প্রেমের গল্প BENGALI LOVE STORY
আজ আমি আমার প্রেমের গল্প তোমাদের সাথে শেয়ার করব। প্রেম- ভালোবাসা সে তো জীবনে আসতেই পারে। রাস্তায় ট্রামে, ট্রেনে কাউকে দেখে আপনার ভালো লাগতেই পারে।। আপনি হঠাৎ করে তার প্রেমে পড়ে যেতেও পারেন।। ও হো দেখুন এত কিছু বলে যাচ্ছি আর আপনাদের আমার পরিচয়টি দিচ্ছি না।
নমস্কার বন্ধুরা আমার নাম অনিকেত, আমি বর্তমানে একজন ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট। আজ আমি আমার প্রেমের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। যদিও আমি নিজের পার্সোনাল ব্যাপারে খুব একটা মুখ খুলি না। তবুও এই সুবিশাল ইন্টারনেটের জগত, এখানে তো আমাকে আর কেউ চিনবে না, তাই বলতেও কোনো দ্বিধা নেই। আমার নামে লক্ষ লক্ষ অনিকেত আছে এই পৃথিবীতে, সে যাই হোক আমার কথায় আসি।।
আমার জীবনে প্রেম আসে যখন আমি একাদশ শ্রেণীতে পড়তাম। খুব অল্প বয়সেই পেকে গেছি তাই না বলেন! আসলে তার সাথে আমার দেখা তারও আগে। আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি, ফাইনাল পরীক্ষার পর মামা বাড়ি যাচ্ছিলাম ঘুরতে। বাসে উপচে পড়া ভিড়, মনে হচ্ছিল যেন দুনিয়ার সমস্ত লোক এই বাসটিতেই এসে উঠেছে।। যেহেতু আমি মাঝ রাস্তায় উঠেছি সেহেতু আমিও কোন সিট পাইনি।।

সেই বাসেই একটি সিটে বসেছিল মেয়েটি, আর তার পাশেই দাঁড়িয়ে আমি।। প্রথম আলাপ শুরু হয়েছিল May I help you থেকে। আমি আবার অচেনা মানুষের সাথে, বিশেষত মেয়েদের সাথে কথা বলতে, বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না।। সে যাই হোক আমার পিঠে ও দুই হাতে ব্যাগ থাকায়, মনে মনে ভাবছিলাম একটু সহযোগিতার নিলেও মন্দ হয় না, পিঠের ব্যাগ টা খুলে তাকে দিলাম ধরার জন্য।।
প্রায় এক ঘন্টার জার্নি শেষে এবারে নামার পালা।। মেয়েটির কাছ থেকে আমার ব্যাগটি নিয়ে নিলাম।।ছোট্ট করে একটা ধন্যবাদও জানিয়ে দিলাম।। এই ‘ধন্যবাদ’ কথাটা বলা ছাড়া আর কোনো কথাই আমি তখন বলিনি, মনে অনেক প্রশ্ন উঠছিল ঠিকই কিন্তু সাহস পাচ্ছিলাম না জিজ্ঞাসা করার।
অবাক হলাম তখনই যখন আমি দেখলাম আমি যেখানে নামছি সেই মেয়েটি ও তার সাথে থাকা লোকটাও সেখানে নামল কেন?? আরও অবাক হলাম তখনই যখন দেখলাম, আমি, সেই অচেনা মেয়েটি ও তার সাথে থাকা লোকটি ঠিক একই বাড়িতে, মানে আমার মামা বাড়িতে গিয়ে ঢুকছি।
সে যাই হোক, সেখানে বিস্তারিত আলাপ করিয়ে দিলেন মামা।। পরে জানতে পারলাম মেয়েটি মামার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মেয়ে। অনেকদিন পরে যখন আমরা বন্ধু হই তখন আমি জানতে পারি যে, মেয়েটির বাবা আমাকে চিনত, সেইই মেয়েটিকে বলেছিল, আমার ব্যাগ-ট্যাগ ধরতে। কিন্তু কি আশ্চর্য দেখুন, আমাকে চিনেই যখন তখন কথা বলতে কি হচ্ছিল?

সে যাই হোক, যেহেতু আমরা একই ক্লাসে পড়তাম, এরপরেই আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে যায় এবং আমাদের যত কথা হতো সব পড়াশোনাকে ঘিরেই হত। কথা হত মোবাইলেই। কারন আমার বাড়ি থেকে তার বাড়ির দূরত্ব অনেক বেশি।। তবে তখনও আমরা সম্পর্কে জড়াইনি।
যখন আমরা ক্লাস ইলেভেনে পড়ি তখন আমরা সম্পর্কে জড়াই। তবে আমি কিন্তু প্রথমে সম্পর্কের ব্যাপারে বলতে যাইনি। প্রস্তাব পেয়েছিলাম মোবাইলের মাধ্যমেই। আমি আগেই বলেছি মেয়েদের সাথে কথা বলার মত সাহস আমার হয়ে ওঠেনা বিশেষত আবার এসব ব্যাপারে।
কালক্রমে তার বাবা বদলি হয় কলকাতায়।। বাধ্য হয়ে সে, তার পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় পাড়ি জমায়।
দূরত্বটা অনেক বেড়ে গেল, বলাবাহুল্য এখনো সে কলকাতাতেই থাকে। যাবার আগের দিন শেষ দেখায় আমার হাত ধরে খুব কেঁদেছিল মেয়েটা। আর যাবার আগে তার কয়েকজন বন্ধুর সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে যায়। কেমন যেন হঠাৎ করেই সব শেষ হয়ে গেল। সেদিন কোনোমতে বিষাদ ভরা মন নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম। কয়েকদিন কিছুই আর ভালো লাগছিল না। পরিচয়টা পূর্বের হলেও মাত্র দুই বছর আগেই তো আমরা পরস্পরের কাছাকাছি এলাম। আর এই অল্প সময় টুকুতেই নিজেরা না চাইতেও ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলাম। বাড়িতে কিছু বলিনি, শুধু মাথা ব্যাথা করছে বলে চালিয়ে দিয়েছিলাম।
..
..
..

