প্রিয় মানুষ গুলি নাকি শুধু রাগটাই দেখে, কিন্তু সেই রাগের পশ্চাতে থাকা ভালোবাসাটা দেখে না। কিন্তু আজকের গভীর প্রেমের গল্প টিতে পাঠক খুঁজে পাবে, রাগের মাধ্যমেই ভালোবাসার…..বহিঃপ্রকাশ।। ভালোবাসার বড় গল্প
গভীর প্রেমের গল্প:- “অভিযোগ”
ব্যস্ত শহরে সবাই ব্যস্ত। আর এর ফাঁকেই দু’জনের ছোট্ট গল্প না হয় বলেই দিই।
রোজ তাকে ট্রেনে করে কলেজে যেতে হয়। যেই স্টেশন থেকে সে ওঠে সেখান থেকে প্রায়দিন সিট না পেয়ে দাঁড়িয়েই যায়।
তার সাথে প্রায় অনেকের রোজ দেখা হয় ট্রেন সফরে। কেউ কেউ তো রোজকার দেখা হওয়া লোক হয়ে গেছে।
এইটুকু কথা যাকে নিয়ে বলা তার নাম গুঞ্জন।
এরকমই একদিন মিস গুঞ্জন উঠেছে তবে সেদিন জায়গা পায়নি আর প্রচুর ভীড়। তাই দাঁড়িয়েই আছে । হঠাৎ দেখে সামনাসামনি থাকা একজন যুবক তার দিকে খুব নোংরা নজরে তাকাচ্ছে বারবার। খুব অস্বস্তিবোধ শুরু হয় গুঞ্জনের।
বেশ মিনিট কয়েক এমন অস্বস্তির সাথে লড়াই করার পর হঠাৎ ই গুঞ্জন আর ওই ছেলেটির মাঝখানে ঢাল হয়ে দাঁড়ায় আরেকটি যুবক।
গুঞ্জন প্রথমে বুঝতে পারেনা, ও ভাবে এবার তো এই ছেলেটা পুরো তার সামনে দাঁড়িয়ে। যাই হোক নিজে যতটা সম্ভব তৈরি হয়ে থাকে বেফাঁস কিছু হলে আক্রমণের উদ্দেশ্যে।
![গভীর প্রেমের গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
কিন্তু গুঞ্জনের সামনে দাঁড়ানো ছেলেটি মনে হয় গুঞ্জনের মনের কথা বুঝতে পারছিল তাই ছেলেটি নিজেই বলে, আমি দূরে দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে দেখছিলাম যে ওই ছেলেটা আপনার দিকে খুব খারাপ ভাবে দেখছে, অঙ্গভঙ্গি করছে। তাই আমি আপনার আর ওর মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
এরপর সে ওই ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বলে, “এই যে ভাই, বাড়িতে কি আপনার মা, বোন নেই! যদি আপনার বোনের দিকে আপনি যেভাবে এই মেয়েটির দিকে তাকাচ্ছিলেন সেভাবে কেউ তাকায় মেনে নিতে পারবেন তো? নাকি চোখের সামনে নিজের বোনকে ধর্ষিত দেখার ক্ষমতা রাখেন! বোন কে নিয়ে এসব কথা বলতে আমার খুবই খারাপ লাগছে কিন্তু আপনার চরিত্রের বলি তো আপনার বোনকেই হতে হতে পারে একদিন তাই না।”
ছেলেটি সবার সামনে অপমানিত হয়ে চুপ করে যায়।
গুঞ্জন তার সামনে থাকা ছেলেটিকে বলে, “আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।”
-না না ধন্যবাদ এর কিছু নেই । ধন্যবাদ বলতে হবে না।
গুঞ্জন আর ওই ছেলেটি দুজনেই দাঁড়িয়ে। এমন সময় ছেলেটির সামনে একটা সিট খালি হয়। ছেলেটি গুঞ্জনের উদ্দেশ্যে বলে, “বসুন।”
পড়ুনঃ- স্কুল লাইফের ক্রাশ
-না না আপনি বসুন না।
-আরে আপনি বসুন না। আমার ভীড় ট্রেনে দাঁড়ানো কেন, ঝুলে যাওয়ারও অভ্যাস আছে। হেসে বলে ছেলে টা।
-না না এটা কিন্তু মোটেও হাসির কথা নয়। কোনো বিপদ হলে তখন কি হবে শুনি! এত ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়। গুঞ্জন বলে।
-গোটা জীবনটাই যেখানে ঝুঁকি, বিপদে ভরা সেখানে এই টুকু ঝুঁকি তো কিছুই না ম্যাডাম!
