তৃষা পড়াশোনার জন্য বাইরে থাকে। (bangla bhuter golpo) বাড়িতে পূজোর ছুটি কাটাতে এসে সে তার পরিবারের সাথে এক পার্কে যায়, সেখানে এক ভূতুড়ে ঘটনা ঘটে যায় তার সাথে। এই ভূতুড়ে ঘটনা নিয়েই আজকের গল্পটি।

BANGLA BHUTER GOLPO:-

আমি বাবার একমাত্র মেয়ে, পড়াশোনার জন্য বাইরে থাকি, প্রতি বছর পুজোর সময় বাড়ি আসি। অনেক দিন থেকে ইচ্ছে ছিল আমাদের বাড়ি থেকে কয়েক কিমি দূরে অবস্থিত ড্রিমল্যান্ড পার্কে বেড়াতে যাব, কিন্তু যাওয়াটা আর হয়ে উঠে না। কিন্তু এবার যাওয়াটা সম্ভব হচ্ছে, কারণ আমার বাবা ইন্ডিয়ান আর্মিতে কাজ করে, কখনো আমি বাড়ি আসি তো কখনো বাবা, কিন্তু এবারের ছুটিতে বাবাও এসেছেন, তাই এবার আমার ইচ্ছে পূর্ণ হতে চলেছে।

দেওয়াল ঘড়ি বলছে সময় সকাল ১০.৫৫ বাবা-মা-আমি তিনজন মিলে রওনা দিলাম ড্রিমল্যান্ড পার্কের উদ্দেশ্যে। পার্কের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ আমি আর মা অপেক্ষা করছি কারণ বাবা গাড়ি পার্কিং করতে গেছেন। আমার চোখ পার্কের পাহারাদারের উপর যেতেই আমি দেখলাম তিনি আমার দিকে আড়-চোখে দেখে রয়েছেন, আমি দেখতেই মুখ ঘুড়িয়ে নিলেন তিনি। এরপর আরও বেশ কয়েকবার এরকম হল। কিছুক্ষণ পর বাবা আসতেই আমি বাবাকে এই কথাটি বলে দিই। কারণ বর্তমানে যা দিনকাল পড়েছে, মেয়েরা কোথাও পুরোপুরি সুরক্ষিত নয়। বাবা আবার অনেক রাগী মানুষ, বাবা সেই পাহারাদারকে একদম আচ্ছা সে বকে দিলেন।

bangla-bhuter-golpo
bangla bhuter golpo

পার্কে ঢুকেই আমি সুইমিং পুলে নামি, অনেক থেকে সুইমিং পুলে স্নান করা হয়না! বাবা-মা দোলনার দিকে গেলেন। কিছুক্ষণ পড়েই আমার বয়সী এক মেয়ে আমার কাছে এসে বলল, প্লিজ আমাকেও একটু সাঁতার শিখিয়ে দাও না! আমি এক কথাতেই রাজী হয়ে গেলাম।

এদিকে বাবা আমাকে ডেকে বললেন, তারা বাইরে খাবার নিয়ে আসতে যাচ্ছেন, আমি যেন এই সুইমিং পুল ছেড়ে কোথাও না যাই। বা মেয়েটা তো অনেক আডভান্স, কিছুক্ষণের মধ্যেই সে সাঁতার শিখে গেল, কিজানি এই অচেনা মেয়েটার সাথে কিভাবে বন্ধুত্ব হয়ে গেল, তাও আবার সুইমিং পুলে! সে যাই হোক এবার আমরা দুইজনে আনন্দে একসাথে সাঁতার কাটতে লাগলাম।

হঠাৎই আমার নজর আবার সেই পাহারাদারের উপর গেল, দেখলাম তিনি এখনও আমাকে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। আজব তো!লোকটাকে বাবা ধমক দিলেন, তাও শিক্ষা হল না! কিছুতেই বুঝছিলাম না, লোকটির আসল উদ্দেশ্যটা কি?

এই সব কথাই ভাবছিলাম, হঠাৎই, আমার পিছনে থাকা সেই মেয়েটা আমার ঘাড় ধরে আমার মাথা জলের তলায় ডুবিয়ে দিল, আরে বাপরে আমি গেছি এবার। নাকেও জল চলে গেছে, ভাগ্যিস মেয়েটা আমাকে ছেড়ে দিল, এরপর আমি সেই মেয়েটার প্রতি ভীষণ ক্ষেপে যাই। আমি কিছু বলতে না বলতেই মেয়েটা আমাকে বলতে লাগল- sorry, sorry আমি জাস্ট মজা করছিলাম।

VUTER GOLPO বাংলা ভুতের গল্প
VUTER GOLPO বাংলা ভুতের গল্প

না, আমার কেমন যেন মেয়েটার এরূপ ব্যবহারের প্রতি সন্দেহ হচ্ছে, আরেকটু হলেই আমার দম বন্ধ হয়ে যেত। আমি তাড়াতাড়ি জল ছেড়ে বাইরে চলে এলাম। সেই মেয়েটা এখনও জলের মধ্যেই আছে, আর আমাকে জলে নামার জন্য বার বার আকুতি-মিনতি করতে লাগল।

শেষে মেয়েটার কথা রাখতে আমি জলে নামা মাত্রই মেয়েটা এসে আমার কমর দুই হাঁতে ধরে নিল, এবং এক সাঁতরে আমাকে নিয়ে পুলের মাঝখানে নিয়ে গেল। আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গেছি। আমি মেয়েটাকে বলি, দেখ যদি আগের বাড়ের মত খারাপ ব্যবহার কর, আমি আমার বাবাকে বলে দিব। এরপর মেয়েটার জবাব শুনেই আমার অবস্থা অজ্ঞান হওয়ার মত হয়ে যায়, মেয়েটা বলল, তোমার বাবা আসার আগে তুমি জ্যন্ত থাকলে তবেই না বলতে পাড়বে।

