ভূতের কথা তো অনেক শুনেছেন, কিন্তু বাস্তবে ভূত দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে কি? বাস্তবেও নাকি ভূত দেখেছেন আমাদের একজন পাঠক। তারই মুখে শুনব তার আসল ভূতের গল্প টি।

আসল ভূতের গল্প। ভূতের গল্পঃ-

সিকিমের এক দুর্গম পাহাড়ে অবস্থিত একটি হাইস্কুলে চার পাঁচ দিনের একটি ক্যাম্প করেছিলাম। পাহাড়ের এক জায়গায় কিছুটা মাটি কেটে সমান করে স্কুল ঘর ও খেলার মাঠ তৈরি করা হয়েছিল। মাঠের পূর্ব ও উত্তর সীমা থেকে পাহাড় খাঁড়া নেমে গিয়েছে এক দেড় কিলোমিটার নীচে কাঁচা মটর সড়কে। তারপর আরও নীচে কোথাও চলে গেছে। মাঠের পশ্চিম দিকে লম্বা স্কুল ঘর উত্তর থেকে দক্ষিণে চলে গিয়েছে বাংলা ছায়াছবি ‘ হারানো সুর ‘ এর স্কুলের বারান্দার মতো।

স্কুলের ঠিক পিছনে তিন চার হাত পরেই পাহাড় খাঁড়া উঠে গিয়েছে কোথাও। বড় বড় প্রকান্ড সব গাছ আর নীচে ঘন জঙ্গল। এক চিলতে মাটিও দেখা যায়না । দক্ষিণ দিকেও খাঁড়া পাহাড়। লম্বা স্কুল ঘরের ঠিক সামনেই আরও কয়েকটি ক্লাস ঘর, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের বসার জায়গা, লাইব্রেরি ইত্যাদি। মাঠের দক্ষিণ পূর্ব কোণায় একটি কাঠের পুরোনো জরাজীর্ণ দোতলা ঘর।

চৌকিদারের কোয়ার্টার। কিন্তু ‘ ভূতের ভয়ে ‘ ওরা কেউই এখানে থাকে না। দূরে গ্রামে থাকে। মাঠের পশ্চিম দিকে লম্বা ঘরটির বাঁ পাশে একটি নতুন পাকা ঘর। বসার ঘর, শোবার ঘর,রান্না ঘর, বাথরুম, টয়লেট সবই আছে, পেছনের খাড়া পাহাড়ের একটি ছোট বারমাসি ঝর্না থেকে পাইপ লাগিয়ে জল এনে বাথরুমের ট্যাংকে ঢোকানো হয়েছে। এটি প্রধান শিক্ষক মহাশয়ের কোয়ার্টার। কিন্তু উনি ‘ ভূতের ভয়ে ‘এখানে বাস করেন না। কাছে গ্রামের একটি বাড়ী ভাড়া নিয়ে থাকেন।

আমি যখন ক্যাম্প করব বলে ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম তখন ওরা ‘ভূতের’ ব্যাপারে টুঁ শব্দটিও করেনি।
নির্দিষ্ট দিনে পনেরো ষোলো জন সঙ্গী নিয়ে স্কুলে পৌঁছলাম। ড্রাইভাররা গাড়ী সহ মটর সড়কের পাশের গ্রামেই থাকলো। আমরা কাঁথা কম্বল হাড়ি বর্তন নিয়ে প্রায় দু কিলোমিটার খাড়া পাহাড় বেয়ে স্কুলে পৌঁছে গেলাম। লম্বা ঘরটির উত্তর দিকের প্রথম কক্ষে দুটো করে বেঞ্চ জোড়া দিয়ে আমার আর ভেটি ডক্টরের বিছানা পাতা হলো। একটু নীচে সামনের একটি ঘরে একটি হল ঘর ছিলো যেখানে একটি স্থায়ী কাঠের মঞ্চ ছিলো। বাকী সঙ্গীরা ঐখানেই ওদের বিছানা পাতলো। বাঁশের তরজা দিয়ে কাঠের পেটি বরগা তে বাঁধা বেড়া। ওদের বিছানা গুলোর পাশে জায়গায় জায়গায় বেড়া ফাঁকা। প্রধান শিক্ষকের কোয়ার্টারে রান্নার ব্যবস্থা করা হল। ঐখানে একজনের বিছানা পাতা হলো।

পরদিন সকালে আমার কাছে খবর এলো রাতের বেলা ওদের কম্বল ধরে কেউ টানাটানি করছিলো আর ওরা বেড়ার পাশ ছেড়ে ভিতরের দিকে বিছানা নিয়ে গিয়ে ঘুমাচ্ছিল। স্কুল খোলার পর শিক্ষকদের জানালে ওরা বললো এই জন্যই রাতের বেলা এখানে কেউ থাকে না।

