আজকের গল্প দুটি একটু ভিন্ন স্বাদের। আজ দুটি ছোটদের ভূতের গল্প আপনাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। এই সুন্দর ভূতের গল্পদুটি পড়ার পড়ে আপনার উপলব্ধি হবে যে, ভুত মানে শুধু ভয়ানক নয় বরং ভূতের সাথে বন্ধুত্বও হতে পাড়ে। bhuter golpo horror story for kids
ছোটদের ভুতের গল্প bhuter golpo:-
ভূত, নামটা আমি তেমন গায়ে লাগাতাম না। সবে কলেজে ভর্তি হয়েছি তখন কি বা বয়স আমার 18-19 হবে। সত্যি বলতে কি আমি বাড়ির মধ্যে সাহসী ছিলাম বেশ। অমাবস্যার রাতে কতো ভূতের পেছনে ছুটলাম কিন্তু পেলাম আর কই। তবে জীবনের কিছু ঘটনা তার মূল স্রোতকে যেন আলাদা মোহনা দান করে। কলেজের ইতিহাসের স্যার ছিলেন বিমলকান্তি হালদার। ওনাকে দেখলে মনে হবে 50 এর দশকেই উনি এখনও আছেন,কারন ওনার ইস্ত্রি করা ধুতি-পাঞ্জাবি,যা প্রচন্ড আমাদের আকর্ষণ করাত। স্যার বিয়ে করেননি। স্যারকে জিজ্ঞাসা করলে উনি বলে, “মনের মানুষ একজনই হয়।”
কম বয়সে আমাদের চঞ্চল মনে প্রেমবিলাস মেঘের মতো থাকতো কখনো আসে আবার কখনো চলে যায়। স্যারের বাড়িটা শহর থেকে প্রায় আড়াই কিমি দূরে। জানতে পারলাম স্যারের মুখ থেকেই। কিছুদিন পরে স্যারের প্রমোশন হয়, সেই সুবাদে স্যার আমাদের নিজে হাতে রান্না করে খাওয়ানোর কথা বলে, আমরা তো এক পায়ে খাড়া। সেইদিনই আমাদের গ্রুপের বন্ধুবান্ধবী নিয়ে হাজির হলাম তার বাড়িতে। “স্যার এসেছি সবাইকে নিয়ে সুনীল, শাশ্বত, রিয়া, পূজা সবাই আছে। কিছুক্ষন মধ্যে স্যার খুব ব্যস্ত হয়ে গেল আমাদের নিয়ে। ওনার বাড়িটা দেখতে অনেকটা লালকুঠির মতো, ইংরেজদের সেই অত্যাচারিত লালকুঠি।
বাড়ির সামনে ঢুকতেই দেখলাম বড়ো দালান রয়েছে, আভিজাত্য না থাকলেও তার অবশিষ্ট আছে ভগ্নাবস্থায়। স্যার তার ঘরে ডেকে নিয়ে গেলেন, ঘরে কিছু পুরানো দিনের আসবাবপত্র আর কিছু ছবি দেখলাম অপরিস্কার অবস্থায়। :তোমাদের খুব অসুবিধা হবে, একটু মানিয়ে নিও” স্যার বললেন। কোনো অসুবিধা নেই স্যার, আমরা বললাম। স্যার অনেকগুলো ডিম ভেজে, আলু ভেজে মুড়ি নিয়ে আসলেন। আমরা মনে মনে বললাম, এতো টাকা মাইনে পান, আর জলখাবারে মুড়ি। আর কিপটে স্যার বলে নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে বলা-কওয়া করছিলাম।
হঠাৎ এক বছর 22 এর মেয়ে একটি বড়ো পেতলের থালায় কিছু রাজভোগ, লেডিকেনি ও রসোগোল্লা নিয়ে আমাদের অতিথি সম্ভাষনে খেতে দিয়ে গেল। আমরা হতবাক হয়ে গেলাম এমন কান্ড দেখে। স্যার বলেছিলেন সাতকূলে তার কেউ নেই, হাত পুড়িয়ে খেতে হয়, বিয়ে করার বয়সও অনেকদিন আগেই মুড়িয়ে গেছে, তাহলে এটা কে ?
