STORY RELATED TO SWAMI VIVEKANANDA IN BENGALI স্বামী বিবেকানন্দের জীবনের সঙ্গে জড়িত কিছু মজার গল্প আজ শেয়ার করছি। স্বামী বিবেকানন্দের জীবনের এই অজানা গল্প গুলি আপনাদের জানা উচিত।
STORY RELATED TO SWAMI VIVEKANANDA IN BENGALI
STORY RELATED TO SWAMI VIVEKANANDA IN BENGALI
ঘটনা-০১
নরেন্দ্রনাথ খুব সুন্দর গল্প করতে পারতেন । তার কথা এবং ব্যক্তিত্বের এমন আকর্ষণ ছিল যে, তিনি গল্প আরম্ভ করলে সবাই সব কাজ ভুলে তার কথাই শুনতেন।স্কুলের ক্লাসের ফাঁকে একদিন তিনি গল্প করছেন। গল্প এতো জমে গেছে দেশে যে শিক্ষক এসে পড়াতে শুরু করলেও সকল ছাত্র শিক্ষকের পড়ার দিকে মন না দিয়ে নরেন্দ্রর কথাই শুনছেন। কিছুক্ষণ পরে ফিসফিস শব্দ শুনে শিক্ষক ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন।
বিরক্ত হয়ে তিনি এক এক করে সবাইকে পরীক্ষা করলেন যে, তিনি যা কিছু পড়াচ্ছিলেন ছাত্ররা তা শুনেছে কিনা? কেউ শিক্ষকের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারল না। কিন্তু নরেন্দ্রনাথের মন ছিল দু-মুখো। মনের একটা অংশ তিনি শিক্ষকের পড়ায় রেখে দিয়েছিলেন, আর তাই শিক্ষক জিজ্ঞাসা করল নরেন্দ্রনাথ তার সঠিক উত্তর দিলেন । তখন শিক্ষক জিজ্ঞাসা করলেন, এতক্ষণ কে কথা বলছিল? সকলে নরেন্দ্রকে দেখিয়ে দিল। কিন্তু শিক্ষক তাদের সবাইকে দাঁড়িয়ে থাকতে বললেন। সকলের সঙ্গে নরেন্দ্রও উঠে দাঁড়ালেন। শিক্ষক বললেন তোমাকে দাঁড়াতে হবে না। নরেন্দ্র বললেন না আমাকেও দাঁড়াতে হবে, কারণ আমিই তো কথা বলছিলাম।সকলের সাথে তিনিও দাঁড়িয়ে রইলেন।

ঘটনা-০২
বিএ পরীক্ষার জন্য টাকা জমা দেওয়ার সময় হয়েছে নরেন্দ্রের সহপাঠীরা সকলে এই টাকা জমা দিয়েছে,কেবলমাত্র হরিদাস ছাড়া। সে বড় গরিব, টাকা জোগাড় করতে পারেনি। শুধু পরীক্ষার ফি-ই নয় এক বছরের বেতনও তার বাকি। হরিদাসের পক্ষে ফির টাকাটা কোনোমতে দেওয়া সম্ভব, কিন্তু এক বছরের বেতন দেওয়া অসম্ভব। নরেন্দ্র এগিয়ে এলেন, তিনি জানতেন এরকম বিশেষ ক্ষেত্রে টাকা মুকুব করার ব্যবস্থা আছে। আর তা আছে কলেজের বৃদ্ধ কেরানী রাজকুমার বাবুর হাতে।
আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপ এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন:- CharpatraOFFICIAL
ছেলেরা যখন টাকা জমা দিচ্ছে নরেন্দ্র তখন রাজকুমার বাবুর কাছে গিয়ে বললেন- ‘মশায় হরিদাস দেখছি মাইনেটা দিতে পারবে না। অনুগ্রহ করে মাফ করে দিন। তাকে পাঠালে সে ভালো রকমে পাশ করবে। আর না পাঠালে সব মাটি।’ রাজকুমার বাবুর মেজাজ ভালো ছিল না। মুখ বিকৃতি করে তিনি বললেন- ‘তোকে জ্যাঠামি করতে হবে না; তুই যা নিজের চরকায় তেল দে গে যা। আমি ওকে মাইনে না দিলে পাঠাবো না।’ নরেন্দ্র চিন্তায় পড়লেন। তার নিজের পক্ষে অত টাকা জোগাড় করা কঠিন অথচ তাড়াতাড়ি টাকা জোগাড় না করলে বন্ধু পরীক্ষায় বসতে পারবে না। কি করা যায়!
