[voyanok vuter golpo bangla. top 1 horror ghost story. ভয়ানক ভুতের গল্প। ভুতের সঙ্গে প্রেম। ] একটা বয়সের পড় বিশেষত যৌবনে পা রাখার পড়ই, সবার ইচ্ছে হয় একটু প্রেমের স্বাদ নেওয়ার। সবাই চায় একজন সঙ্গী খুঁজতে। কিন্তু যত ঝামেলা এখানেই। আমি যার পেছনে ঘুরছি, সে আমাকে কোনো পাত্তাই দেয়না। সে ঘোড়ে এক অন্য কোনো বখাটে ছেলের পেছনে। আর দুই দিন পড় বিচ্ছেদ হলেই, একে-অপরের বদনাম ছড়িয়ে বেড়ানো, এই তো বর্তমান দিনের প্রেম। খুব কম ভাগ্যবানই আছেন, যাদের প্রেম পরিপূর্ণতা পায়। আবার কিছু প্রেম মাঝপথেই ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। আজকের গল্পটিও প্রেমের। উঁহু এটি সাধারণ প্রেমের গল্প নয়। এটি হল মানুষের সাথে এক আত্মার প্রেম।
voyanok vuter golpo bangla ভুতের সঙ্গে প্রেম।
এই গল্পটি আমাদের পাড়ার ছেলে সৌরভের মুখে শোনা। উচ্চমাধ্যমিকে জেলার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করার পড়, সৌরভের বাবা সৌরভকে রাজ্যের সবথেকে বিখ্যাত কলেজে ভর্তি করিয়ে দেন। যেমন বড় কলেজ তেমনই বড় হোস্টেল। কলজেটির আরেকটি বিশেষত্ব হল, এটি একদম নির্জন, চারিদিকে প্রকৃতি ঘেরা। সবুজের কোলে এই বিখ্যাত কলেজটির অবস্থান। কলেজে ক্লাসের পড়, টিউশনি পড়ে প্রায় সন্ধ্যে নাগাদ সে, হোস্টেলে নিজের রুমে পৌঁছাত। এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ক্লান্ত চোখেই সে তার গিটার টেনে নেয়, টেপ রেকর্ডারে বাজতে থাকা গানের তালে সুর করে কিছুক্ষণ গান করে। এই ছিল তার প্রতিদিনের রুটিন।
এরকমই একদিন সে তার প্রিয় গীটারের তারে হাত দিয়েছে, তার হঠাৎই মনে হল, তার রুমের দরজায় কেউ যেন, আড়চোখে তাকে দেখছে। যেহেতু তার ঘড়ে খাবার আসবে তাই সে দরজা খোলাই রাখে। সে গান বন্ধ করে, সেদিকে গেল, কিন্তু সেখানে তো কিছুই নেই। শুধু একটি ছাগল পাতা খাচ্ছে। সে ভাবল এই ছাগলটিকে হয়ত সে দেখেছিল। ফিরে এসে আবার সে টেপ রেকর্ডারের তালে তাল মিলায়। কিন্তু সেরকম ভাবে সে আর মনযোগী হতে পাড়ল না, কারণ তার চোখ বাড়বার সেই দরজার দিকেই যাচ্ছিল। তার যতদূর মনে পড়ছে, সে একজন মানুষের চেহারা দেখেছিল। লম্বা চুল ছিল হয়ত, কারণ দরজার ওপারে থাকা ব্যক্তি সরে যেতেই চুলের মত কিছু সরে যেতে দেখেছিল সে।
পরের দিনও সৌরভ, হোস্টেলে ফিরে গীটার বাজাচ্ছে, কিন্তু ধ্যান সবসময় দরজার দিকে। কাল কেউ তো সেখানে নিশ্চয়ই ছিল। আজ সে একটু বেশি ধ্যান দিচ্ছে দরজার দিকে। কিছুক্ষণ পড় তার মনে হল হুম ঠিক আজকেও কেউ তাকে দেখছে। সে মাথা তুলতেই সেই মূর্তি সরে গেল। সৌরভ দৌড়ে দরজার কাছে গেল, কিন্তু সেখানে কেউই নেই। এবার সে নিশ্চিত যে কেউ তাকে ফলো করছে। আর যে দেখছে সে ছেলে নয়, বরং মেয়ে। কারণ সরে যেতেই তার চুলের দোলানি সৌরভ দেখেছিল। সৌরভ অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে যায়। এই জঙ্গলে ঘেরা হোস্টেলের মাঝে একজন মেয়ে করছে টা কি? তাও আবার আরেকজনের রুমে দরজায় আড়ি পেতে?
