অনেক উথান পতন অনেক অবহেলা অনেক বিদ্রুপের মধ্যে থেকেও জীবনে কিছু করে দেখানো নিয়েই আজকের এই জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প টি।
জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পঃ-
আমি আলো রায়। নাম আমার আলো হওয়া সত্ত্বেও একসময় মনে হয়েছিল আমার গোটা জীবনটাই তো অন্ধকারে আচ্ছন্ন। কিন্তু তবুও আমি একা পথ চলতে চলতে আজ সত্যি সত্যি একাকী আলো হয়ে উঠতে পেরেছি। একাকী পথে একাকী হাঁটতে হাঁটতে আজ আমি নিজেই নিজের জীবনের আলোর দিশা পেয়েছি।
আমার কাহিনী টা বড় অদ্ভুত। যখন আমার বয়স চারবছর, ইনফ্যান্ট ক্লাসে ভর্তি হলাম তখন প্রচন্ড রকমের বোকা ছিলাম। এতোটাই বোকা যে আমাকে সবাই একটা চড় মেরে গেলেও আমি চুপচাপ চড় খেয়ে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মায়ের কাছে চলে আসতাম কারণ আমি প্রচন্ড আবেগপ্রবণ ছোট থেকেই, একটু ভালো কথায় যেমন আহ্লাদে গলে যাই আবার একটু খারাপ কথা, জোর গলায় কথা বা বকাবকি তে কষ্টে দুঃখে কেঁদে ভাসাই । স্বভাবে বোকা হাঁদা আমি লেখাপড়াতেও তাই ছিলাম বলে সবাই ভেবেছিল, শুধু মা বাদে। বছর শেষে রেজাল্ট বেরোলে আমি একটুর জন্য পজিশন হারালাম। কিন্তু এই যে হারালাম এর পরিবর্তে আমি অনেক কিছু পেয়েছিলাম।
সবাই রীতিমত ধরেই নিয়েছিল আমি এক্কেবারে নিরেট! কিন্তু ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফোর পর্যন্ত পরপর ফার্স্ট হয়ে উঠলাম যখন সবার আমার প্রতি ধারণা পাল্টে যায়। পেয়েছিলাম পুরষ্কার।
![জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
ছোটবেলায় অত বুঝতাম না কিছু তাই প্রায় আবছায়া স্মৃতি থেকে বললাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আমার জীবন টা সত্যিই খুব অবর্ণনীয় ছিল।
ক্লাস ফাইভ, নতুন স্কুলের প্রথম দিন। পা রাখতেই ছোট্ট হৃদয়েতেও অসম্ভব উত্তেজনা।চোখে আমার বড় ফ্রেমের চশমা আগাগোড়াই ছিল আর এটাই হয়েছিল আমার প্রথম সাফল্য অর্জনের চরম ব্যর্থতা ।এই আঘাত টা পেয়েছিলাম বলেই আজ আমার অবস্থান অন্যরকম।
প্রথম দিন, দ্বিতীয় দিন, তৃতীয় দিন যেতে যেতে এক সপ্তাহ তারপর একমাস আর যত সময় যাচ্ছে তত আমার চশমা নিয়ে হাসাহাসি, মজা, ঠাট্টা, মশকরা ইত্যাদি হজম করতে হয়। আমি বলতাম না কিছুই, কারণ আমি বরাবরই খুব চুপচাপ স্বভাবের আর চুপচাপ থাকাটাকেই সবাই আমার দূর্বল স্বভাব ভেবে এসেছে। আসলে আমি কথা বাড়াতে চাইতাম না, ঝগড়া অশান্তি থেকে একটু দূরে থাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতাম কিন্তু সেইটা যে সবার কাছে আমার দুর্বলতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে তা বুঝিনি। চশমা নিয়ে হাসাহাসি উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে।
আমার প্রচণ্ড রাগ হতে শুরু করে একটা সহ্য সীমার পর। এরপর আমি বলতে শুরু করি আর এক ঝটকায় সবার কাছে আমি ঝগড়ুটে প্রমাণিত হয়ে যাই। খুব অবাক লাগে আমার এই ভেবে এতোদিনের নীরবতা যাদের চোখে পড়ল না তাদের চোখেই তার এক মিনিটের প্রতিবাদ স্বরুপ সরবতা ঝগড়া হয়ে গেল! আমার শ্রেণী শিক্ষিকা গার্জেন কল করে আমার মায়ের কাছে আমার নামে নালিশ করে কিছু গার্জেন এর অভিযোগ এর ভিত্তিতে। আমি স্কুলে পড়তে আসি ঝগড়া করতে নয়। এখন তো সবে ক্লাস সিক্স, এখনি এইরকম অবস্থা! মা চুপ করে থাকে সেদিন আর আমি ভাবি প্রথম থেকেই যদি আমি বলতাম তাহলে হয়ত আজ এইদিন দেখতে হতো না। কথাতেই তো আছে,
“অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে;
তব ঘৃণা করো তারে তৃণ সম দহে!”
