পঃ-

এক প্রেমের মৃত্যুঃ-

এই কিছুক্ষন আগেই সে আমায় ছেড়ে চলে গেলো। আমি কিন্তু আটকানোর চেষ্টা করিনি, একবারের জন্যও না। না আটকাইনি, ইচ্ছা ছিল বেঁধে রাখি। তবে পারিনি, কারন ভালোবাসা তো ভিক্ষে নয়।

বাস স্টপেজে অনেকক্ষন দাঁড়িয়েছিলাম সেদিন। পাশ দিয়ে একটা বাচ্ছা মেয়ে ৮ কি ৯ বছর বয়স হবে, সে গোলাপ বিক্রি করছিল, কিনলাম একটি। এমনিতে আমার গোলাপ পছন্দের নয়, তবে কথার খুব পছন্দের ফুল। একটু সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, কথা আসছে। নিজেকে যেন কেমন অস্থির লাগছিল। এক লাল কুর্তিতে কিছু টেরাকোটা সুতোর কাজ তার ওপর, মুখে নির্মল হাসি নিয়ে এসে বললো, “তুমি এখানে দেখা করতে বললে কেনো? আমি উত্তর দিলাম, তোমার সঙ্গে কিছু কথা আছে, ওই গার্ডেনে গিয়ে বসি”।

কথা একটু অবাক হয়ে আমার সাথে গার্ডেনে গিয়ে বসলো। “কি বলার আছে সৌগতদা, তুমি এখানে ডেকে বলতে চাইলে?” আমি একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “তুমি আমাকে দাদা বলছ কেনো? ফেসবুকে তোমার যা বয়স দেওয়া আছে, তাতে তুমি আমার থেকে দেড় বছরের ছোটো, এতেই তুমি আমায় দাদা সম্ভাষণ করছো”। কথা বলল- “তুমি কি বলবে বলো, আমার ক্লাসের দেরী হচ্ছে”।

নতুন দুঃখের ভালোবাসার গল্প
নতুন দুঃখের ভালোবাসার গল্প

এসময় আমি কি বলবো, বুঝে উঠতে পারছিলাম না, কিন্তু মনের গোপনে কথাকে আমি ভালোবেসেছি তার কলেজের ভর্তি হওয়ার দিন থেকে। ভাবলাম যাই হোক বলে ফেলি, না হলে পরে আর সে সুযোগ হয়তো পাবো না। আমি বললাম, “কথা আমি তোমাকে ভালবাসি, তুমি হলে আমার জীবনের প্রথম প্রেম।” কথাটা শেষ হতে না হতে আমাকে সে থামিয়ে দিয়ে বললো,”তোমাকে আমি দাদার মত দেখি, আর দাদা হয়েই থাকবে, আর দাদার প্রতি আমি সেই সম্মানও তোমাকে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এসব কি?”

আমি যেটা ভাবছিলাম, সেটাই হলো। আমি ভাবলাম ওর নিশ্চয় কোনো ‘মনের মানুষ’ আছে। তাই ওটা জিজ্ঞেস করতেই ও উত্তর দিল, “আমি প্রথমে কাউকে প্রেমিক ভেবে নিই না”। আমি এমন অবস্থাতেও ওর প্রিয় গোলাপ ফুলটা ওর হাতে দিয়ে বললাম,”তুমি একটু ভেবে দেখো, আমি অপেক্ষায় থাকবো।” কথা গোলাপটা নিয়ে নির্দ্বিধায় সবকটা পাপড়ি মুঠো করে ছিঁড়ে ফেললো। আমি বললাম, “তুমি আমায় ভালো নাও বাসতে পারো, কিন্তু এভাবে ফুলটাকে নষ্ট করলে কেনো ? আমার বাক্যের কোন জবাব না দিয়ে ও আমার সামনে থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেল। তাকে দেখে মনে হল, সে বেশ রেগে গেছে।

আমি দুমরানো কাগজের মতো পার্কের সিটটায় পড়ে গেলাম, আমার বুকের ভেতরটা যেন কেমন বিষম শব্দ করছে, আরও মনে হচ্ছে আমার পা, দুটো হাত সবই নিঃসাড় হয়ে বিকলাঙ্গ এর আবহ সৃষ্টি করছে। খানিকক্ষন পরে চোখটা ফোনের দিকে যেতে দেখতে পেলাম, ফেসবুকে কথা আমাকে ব্লক করেছে। কথার ফেসবুক প্রোফাইল ছবির ওপর অজান্তেই দু-ফোঁটা চোখের জল ঝরে পড়লো। মোবাইলটা মুছে পকেটে ঢুকিয়ে রাখলাম। কিছু দূরে, ভেজা চোখটা দেখলো ছেঁড়া কিছু পাপড়ি বাতাসে আর মাটির সঙ্গে একটু একটু করে মিলিয়ে যাচ্ছে।

