কবি গুরুর জন্মদিন আর কবিগুরুকে নিয়ে কবিতা হবে না, এমনটা কি হয়! ২৫ বৈশাখ কে মাথায় রেখে কবি স্মরণে ৫ টি কবিতা থাকল আপনাদের জন্য।

কবিগুরুকে নিয়ে কবিতাঃ-

মননে রবীন্দ্রনাথ

সৌগত প্রামাণিক
সাহিত্যে তোমার অমর দীপ্তি,
শ্রেষ্ঠ গীতিকবি 
অনন্য যিনি নোবেলজয়ী 
পুব দুয়ারের রবি।
তুমি যে তোমার নিজ তুলনার 
লেখনীর মহিরুহ; 
প্রতিভার এক বহ্নিশিখা
চরনতলে প্রনাম নিও।
জীবনে কতটা শিখিয়েছো মোরে 
বিচিত্র তোমার লেখায়
কতো ছোটোগল্পে, কাব্যে দেখেছি ,
কতো নাট্য ভূমিকায়।
ছোটো থেকে তুমি কাব্য দর্শনে 
জ্ঞানের চূড়ামনি, 
তোমার সত্তা ছড়িয়ে পরত 
বাতাহে হেলিয়া ধ্বনি।
তুমি আমাদের পথ দেখিয়ে 
টুটিছ দ্বেষ-হিংসারে
কণ্ঠে লয়ে আপনারে 
তবে "একলা চলো রে"।

তুমি তো কবি বিশ্বপ্রেমের 
শ্রেষ্ঠ প্রেমিক ছিলে;
সুখের কিংবা দুঃখে হোক 
আনন্দে বা বিরহে।
মানবতার প্রতীক হয়ে 
হৃদয়ে আছো তুমি 
লেখক শুধু হয়ে নও 
করেছো জীবনগামী।

জীবনে কতো কি ঝরেছে তোমার 
বিদিশার অনিমেষে 
তবুও শানিছ কলম তোমার ,
নির্ঝরের স্বপ্নভঙে।
তোমার যা কিছু ভালোবাসা
আর স্বদেশ-প্রেমের গা্‌
বাঙালি তথা বিশ্ব জেনেছে 
গরিমা রটিয়ে সম্মান।
হে বিশ্বকবি ভানুসিংহ 
মোদের রবীন্দ্রনাথ
প্রনমিতে তব এই দিনে রব
পঁচিশে বৈশাখ।।
কবিগুরুকে নিয়ে কবিতা
কবিগুরুকে নিয়ে কবিতা
পড়ুনঃ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষামূলক বাণী 

প্রাণের রবি

সুস্মিতা গোস্বামী
প্রাণের ঠাকুর রবি, তুমি বাঙালী কবি তোমারে করি সহস্র কোটি প্রণাম।
 
তুমি শুধু বাংলার নও, তুমি শুধু ভারতের নও
তুমি সারা বিশ্বের স্বর্ণাক্ষরে রচিত নাম।

১৯১৩ যখন, নোবেলজয়ী হলে তুমি তখন,
সমগ্র পৃথিবীর কাছে উঁচু করলে বাঙালীর সম্মান।
আপামোর বাঙালীর তুমি,
তোমার কলমের লেখনীতে পাই মোরা জীবন্ত প্রাণ।

প্রতিবাদ-বিদ্রোহ, প্রেম ভালোবাসা ধ্বনিত হয়েছে তোমার লেখনিতে
তোমার কবিতায় পেয়েছি দিশা, তোমার কাব্য মিশেছে মোর ধমনীতে।
 
সারা পৃথিবী আজ আত্মহারা তোমার সংগীতে,
আজও মোরা প্রভাবিত তোমার সংস্কার আর রীতি নীতিতে।

শুধু তোমার কাব্য বা নাটকে নয়, তোমার গানেও ভেসে ওঠে জীবনের জীবন্ত জল ছবি।
তোমারে প্রণাম জানাই হে মোর বিশ্বকবি, রবি। 

শিশুমন যখন আমার গদ্যে নিয়েছে প্রাথমিক পাঠ
পড়েছি তখন কবিগুরু তোমার সহজপাঠ।

পৃথিবীর দৈর্ঘ্য আছে গ্রন্থ আছে আয়তন আছে বেশ,
তবু নেই হে বিশ্বকবি তোমার লেখার শেষ।