পড়ুনঃ- উপদেশ মূলক শিক্ষণীয় গল্প অনুপ্রেরণা মূলক গল্প
প্রথম থেকে আমার নীরবতাই অন্যায় কে বিবেকের তাগিদে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে। আজকের দিনে সবসময় নীরবতা পালন করে চললে নিজের সমস্যা তো কমবে নাই বরং নিজের সম্মান টা নিয়েও টানাটানির পর্যায়ে নামতে পারে!
যাই হোক আপাতত চশমা নিয়ে হাসাহাসি করাটা দুপাক্ষিক ভাবে বন্ধ হয়। কিন্তু শুরু হয় আরেকরকমের ঝামেলা। আমার টিফিন।অন্তর্মুখী মানুষের স্বভাব অনুযায়ী আমিও একা একা টিফিন খেতাম বরাবর। হঠাৎ করেই আমার কিছু ক্লাসমেট টিফিন শেয়ারের আগ্ৰহ দেখায়। আমি আপত্তি করলেও তারা শোনেনা। অবশেষে আমি বাধ্য হয়ে ওদের সাথে টিফিন খাওয়া শুরু করি। কিন্তু আমি আর্থিক ভাবে অতটা সবল পরিবারের মেয়ে হলেও পরে অনেকটাই অস্বচ্ছল হয়ে পড়ি তাই নিত্যনতুন সুস্বাদু লোভনীয় টিফিন আনা সম্ভব আমার পক্ষে হতো না। আর এটাই ছিল আমার জীবনের অপমানের দ্বিতীয় ধাক্কা।
রোজ আমার অভাবী টিফিন দেখে মুখ বেঁকাতো অনেকেই, বলতোও অনেক কিছু কিন্তু আমি পাত্তা দিতাম না কখনোই। আমি চিরকাল মনে করতাম যে একমাত্র পাত্তা না দিলেই সমস্যার সমাধান। কিন্তু সত্যি বলতে কি, জীবনে রোজ নতুন নতুন অভিজ্ঞতা আমাদের নতুন নতুন শিক্ষা দেয়। আর আমরা প্রতিকার হিসেবে যা ভাবি বা ভেবে রাখি সবক্ষেত্রে তা ফলপ্রসূ হয় না। সেইরকম ভাবে আমার এই পাত্তা না দেওয়াটাও ব্যর্থ হলো গতবারের নীরবতার মতো। এবারেও আমি একইভাবে চরম অপমান সহ্য করতে করতে শেষ পর্যন্ত বলে ফেললাম অনেক কিছু আর এটাও বললাম আমার সাথে খাওয়ার জন্য আমি তো কাউকে বলিনি, তাহলে আমার কাছে কেন আসা হয়েছিল অহেতুক!
আস্তে আস্তে ক্লাস সেভেনে উঠলাম আর আমার অভাবের টিফিনের পাশ থেকে সুখের পায়রার মতো উড়ে চলে গেল আমার সেই বন্ধুগুলো। নিজের মনকে বোঝাচ্ছি নিজে থেকে এসেছিল আবার নিজে থেকেই চলে গেছে। আমি আসতেও বলিনি, যেতেও বলিনি।
আবার একা একা টিফিন খাওয়া শুরু। আস্তে আস্তে আমি বড় হই আর ভাবতে শুরু করি আমি কি তখন অন্তর্মুখী স্বভাবের জন্য কারোর সাথে টিফিন শেয়ারের বিরূদ্ধে ছিলাম নাকি আমার অবচেতন মন আগেভাগেই জানান দিত যে সুখের পায়রাদের থেকে আমি যেন সবসময় দূরে থাকি?
