THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI BANGLA VALOBASAR GOLPO
THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI BANGLA VALOBASAR GOLPO লাভ স্টোরি
গল্পের লেখক সম্পর্কেঃ-
“THE EYES HAVE IT” গল্পটির লেখক হলেন RUSKIN BOND. তিনি একজন স্বনামধন্য লেখক। তিনি মূলত একজন ইংরেজি ভাষা সাহিত্যিক। তার বেশিরভাগ লেখাতেই পাহাড়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। তার বিখ্যাত লেখাগুলির মধ্যে রয়েছে- “The Room on the Roof”, The Angry River”, “Rain in the Mountains” ইত্যাদি।
THE EYES HAVE IT:-
আমি ট্রেনের যে বগিটিতে উঠেছিলাম, রোহানা পর্যন্ত সেটিতে আমি ছাড়া আর কোনো দ্বিতীয় ব্যক্তি সেখানে ছিল না। এরপর ট্রেন রোহানা ষ্টেশনে দাঁড়ায়। সেখানে একটি মেয়ে আমার বগিতে উঠে, তার সঙ্গে যে লোকগুলি ছিল, আমার যতদূর মনে হয়, তারা মেয়েটির বাবা-মা। তাদের খুবই উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছিল এবং মহিলাটি মেয়েটিকে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশ দিচ্ছিল। মহিলাটি মেয়েটিকে বলছে- কোথায় ব্যাগ- ট্যাগ রাখতে হবে, জানালাতে উঁকি মারা চলবে না, অপরিচিত লোকের সঙ্গে কথা বলা এড়িয়ে চলতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এরপর তারা ট্রেন থেকে নেমে যায় এবং মেয়েটিকে বিদায় জানায়। ট্রেনটি ধীরে ধীরে স্টেশন ছেড়ে যেতে শুরু করল। যেহেতু আমি সেই সময় পুরোপুরি অন্ধ ছিলাম এবং আমার চোখের কেবলমাত্র আলো- আধারির পার্থক্য টুকু বোঝার ক্ষমতা ছিল আমি বলতে পারছিলাম না যে, মেয়েটি দেখতে কেমন ছিল? তবে আমি এটা পরিষ্কার ভাবে বলতে পারব যে, মেয়েটি চপ্পল পড়ে ছিল। কারণ চপ্পলগুলি তার গোড়ালির সাথে লেগে একটা শব্দের সৃষ্টি করছিল।
মেয়েটি দেখতে কেমন ছিল সেটি আবিষ্কার করতে আমার বেশ কিছু সময় লেগে যেত, অথবা হয়ত আমি আবিষ্কার করতে পারতামও না। সে যাই হোক তার গলার স্বর কিন্তু আমাকে বেশ লাগছিল এমনকি তার চপ্পলের আওয়াজও।
“আচ্ছা তুমি কি দেরাদুনে যাচ্ছ নাকি?” আমি মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করলাম ।
আমি নিশ্চয় কোনো অন্ধকার কোনায় বসেছিলাম, কারণ আমার আওয়াজ তাকে চমকে দিয়েছিল। কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়েই সে বলল- “আমি জানতাম না যে এখানে আমি ছাড়া আর কেউ আছে।“
THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI BANGLA VALOBASAR GOLPO লাভ স্টোরি
সে যাই হোক, যেসমস্ত ব্যক্তিদের চোখের দৃষ্টি ভালো তারাও কোনো কোনো সময় তাদের সামনে থাকা কিছুকে দেখতে পারে না, কারণ তাদের অনেক কিছু একসাথেই দেখতে হয়। আমি মনে মনে বললাম। যদিও যে সমস্ত ব্যক্তিরা দেখতে পান না, অথবা খুব সামান্য পরিমাণে দেখতে পান, তাদেরকে কেবলমাত্র বাকি ইন্দ্রিয়গুলি দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলিই গ্রহণ করতে হয়।