-আপনি যদি এই ছোট্ট ঝুঁকিতে শেষ হয়ে যান তাহলে গোটা জীবনের বাকি ঝুঁকি গুলো কিভাবে উপভোগ করবেন শুনি!?
ওদের কথায় কথায় শেষমেষ সিটটাই চলে যায়।
ছেলেটা হতাশ হয়ে বলে- ওই দেখুন, বললাম বসতে, বসলেন না , এখন সিট টা হাতছাড়া হয়ে গেল, এবার তো এত ভীড়ে আপনার দাঁড়াতে অসুবিধা হবে ।
-না না ঠিক আছে, কোনো অসুবিধা হবে না, আমি দাঁড়াতে পারব।
গুঞ্জন নেমে যায় আগে। আর নামার পরে মনে হয়, ছেলেটাকে ‘আসছি’ বলা হলো না। ইস! খুব অভদ্রতা হলো।
![ভালোবাসার বড় গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
পরক্ষণেই মনে হলো, না ও তো অন্য দিকে তাকিয়ে ছিল। হয়ত খেয়াল করলে ও নিজেই গুঞ্জন কে কিছু বলত।
পরদিন আবারো সেই ছেলেটির সাথে খুব অদ্ভুত ভাবেই দেখা। দেখেই হাসি বিনিময়।
-ভাল আছেন? ছেলেটি জানতে চায়।
-হুম ভালো আছি আপনি কেমন আছেন?
এ-ই তো চলছে।
-গতকাল না বলে চলে যাওয়ার জন্য দুঃখিত।
-এই না না, এসব বলতে হবে না, আমিও তো কিছুই বলিনি তখন, আমারও তো বলা উচিত ছিল।
দুজন গল্প করতে করতে আবারও নিজেদের গন্তব্যস্থলে নেমে যায়। তবে এবার আর আগের দিনের মতো ভুল হয়না। দুজনেই দুজনকে বিদায় জানিয়ে চলে যায়।
আজ আবার নামার পর মনে পড়ে, ওর তো নামটা জানা হয়নি!
দূর এত ভাবার কি আছে শুনি, ট্রেনে কয়েকটা স্টেশনের মধ্যে তাদের কথাবার্তা বা দেখা হওয়া জড়িয়ে, এর থেকে তো বেশি কিছু নয়। অত জানার দরকার নেই।
কিন্তু মনের ভিতর বলছে, না না দরকার আছে।
পরদিন ছেলেটা কে দেখতে পায় না গুঞ্জন। মনটা খুব খারাপ লাগে। কে জানে হয়ত ওর দেড়ি হয়ে গেছে।
মনটা ভীষনই খারাপ লাগছে। কিন্তু কেন লাগছে সেটা বুঝতে পারছে না গুঞ্জন। সেও যাত্রী আর ছেলেটাও। ট্রেনে ওর সাথে দেখা হওয়া বা না হওয়া কে তার মন এত গুরুত্ব দিচ্ছে কেন? না না আর এসব ভাবতে চায় না গুঞ্জন। সে নেমে যায় ওর গন্তব্যে।
পরপর পাঁচদিন ধরে দেখা হয়না ছেলেটার সাথে।
পড়ুনঃ- ছোট ছোট দুটি ব্যর্থ প্রেমের গল্প
এইবার কেমন জানি অজানা দুশ্চিন্তা শুরু হলো দু’দিনের পরিচিত হিরোর জন্য। হ্যাঁ হিরোই তো বটে কারণ প্রথম যেদিন দেখা হয়েছিল সেদিন তো সেই অসভ্য ছেলেটা আর তার মধ্যিখানে পুরো ঢাল হয়ে…কিন্তু হঠাৎ কি হলো ওর? বেপাত্তা হয়ে গেল যে।
ছয়দিনের মাথায় চমক দিয়ে দেখা হয়ে যায় ছেলেটার সাথে।
গুঞ্জনের তৃষিত নয়ন রোজ যাকে খুঁজত, যার অপেক্ষা করত সেই ছেলেটিকে হঠাৎ অপ্রত্যাশিত ভাবে দেখে খুব আনন্দিত হয়ে বলে, আরে আপনাকে এই ক’দিন যে দেখতেই পাচ্ছিলাম না। শরীর খারাপ ছিল নাকি?