পড়ুনঃ- নৈতিক শিক্ষামূলক গল্প বাবাকে নিয়ে শিক্ষামূলক গল্প
আমি জানি না এর উত্তর । গোটা স্কুল জীবনে সে প্রাইমারী হোক বা হাই স্কুল ; কারোর মনের মতো বন্ধু হয়ে উঠতে পারিনি। আমিও পাইনি আমার মনের মতো কাউকে। আমার জগৎটা ছিল আমার চোখে দেখা জগতের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আমার জগতে ছিল ঈশ্বর, সৎ চিন্তা, ভালো কাজকর্ম করার কথা ভাবা ও চেষ্টার চিন্তা, বিপ্লবীদের চিন্তাভাবনা, আদর্শ, বড় মাপের মানুষ বা মনীষী দের কথা, পড়াশোনা, জ্ঞান , বিজ্ঞান আরো অনেক কিছু।
যেগুলো আমার থেকে শোনার মতো কেউ ছিল না বা আমিও শেয়ার করার মতো কাউকে পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। আমার চোখে দেখা জগতের মধ্যে আমার জগতের কোনো চিন্তা ভাবনাই ছিল না। সেখানে ছিল নোংরা আলোচনা, অপ্রয়োজনীয় বার্তালাপ, গুরুত্ব ও ওজোনহীন আচার আচরণ, ব্যক্তিত্বহীন স্বভাবের ও জীবনে কিভাবে বিলাসিতা আনা যায়! আর এইকারণেই হয়ত আমি একাই রয়ে গেলাম।
মাঝে মাঝে খুব দুঃখ হতো চারপাশের বন্ধন দেখে। যেখানে সবাই একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভালো বন্ধু সেখানে আমি গোল ফ্রেমের চশমা পরা একা দাঁড়িয়ে হাপুস নয়নে চেয়ে থাকা একাকী একটা মানুষ। কষ্ট হতো মাঝেমাঝে, চোখের জল ফেলতাম না, ভাবতাম অনেক কষ্ট পাই তারপরে একসাথে অনেকক্ষণ ধরে কাঁদব। কারোর মনের মতো বন্ধু নই বলেই কখনো স্থান পাইনি কোনো গ্ৰুপ ফোটোতে, আমার জন্মদিন মনে রেখে কারোর স্ট্যাটাস দেওয়া দেখিনি আমি কখনো।
আমি দেখতাম কোনো বন্ধু কোথাও ঘুরতে গেলে যেখানে অনেক জিনিস তার গ্ৰূপ ক্লাসমেট ফ্রেন্ড দের জন্য নিয়ে আসত সেইখানে আমার জন্য মনে করে কেউ একটা সামান্য ছেঁড়া কাগজও দেয়নি আমায়। নিষ্ফল চোখে তাকিয়ে থাকতাম, আমার এই তাকানোর অর্থ আমার আড়ালেই হয়ত লোভী হিসেবে পরিচিতি পেত। আমি প্রতিদিন এইভাবে কিছু না কিছু ধাক্কা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অপমান সহ্য করতে করতে শেষ পর্যন্ত খুব অন্যরকম একটা মানুষ হয়ে উঠি। আমার এই একাকীত্বে আমি নিজেকে ভালবাসতে শিখি, নিজের বিচার বুদ্ধি কে আমি সম্মান জানাতে বাধ্য হই।
ভাগ্যিস আমি সবার কাছে বোকা, হাঁদারাম ছিলাম তাই পরবর্তীতে আমি বুঝতে পারি এটা অন্তর্মুখী বা সর্বমুখী বা বহির্মুখীর ব্যাপার নয়, ব্যাপারটা মানুষ চেনার। চেনা মানুষকে নতুন করে চিনতে শিখি আমি। আমি কিনা আমার জীবনের স্বার্থপর, সুখের পায়রা, নিজের দরকার ফুরালে বেপাত্তা অথবা বেইমানদের নিজের বন্ধু ভেবে কষ্ট পাই , আমি কিনা এইসমস্ত মানুষদের অপমানে চোখের জল ফেলি? আমার থেকে থেকে এমনো মনে হয়েছিল যে আমি যেন ওদের সাথে ওদের আলোচনায় মিশে যাই তাহলে হয়ত আমি আর একা থাকব না কিন্তু না, আমার একাকীত্ব আমাকে বোঝায় নিজের সত্ত্বা কে বিক্রি করে কখনো দোকা হওয়া যায় না।
মিলতে হবে না আমার সাথে কারোর মত, মিলতে হবে না আমার সাথে কারোর যুক্তি। আমার এই চশমা, আমার ঐ টিফিন আর আমার এই একাকীত্ব ই আমার বন্ধু, যাদের সত্যি সত্যি বিশ্বাস করা যায়। আমি এরপর একা থাকাতেই খুব আনন্দ বোধ করতাম। আমার মতো আমি থাকতে থাকতে খুঁজতাম তাকে, যাকে আমার একাকীত্ব মন বলবে এই আমার জুটি। পেলাম একদিন। তবে আমার মন এইপ্রথম ভুল মানুষ কে ঠিক ভাবে আর আঘাত পাই আবার।