সে বারান্দায় গিয়ে চারপাশটা ভালোভাবে দেখতে লাগল। না কেউই তো নেই। ঘড়ের ভেতর ঢুকতেই তার মনে হল, জলপাই গাছটার পাশে কে যেন লুকিয়ে আছে। আর মাঝে-মধ্যেই তাকে দেখছে। ঘড়ে না ঢুকে, সে ভয়ে ভয়ে এগোতে যেতেই দেখল, গাছের পাশে তারই বয়সী এক মেয়ে লুকিয়ে আছে। সৌরভকে সেই মেয়েটা নাম ধরে ডাকছে। আশ্চর্য! নাম জানল কোথা থেকে। সৌরভের সব ক্লাসমেটরা পর্যন্ত তার নাম জানে না, আর এই অচেনা মেয়েটা তার নাম জানল কিভাবে? সৌরভ আরও অবাক হয়ে গেল।
পড়ুনঃ- ভূতের সত্য ঘটনা
এদিকে সৌরভের হার্টবিট বেড়ে গেছে, সে কিছুতেই শান্ত থাকতে পাড়ছে না। সৌরভ কি করবে, কিছুই বুঝতে পাড়ছিল না। সৌরভ মাথা তুলতেই আরও অবাক হয়ে যায়, মেয়েটা চোখের পলকেই জলপাই গাছ থেকে প্রায় অনেক দূরে পাকুড় গাছের নীচে চলে গেছে। সে অনেকটা নেশা গ্রস্থের মত হয়ে যায়। তার মাথা ঠিক মত কাজ করছিল না। সে হঠাৎ করেই সেই মেয়েটির কাছে ছুটে যেতে চায়। মেয়েটাকে ধরতে চায়, কিন্তু সৌরভ কিছুতেই তা করতে পাড়ছিল না। কারণ মেয়েটা এক মুহূর্তেই কিভাবে এক জায়গা থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছিল, সে কিছুই বুঝছিল না। মৌমাছি যেমন ফুলের ঘ্রাণ পেলে ছুটে চলে পাগলের মত, সৌরভের অবস্থাও অনেকটা সেইরকমই হয়ে গেছে।
এবার সৌরভ গান করতে শুরু করে দিল, আর সে যেন কাউকে সাথে নিয়ে নাচছে। তারই পাশের রুমে থাকে সুমন। সে খাবার আসতে দেড়ি হচ্ছে দেখে, বাইরে আসে, বাইরে এসেই, জঙ্গলের মধ্যে সৌরভের এমন ভাব-ভঙ্গি দেখে সে অবাক হয়ে যায়। সে কিছুতেই নিজেকে বিশ্বাস করতে পাড়ছিল না। আরে সৌরভ এভাবে নাচছে কেন? যেন মনে হচ্ছে সে একজনকে ধরে আছে। সে হোস্টেলের অন্যান্য ছাত্রদেরও ডাকে। সবাই অবাক হয়ে দেখছিল। নাচের মাঝে মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য যেন, আকাশেই ভেসে নাচছে সৌরভ!