-Strange আপনার এই প্রশ্ন শুনে মনে হচ্ছে যেন আপনি আমার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।
গুঞ্জনের ego hurt হয়। সে মনে মনে ভাবে কেন যে বলতে গেলাম, সত্যিই তো, ও উঠবে কি না উঠবে তাতে গুঞ্জনের কি শুনি!
ছেলেটি গুঞ্জনের মনের কথা বুঝে যায় এবারেও আর বলে, সত্যি বলতে আমার নিজেরও খুব খারাপ লাগছিল আপনার সাথে এই ক’দিন দেখা হয়নি বলে।
গুঞ্জন ছেলেটির দিকে তাকায়, ছেলেটি বলে, “আপনি কেমন আছেন বলুন।”
-ভাল আছি আপনি?
-আমিও ভালো আছি। আসলে এই ক’দিন আমি এখানে ছিলাম না, আমাকে মাসির বাড়ি যেতে হয়েছিল তাই।
-ওও আচ্ছা আচ্ছা।
গুঞ্জন জিজ্ঞাসা করতে যাবে নামটা ঠিক তখনই ছেলেটা হেসে বলে, আপনি ফার্স্ট ইয়ারে পড়েন? গুঞ্জন বসু, right?
-Identity card দেখলেন বুঝি?
-ইয়েস।
![অপেক্ষা নিয়ে গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
গুঞ্জন এবার দ্বিধা কাটিয়ে বলে ওঠে, আপনার নাম কি, “আপনি কীসে পড়ছেন?”
-আমি অনন্ত রায়। আমি বি এস সি, কেমিস্ট্রি অনার্স এ পোস্ট গ্ৰ্যজুয়েশন করছি, সেকেন্ড ইয়ার চলছে। একদিন যাবেন আমাদের কলেজে।
“বাপরে, আপনি তো দেখছি অনেক ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট!” গুঞ্জনের মুখে প্রশংসা।
“আপনিও হবেন চিন্তা নেই।” হেসে বলে অনন্ত।
“আশীর্বাদ করবেন।” ইয়ারকি করে বলে গুঞ্জন।
এখন রোজই ট্রেন সফরে দুজনের মধ্যে দেখা হয়, একটু একটু করে কথা বাড়তে থাকে। একটু একটু ভালো লাগা থেকে মানসিক ভাবে কাছে আসা শুরু হয়।
অনন্ত যেন রোজই গুঞ্জনের না নামা পর্যন্ত গোটা যাত্রাপথে ঢালের মতো আগলে রাখে প্রচুর ভীড়ের থেকে। যতরকম খারাপ স্পর্শ, খারাপ দৃষ্টি সমস্তটা অনন্তর পিঠে, হাতে ও কড়া চোখে আটকে যায়।
গুঞ্জনকে গোটা যাত্রায় একজন ভালোবাসার মানুষের মতো আগলে রাখে অনন্ত।
এই দেখে গুঞ্জন বলে, আপনি আমাকে এভাবে গার্ড করে দাঁড়ান কেন?
আমিও ঠিক জানি না জানেন। আমার মনে হয় কেউ আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করলে আমার খুব খারাপ লাগবে আর আমি দরকার পড়লে তাকে ছেড়েও দেবো না সহজে।
গুঞ্জন মৃদু হাসে।
পড়ুনঃ- অদ্ভুত এক প্রেম কাহিনী- রটনা নয় সত্য ঘটনা
সবসময় অনন্তের কথা মনে পরাই এখন গুঞ্জনের নিয়মমাফিক কাজ। ওটাও যেন প্রাত্যহিক রুটিন। এর মধ্যে কলেজে একটা ছেলের প্রপোজ আসে গুঞ্জনের কাছে। গুঞ্জন প্রথম শোনাতেই ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু কেন ফিরিয়ে দেয় জানে না।
এই কথাটা মজা করে অনন্ত কে বলতে গিয়ে সে খেয়াল করে অনন্তর মুখে ঈষৎ ঈর্ষা বোধ। সে খুব গম্ভীর হয়ে বলে, “তা প্রপোজ পেয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন এটা এত মজা করে বলার কি আছে যত্তসব! অত আনন্দে নাচতে হবে না, মন দিয়ে পড়াশোনা করুন।”
গুঞ্জন হাসি চাপতে পারে না আর।
-এত হাসির কি আছে শুনি?