আমরা সবাই অবাক। খাওয়া শেষ করে বাড়ির পেছনের দিকটা ঘুরতে গেলাম সবাইকে নিয়ে। অনেকটা ঘুরে বুঝলাম কিছু আম, জাম ছাড়াও অনেক গাছ আছে সেখানে। তবে মানুষের পদচিহ্ন তেমন দেখতে পাইনা আমরা। কিছু প্রশ্ন মনের মধ্যে বারবার উঁকি দেয়। দুপুরে স্যার বড়ো দালানেই খাবার ব্যবস্থা করলো। কিন্তু খাবারে স্যার সেই কৃপনের ছাপ স্পষ্ট রাখলেন, পদে ছিল অল্প ভাত, মুসুরির ডাল, পাতলা পোনা মাছের ঝোল আর একটু আমের চাটনি। এবার সত্যি আমাদের খুব খারাপ লাগলো।
সুনীল আর রিয়া একটু ভাত আর একপিস পোনা মাছ খেলো, তারপর যখন আমরা খাওয়ার আসন থেকে উঠে যাচ্ছি তখন সেই অদ্ভুত ঘটনাটি আবার ঘটলো, একের পর এক পোলাও, মাংস, ভেটকি মাছ, আনারসের চাটনি, সাবুর পাঁপড় সমেত আরো কতো কি শেষে মিষ্টি দই, পাকা আম সব দিয়ে গেলো সেই বছর 22শের মেয়েটি। আমরা প্রচন্ড অবাক হলাম ঠিকই কিন্তু আমরা পেটুক বন্ধুরা সময় দিল না কিছু খেতে শুধু কিছু পাকা আম ছাড়া সব নিমেষে সাফ করে গেলো। মেয়েটা কে ? এই প্রশ্ন শুধু আমার নয় আমার বন্ধুদেরও।
সেদিন বিকালেই আমরা চলে আসি স্যারের বাড়ি থেকে। কিন্তু আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেও কোনোভাবে উত্তরটা পাইনি। একদিন ক্লাসের শেষে স্যারকে সব কিছু জানালাম স্যার প্রথমে কথাগুলো শুনে কেমন জানি ফ্যাকাসে হয়ে গেলেন পরে বললেন “আমার বাড়িতে কোনো মেয়ে রয়েছে ???? বলে তিনি খুব হাসতে লাগলেন এবং এসব হাসির কথা উনি পছন্দ করেন না এর বলে চলে যান। এরপর থেকে আমি এসব নিয়ে আর মাথা ঘামালাম না। বছর সাতেক পর আমি রেলে চাকরি পাই একটি উঁচুমানের, আমার বন্ধুরাও ভালো ভালো রাজ্য সরকারী চাকরি পেয়ে প্রতিষ্ঠীত। কিন্তু কিছু অতীত যে পিছু ছাড়েনা, তেমনই ঘটলো।
একদিন অফিসের কাজে সলিলপুর রেলষ্টেশনে আমায় যেতে হলো, সেদিন খুব বৃষ্টিও হচ্ছে। কালো মেঘে ঢাকা পড়েছিল মধ্যাহ্নের সূর্য, এমন সময় দেখতে পাই অনেক বছর আগে স্যারের বাড়ির সেই মেয়েটিকে একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে একটু একটু করে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে না দেখতে পেয়ে মেয়েটাকে বাঁচাতে ছুটে যাই কিন্তু যা ঘটার তা ঘটে গেছে মেয়েটাকে দেখতে পেলাম না, হয়তো রেলের তলায় মেয়েটার ছিন্নভিন্ন মাংস হাড় ভেঙে এক হয়ে গেছে। আমি লোকো-পাইলট এর কাছে ছুটে যাই কি ঘটলো তা জানতে, তিনি বললো ” আমার সামনে তো কেউ ছিলনা থাকলে তো রেড সিগনাল দেখতে পেতাম সামনে, আপনি মনে হয় ভূল দেখেছেন।