![প্রেরণা মূলক গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
মানুষটি আমার বন্ধুদের মধ্যে কেউ ছিল না, ছিল নতুন বসন্তের প্রেম। আমার জগতে ছিল মনের স্পর্শ কিন্তু তার জগতে ছিল শরীরের স্পর্শ। ভাঙলাম আমি আবার। যাকে নিজের মনের মতো জুটি ভেবেছিলাম তাকে ছেড়ে চলে আসতে ফের একাকীত্ব গ্রাস করল। এইবারের সময়টা অনেক দীর্ঘ। অনেক আবেগপ্রবণ এবং সহজে সকলকে বিশ্বাস করা আমি মানুষটা যাও নিজেকে পাল্টাতে পেরেছিলাম আমার একাকিত্বের আদর্শে, সেই আদর্শ টাও আবার ভেঙে দিয়ে চলে যায় ছেলেটি, মন থেকে সত্যিকারের ভালোবেসেছিলাম যাকে।
আবার একাকীত্ব ই আমাকে একা করে দিল, হারিয়ে দিল আমায়, সেই বিক্রিই হয়ে গেল আমার সত্ত্বা। প্রচন্ড ভেঙে পড়লাম। এরপর শুরু হয় পারিবারিক অশান্তি। একসাথে সমস্ত কিছু জেঁকে বসে আমার বিরুদ্ধে। কি করবো ভেবে পাই না। সেই ছোট থেকেই তো এত মানুষ দেখলাম কিন্তু সবার একটাই গুণ তারা কোনোদিন আমার কেউ ছিল না। ছিল না বলেই থাকার জন্য আসেনি কেউই। নিজের উপর এবার প্রচন্ড রাগ শুরু হলো। আমাকে কি কেউ বোঝে না নাকি আমি কারোর বোঝার মতো মানুষই না?
মানসিক অশান্তির পর মানসিক অবসাদ, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ এর ফলে আমার একাকীত্ব আত্মহত্যার পথ খোঁজে। কিন্তু কিভাবে করব আত্মহত্যা? মনে হলো চট্ করে, আমি যদি আত্মহত্যা করি তাহলে আমি কেন আত্মহত্যা করেছি তার সঠিক কারণ না খুঁজে বেঠিক বাক্যবাণে আমার পরিবারকে আহত করবে সমাজ। না না এ আমি কি করছি? আমি খারাপ পথে যাইনি বলেই তো আমার সাথে কারোর ম্যাচ হয় না, আমি তাহলে তাই থাকবো, আমি একাই এগিয়ে যাবো। কাউকে আমার দরকার নেই। রোজ রাতে কেঁদে কেঁদে বালিশ ভেজাবো কিন্তু তবুও একা বলে ভেঙে পড়ব না। কে বলেছে একা বাঁচা যায় না? চাইলে সবকিছুই সম্ভব শুধু নিজের ইচ্ছা, চেষ্টা আর পরিশ্রম টা সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে হবে। তারপর সময় বলে দেবে আমার ফলাফল।
![bengali motivational story](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
হ্যাঁ সত্যিই আমি আমার বন্ধু ছাড়া লাইফ, ফূর্তি ছাড়া লাইফ, আড্ডা ছাড়া লাইফে খুব খুব একাকীত্বে ভুগতাম, ভেঙে পড়তাম সত্যিই যখন সবাইকে সবার সাথে দেখতাম এবং পরে যখন অগাধ বিশ্বাস করা মানুষটাও আমাকে ঠকায় তখনো কিন্তু এসবের মধ্যেও নিজের জন্য নিজেই ছিলাম।আমি অনেক কষ্ট দুঃখ যন্ত্রণা কে বুকে নিয়ে সকালে অক্লান্ত পড়াশোনা আর রাতে সমস্ত দুঃখ উজার করে দিতাম। হ্যাঁ এই চলার মাঝেও আমার অনেক বাধা এসেছিল। অপমানিত হয়েছিলাম কলেজেও। যেখানে আমি আত্মহত্যা করে জীবন ইতি করতে চেয়েছিলাম সেই আমিই কলেজে পড়েছিলাম আমার সাবজেক্ট এর অনার্স নিয়ে।