-আপনার আচরণ দেখে ও কথা শুনে।
-হুঁ! বাচ্চা বয়সে অপরিপক্ক প্রেমের প্রস্তাব পেলে যা হয়। যতসব ফালতু।
-আমার উপরে খুব রেগে গেলেন মনে হচ্ছে।
-আপনার উপর রাগতে যাবো কেন শুনি, আপনি আমার কে !
-তাও ঠিক।
মেজাজটা কেমন যেন আরো গরম হয়ে যাচ্ছে অনন্তর। পরপর দুইদিন আবার দেখা নেই। তবে এবার যেখানে দেখা সেটা অপ্রত্যাশিত ও চমকপ্রদ ছিল গুঞ্জনের কাছে।
মিস্টার হিরো একদম গুঞ্জনের কলেজে হাজির।
-আরে! আপনি এখানে!
-হুম কেন আপনার অসুবিধা আছে নাকি?
না না কি বলছেন, চলুন আমার সাথে দেখাই কলেজটা।
-দরকার নেই, এতদিন ধরে কথা হচ্ছে, একবারের জন্যেও তো বললেন না আপনার কলেজ দেখাবেন, সব বুঝি বুঝতে পেরেছেন। এখন নিজে থেকে এসেছি বলে চলুন, চলুন।
পড়ুনঃ- সিনিয়র আপু যখন ক্রাশ!
-বাপরে খুব রেগে আছেন দেখছি এখনো। আচ্ছা আচ্ছা সরি, ভুল হয়ে গেছে আমার।
ট্রেনের ওই পৌনে এক ঘন্টার যাত্রায় পরিচিত মানুষটা হঠাৎ করে কেমন যেন কাছের হয়ে ওঠে।
কিন্তু এই ব্যাপার টা সহ্য করতে পারে না গুঞ্জন কে প্রস্তাব দিতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়া প্রশান্ত। সে ঠিক করে সিনিয়রদের যোগাড় করে গুঞ্জন কে Ragging এর মুখে ফেলবে। যেই ভাবা সেই কাজ। তার উদ্দেশ্যে ও পরিকল্পনা দুইই সফল হলো।
গুঞ্জন নতুন জায়গায় এভাবে আকস্মিক ভাবে পাওয়া আক্রমণটা মানসিক ভাবে মেনে নিতে পারে না।
সেদিন অনন্তর সাথে দেখা হলে খুব শুকনো হেসে কথা বলে কিন্তু অনন্ত বুঝতে পারে কিছু একটা।
এক সপ্তাহ কেটে গেছে। গুঞ্জন খেয়াল করে প্রশান্ত বা ওর সাকরেদদের কোনো উপদ্রব নেই। কিছু বুঝতে না পেরে কলেজে বেশ কয়েকজন কে জিজ্ঞাসা করে ওদের কথা। উত্তর হিসেবে এটা জানতে পারে যে সায়েন্স কলেজের সেরা স্টুডেন্টদের মধ্যে অন্যতম একজন স্টুডেন্ট অনন্ত রায় ও তার কিছু বন্ধুদের হাতে সম্ভবত ওরা পড়েছে আর ওরাই প্রিন্সিপাল এর কাছে প্রশান্তর rusticate হওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারে না গুঞ্জন। এসব কি শুনছে। এরা কি ট্রেনে দেখা সেই ছেলেটার কথা বলছে, সেই ছেলেটা!
-এই গুঞ্জন, বলছি, অনন্তদা হঠাৎ করে তোকে যারা বিরক্ত করত তাদের বারোটা বাজালো কেন?
কোনো কথাই আর কানে যাচ্ছেনা গুঞ্জনের। কাল জিজ্ঞাসা করতেই হবে ওই ছেলে টা কে।
ট্রেনে গুঞ্জন আগে ওঠে আর আগে নামে। তাই ও রোজ অপেক্ষা করে অনন্তর ওঠার। অনন্ত যেই স্টেশনে ওঠে সেই স্টেশন আসলেই অসভ্যের মতো উঁকি মেরে দেখা হলো গুঞ্জনের রোজকার কাজ।
হুম আজ উঠেছে অনন্ত। তবে মুখে খুব অভিমানের ছাপ।
গুঞ্জন নরম সূরে জানতে চায়, “কি হয়েছে আপনার?”
অনন্ত বলে, “কি আবার হবে শুনি!”