তাঁর মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল। বাড়ি না ফিরে সেদিন সন্ধ্যায় তিনি এক গুলির আড্ডার কাছে অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। আর গুলির দোকানের দিকে যারা আসছে তাদের ভালো করে লক্ষ্য করতে লাগলেন। হঠাৎ নরেন্দ্রনাথ অন্ধকার থেকে বেরিয়ে একজনের সামনে গিয়ে দাড়ালেন। ‘রাজকুমারবাবু!’ নরেন্দ্রনাথ জানতেন যে রাজকুমারবাবু প্রতিদিন এই গুলীর আড্ডায় নেশা করতে আসতেন।
নরেন্দ্রনাথ রাজকুমারবাবুর মুখো-মুখি হতেই রাজকুমারবাবুর মুখ শুকিয়ে গেছে। সুযোগ বুঝে নরেন্দ্রনাথ বললেন যে, হরিদাসের মাইনেটা যদি মুকুব না করেন তাহলে তিনি তার এই আড্ডায় আসার কথাটি কলেজে ছড়িয়ে দেবেন। এই কথায় ভীত হয়ে রাজকুমারবাবু বললেন ‘বাবা রাগ করিস কেন? তুই যখন বলছিস আমি কি তা না করতে পারি?’ নরেন্দ্রনাথ ফিরলেন, তিনি চোখের আড়াল হতেই রাজকুমারবাবু গুলীর আড্ডায় নেশা করতে ঢুকে পড়লেন । পরদিন সকাল হতে না হতেই নরেন্দ্রনাথ হরিদাসের বাড়িতে গিয়ে বন্ধুকে ডেকে বললেন ‘ওরে খুব ফুর্তি কর তোর মাইনের টাকাটা আর দিতে হবে না।’ তারপর গত সন্ধ্যার ঘটনাটা আনুপূর্বিক বর্ণনা করে দুজনেই হাসিতে ফেটে পড়লেন।
STORY RELATED TO SWAMI VIVEKANANDA IN BENGALI****
ঘটনা-০৩
স্বামীজীর পরিব্রাজক জীবনের ঘটনা। বারানসি এসেছেন স্বামীজি।একদিন দুর্গা মন্দির থেকে ফিরছেন স্বামীজী এমন সময় এক পাল বানর স্বামীজীকে তারা করতে লাগল। বানরগুলো তার পেছনে পেছনে ছুটতে লাগল।
এমন সময় একজন বৃদ্ধ সন্ন্যাসী স্বামীজীকে বললেন- ‘থামো জানোয়ারগুলার মুখোমুখি রুখে দাঁড়াও।’ স্বামীজি সাহস ভরে ফিরে দাঁড়ালেন বানরদের দিকে। বানররা প্রথমে থমকে দাড়ালো তারপর ছুটে পালালো।
এই ঘটনা থেকে স্বামীজি জীবনের একটি মহৎ শিক্ষা পেলেন। বিপদ দেখে কখনো পালিয়ে যেতে নেই। নির্ভয়ে তার মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। পরবর্তী জীবনে তিনি বলেছিলেন- ‘এই হল সারা জীবনের জন্য একটি শিক্ষা। ভয়ংকরের মুখোমুখি দাঁড়াও, সাহসের সঙ্গে তার সম্মুখীন হও। জীবনের দুঃখ কষ্ট দেখে আমরা যখন আর পালিয়ে যাই না তখন ঐ বানর গুলোর মতই দুঃখ কষ্ট গুলী আমাদের কাছ থেকে পিছু হটে যায়।
যদি আমাদের মুক্তি পেতে হয় তবে প্রকৃতিকে জয় করে তা পেতে হবে প্রকৃতি থেকে পালিয়ে গিয়ে নয়। কাপুরুষ কখনোই জয়ী হয় না। যদি আমরা চাই যে ভয়,বাধা-বিপত্তি এবং অজ্ঞতা আমাদের সামনে থেকে দূর হয়ে যাবে, তখন আমাদের সেগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’




আপনি আরও পড়তে পারেন- HOW TO SUCCESS IN LIFE TOP 14 KEY OF SUCCESS TIPS জীবনের সফলতার সূত্র BENGAL MOTIVATIONAL SPEECH
STORY RELATED TO SWAMI VIVEKANANDA IN BENGALI***
ঘটনা-০৪
স্বামীজীর পরিব্রাজক জীবনের আরও একটি ঘটনা। মীরাটে এসে স্বামীজীর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল আরও কয়েকজন গুরু ভাইয়ের। তারাও সন্ন্যাস গ্রহণ করে পরিব্রাজক বেশে ঘুরছিলেন। সকলে মিলে এক জায়গায় উঠলেন। স্বামীজীর খুব পড়াশোনার অভ্যাস। এক গুরুভাই প্রতিদিন স্থানীয় এক লাইব্রেরী থেকে তাঁর জন্য বই নিয়ে আসতেন। মোটা-মোটা বই। কিন্তু স্বামীজীর তা একদিনেই পড়া হয়ে যায়। তাই পরদিনই সেই বই ফেরত দিয়ে নতুন বই আনতে হয়।
লাইব্রেরিয়ান এতে ভাবলেন স্বামীজী লোককে দেখানোর জন্য পড়ার ভান করছেন শুধু। স্বামীজীর গুরুভাইের কাছে তিনি এই সন্দেহের ইঙ্গিত দিলেন। স্বামীজী একথা জেনে একদিন নিজেই লাইব্রেরিয়ানের কাছে হাজির হলেন এবং বললেন আমি সব বই ভালোভাবে পড়েছি। আপনার সন্দেহ হলে আপনি যে কোন বই থেকে যেকোনো প্রশ্ন করে দেখতে পারেন। লাইব্রেরীয়ান তাই করলেন। স্বামীজী তাঁর উপযুক্ত উত্তর দিলেন এবং এই ঘটনা দেখে লাইব্রেরিয়ান এর বিস্ময়ের সীমা রইল না। তিনি ভাবতে লাগলেন এও কি সম্ভব!