সাতবছর আগে যে হাসিটা দেখেছিলাম স্যারের মুখে আজ তা পুনরায় দেখতে হলো সেই ট্রেন চালকের মুখে। আজ নিজের কাছে বড়ো তাচ্ছিল্য হতে হলো, ভাবলাম কিছু আমাকে জানতেই হবে। কিছুদিন পর ছুটি নিয়ে বাড়িতে এলাম, খোঁজ করলাম কলেজে গিয়ে যদি বিমলকান্তি স্যারের কোনো খবর পাওয়া যায়। কিন্তু শুনলাম উনি অনেকদিন আগেই এখানে চাকরী ছেড়ে কোথায় চলে গেছেন, তার খবর কেউ জানে না। ভাগ্যের অদ্ভুত খেলায় স্যারের সেই পুরানো বাড়িতে আমার মামাশ্বশুর থাকে এখন। একদিন ফোন করে আমার যাবার কথা বললাম। সাদরে গ্রহন করে আসতে বললেন সপরিবারে। একদিন ছুটির দিনে গেলাম সপরিবারে, কাউকে কোনোদিন সেসব কথা বলিনি তাই সেদিনও বললাম না।
বাড়িটি সেই আগের মতোই রয়েছে। বাড়িতে ঢুকে সবার দৃষ্টির বাইরে সেই ঘরে গেলাম যেখানে বিমলকান্তিবাবু থাকতেন সেখানে বর্তমানে এখন এক আবর্জনার স্তূপ হয়ে আছে। হঠাৎ আমার বুকের রক্ত যেন হিম শীতল হয়ে গেলো দেখলাম সেই মেয়েটা একটা ভাঙা খাটের ওপর বসে পা দোলাচ্ছে আর তার শরীর থেকে টপ টপ করে রক্ত ঝরছে যা ভেসে যাচ্ছে নোংরা ধুলো ভরা মেঝেটা। কিছু বলতে যাবো এমন সময় সেই মেয়েটা আমার হাত ধরে টানতে টানতে একটা অন্য ঘরে নিয়ে গেলো যেখানে খুব অন্ধকার, তবে তার হাতটা দেখতে পেলাম না, খানিকক্ষণ পরে পায়েতে একটা পুরানো দিনের কালো ট্রাঙ্ক ধাক্কা খেলো, যেন অবচেতন মনে এক দু:স্বপনের মতো দেখলাম এক বিভীষিকাময় ঘটনা, যতটুকু মনে আছে।
বিমলকান্তি হালদার তখন 30-32 বয়সের যুবক। কলেজের অনেক মেয়েরাই তাই ওনার প্রতি একটু আসক্ত থাকতো বিশেষ করে 2nd ইয়ারের মালা রায়, দেখতে বেশ সুন্দরী, বয়স 20-22 হবে। তবে বিমলকান্তি তেমন পছন্দ করতেন না কারন মেয়েটা পড়াশোনায় খুব একটা ভালো নয়। একবছর পর মালার বিয়ে হয়ে গেলো সুদীপ বোসের সাথে কিন্তু মালা মনে মনে তখনো ভালোবাসতো বিমলকান্তিকে। একদিন মালার এই প্রেমের গল্প জানতে পারে সুদীপ। এরপর থেকে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক নষ্ট হতে থাকে নিত্য কলহে। যা কিছুদিনের মধ্যেই সব সীমা ছাড়িয়ে যায়, নৃশংসভাবে ছুরি দিয়ে মালাকে সে খুন করে।