আজ অনন্ত খুব একটা কথা বলেনা। গুঞ্জন কিছু একটা আন্দাজ করেই আজ আর কলেজে যায় না। আর তাই দেখে অনন্ত বলে, “আপনি কলেজে যাবেন না?”
-না আজ যাবো না।
-তাহলে?
-আমি আজ আপনার কলেজে যাবো।
-মানেটা কি!
-কিচ্ছু না।
পড়ুনঃ- কলেজের প্রেম কাহিনী- পরিসমাপ্তি
অনন্তর কলেজে পৌঁছতে বেশ অনেকক্ষণ যেতে হয় গুঞ্জনের নামার পরেও। দুজনেই নামল একজায়গায়। একসাথে হাঁটার সময় অনন্তর প্রশ্ন, “এভাবে কলেজ কামাইয়ের কারণটা জানতে পারি কি?”
-আপনার জন্য।
অনন্ত ঘাড় ঘুরিয়ে বলে, “কি! আমার জন্য!”
-“হুম।” একটু থেমে গুঞ্জন বলে, “শুনলাম আপনি নাকি আমার কলেজে…”
-থাক যা শুনেছেন সেটা আর বলার দরকার নেই।
-উফ! এত রাগ কীসের আপনার !
অনন্ত এবার গুঞ্জন কে নিজের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে চোখে চোখ রেখে বলে, “কেন রাগ বুঝতে পারেন না! তবে শুনুন, আমি আপনাকে ভালবাসি। হ্যাঁ ভালোবাসি আপনাকে। আর কিছু জানতে চান!”
![একটি গভীর প্রেমের গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
গুঞ্জনের চোখের সামনে উধাও হয়ে যায় অনন্ত হঠাৎ করে।
এত কিছু এত কম মুহুর্তে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিল না বলে গুঞ্জন ঘাবড়ে যায়। আর ডাকে, “অনন্ত দাঁড়ান, শুনুন প্লিজ। আমিও আপনাকে ভালবাসি, অনন্ত।”
অনন্ত থেমে যায় চলতে চলতে। সে ফিরে আসে গুঞ্জনের কাছে।
শুরু হয় তাদের সুন্দর একটা সম্পর্ক। যেখানে ঝুরি ঝুরি প্রতিশ্রুতি রাখার নয়, প্রতিশ্রুতি না দিয়ে শুধুমাত্র পালন করাই বর্তমান। ব্যস্ত শহরে অভিযোগ দিয়ে শুরু হলো নতুন আরেকটা ভালোবাসার গল্প গুঞ্জন আর অনন্তর। দুজনের পাগলামি, ছেলেমানুষী, রাগারাগি আর মান অভিমান, ঝগড়া সব নিয়ে একটা true love!
অনন্ত বলে, “যদি কোনোদিন দেখি কোনো ছেলের সাথে কথা বলছ বেশি বেশি, খুন করে ফেলব তোমাকে বলে দিলাম।”
গুঞ্জন অনন্তর বুকে মাথা রেখে বলে, “আমি শুধু একজনের, আমি তার হয়েই থাকতে চাই।”
অনন্ত বুকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আমিও তোমাকে হারাতে চাই না গুঞ্জন। আমি তোমাকে কোনোদিন আমার ছাড়া অন্য কারোর হতে দেবো না। তুমি আমার ব্যস্ত শহরের একটা সুন্দর আলোর রোশনাই। এই ব্যস্ত শহরে তুমি আমার অভিযোগ, তুমিই আমার অভিমান, আমার কবিতা, আমার গান। সব কিছু শুধু তুমিময় আমার জীবনে। আমার হাত ছেড়ে চলে যেও না কখনো।”
গুঞ্জন আর অনন্তর সম্পর্কেও বাধা এসেছিল প্রচুর কিন্তু ভাঙেনি কোনোদিন। থেকে গিয়েছিল ওরা সারাজীবন একসাথে, একে অপরের সুখ দুঃখের ভাগীদার হয়ে।
আজকেও ওদের মনে পড়ে সেই অদ্ভুত পরিচয়ের গল্প। সেই প্রথম দিন থেকেই অনন্ত আগলে এসেছে তার গুঞ্জনকে, তার অভিযোগ কে…।।
গল্পের ভাবনায়-
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
একটি গভীর প্রেমের গল্প। ভালোবাসার বড় গল্প। 1 new bengali true love story
![charpatra.com ছাড়পত্র](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।