কবিদের কবি তুমি, কবিগুরু তাই
তুমিই শিখিয়ে গেছো হিন্দুমুসলিম মোরা ভাই ভাই।

বঙ্গভঙ্গে যখন শুনলে বাঙালীর ক্রন্দন,
মিলন উৎসব আনলে তখন—রাখীবন্ধন। 

ছুঁড়ে ফেলেছিলে তুমি ইংরেজ প্রাপ্ত নাইট উপাধি
জালিয়ানওয়ালাবাগের তুমিই প্রথম প্রতিবাদী। 

তোমার কবিতায় উঠেছিল স্বদেশী আন্দোলনের জন্য উত্তাল ঝড়,
যাতে অনুপ্রাণিত হয় প্রতিটি ভারতীয় ঘর।

তোমার কবিতা পড়েছি, নাটক পড়েছি, পড়েছি উপন্যাসের নানাদিক 
তাতে ফুটে উঠেছে তোমার ভাবনার শ্রেষ্ঠ আঙ্গিক।

তাই তো কবি তোমার জয়গানে ভরে গেছে দেশ, 
কবিগুরু তোমার কথা যতই লিখি, লেখার হবে নাকো শেষ।

প্রতিদিন পুব আকাশে উদয় হয় নতুন রবি আশা রাখি, নতুন রূপে জন্মাবে আবার “মোদের বিশ্বকবি”। 
পড়ুনঃ- রবীন্দ্র স্মরণে কবিতা 

২৫ বৈশাখ নিয়ে কবিতাঃ-

“রবি বৃত্তে একা”

বুলবুলি ব্যানার্জী
এক বৈশাখ থেকে আর এক শ্রাবণ
এটাই তো সেই জীবনের মাপ
তারপর শুধু মাটি নির্মাণ পাথর খোদাই
রাশি রাশি সব রঙ তুলি খেলা
এতেই স্মরণ এতেই পূজা সারা হয়ে যায় বরণে।

যুগের গোপনে জমেছে এত গোপন
মুখোশে এঁটেছি পরিযায়ী দেহ
ভালোবাসি তাই বিশ্বাসে মানি
অন্ধকারের অরূপ রূপেতে 
আছে সে অন্য কেহ
তাকে জেনে নিতে এ পথে সে পথে
বৃষ্টি গন্ধে মাটি মাখা সুরে
পায়ে পায়ে হেঁটে যাই
বাউলিয়া আমি তোমারি আখরে
তোমারই যে গান গাই। 

আঁধারের মতো অসীমের এই কাল 
বড় ভয়  লাগে মৃত প্রেম বুকে
বেহুলার মতো একা এই  ভেসে যাওয়া
জল ভেজা মন ভাষা হীন চোখ 
শুধু তোমাকেই বুঝি খোঁজে  
যা কিছু উজাড় দিয়েছিলে তুমি
হারিয়ে ফেলেছি সবটুকু তার
মুঠি খুলে দেখ কিছু নেই সঞ্চয়। 

শূন্য এখন,
আমার সকল পূজার থালা। 
আমার সকল চেতনার বেলা 
আমার সকল উদাসী সময়
আমার সকল বৃত্ত যাপন 
থেমে আছে যেন সেই কবেকার
বৈশাখী এক বেলা অবেলার শ্রাবণে।
২৫ বৈশাখ নিয়ে কবিতা
২৫ বৈশাখ নিয়ে কবিতা
পড়ুনঃ- রবি ঠাকুরের জীবনের কিছু বিশেষ ঘটনা 

মননে রবি

সৌগত প্রামাণিক
আজও দেখি ওই জোড়াসাঁকোবাড়ি,
সাদা-পীত চুনে মাখা ঘর 
হেথায় ছুটিত শিশু রবি 
থাকিল জীবনভর।
অভিলাসে যার সৃষ্টি শুরু 
নোবেলে বিশ্বজয়
জীবনের ইতিকথার সাথে
সাহিত্য তার শিল্পময়।

