valo premer golpo. বন্ধুদের সহযোগিতাতেও কিছু কিছু প্রেম পূর্ণতা প্রাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়। এমনই একটি ভালো প্রেমের গল্প আজ নিয়ে আসা হয়েছে।
valo premer golpo ভালো প্রেমের গল্পঃ- ডিয়ার ফ্রেন্ডস
অরিজিৎ, প্রদীপরা ছোট বেলা থেকেই এক স্কুলে পড়তাম আমরা সবাই । প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক এক সাথে পড়ে আমাদের বন্ধুত্ব খুব গাঢ় হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই কলেজে একসাথে সুযোগ পেলাম না আমরা। তাছাড়া কৌশিক ডাক্তারিতে সুযোগ পেলো। সুপ্রতিম আবার হোটেল ম্যানেজমেন্ট এ চান্স পেলো, সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলাম।
দুঃখ হলো সম্রাটের জন্য , ও ইংরেজিতে ব্যাক পেলো। তবে সেটা অন্যদিক থেকে ভালো হলো। ওদের রেস্টুরেন্ট আমরা শনিবার রাতে একত্রিত হতাম যে যারা সুযোগ মতো। ফলে বন্ধুত্বটা আমাদের টিকে থাকলো। শুভজিৎ শুধু আসতো না। ও কোলকাতায় কোন কলেজ সুযোগ পায় নি। ও ব্যাঙ্গালোরের কোন একটা কলেজ ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে ওর চিঠি আসতো। ও আসলে গায়ক হতে চেয়েছিলো। কিন্তু ওর বাবা চাইতো ও ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করুক।
আসলে এর পিছনে একটা লম্বা কাহিনী আছে। ওরা রয় চৌধুরী। আপনারা নিশ্চয়ই বারুইপুরে জমিদার রায় চৌধুরীদের কথা জানেন। ওরা ওদের বংশধর। কিন্তু ওর বাবার বাল্যবন্ধু মানে, সহপাঠী বসন্ত রায় চৌধুরী ওদের বংশ তালিকা দেখিয়ে প্রমান করেছিলেন। ওর বাবার বাবা আসলে বসন্ত রায় চৌধুরীর, দাদুর রক্ষিতার ছেলে ছিলেন। এই অপমান বুকে ওরা কোলকাতায় চলে আসে।
বসন্ত রায় চৌধুরী পরে নিজের সম্পত্তি প্রতিপত্তি খুইয়ে কলকাতায় এসে তার প্রতিবেশী হয়। পুরানো ক্ষত এতেই চাগাড় দিয়ে ওঠে। টাকা পয়সার দিক দিয়ে নীচু দেখিয়ে সে বসন্ত রায় চৌধুরীকে নিজের আত্মাকে শান্তি দিত। কিন্তু সে চাইতো আরও বেশি কিছু। তাঁর ছেলে যেন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ওর মুখ উজ্জ্বল করে আর বসন্ত রায় চৌধুরীর থোতা মুখ ভোতা হয়ে যায়, এই আশায় সে সব কিছু করতে রাজি ছিল।
এখানে গল্পটা এতোটা সহজ নয়।।মজার ব্যাপার হলো বসন্ত রায় চৌধুরীর মেয়ে আর শুভজিৎ -এর প্রণয় সম্পর্ক ছিলো অনেক আগে থেকেই। বসন্ত রায় চৌধুরী সে বিষয়ে জানতো। কিন্তু শুভজিৎকে তিনি কথাও দিয়েছিলেন তার বাবার বিরুদ্ধে গিয়ে সে ওদের বিয়ে দেবে ও ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করলে, কারণ এতে তার প্রতিশোধে নেওয়া হবে ।
কিন্তু আসলে বসন্ত রায় চৌধুরী মানুষটি খুব খারাপ ছিলেন। পুরোপুরি বাংলা সিনেমার খলনায়ক চরিত্র। শুভজিৎ-এর তখন ফাইনাল সেমিস্টার পরীক্ষা বাকি মাত্র সাত দিন। উনি ওনার মেয়ে সোমির বিয়ে ঠিক করলেন এক ধনী ব্যবসায়ী সাথে । এবং শুভজিৎ -এর বাবাকে উত্তেজিত করে দিলেন কথার মার প্যাচে। যাতে শুভজিৎ কিছুতেই এ শহরে আসতে না পারে।