আমার বাবাকে বকা দেওয়া মানুষটির ছেলে আজ এখানেই মরবে। এই কথাটি বলেই আমাকে সে জলের মধ্যে ডুবাতে লাগল।

এদিকে সেই পাহারাদারটির নজর আমার উপড়ে তখনও ছিল, সে আমাকে এরকম জলের মধে ডুবতে দেখে দৌড়ে এসে জলে ঝাঁপ দেওয়া মাত্রই সেই মেয়েটা হাওয়ায় মিশে গেল, এই ঘটনা দেখে আমার শরীরের লোম খাঁড়া হয়ে গেল, এ বাবা কি এই সব ভূতুড়ে কাণ্ড! সেই পাহারাদার এসে আমাকে পুল থেকে উপড়ে উঠিয়ে নিলেন। ব্যাস এরপর আমার আর কিছুই মনে নেই।

যখন আমি চোখ খুলি আমার চারপাশে রীতিমত ভিড় জমে গেছে, আমি বাবাকে আগাগোড়া পুরো ঘটনাটি জানাই। এরপর বাবা পার্কের গেট বন্ধ করে দিলেন, এবং সেই পাহারাদারকে নিয়ে সোজা পার্কের অফিস রুমে চলে গেলেন, আর সেই উধাও হয়ে যাওয়া মেয়েটার ব্যাপারে খোঁজ নিতে বললেন।

ভয়ানক ভুতের গল্প BENGALI HORROR STORY
ভয়ানক ভুতের গল্প BENGALI HORROR STORY
<

কিন্তু সেই রহস্যময়ী মেয়েটার কোনো খোঁজ তারা দিতে পারলেন না। এরপর বাবা সেই পাহারাদারের জামার কলার ধরে নিলেন এবং দুই-তিনটি থাপ্পড় মেরে দিলেন, কারণ প্রথম থেকেই সে আমাকে আড়-চোখে দেখেই যাচ্ছিল। এই রকম হুড়োহুড়িতে সেই পাহারাদারটির পকেট থেকে তার পার্সটি পড়ে গেল, এবং পার্সটি খুলে গেল, সেখানে আমি দেখলাম সেই রহস্যময়ী মেয়েটিরই একটি ফটো রয়েছে।

পড়ুনঃ- হোটেলের ভূত

এবার বাবা সেই পাহারাদারটির উপর আরও চটে গেলেন, তিনি বলতে লাগলেন- বল তোর মেয়ে কোথায়? তাড়াতাড়ি বল নাহলে তোর আজ রক্ষে নেই। এরপর সেই পাহারাদারটি তার পকেট থেকে একটি চিঠি বেড় করলেন, বাবা কাগজটি হাঁতে নিয়ে খুলতেই দেখা গেল এটি একটি মৃত্যুর সার্টিফিকেট। আর এটি সেই মেয়েটির।

কিজানি বাবা কি বুঝলেন, তিনি সেই পাহারাদারটির কাছে তার দুর্ব্যবহারের জন্য এবং তাকে শারীরিক ও মানসিক আঘাত করার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলেন, এরপর আমরা সেই পার্ক থেকে বাড়ি ফিরে আসি।

সেই পাহারাদারটি আমার দিকে বারবার আড়-চোখে তাকাচ্ছিল, কারণ তার মেয়ে যখন আমার বয়সী ছিল তখনই সে এক দুর্ঘটনায় মারা যায়, আমার মধ্যেই সে তার মেয়েকে খুঁজে পেতে চেয়েছিল। কিন্তু বাবা যখন সেই পাহারাদারটিকে বকা দেয় তখন সেই মেয়েটির অতৃপ্ত আত্মা আমার পেছনে পড়ে যায়, সে এক মেয়ের রূপ ধরে নেয় আর আমাকে মেরে ফেলতে চায়, কারণ আমিই বাবাকে সেই পাহারাদারটির কথা বলেছিলাম।

bangla bhuter golpo বাংলা ভুতের গল্প
bangla bhuter golpo বাংলা ভুতের গল্প image

সেই অতৃপ্ত আত্মার মেয়েটির কোনো দোষ নেই, কারণ আমার বাবাকে কেউ অপমান করলে, আমিও সেই ব্যক্তিটিকে কিছু না কিছু অবশ্যই বলতাম। পড়ে জানতে পাড়ি, সেই মেয়েটির সদ্গতি পর্যন্ত করতে পাড়েনি তার বাবা, কারণ তার বাবাকে তার মৃত মেয়ের শরীর ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। তাই সেই মেয়েটির আত্মা আজও শান্তির পথ খুঁজে পায়নি।   

পড়ুনঃ- ষ্টেশনের ভুতের গল্প

যদি গল্প লিখতে ভালোবাসো তাহলে তোমার লেখা গল্প আমাদের পাঠাতে পাড়- charpatrablog@gmail.com –এই ঠিকানাতে অথবা নীচের লেখা পাঠানোর বোতামে ক্লিক করতে পারো। নতুবা আমাদের ফেসবুক পেজের ম্যাসেঞ্জারেও লেখা পাঠাতে পাড়।

bangla bhuter golpo বাংলা ভয়ানক ভুতের গল্প

Spread the love

Leave a Reply