তোমার লেখা, গল্প, ছবি
সৃজনের কাব্য ছড়া ;
উপন্যাসটা স্বদেশীভাবে 
নামাঙ্কিত ছিল "গোরা"।
তুমি ছিলে মোর বাঙালীর 
সর্বকালের সেরা, 
জাতীয়তাবোধ জেগেছিল
স্বদেশ প্রেমে ঘেরা।
জীবন যুদ্ধে শ্রেষ্ঠ সৈনিক 
পরাক্রমী লিখন,
তুমি ছিলে প্রেরনা মোদের 
কখনো প্রেমের দহন।

প্রকৃতি প্রেমে মুগ্ধ ভীষন 
ঔপন্যাসিকও তুমি 
সরল গ্রামের স্নিগ্ধ কথায় 
মনিহারাও খুব দামি।
রচে ছিলে জাতির গান ,
ঐক্যে বাঁধা সুর 
তাহার উপমা তুমিই ছিলে 
'মৌ' থেকেও মধুর। 

প্রেমিক বুঝেছে তোমার গান 
পাঠক বুঝেছে তোমায় 
জীবন চলার পথিক হয়েছো 
শ্রদ্ধা তোমারে জানায়।
bengali poems dedicated to Rabindra Nath Tagore
bengali poems dedicated to Rabindra Nath Tagore
<

তোমার তুলনা তুমি

সুস্মিতা গোস্বামী
'আমার পরান যাহা চায়' 
লিখেছিলে এক অপরূপ ভঙ্গিমায়! 
কখনো প্রেম কখনো বিরহ
দুইয়েরই অসীম সৃষ্টি তোমার এই লেখায়। 

মাঝে মাঝে তব দেখা পাই  
অসামান্য এক কীর্তনগান যার বিকল্প হয় নাই 
ভক্তির আধার মিলিয়ে আনে অশ্রবারি 
কখনো সে প্রভু দৃশ্যমান তো কখনো কয় অদৃশ্য হয়ে যাই।

বাঁচান বাঁচি মারেন মরি, বলো ভাই ধন্য হরি
অগাধ ভক্তি মনে প্রাণে ও দেখি তোমায় আঁখি ভরি 
ঈশ্বরেরই কথা সে এক ঈশ্বরেরই হাতে
তোমার চরণেই মাথা নত করে আমি যেন মরিতে পারি!

বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই , মরতে হবে। 
ভয় যদি পাই তাহলে দেশকে ভালোবাসব কবে? 
তাই তো তুমি বুঝিয়েছিলে কবি তোমার লেখার মাঝে। 
বুকে বল দিয়ে তোমার লেখাই যে সাহস যোগাবে! 

মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলে 
চেয়ে থাকি তোমারই আশায়, তুমি আসবে বলে
তুমি যে শিখিয়েছ অপেক্ষা করা কি
তাই তো তুমি হৃদয়ে থেকেও দূর ভবনে রইলে।

'তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম' 
সত্যিই কবি তুমি সবার প্রাণসম 
থাকবে তুমি, থাকবে তোমার লেখা
আজীবন, আমরণ উৎসাহতম। 

'পুরান সেই দিনের কথা'
লিখেছিলে তুমি দিয়ে প্রবল ব্যথা  
যন্ত্রণা যে কেউ দেখে না তোমার
ভাবে তোমার জীবন সুখী গল্প গাঁথা। 

প্রেমের জোয়ারে, ভাসাবে দোহারে।
উদ্বেলিত প্রেমিক প্রাণ মোহিত করে আমারে!
প্রেমে ডুবে যাও, ভালোবাসায় ভরিয়ে দাও 
মুক্ত হও সবাই প্রতিবন্ধকতার খাঁচা ছেড়ে। 

একটুকু ছোঁয়া লাগে, একটুকু কথা শুনি
ফাল্গুনের পরশ কি অপার বিস্ময়কর তোমার গানে জানি!
কবি তুমিই পারো এই পৃথিবীর মাঝে 
সৃষ্ট করতে প্রেমাতুর শিরা ধমনী। 

ফিরে চল মাটির টানে 
প্রকৃতির ছোঁয়াও সুন্দরী, তোমারই সেই গানে।
ধরিত্রীর বুকের শ্রেষ্ঠ রতন তুমি
ধরিত্রীও তা যে জানে। 