এই গল্প গুলি কি পড়েছেন- 
স্কুল জীবনের কষ্টের প্রেমের গল্প 

হৃদয় ছোঁয়া প্রেমের গল্প 

দুঃখের ছোট গল্প- “ভালোবাসা অমর”:-

মৌমিতা এক ঝটকায় হাতের সব বালা, গহনা খুলে ফেললো। এই ফুলশয্যার খাট তার কাছে কাঁটার শয়নকক্ষ ছাড়া কিছু নয়। মৌমিতা নিলয়কে বলল,”আমার বাবা আপনাকে পছন্দ করে, তার মানে এই নয় আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মেনে নেবো। বাবা জোর করে আমার ভালোবাসাকে খুন করেছে। “

দুঃখের ছোট গল্প
দুঃখের ছোট গল্প

নিলয় বলল “কিন্তু তুমি আমায় বলতে পারতে আগে তাহলে কখনো তোমায় আমি বিয়ে করতাম না”। কিছুক্ষন দুজনের মধ্যে বাদানুবাদ চলতে লাগলো, একটা সময়ের পর দুজনেই থেমে যায়। মৌমিতা খুব কাঁদতে থাকে আর বলে, “আমি কখনোই আপনার স্ত্রী হতে পারিনা।” আমি অন্য কারোর বাগদত্তা।” নিলয় কথাটি শুনে চমকে ওঠে, ভাবে এটা কি হলো আমার সাথে।

মৌমিতা ভেজা ভেজা চোখে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলে- “আমি ভালোবাসতাম, শৈবালকে, বি.এ সেকেন্ড ইয়ার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।” বেশি দিন নয়, তখন সবেমাত্র আমি কলেজ জয়েন করেছি, দিনটা ছিল কলেজের নবীন বরণ, আমার বান্ধবি কথা আর শৈবাল ছিল আমার সাথে। সেদিন বাড়ি ফিরতে দেড়ি হচ্ছিল বলে মা বারবার ফোন করছিল। আমাদের বাড়ি থেকে কলেজ বেশি দূর নয়, হাঁটা পথ। তবুও ভয় করছিল। কিছুটা দূরে যাওয়ার পরে শৈবাল বলল, ‘মৌমিতা এই রাস্তাটা একটা বাজে মাতালদের আখড়া, তুই যাস না, আমরা সবাই সামনে ওই বাড়ির উপর শর্টকার্ট দিয়ে চলে যাই চল।’

আমি সেদিন ওর কথা শুনিনি, আমি একাই যাই সে রাস্তা দিয়ে। কিন্তু আমার ওপর চড়াও হয়েছিল দুটো মাতাল, এমনকি আমার শাড়ির আঁচলে তারা মদ ঢেলে এগিয়ে আসছিল।” কিছুটা সময় মৌমিতা চুপ করে থাকল। নিলয় বলল- “তোমাকে আর কিছু বলতে হবে না, আমি বুঝতে পেরেছি”।

“তুমি ভুল বুঝছো, সেদিন আমার ওখান থেকে চেঁচানো শুনে শৈবাল আমাকে উদ্ধার করে, আর আমাকে আমার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। কিন্তু আমার বাবা…! বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলে মৌমিতা।

ব্যর্থ প্রেমের ছোট গল্প
ব্যর্থ প্রেমের ছোট গল্প
<

“আমার বাবা শৈবালকে পুলিশের হাতে আটক করায় আর ফাঁসিয়ে দেয়, যে আমার সম্মান নিয়ে সে খেলা করেছে।” এরপর অনেক চেষ্টা করেছিলাম, শৈবালকে বাঁচাতে, কিন্তু পারিনি”। নিলয়ের চোখ থেকেও টপটপ করে জল পড়তে লাগলো। মৌমিতা বলল, “তোমার চোখে জল কেনো?, ক্ষতি তো আমার হয়েছে”।

নিলয় বলল- “তুমি এই কয়েকদিন এখানে থেকে নাও, অষ্টমঙ্গলায় তোমাকে দিয়ে আসবো, বিশ্বাস রেখো, ঠকবে না”। বিছানার একটি বালিশ নিয়ে সোফায় শুতে গেল নিলয়। খুব চেঁচিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে হল, কিন্তু পারল না। মনে মনে ভাবতে লাগল, ভালোবাসা না পেলে কতটা যন্ত্রনা হয়, তা আমার থেকে কে ভালো বুঝবে??

সৌগত প্রামাণিক

গল্প গুলির বুননে-
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
সৌগত -এর বিশেষ কিছু লেখা- 
জীবন যুদ্ধের কাহিনী 

মেয়েদের জীবনের কিছু বাস্তব গল্প 

দুঃখের প্রেম কাহিনী- দুটি গোলাপ 
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

নতুন দুঃখের ভালোবাসার গল্প। দুঃখের ছোট গল্প। ব্যর্থ প্রেমের ছোট গল্প। very sad bengali love story.

Spread the love

Leave a Reply