পড়ুনঃ- স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প- সন্দেহ
হুঁ বাল্য বন্ধুরা কখন কাজে আসবে শুভজিৎএর! আমাদের বন্ধুদের গ্রুপ থেকে টাকা পয়সা জোগাড় করলাম। সোমিকে বিয়ে করে ওকে নিয়ে গিয়ে, ও যাতে ব্যাঙ্গালোরে রাখতে পারে ঘর ভাড়া করে। শুভজিৎ ব্যাঙ্গালোরে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে দিলেই হয়ে গেল। মোটামুটি ভাবে তিন মাস সংসার খরচ আমরা জোগাড় করে নিয়ে ছিলাম। ওরা নিশ্চিত তিন মাসের মধ্যে চাকুরী জোগাড় করে নিতে পারবে এ বিশ্বাস ছিলো আমাদের। দক্ষিণেশ্বর ওদের বিয়ে দিয়ে আমরা, ওদের বিদায় করলাম।
কিন্তু ঘটনায় এবার টুইস্ট এলো। আমরা দেখলাম নির্দিষ্ট দিনে আবার সোমির বিয়ে হলো ধুমধাম করে। শুভজিৎ -এর কোন খোঁজ খবর ছিলো না মাস দুয়েক তিনেক। পরে আবিষ্কার করলাম আমরা শুভজিৎকে, ওর বাড়িতে ড্রাগের নেশায় আসক্ত হিসেবে। ওর বাবা আর আমরা বন্ধুরা বোঝালাম অনেক। ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চায় নি, ও গান গাইতে চেয়ে ছিল। তাই ওকে সেটাই করতে দেওয়া হোক। সোমি চলে যাওয়ায় ও আরো বেশি জেদি হেয়ে গিয়েছিল।
ও খুব তাড়াতাড়ি বড় গায়কে পরিনত হয়ে গেল। গায়ক হিসেবে নাম কামনোতে খুশি হলো কাকু। কারণ বসন্ত রায় চৌধুরী সাথে কোন অজানা কারণে সোমির আর কোন সম্পর্ক নেই।
যাইহোক বছর পাঁচেক পর হঠাৎই একটা টিভি রিয়েলিটি শোতে আমরা দেখতে পেলাম সোমিকে। সোমি এখন উদিয়মান লেখিকা। আমরা বন্ধুদের গ্রুপে খবরটা ছড়িয়ে দিলাম। সোমির অপরাধ কি? ঐ ইন্টারভিউতে ও শুভজিৎ নাম না করে শুভজিৎ আর সোমির প্রেম কাহিনিটা বলছে রসিক কসিয়ে। এবং ও দাবি করছে শুভজিৎ সফল হত না যদি সোমি ওকে ওই দিন ছেড়ে না দিতো। আমাদের বন্ধুদের গ্রুপ ওখানে হাজির হয়ে ওকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করে দিলাম।
হঠাৎ ওকে বাঁচাতে হাজির হলো শুভজিৎ এবং ও সোমিকেই সমর্থন করলো। ঠিকই তো, ওরা বিয়ে করে নিলে সেই ওকেও জীবন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হতো। ও হারিয়ে যেতো কোথাও সাধারণ মানুষের ভিড়ে। শুভজিৎ ওকে আজো ভালোবাসে আমরা জানি। তাই আজো ও কাউকে বিয়ে করে নি। কিন্তু সোমির চোখের জল বলে দিলো সোমি ওকে আজও ভালোবাসে। তাইতো বছর ঘুরতে না ঘুরতেই স্বামী হারিয়েও , আজও সোমিও বিধবা হয়েই আছে। বিয়ে করে নি আর। শুধু কোনো একজনের জন্য অপেক্ষা করে, কোনো একজনের ফেরার পথে।
আমাদের বন্ধুদের গ্রুপ কি করতে আছে! ওদের আবার বিয়ে দেবো আমরা। ষড়যন্ত্র শুরু করলাম ওদের মধ্যে মিলন ঘটানোর।
এই “ডিয়ার ফ্রেন্ডস” গল্পের ভাবনায়-
লেখকের অন্যান্য কিছু গল্প- মজার প্রেমের গল্প- সারপ্রাইজ হাসির গল্প- বাছাই করা ছোট গল্প
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)[ শুধুমাত্র পাঠক এবং লেখকদের জন্য]
“ভালো প্রেমের গল্প। valo premer golpo. new love story.”
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।