দ্বিতীয় রাতে কাজের এবং ভূতের বিভিন্ন দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমোতে গেলাম। আমাদের রুমের দরজার খিল ভাঙ্গা ছিল। একটা বড় পাথর দিয়ে দুটো পাল্লা চেপে রাখতাম। ডাক্তার বাবু দু-একটা কথা বলার পরেই নাক বাজাতে শুরু করলেন। শুয়ে শুয়ে আগামী কালের কাজের প্ল্যান নিয়ে ভাবছি। হঠাৎ মনে হলো আমার বুকের উপর কিছু একটা হচ্ছে। চোখ খুলে অন্ধকারের মধ্যেই দেখলাম একটা এক দেড় বছরের ন্যাংটা সুন্দর শিশু আমার বুকের দুদিকে পা ছড়িয়ে বসে হাত পা নেড়ে খিলখিল করে হাসছে। কয়েক সেকেন্ড পরেই নেমে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলো। তড়াক করে উঠে দেখি দরজা তো হাট করে খোলা আর পাথরটাও সরানো।

এই পযন্ত ঠিক ছিলো। ভাবতাম যে ভূতের চিন্তায় হয়তো দুঃস্বপ্ন দেখেছি বা হেলুশিনেশন জাতীয় কিছু হয়েছে। কিন্ত না। এতগুলো লোক ঐ ঘরে আছে। গতকাল ও শান্তিতে ঘুমোতে পারেনি ওরা। ওদের ঘরের দিকে কেউ যাচ্ছে কিনা তা দেখতে ভয়ে ভয়ে তড়াক করে নেমে ওর পিছু পিছু বারানদায় ছুটে গেলাম। দেখলাম দক্ষিন দিকে পাহাড়ের দিকে ছুটে যাচ্ছে। কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে ওখানেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে বারান্দার ধারে শু শু করে ঘরে ফিরে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। অনেকক্ষণ পরে ঘুম এসেছিল।

 bengali horror story ভয়ের গল্প
bengali horror story ভয়ের গল্প

উঁহু এটি শুধুমাত্র গল্প নয়, এটা বাস্তব গল্প। পাঠিয়েছেন-

Dilip Paul.

পড়ুনঃ- ভূতের কাহিনী- গন্ধটা খুবই সন্দেহজনক 

ভয়ংকর ভূতের গল্প- বদলা

আসল ভূতের গল্প। ভয়ের গল্পঃ-

এই ঘটনাটি আজ থেকে প্রায় ২২ বছর আগের। কলকাতা থেকে আমার বন্ধু রাজীবের মামা প্রথম বাড়ের জন্য তাদেরগ্রামের বাড়িতে আসেন। কিন্তু সেখানে তার মন যেন কিছুতেই টিকতে চায় না। বন্ধুর মামা সারাদিন তার কাজে ব্যস্ত থাকেন, আর তার বউ ব্যস্ত থাকেন তার বাচ্চা-কাচ্চা দের দিয়ে। তবে লোকটি কিন্তু দারুন গল্পখোর। ঘণ্টার পড় ঘণ্টা গল্প করেই কাঁটিয়ে দেয়। তাকে দেখে মনে হয়, গল্পই যেন তার কাছে খাবার-দাবারের সমান।

ভয়ের গল্প bengali horror story
ভয়ের গল্প bengali horror story

এক দিন সন্ধ্যায় গ্রামের বট-গাছের নীচের গল্পের আসরে, গল্প করতে করতে ভুত-প্রেতের প্রসঙ্গ চলে আসে। ভূতের নাম শুনতেই, আমার বন্ধুর মামা নিজের বীরত্বের কথা সকলের সামনে তুলে ধরতে শুরু করে দিলেন- অমুখ জায়গায় মানুষ যেতে ভয় পায়, আমি সেখানে এক রাত কাঁটিয়ে এসেছে, ত্মুখ জায়গায় রাতে ভুত বেড় হয়, আমি গিয়েছি কিন্তু ভুত দেখিনি। অমুখ ভূতুড়ে জায়গায় শ্যাওড়া গাছে আমি রাত কাটিয়েছি ইত্যাদি ইত্যাদি।