STORY RELATED TO SWAMI VIVEKANANDA IN BENGALI***
খেতরির রাজার সঙ্গে পরিচয় হবার পরে স্বামীজি যখন তার অতিথি হয়েছিলেন তখন রাজা লক্ষ্য করেছিলেন স্বামীজি পড়বার সময় বইয়ের দিকে তাকিয়ে খুব তাড়াতাড়ি পৃষ্ঠাগুলো শুধু উল্টিয়েই যান। আর তাতেই তার নাকি গোটা বইটা পড়া হয়ে যায়। স্বামীজীকে রাজা জিজ্ঞাসা করলেন কি করে এটা সম্ভব?
স্বামীজি বুঝিয়ে বললেন- ‘ছোট ছেলে যখন প্রথমে পড়তে শেখে তখন সে একটা একটা অক্ষর দু-তিনবার উচ্চারণ করে তবে শব্দটি পড়তে পারে,তখন তার নজর থাকে এক-একটা অক্ষরের উপর। আরো কিছুদিন শেখার পরে সে আর অক্ষর ধরে পড়ে না, তার নজর তখন থাকে একটা শব্দের দিকে। আরও অভ্যাসের পরে সে এক নজরে একটা বাক্য পড়তে পারে। এমনিভাবে ক্রমশ ভাবগ্রহণের ক্ষমতা বাড়িয়ে দিলে এক নজরে একটা পৃষ্ঠা পড়ে ফেলা যায়।’ তিনি সেই ভাবেই পড়েন। স্বামীজী আরও বললেন-’এ শুধু অভ্যাস,ব্রহ্মচর্য ও একাগ্রতার ফল যে কেউ চেষ্টা করলেই তা করতে পারবে ।
বেলগাঁও এর হরিপদ মিত্রকে একবার স্বামীজি চার্লস ডিকেন্সের “পিকউইক পেপারস” থেকে অনর্গল মুখস্ত বলে অবাক করে দিয়েছিলেন। হরিপদ মিত্র আরও অবাক হয়েছিলেন যখন তিনি শুনেছিলেন যে স্বামীজি কেবলমাত্র দুইবারই ওই বইটি পড়েছিলেন। স্বামীজী জানান ‘একাগ্রতা এবং ব্রহ্মচর্যের ফলে এরকম স্মৃতিশক্তি হওয়া সম্ভব।’
আপনি আরও পড়তে পারেন- HOW TO DRY A WET PHONE EASILY TOP 5 TIPS & TRICS HOW TO DRY A MOBILE IN BENGALI জলে ভিজে যাওয়া মোবাইল থেকে জল বের করুন মাত্র কয়েক মিনিটে
(STORY RELATED TO SWAMI VIVEKANANDA IN BENGALI) স্বামী বিবেকানন্দের জীবনের সঙ্গে যুক্ত ছোট গল্প
ঘটনা-০৫
স্বামীজীর বিদেশ থেকে ফিরে আসার পরের ঘটনা। নতুন এক সেট “এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা” মঠে আনা হয়েছে। স্বামীজীর ঘরে সেগুলি রেখে দেওয়া হয়েছে। শিষ্য শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী সেগুলো দেখে মন্তব্য করেন এক জীবনে এত বই পড়া অসম্ভব। এই কথা শুনে স্বামীজী বললেন কি বলছিস? এগুলি থেকে আমাকে যা ইচ্ছা জিজ্ঞেস কর সব বলে দেব।
কিন্তু শরৎচন্দ্র জানতেন না যে, স্বামীজি ইতিমধ্যে দশম খণ্ড পড়ে ফেলেছেন এবং এখন তিনি একাদশ খণ্ডটি পড়ছেন। স্বামীজীর কথা মত পরীক্ষা করে শরৎচন্দ্র অবাক হয়ে গেলেন। স্বামীজি শুধু শরৎচন্দ্রের সব প্রশ্নের উত্তরই দিলেন না অনেক ক্ষেত্রে এনসাইক্লোপিডিয়ার ভাষা পর্যন্ত হুবহু মুখস্ত বলে গেলেন। শিষ্যকে স্বামীজি বললেন ‘দেখলি তো একমাত্র ব্রহ্মচর্য পালন ঠিক করতে পারলেই সমস্ত বিদ্যা মুহূর্তে আয়ত্ত হয়ে যায়- শ্রুতিধর স্মৃতিধর হয়’।
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
STORY RELATED TO SWAMI VIVEKANANDA IN BENGALI***স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষনীয় গল্প




কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।
দারুন।