আমি বললাম- “ আমিও তোমাকে দেখি নি, কিন্তু তোমার আসার আওয়াজ আমি শুনতে পেয়েছিলাম।“
আমি এটা ভেবেই হতচকিত হচ্ছিলাম যে, আমি যে অন্ধ সেটি মেয়েটির কাছ থেকে লুকোতে পারব কি না! আমার মনে হল, আমার এই বসার জায়গাটিতেই যদি আমি থাকি তাহলে এটি লুকিয়ে রাখতে খুব একটা সমস্যা হয়ত হবে না।
মেয়েটি বলল- “আমি সাহারানপুরে নেমে যাব। সেখানে আমার কাকিমা আমাকে নিতে আসবেন।“
“তাহলে তো আমার বেশি বন্ধুভাবাপন্ন হয়ে লাভ নেই, কারণ কাকিমারা আসলে একধরনের ভয়ংকর প্রাণী।“ আমি বললাম।
মেয়েটি আমাকে জিজ্ঞাসা করল- “তুমি কোথায় যাচ্ছ?”
আপনি আরও পড়তে পাড়েনঃ-
ভূতুড়ে জায়গা সত্য ভূতুড়ে ঘটনা
ভূত আছে কি নেই ভূত কি আত্মা কি ভূত কি সত্যি আছে
আমি বললাম- “ দেরাদুন হয়ে মুসৌরি”
“উফফ তুমি কি ভাগ্যবান। ইস আমিও যদি মুসৌরি যেতে পারতাম। আমাকে পাহাড় দারুন লাগে, বিশেষত অক্টোবর মাসে।“ মেয়েটি বলল।
আমি একটু ভেবে নিয়ে বললাম- “হুম এটাই সেরা সময়। এইসময় পাহাড়গুলি বন্য ডালিয়ার সোভায় শোভিত, সূর্যের কিরণও দারুন লাগছে, আর রাতের বেলায় ব্র্যান্ডি পাণ করতে করতে কাঠের আগুনের সামনে বসে সময় কাটানোর মজাই আলাদা, প্রায় সব পর্যটকেরা এখন চলে গেছে, আর রাস্তা-ঘাটও প্রায় শুনশান। হ্যাঁ একদম ঠিক অক্টোবরই হল মুসউরি ভ্রমণের সেরা সময়।“
সে চুপচাপ বসে ছিল। আমি এটা ভেবে বিস্মিত হচ্ছিলাম যে, আমার কথাগুলি কি তার হৃদয় ছুয়ে গেছে, নাকি সে আমার কথা শুনে আমাকে, একটি রোমান্টিক বোকা ভাবছে। এরপরেই আমি একটি ভুল করে বসি।
আমি জিজ্ঞাসা করি- “বাইরের দৃশ্যটা দেখতে কেমন লাগছে?”
সে আমার এই প্রশ্নটিতে বিশেষ কিছু হয়ত খুঁজে পেল না। তাহলে কি সে বুঝে নিয়েছে যে আমি অন্ধ! কিন্তু মেয়েটির পরের প্রশ্নটিই আমার সব সন্দেহ মিটিয়ে দিল।
THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI BANGLA VALOBASAR GOLPO লাভ স্টোরি
সে বলল- “তুমি কেন জানালা দিয়ে বাইরে দেখছ না?”




এরপর আমি জানালার দিকে ধীরে ধীরে ঘুরে গেলাম এবং জানালার ফ্রেমটিতে আমার স্পর্শ পৌছাল। জানালাটি খোলাই ছিল এবং আমি একটু উঁকি দিয়ে, বাইরের দৃশ্যটা দেখার ভান করতে লাগলাম। আমি ইঞ্জিনের সেই একঘেয়েমি শব্দ শুনলাম, চাকার গর্জন আমার কানে ভেসে আসছিল, এবং আমি আমার মনের চোখ দিয়ে দেখছিলাম যে- টেলিগ্রাফের পোস্টগুলি পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে।
আমি একটু সাহস জুগিয়ে বললাম- “তুমি কি দেখছ, মনে হচ্ছে গাছ গুলি চলছে আর আমরা একজায়গায় স্থির হয়ে আছি?”
সে বলল-“ এটাতো সবসময়ই হয়, আচ্ছা তুমি কি কোনো প্রাণী দেখতে পাচ্ছ?”
আমি নিশ্চয়তার সাথে উত্তর দিলাম-“না” কারণ আমি জানি যে, দেরাদুনের জঙ্গলে প্রাণীর দেখা পাওয়া একটু মুশকিল।
আমি জানালা থেকে সরে আসলাম, এবং মেয়েটির দিকে ঘুরলাম। কিছুক্ষণের জন্য আমরা চুপচাপ বসে ছিলাম।
“তোমার মুখটা কিন্তু খুবই আকর্ষণীয়” আমি বললাম। আমার মনে হয় আমি একটু বেশি সাহসী হয়ে উঠছিলাম। যদিও এটি একটি নিরাপদ মন্তব্য। কারণ নিজের প্রশংসাকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা খুব কম সংখ্যক মেয়ের কাছেই আছে। সে স্নিগ্ধ হাসি হাসল। একটি পরিষ্কার হাসি।
“এটা শুনে ভালই লাগল যে আমার মুখ আকর্ষণীয়, আসলে আমি মানুষের কাছে আমার মুখ সুন্দর এই কথাটি শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে গেছি।
ও তাহলে তোমার মুখটা সুন্দরও। আমি মনে মনে ভাবলাম এবং বললাম- “সে যাই হোক, একটা আকর্ষণীয় মুখও কিন্তু সুন্দর হতে পারে।“
“তুমি তো খুবই সাহসী,” সে বলল- “কিন্তু তুমি এত সিরিয়াস কেন?”
এরপর আমি ভাবলাম- মেয়েটির জন্য এবার আমাকে হাসতে হবে, কিন্তু এই হাসার ভাবনাটিই আমাকে কেমন যেন সমস্যায় ফেলে দেয় এবং কেমন যেন, আমাকে একাকীত্ব অনুভব করায়।
“হুম, আমরা শীঘ্রই তোমার ষ্টেশনে পৌঁছে যাব” আমি বললাম।
“ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, যে এই জার্নিটা ছোট্ট ছিল। আমি আবার দুই-তিন ঘণ্টার বেশি বসে থাকতে পারি না।“




THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI BANGLA VALOBASAR GOLPO লাভ স্টোরি
যদিও আমি কিন্তু, সেখানে বসে থেকে এবং তার গলার স্বর শুনতে শুনতে, যে কোনো দৈর্ঘ্য অতিক্রম করতে প্রস্তুত ছিলাম। তার গলার স্বরের মধ্যে আমি কেমন যেন, একটা ঝর্নার মত স্নিগ্ধ চমক খুঁজে পেয়েছিলাম। এই ট্রেনের বগিটা ছেড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই সে হয়ত, আমাদের এই সংক্ষিপ্ত পরিচয় ভুলে যাবে, কিন্তু এই সংক্ষিপ্ত স্মৃতি বাকি যাত্রা পথেও আমার সাথে থাকবে বা হয়ত এই যাত্রা পথের পরেও এই মধুর স্মৃতিটি আমার মনে গেথে থাকবে।
ইঞ্জিনের বাঁশির আওয়াজ ক্রমেই তীব্র হচ্ছিল এবং চাকা গুলিও তাদের ছন্দ পরিবর্তন করছিল। মেয়েটি তার জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছিল। আমি এটা ভেবেই চমৎকৃত হচ্ছিলাম যে, সে কি তার চুলগুলি বেঁধে রেখেছে, নাকি বিনুনি করে রেখেছে, বা হতেও পারে, তার চুলগুলি তার কাঁধের উপর সে ছেড়ে দিয়েছে, বা তার চুলগুলি হয়ত ছোট ছোট করে ছাটা?
ট্রেনটি ধীরে ধীরে ষ্টেশনে প্রবেশ করল এবং বাইরে কুলি-পটরাদের চিৎকার শোনা যাচ্ছিল। এরপরেই আমার কানে, একটা তীক্ষ্ণ মহিলার কণ্ঠস্বর এসে পৌছাল। এই আওয়াজটি নিশ্চয় মেয়েটির কাকিমার!
“গুডবাই”- মেয়েটি বলল।
মেয়েটি আমার এতটাই কাছে দাঁড়িয়ে ছিল যে, তার চুলের মিষ্টি সুভাষ আমাকে খুবই প্রলোভিত করছিল। আমি আমার হাত দিয়ে তার চুল স্পর্শ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ততক্ষণে সে নেমে গেছে, সে নেমে গেছে ঠিকই কিন্তু সে তার চুলের সুগন্ধ ছেড়ে গিয়েছিল।
আমার মনে হল দরজায় কিছু একটা জটলা চলছে। একজন ব্যক্তি ক্ষমা চেয়ে নিতে নিতে আমার বগিতে প্রবেশ করলেন। এরপর দরজাটি জোরে শব্দ হয়ে বন্ধ হয়ে গেল, এবং এই আমার কাছে এই পৃথিবীটা আবার পুনরায় চুপচাপ হয়ে গেল। এবার আমি আবার মনে মনে আমার সহযাত্রীটির সঙ্গে আবার একটি খেলা খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম।
ট্রেনটি পুনরায় তার গতিতে ফিরেছে, এবং চাকাগুলি পুনরায় তাদের ছন্দে গান করছে, বগিটাও হালকা কাঁপছে, এবং আমি জানালার পাশে বসে বাইরের আলোকময় জগতটাকে দেখার চেষ্টা করছিলাম, যদিও আমার কাছে, এটি অন্ধকারের খেলা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বাইরে অনেক কিছুই ঘটে চলছিল। এই যে আমার এই অনুমান নির্ভর খেলাটা এটা কিন্তু একটা মজাদার খেলা।




THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI BANGLA VALOBASAR GOLPO লাভ স্টোরি
যে ব্যাক্তিটি আমার বগিটিতে উঠেছিলেন, তিনি আমার এই দিবাস্বপ্ন ভেঙ্গে দিলেন।
“আপনি নিশ্চয় হতাশ হয়েছেন?” সে বলল-“ আমি কিন্তু যে সহযাত্রীটি কিছুক্ষণ আগেই আপনাকে ছেড়ে গেলেন, তারমত আকর্ষণীয় নই।“
আমি বললাম- “মেয়েটি কিন্তু খুবই আকর্ষণীয়”, আচ্ছা আপনি কি আমাকে একটু বলতে পারবেন যে, মেয়েটির চুল লম্বা ছিল না কি ছোট?”
সে কিছুটা ইতস্তত হয়ে বলল- “ আমার ঠিক মত মনে পরছে না, আমি তার চুল নয় বরং তার চোখের দিকে লক্ষ্য করেছিলাম, তার চোখ খুবই সুন্দর কিন্তু এগুলি তারকাছে পুরোই মূল্যহীন। সে পুরোপুরি অন্ধ ছিল, আপনি লক্ষ্য করেননি?”




THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI BANGLA VALOBASAR GOLPO লাভ স্টোরি
আপনাদের THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI পড়ে কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন, অথবা যদি কোথাও সংশোধনের প্রয়োজন হয় তাও জানাবেন।
THE EYES HAVE IT STORY IN BENGALI BANGLA VALOBASAR GOLPO লাভ স্টোরি




কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।