কি ভাবছেন আমাদের সম্পর্কটা ভেঙে যাবে? একেবারেই নয় দূরত্ব বাড়লেও সম্পর্কে তার কোনো প্রভাব পড়েনি বরং আগের থেকেও অনেক মজবুত হয়েছে।
এখন আর তেমন দেখা সাক্ষাৎ করা হয়ে ওঠে না, যদিও আগেও অতটা দেখা করতাম না বছরে মাত্র হাতে গোনা কয়েক বার। যখন সে তার পুরনো বাড়িতে আসে তখনই দেখা হয়।। আর এমনিতেও ভিডিও কলে তো দেখা হয়ই। আর তখন শুধু ভাবি দেখতে দেখতে অনেক বড় হয়ে গেছে মেয়েটা। এই তো সেদিন বাসে হঠাৎ দেখা হল, এই কয়েকদিনেই বড় হয়ে গেল মেয়েটা আর যতই দিন যাচ্ছে মেয়েটা ততই সুন্দর হয়ে উঠছে।
আমাদের এই সম্পর্ক আর কয়েকজনের থেকে একেবারেই আলাদা,, হুম বর্তমান দিনের রোমান্টিক যুগলের থেকে অনেকটাই আলাদা,, একেবারেই সাদামাটা। আমাদের সম্পর্ককে বলা যায় অনেকটা প্রেমিক প্রেমিকার নয় বরং, বন্ধুত্বের।।
আর কয়েক জনের মত ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলে কথা বলাটা আমি পছন্দ করিনা, ধীরে ধীরে সেও মানিয়ে নিয়েছে।

কথা বলি না বলতে, কি বলবো সেটাই খুঁজে পাইনা।। মাত্র কয়েক মিনিট কথা বলি।। আর কথা বলার সময় কয়েকটি সাধারণ কথা ছাড়া বেশিরভাগ সময়টাই আলোচনা হয় বিভিন্ন knowledgeable বিষয় নিয়েই, তাছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপে কথা তো হয়ই, আর এতেই স্বস্তি।
তবে কেন জানিনা মেয়েটা আমার কোনো ফেসবুক পোস্টেই বিশেষ খুব একটা রিয়্যাক্ট করে না। শুধুমাত্র কে কি কমেন্ট করলো সেটার দিকে নজর রাখে,,, আর পরে কথা বলার সময় সেই কমেন্ট নিয়েই যত অভিমান আর হাসি ঠাট্টা।
READ MORE:-
THE EYES HAVE IT বাংলা( ট্রেনে প্রেম)
….পড়াশোনা থেকে শুরু আমার প্রজেক্ট, সবকিছুতেই সে আমার সাথ দেয়।। তবে পুরোটাই digital help যাকে বলে আর কি। কিন্তু আমার কাছে সেটাই অনেক।
আমার নিজের কোনো ভাই-বোন বা দাদা-দিদি বা তেমন নির্ভরযোগ্য কোনো বন্ধু নেই যে আমাকে এইসব কাজে সাহায্য করবে,, আর সেই অভাবটা প্রায় অনেকটাই পূরণ করে সে ।
আমাদের relationship –এ আসার আজ প্রায় ৭ বছর হলো এখনও আমাদের সম্পর্ক আগের মতোই অটুট ও হাস্যজ্জল।

অনেকের মুখে শুনেছি অনেক দিন পর দেখা করতে গেলে নাকি কিছু দামী দামী গিফট নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু সে কোনো দামি গিফট নয় বরং আমাকে দেখেই বেশি খুশি হয়।
কোনো দামী রেস্টুরেন্ট নয় বরং সাধারণ ছোট-মাটা দোকানের খাবার খেতেই সে বেশি পছন্দ করে। আর খাবার টাকা আমি দিতে গেলে বলে, “অনেকটা রাস্তা টাকা খরচা করে এসেছিস খাওয়ার খরচাটা না হয় আমিই দিই”। ঠিক তখনই আমার মনে কেমন যেন একটা caring caring অনুভুতি আসে। বুকের ভেতরটায় কেমন যেন এক অনুভূতি শিহরণ দিয়ে যায়। কি জানি এটাই হয়ত ভালোবাসা।
কেউ একজন হয়ত ঠিকই বলেছিল- Relationship হোক আর Friendship, long distance is always best.
আমাদের টেলিগ্রামে আড্ডা দেওয়ার গ্রুপ :- https://t.me/charpatraOfficial
পড়ুনঃ-
এই ছিল অনিকেত-এর প্রেমের গল্প। তোমরা চাইলে তোমাদের গল্প বা কবিতাও কিন্তু আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারো। তোমার গল্প প্রকাশিত হবে আমাদের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে।

কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।