আমি খারাপ জিনিস এর সাথে যুক্ত ছিলাম না তাই আমার অজান্তে অনেক বন্ধুই আমাকে দিয়ে অনেক খারাপ কথা বলিয়েছে বা টিচারকে জিজ্ঞাসা করিয়েছে। অপমানিত হওয়ার পর আমি চুপ থাকিনি আর। বসিয়ে দিয়েছিলাম ছোটবেলায় যেভাবে আমার বয়সী সকলের কাছে যেই চড় খেতাম সেই চড়। একা মানুষের কেউ নেই কে বলেছে, একা মানুষের একা থাকাটাই শক্তি। আমি বিবেকের তাগিদে চুপচাপ থাকতাম কিন্তু অন্যায় যেখানে, প্রতিবাদ সেখানে। কোনো নীরবতা নয়, কোনো দুর্বলতা নয়, কোনো একাকিত্ব নয়, কোনো সুপারম্যান আসবে না আমাকে বাঁচাতে , তাই নিজেকেই নিজের জন্য লড়তে হবে তাই লড়ে যেতাম পরবর্তী সময়ে।
![জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প প্রেরণা মূলক গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
আজ জীবনের অনেক টা সময় অনেক ধাক্কা খেতে খেতে, অনেক ঠোক্কর খেতে খেতে, অনেক আহত হয়ে কাটিয়েছি। তবে আজ আমি সফল। আমি একাই আছি এখনো। হ্যাঁ জীবনে আমার অনেক মানুষ আছে ,ছিল , আসবে। কিন্তু আমার জগতের মানুষ আমি নিজেই। পাইনি খুঁজে আমার পরিপূরক। হয়ত আমার জন্য আমি একাই ছিলাম, একাই রয়ে যাবো। নিজের জীবনে আমি আজ হয়ত প্রতিষ্ঠিত তবে আমার মতো অনেক একাকীত্বে থাকা মানুষ ই অন্যের মধ্যে নিজের আনন্দ খুঁজতে গিয়ে নিজেকেই হারিয়ে ফেলে। তাই আমি যবে থেকে এটা বুঝতে শিখলাম আর এটাও বুঝলাম যে একা থাকলেও আমি অনেক সুরক্ষিত আছি তখন থেকেই নিজেকে আরো বেশী করে ভালোবাসতে শিখলাম। I love myself. I’m alone but I’m happy. Because I never
search my happiness in others , it will make me feel alone. Search it in myself , I will feel happy even when I left alone. মনে রাখলাম সারাজীবন এই কথাটি। নিজেকে নিজেও অনুপ্রাণিত করা যায়। একা মানুষ কে কখনো বাঁচতে পারে না এটা ভুল বরং তাকে বারবার “একা! একা!!” বলে তার মন দূর্বল করে তাকে আত্মহত্যা করার পর্যায়ে পাঠিয়ে দেয়। আমি আলো রায়, আজ সত্যিই জীবনের অনেক অন্ধকারময় মুহূর্তে নিজের জীবনের আলোর সন্ধান পেয়েছি। আর ছড়িয়ে দিতে চাই আমার মতো থাকা একাকী মানুষদের মধ্যে যারা নিজেদের কে পৃথিবীর কাছে হতভাগ্য মানুষ মনে করে মৃত্যুর অপেক্ষা করে।
তবে হ্যাঁ আমি আমার সফল জীবনে স্থান দেবো না তাদের যারা আমাকে জীবনের আসল মানে শেখাতে নিজেদের নকল রূপ বের করে ফেলেছে। স্বার্থপর, বেইমান, বিশ্বাসঘাতক ও সুখের পায়রার মতো মানুষদের কোনো স্থান নেই আমার কাছে। সত্যিকারের আলোর কাছে এরা অন্ধকার হলেও এদের জন্যই সত্যি সত্যি মানুষ চেনা শেখা যায়।
Always Wrong Person teaches us The Right Lesson.
গল্পের পূর্ণতায়-
সুস্মিতার আরও কিছু বিশেষ লেখা- পথ শিশুদের বাস্তবতা নিয়ে গল্প- নির্দয় মেয়েদের জীবন নিয়ে গল্প- স্পর্শ স্কুল জীবনের দুষ্টুমি- গন্ধ চক্রান্ত
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- ফেসবুক Group - গল্প Junction ফেসবুক- ছাড়পত্র টেলিগ্রাম- charpatraOfficial (লিংকটি broken হলে অনুগ্রহ করে টেলিগ্রামে সার্চ করুন- charpatraofficial) WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
“জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। প্রেরণা মূলক গল্প। best bengali motivational story”
![charpatra.com ছাড়পত্র](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।