দিবস রজনী আমি যেন কার আশায় আশায় থাকি 
কবি তোমাকে এই অনুভুতিহীন সমাজে আজও বড় ডাকি 
তোমাকে যে বড় দরকার গুরুদেব তোমার লেখার সাথেই
অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতেই তোমারে হৃদয়ে রাখি। 

যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে 
শূণ্যতা তোমার দেহের হলেও, হৃদয়ের গভীরে যে তোমার লেখা দাগ কাটে 
তুমি যে আমাদের অভিভাবক, হে গুরুদেব
তুমি না থাকলে দিন যে পরিণত হবে রাতে। 


যে রাতে মোর দুয়ার গুলি ভাঙল ঝড়ে
অচেনা আহ্বান কে চিনে নিতে তোমার মতো করে কে পারে? 
তুমি লেখোনি কোন লেখা, বোঝাওনি কোন অনুভূতি? 
তাই তো তুমি প্রাণের কবি রবে হৃদমাঝারে।  

দেখেছি রুপসাগরের মনের মানুষ কাঁচা সোনা
রবি ঠাকুর তোমার কীর্তি যায় না গোনা
তাই তো তুমি বিশ্বকবি 
তুমি নিজেই তো নিজের তুলনা। 

তোমার লেখায় কখনো সুখ 
কখনো দুঃখের স্পন্দন। 
কখনো জয়ের গীতের হাসি
কখনো সর্বহারার ক্রন্দন। 

প্রকৃতির রুপের অপার মাধুরী
হোক ফাল্গুনী বা বসন্তের কুঁড়ি
তোমার গানে বা কবিতার মাঝে
শ্রাবণেও ঝরায় বৃষ্টিবারি। 

সঙ্গীত তোমার পেয়েছে স্বীকৃতি 
হয়েছে দেশের জাতীয় গীতি। 
তোমার গান ই যেন হয়ে ওঠে একদিন
মানবসমাজের মানব নীতি। 

স্বাধীনতার আগুন জ্বেলেছ তুমি 
বলেছ দেশমাতার চরণ চুমি। 
মায়ের জন্য লড়াই মোদের
মায়ের চরণেই প্রাণ সঁপে তারে নমি।    

প্রেমের ছোঁয়ায় মরুদ্যান 
বিরহে ধ্বনিত গান
কবিগুরু তুমি কোনটা করোনি
বিশ্ববাসীকে দান? 

ক্ষুদ্র মাথায় বৃহৎ মানুষের
চিন্তা করা বড়ো দুঃসাধ্য। 
তোমাকে নিয়ে যতোই লিখি
নগন্য হতেই বাধ্য। 

সবাই ভাবি তুমি বড়োই সুখী 
তাই তো তোমায় আভিজাত্যের চোখে দেখি 
যদি জানত তোমার কিসের ব্যথা 
তাহলে বোঝা যেত তোমার কবিপ্রাণ কতটা দুখী! 

তবুও তুমি সৃষ্টি থেকে থাকোনি বিরত
সুখে থাকো বা দুঃখে , ঝরিয়েছ অমৃত। 
তোমার কথা শেষ করা অসম্ভব 
বহু যুগ ধরে মোরা যাই বলি যত। 

বুঝতাম না এককালে যে গানের মানে
সেই গানই আজ ধ্বনিত হয় সবার মনেপ্রাণে 
অজানা অনুভুতি গুলো প্রস্ফুটিত হয় 
তোমার গানেরই সেই কথার টানে। 

তোমার চরণে প্রণাম জানিয়ে 
শেষ করি লেখা তোমাকে নিয়ে 
তোমার তুলনা তুমিই রবি
তোমার রসদ ই রাখবে মোদের বাঁচিয়ে।।

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও  বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
পড়ুনঃ-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষামূলক বাণী 

রবি ঠাকুরকে নিয়ে কিছু কথা 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

কবিগুরুকে নিয়ে কবিতা। ২৫ বৈশাখ নিয়ে কবিতা। bengali poems dedicated to Rabindra Nath Tagore

Spread the love

Leave a Reply