পরে সুদীপ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে যায় রাতের আঁধারে। চোখটা যেন কেউ খুলে দিলো। সবকিছু বুঝতে পারলাম, এও বুঝতে পারলাম সেই মেয়েটা আর কেউ নয় মালা রায়। মৃত্যুর পরও তার প্রিয় মানুষদেরও সে ভালোবেসে গেছে নি:স্বার্থভাবে। ধুলো মাখা মেঝে থেকে উঠে আর কাউকে কোথায়ও দেখতে পাইনা। নিচে থেকে আমার স্ত্রীর গলা শোনা যাচ্ছে। মনে মনে সেই মেয়েটিকে প্রনাম জানালাম। আজ হয়তো তার মুক্তি ঘটলো, চিরবিদায় হলো সেই মেয়েটার।
story by:- সৌগত প্রামানিকfacebook
পড়ুনঃ- সুপ্ত প্রেমের বেদনাময় কাহিনী।। কষ্টের প্রেমের গল্প।। হার্ট টাচিং লাভ স্টোরি TOP NEW NO 1 HEART TOUCHING LOVE STORY
ছোটদের ভূতের গল্প। দিদিমণিঃ-
ভুতেরা যে শুধু বিদঘুটে হয় , কে বলেছে আপনাকে? কিছু কিছু ভুত বাচ্চাদের বন্ধুও হয়। যদিও ভুতেরা একটুখানি দুষ্টু হয়। আরে এ যেমন তেমন ভূতের কথা আমি বলছি না। আমি বলছি তিন্নির ভুত দিদিমণির কথা। কিভাবে ওর সাথে বন্ধুত্ব হলো! আমার ভাইজি-তো, আমার মতো। তিন্নি ঠিক পড়াশোনা করতে ভালো বাসতো না। ওর গ্রামের বাড়ির লাল্টু , পটলাদের মতো জীবনটা ভালো লাগতো। ওরাতো স্কুলে যায় , বাড়ি ফেরে, বিকালে গিয়ে মাঠে ডাঙগুলি খেলে, নদীর ধারে গিয়ে ফড়িং ধরে, সন্ধা হলে হরিলুট এর বাতাসা কুঁড়ায় তারপর পড়তে বসে।
আর তিন্নির জীবনটা একটা নিয়মের খাঁচায় বাধা। বিকাল গুলো রুটিন বন্দী- ক্যারাটে ক্লাস, আঁকার ক্লাস, গানের ক্লাস, সাঁতারের ক্লাস, আবৃত্তি ক্লাস, যোগ ক্লাস, নাচের ক্লাস, গীটারের ক্লাস। ওর কোনো ছুটি নেই। হোম ওয়ার্কের খাতায় গুড নেই। রোজ বকা খায়। সুফিয়ার সাথে ওর প্রথম বন্ধুত্ব হল স্কুলেই। সুফিয়া খুব দুষ্টু, রোজ ওর টিফিন তো খাবেই সাথে অন্য দের টিফিন টাও খেয়ে নেয়। কিন্তু সূফিয়াকে কেউ দেখতে পায় না, সুফিয়া রাজার চুল ধরে টানবে, তিন্নির দোষ হবে। দিদিমণির বকা খাবে। তবে তবুও সে তিন্নি কে বন্ধু বলে। আর কারও কাছে তো টাইম নেই ওর বন্ধু হবার।
তিন্নির একা শুতে ভয় লাগে বলে ,সুফিয়া রোজ রাতে তিন্নির বাড়িতে এসে শুয়ে পড়ে চুপিচুপি, রাতে কতো গল্প বলে- ভুতের, রাজ পুত্তুরের, পরীদের আরও অনেক কিছু। তিন্নি ওর একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড। রাহুলরা তিন্নির সাথে খারাপ ব্যাবহার করলে ও রাহুল দের ল্যাঙ মেরে কাঁদায় ফেলে দেয়। কোথা থেকে- তেঁতুল, কামরাঙা , আঁশফল, ফলসা, খেজুর, কালো জাম এনে খাওয়ায় ওকে।