গ্রামের কয়েকজন তাকে রাতের বেলায় এই সব কথা বলতে বারণ করে,কিন্তু তিনি তার ভাষণ চালিয়েই যাচ্ছিলেন। তার কথার কাছে কেউই পাত্তা পাচ্ছিল না। কথায় কথায় এই আলোচনা তর্কে পৌঁছে যায়। আলোচনার শিবির দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়, একদলের বক্তব্য ভুত-প্রেত সত্যি থাকে, আর অন্য দলের বক্তব্য ভুত-প্রেত বলে কিছুই হয়না। এই সবই নাকি মনের ভ্রম। স্বভাবতই ভুত প্রেত বিশ্বাস না করা দলের সদস্য মাত্র একজন। হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন। সেই বীরপুরুষ।

সেদিন গল্প করতে করতে কখন যে রাত ১২ টা হয়ে গেছে কেউই বুঝতে পারেনি। বন্ধুর মামার কাছে তার স্ত্রীর ফোন আসে। তাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে বলে। খাবার ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। এরপরেই সেইদিনকার মত সভা মুলতুবী হয়ে যায়। সেই বন্ধুর মামা ঠিক করে সে গ্রামের ওই বিশাল ক্ষেতের মাঝ দিয়ে সোজা রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরবে। আমরা সচরাচর সেই রাস্তায় যাই না, কারণ সেই রাস্তা দিয়ে গেলে নিজের অজান্তেই দিনের বেলাতেও গা ছমছম করে উঠে, নিজের অজান্তেই শরীরের লোম খাঁড়া হয়ে যায়। বিশাল এই ক্ষেতের মাঝ বরাবর একা-একি কেন আমি দলবল নিয়ে যেতেই মানুষ ভয় পায়।

কিন্তু তাকে মানা করা বৃথা। আমার দিদি সেই লোকটিকে দেখার জন্য ছাঁদে যায়, যে কিভাবে সে একা এই রাস্তা দিয়ে যাবে। কিন্তু এত অন্ধকারে সে কিছুই দেখতে পায় নি। সে ছাঁদ থেকে নামতে যাবে, এমন সময় তার মনে হল, কেউ যেন আমাদের বাড়ির পিছনের লিচু বাগানে দৌড়ে ঢুকল।

আমার দিদি চিৎকার করে বলল- “কে ওখানে?” বাগান থেকে কাঁপা গলায় আওয়াজ এল- “আ আ আমি।”

দিদি- “সে কি আপনি বাড়ি যান নি?” বন্ধুর মামা- “ক্ষেতের সেই কুয়োর ধারে কে যেন বসে আছে”

গ্রামে কয়েকদিন পড় পরই চুরি হত। তার এই কথা দিদি আমাদের বলতেই, আমরা চোরের আশঙ্কা প্রকাশ করি, এবং কয়েকজন গ্রামবাসী মিলে হাঁতে লাথি নিয়ে ক্ষেতের দিকে যাওয়ার কথা বলি। আমাদের বাঁধা দিয়ে সেই মামা বলেন- “না না সে কোনো চোর নয় সে ভূতপ্রেত বা সেই জাতীয় কিছু একটা হবে।” তার মুখে এরকম কথা শোনার জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। কারণ যে কিছুক্ষণ আগেই নিজের বিরগাথা আমাদের সামনে তুলে ধরল সে কি করে ভূতে ভয় পায়!

আসল ভূতের গল্প ভূতের গল্প
আসল ভূতের গল্প ভূতের গল্প
<

সে আরও বলতে শুরু করল- “আমি কুয়োর পাশে তার দুটি চকচকে লাল রঙের চোখ দেখেছি। আমি কাছে যাই নি, কেমন যেন খকখক আওয়াজ আসছিল সেখান থেকে।” তার এই কথা শোনার পড়েই উপস্থিত সবাই হো-হো করে হেঁসে উঠল। মাঞ্চু কাকা বললেন- “আরে সেটা তো জেনারেটরের লাইট। কেউ হয়ত কুয়ো থেকে খেতে জল দিচ্ছে।”

তার বীরত্বের কাহিনীর আসল সত্য সেদিন আমাদের সামনে খুলে গেল। তবে সেই ক্ষেতের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গা- ছম ছম করে এটা সত্য, কারণ হল চোরের ভয়। তবে সে আর যাই হোক তার বীর-গাথা নিয়ে তাকে সেদিন বেশ লজ্জিত হতে হয়েছিল।

আমাদের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য- 

ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রামঃ- charpatraOfficial
WhatsApp:- ছাড়পত্র
আপনি এটি মিস করতে পাড়েন- 

এক ভয়ংকর রাতে আমি আর সুলেখা

“আসল ভূতের গল্প। ভূতের গল্প। ভয়ের গল্প। bengali horror story.”

Spread the love

Leave a Reply