তারা সবাই দ্রুত সৌরভের কাছে যায়। কিন্তু বন্ধুদের দিকে সৌরভের যেন কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই, সে গান করেই যাচ্ছে আর চোখ বন্ধ করে নেচেই যাচ্ছে। বন্ধুদের ডাকেও সে সাড়া দিচ্ছে না। কেউই কিছু বুঝছিল না যে কি ঘটে চলেছে! ছাত্রদের মধ্যে একজন কবিরাজের ছেলেও ছিল। সে জঙ্গল থেকে কি এক পাতা নিয়ে আসল, তারপর পাতা বেঁটে, তার সঙ্গে কিছুটা জল মিশিয়ে সৌরভের দিকে ছুঁড়ে দিতেই, সে মাটিতে পড়ে গেল।
কিছুক্ষণ পড় সৌরভের জ্ঞান ফিরে আসতেই, সৌরভ “আমার কনকচাঁপা কোথায়?” বলে চিল্লাতে শুরু করে দিল। কিসের কনকচাঁপা? কে কনকচাঁপা? “আমাকে কনকচাঁপাকে লাগবেই, তাকে ছাড়া আমি বাচবো না। আমাকে কনকচাঁপাকে এনে দাও।“
সেই কবিরাজের পুত্র আবার কিছু পাতার রস, সৌরভের শরীরে ছিটিয়ে দেওয়ার পড়ই, সৌরভ বেহুঁশ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পড় তার জ্ঞান ফিরতেই সে বলল- “একি আমি বিছানা ছেড়ে এখানে কেন? আর তোমরা আমাকে ঘিরে রেখেছো কেন? আমি মাটিতে শুয়ে আছি কেন?” সবাই যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। ছাত্ররা সৌরভকে জানায়, তার মাথা ঘুরে গিয়েছিল, তাই পড়ে গিয়েছিল। এরপর সবাই হোস্টেলে ফিরে যায়।
সেদিন আর কেউই নিজের রুমে গেল না। সবাই কবিরাজের ছেলের রুমে গেল, সৌরভ না যেতে চাইলেও তাকে জোর করে নিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পড় রাঁধুনি খাবার দিতে আসলে। সবাই তাকে পুড়ো ঘটনাটি জানাল। এরপর রাঁধুনি বলল-
“এই ঘটনাটি আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগের। এই বনের মধ্যেই পিকনিক করতে এসেছিল, পাঁচ বন্ধু। সাথে দুইজন মেয়েও ছিল। এই দুইজন মেয়ের একজনের নাম ছিল কনকচাঁপা। শোনা যায় যে, পিকনিকে এসে তারা বেশ মজা করছিল। খাওয়া দাওয়ার পড়, চার বন্ধু কনকচাঁপাকে গাড়িতে বসিয়ে রেখেই, কাছে ঘুরে আসার নাম করে অন্যত্র চলে যায় এবং কয়েক ঘণ্টা পড় ফিরে আসে। প্রায় কয়েক ঘণ্টা নির্জন এই জঙ্গলে একাই বসে ছিল কনকচাঁপা। ভয়ে সে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। আবার নেটওয়ার্ক না থাকায় বন্ধুদের সে ফোনও করতে পাড়ছিল না।
কয়েক ঘণ্টা পড় বন্ধুরা ফিরে আসতেই কনকচাঁপার সাথে তাদের ঝগড়া লেগে যায়। কারণ তারা কয়েক মিনিটে ফিরে আসার কথা বলে কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে দেয়। আর নির্জন এই জঙ্গলে সে একাই বসে আছে। এরপর ঝগড়া অনেকটা বেড়ে যায়। বাড়ি ফেরার সময় চলন্ত গাড়ি থেকে তারা কনকচাঁপাকে জোর করে ফেলে দেয়। আর কনকচাঁপার মাথা ওই জলপাই গাছটায় এসে সজোরে আঘাত করে। প্রচণ্ড রক্ত ক্ষরণ হয়। এদিকে কেউ আসেনা। আর আগে এই হোস্টেলেও এখানে ছিল না। তাই কেউই তাকে দেখতে পায় নি। পরের দিন, কাঠ কুড়ুতে আসে কয়েকজন লোক কনকচাঁপার দেহ দেখতে পায়। শোনা যায়, মেয়েটা অনেক গান প্রেমী ছিল। বনের মধ্যে একা যখন ছিল, তখন সারাক্ষণ গান গেয়েছিল।“
একজন ছাত্র বলে উঠল- “আর তার সেই বন্ধুদের কি হল?”
“তারা পুলিশের কাছে ধরা পড়ল। কারণ কনকচাঁপা তাদের কাছেই গিয়েছিল। একটু চাপাচাপি করতেই তারা আসল সত্য পুলিশকে জানিয়ে দেয়। এখন তারা জেলেই আছে।
শোনা যায় সেই কনকচাঁপার আত্মা আজও এই জলপাই গাছের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়। তোমরা যেন সেদিকে যাওয়ার সাহস করো না বাপু। আর দরজা জানালা সবসময় বন্ধ রেখো। কারণ তোমরা ছেলে মানুষ, কখন কি করে বসো, বলা তো আর যায় না।“
এই বলে রাঁধুনি ঘড় ছেড়ে চলে গেলেন।
voyanok vuter golpo bangla ভুতের সঙ্গে প্রেম। ভয়ানক ভুতের গল্প hosteler vuter golpo
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।