আপনি ভাবছেন, গল্প এর নাম ছোটদের বন্ধু ভুত দিদিমুনি অথচ আমি একটা ছোট ভুতের গল্প বলছি। আসলে এই মাত্রই মূল গল্পটা শুরু হলো। হাফ ইয়ারলি exam result সবে বেড়িয়েছে। তিন্নি চায় না এবার কেউ ওকে ব্যাড গার্ল বলুক। কিন্তু রেজাল্টের সময় দেখা গেল ও খুব খারাপ নাম্বার পেলো। ওর মা বলে দিয়েছে ডল কেনাতো দূরে থাক, নতুন জামা কাপড়ও কিনে দেবে না। সুফিয়া ছাড়া তো তিন্নির কেউ নেই, ওর উপরেই চোটপাট নিলো তিন্নি। সুফিয়া দুই দিন দেখা করলো না ওর সাথে। তিন্নি খুব কাঁদলো।
ওরা দুইজন খুব ভালো বন্ধু ছিলো, তাই সুফিয়া তিন্নি কে বললো চলো তোমাকে আমি এমন জায়গায় নিয়ে যাবো যেখান গেলে কেউ তোমাকে বকবে না, যতক্ষণ খুশি খেলা করবে, যখন খুশি পড়বে। ওখানে কেউ ভুঁড়ি ভুঁড়ি নাম্বার পাওয়ার জন্য পড়ে না। সবাই পড়ে জানার জন্য। নতুন জিনিস জানতে বই পড়তে দারুন মজা হয়। বলে রাখি এই সুফিয়াকে তিন্নি ছাড়া আর কেউই দেখতে পায় না।সুফিয়া হল অদৃশ্য এক ছায়া।
ও তিন্নিকে ছাদের ওপর নিয়ে গেলো। কয়েক বছর আগে স্কুলের ছাদে লুকোচুরি খেলতে এসেছিলো সুফিয়া। তারপর পা পিছলে পড়ে গিয়ে মারা যায়। আজ তিন্নিকেও সুফিয়া নিয়ে এলো ছাঁদে। আর ঠেলা মেরে ফেলে দিলো। কারণ ও বললো এভাবেই ছাদ থেকে পড়ে গেলে ওরা নাকি চিরকাল বন্ধু থাকবে।
তিন্নি আর কাউকে বিশ্বাস করে না। ও সব কথা আমাকে বললো। কারণ আমি ওর ভালো জেঠু কোনও দিন বকাঝকা করি না। বরং ওকে নানা রকমের ছবির বই এনে দিই, একটা ছবি আঁকতে পাড়লেই চকলেট দিই। তবুও একটা কিছু গোপন করে গেলো সে, তিন তলা ছাদ থেকে পড়ে গিয়েও ওর কিছু হলো না কেন? তবে ওর ডান হাঁতে সামান্য একটু ছড়ে গেছে।
আমি ওর বাবা মাকে ভীষণ বকাঝকা করলাম, একটা বাচ্চা মেয়ের উপর ওরা কেনো অনেক বেশি চাপ দিয়ে ফেলছে? এত্ত ছোট্ট একটা মেয়ে কি সব কিছু করে উঠতে পারে? নিজেদের অনেক স্বপ্নের কাছাকাছি গিয়ে হয়তো ব্যার্থ হয়েছে, তবে সেই স্বপ্ন গুলো ওকে দিয়ে পূরণ করতে গিয়ে ওর শৈশব টাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি বললাম, পড়াশোনা ছাড়া যে কোনো একটি বিষয় বাছতে হবে , অত চাপ দেওয়া যাবেনা, তাহলেই সফলতা আসবে। ওর মা বাবা রাজিও হলো , কিন্তু একটা বিষয় বাছতে বললে, ও যেনো কারো সাথে আলোচনা করছে।
সবাই চলে যেতে আমি জিজ্ঞেস করলাম “তুই আবার সুফিয়ার সাথে কথা বলছিস, ও না তোর ক্ষতি করতে চেয়েছিলো!”
ও বললো “না সুফিয়া না। আমি কারো সাথে কথা বলছি না।”
তিন্নি বেশ বদলে গেলো। বেশ হাসিখুশি থাকছে। একটা শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছে। নিয়ম করে ঘুম থেকে উঠে গানে রেওয়াজ করছে, তৈরি হয়ে একদম ঠিক সময় খাওয়া দাওয়া, পড়াশোনা করেছে। এক্কেবারে good girl হয়ে গেছে। “জীবনে সেরাটাই হতে হবে এমন হতে বলি নি, কিন্তু তুমি পরীক্ষায় নিজের সেরাটাই পারফর্ম করবে” এটুকু আমি বলেছিলাম। গানের প্রতিযোগিতায় ও দ্বিতীয় হলো আমাদের সবাইকে অবাক করে। যদিও আমাদের আগেও অবাক করেছে। ও এবার স্কুলে পঞ্চম হয়ছে। শর্ত অনুযায়ী ওর জন্মদিন করতে হলো।
বিকেলে থেকে বেশ মজা করছিল ও। হঠাৎ রাতের বেলায় দেখি, ও বারান্দায় গিয়ে কাঁদছে।
তাড়াতাড়ি ছুটে গেলাম, কি ব্যাপার তা দেখতে। ও বললো “ভালো জেঠু তুমি আটকাও না দিদিমণিকে”
চোখ ঘুরিয়ে দেখি “ছাঁদের কোনে দাঁড়িয়ে কাঁদছে অপর্ণা”
আমি অবাক হয়ে গেলাম এত বছর পর ওকে দেখে। ও বললো “বুবাই দা আমারও যদি বিয়ে হতো তিন্নির মতোই সুন্দর ফুটফুটে একটা মেয়ে হতো তাই না বল! ওকে তোমরা একটু ভালোবেসো। কোনো মানুষ সেরা হয়ে জন্মগ্রহণ করে না, কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলনই তাকে সেরা করে। ও সেটা এখন বুঝে গেছে, তাই আমাকে প্রয়োজন নেই আর। তু তুমি এসেছো ভালো হয়েছে। শেষ বার দেখা হলো ভালো হলো। একটা কথা জেনে রেখো- প্রতিযোগিতার ফল, পরীক্ষার ফল, rank এগুলো সব একটা সংখ্যা মাত্র। ও কতটা শিখলো কতটা যোগ্য হলো সেটাই আসল কথা। এ টুকু জেনে রেখো। ভালো থেকো।”
মনে পরে গেল সুফিয়া কে বাঁচাতে গিয়ে অপর্ণাও ছাদ থেকে পড়ে যায়। খোলা ছাদ অথচ গেটে তালা না থাকার ফলেই দূর্ঘটনায় সুফিয়া মরেছে ও পুলিশ কে স্টেটমেন্ট দিয়ে ছিল। কতৃপক্ষ নিজেদের বাঁচাতে ওর ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়। ও নাকি ভয় দেখাতে গিয়ে সুফিয়া কে মেরে ফেলছে।
ও হয়তো প্রমান করে দিতে পারতো ও নির্দোষ। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে ওকে বিদায় নিতে হয়েছিল এই পৃথিবী থেকে। কিন্তু ও বেঁচে আছে আরেকটা পৃথিবীতে, তিন্নীদের জন্য।
গল্প প্রেরক- মানব মন্ডল।(facebook)
পড়ুন- বিস্কুট রহস্য। মজার গোয়েন্দা গল্প হোটেলের শাঁকচুন্নি। ভুতের রহস্য
“ছোটদের ভূতের গল্প। দিদিমণি। ভালো ভূতের গল্প। bangla horror story. horror story for kids bangla. bhuter golpo”
FOR TELEGRAM UPDATES:- ছাড়পত্র। CHARPATRA FOR FACEBOOK UPDATES:- গল্প আর গল্প
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।