জানেন কি ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস? কেনই বা পালিত হয় এই ভালোবাসা দিবস? আসুন জেনে নিই প্রেম দিবসের ইতিহাস।

Valentines week শুরু হয়ে গেল, এবার একে একে আসতে থাকবে রোজ ডে, Hug day ইত্যাদি আরও বিভিন্ন দিন। কিন্তু কক্ষনো কি, এই দিন গুলির পেছনের ইতিহাস বা এই দিনের পিছনে কি গল্প রয়েছে সেগুলি জানার আগ্রহ হয়েছে? হুম না হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ প্রিয় জনের জন্য ভাবতে ভাবতে অত্ত গভীর ভাবে চিন্তা করতে যাবে কে? ছাড়ো ওইসব কথা আজ আমিই তোমাদের একে একে বলে দিচ্ছি ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের প্রতিটি দিনের পিছনে থাকা ইতিহাস।

ভালোবাসা দিবস কেন পালন করা হয়? ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাসঃ-

ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের প্রতিটি দিনের পিছনে থাকা ইতিহাস ক্রমানুসারে আপনাদের জানাচ্ছি।

History of Rose day রোজ ডে র ইতিহাসঃ-

ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের প্রথম দিনটিই হল গোলাপ দিবস। আমরা যত টুকু জানি, এই দিন টিতে প্রেমিক প্রেমিকারা গোলাপ ফুল একে অপরকে দেয়, কিন্তু আদতে এই দিনটি শুধু প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য নয়। এই দিনটিতে একজন সাধারণ মানুষ আমাদের ভাষায় যাকে সিঙ্গেল বলা হয় সেও এই দিনটিকে সেলিব্রেট করতে পাড়ে। সে তার বন্ধুকে, অথবা কোনো নিকট আত্মীয়কে অথবা কাছের কোনো মানুষকে গোলাপ দিতে পাড়ে। কারণ এই দিনটি হল নিজের ফিলিংস ব্যক্ত করার দিন। কাজেই শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা নয়, বরং অন্যদেরও ফিলিংস থাকতে পাড়ে। আর সেই ফিলিংস ব্যক্ত করার জন্যই এই দিনটি। তাই যে কেউ এই দিনটি পালন করতে পাড়ে। এবার চলুন গোলাপ দিবসের ইতিহাস জেনে নেওয়া যাক।

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস History-of-Rose-day-রোজ-ডে-র-ইতিহাস
রোজ ডে এর ইতিহাস ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস History-of-Rose-day-রোজ-ডে-র-ইতিহাস

আমরা জানি যে, ইতিহাস শুধু একটি তথ্যের উপর নির্ভর করে তৈরি হয় না। তাই ঠিক একই ভাবে রোজ ডে-র ইতিহাসও শুধু একটি মতের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। এই দিনটির পেছনে যে সমস্ত ইতিহাস গুলি রয়েছে সেগুলি হল-

ROSE চার অক্ষরের এই শব্দটিতেই লুকিয়ে রয়েছে গ্রিক প্রেমের দেবতা EROS এর নাম। আবার গ্রিক উপকথা অনুযায়ী গোলাপ ফুল, প্রেমের দেবী VENUS এর অত্যন্ত প্রিয় ফুল। যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস সপ্তাহ আসলে প্রেমের সপ্তাহ তাই এখানেই জুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রেমের প্রতীক হিসেবে দেবী ভেনাস –এর প্রিয় ফুল গোলাপকে।

আবার ব্রিটেনের উপকথা অনুসারে মহারাণী ভিক্টোরিয়ার দরবারে ভাবনা বা ফিলিংস প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন রঙের গোলাপ দেওয়ার প্রচলন ছিল। মনে করা হয় সেখান থেকেই এই গোলাপ দিবসের সূত্রপাত। তবে ভিন্ন রঙের গোলাপের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ, যেমন-

লাল গোলাপের অর্থ- প্রেম প্রকাশ।

গোলাপি (Pink) রঙের গোলাপের অর্থ- প্রিয় বন্ধু। 

হলুদ রঙের গোলাপের অর্থ- বন্ধুত্ব করতে আগ্রহী।

কমলা রঙের গোলাপ- কাউকে পছন্দ হলে।

আবার, সাদা গোলাপের অর্থ হল- ক্ষমা চাওয়া।

এই বিভিন্ন প্রকারের গোলাপের প্রচলন ছিল, মহারাণী ভিক্টোরিয়ার দরবারে।

আবার আমরা যদি একটু ভারতীয় উপকথার দিকে তাকাই, সেখানে বলা হচ্ছে- মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের পত্নী মেহের-উন-নিসা ওরফে নুরজাহানের অত্যন্ত প্রিয় ফুল ছিল লাল গোলাপ। প্রেমান্ধ সম্রাট জাহাঙ্গীর, বেগমের পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিদিন শহর থেকে প্রচুর লাল গোলাপ আনিয়ে নিতেন, তার প্রেমকে জাহির করার জন্য। 

History of propose day. প্রপোজ ডে-র ইতিহাসঃ-

প্রপোজ ডে, অর্থাৎ প্রস্তাব দিবস। এই দিনটি পছন্দের মানুষের কাছে প্রস্তাব রাখার দিন। একটি উপকথা অনুসারে এই প্রপোজ ডে-র সূচনা করেছিলেন জন মাইকেল অলফিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি এই দিনটির সূচনা করেছিলেন যখন তিনি জানতে পেরেছিলেন তার একজন আত্মীয়ের (মতান্তরে ভাইয়ের মেয়ের) বয়ফ্রেন্ড তাকে ভালোবাসার প্রস্তাব সবার সামনে বলতে লজ্জিত হচ্ছিল। তাই জন মাইকেল এমন একটা দিনের সূত্রপাত করেন, যেদিনটিতে প্রেমিক তার প্রেমিকাকে তার প্রেমের প্রস্তাব দিবে বা এককথায় প্রপোজ করবে।

ভ্যালেন্টাইন দিবস কেন পালন করা হয়? history-of-propose-day.-প্রপোজ-ডে-র-ইতিহাস
ভ্যালেন্টাইন দিবস কেন পালন করা হয়? history-of-propose-day.-প্রপোজ-ডে-র-ইতিহাস

সুতরাং প্রপোজ ডের সূত্রপাত হয়েছিল, যে সমস্ত প্রেমিক/প্রমিকারা তাদের প্রেমের প্রস্তাব প্রিয়জনের কাছে তুলে ধরতে পারছে না, তাদের একটু উৎসাহ দেওয়ার জন্যই।

History of chocolate day চকোলেট দিবসের ইতিহাসঃ-

বর্তমানে যেমন ভ্যালেন্টাইন দিবস পালন করা হয়, ঠিক একই ভাবে আগেও পালন করা হত, শুধু পার্থক্যটা হল পালন করার মাধ্যম টিতে। হুম, বর্তমানে পালন করা হয় ম্যাসেজের মাধ্যমে কিন্তু তখন পালন করা হত, চিঠি বা কার্ডের মাধ্যমে। হ্যাঁ এগুলি ঠিক সেই রকমের কার্ড, যেগুলি দিয়ে আমরা ছোট্ট বেলায় নিউ ইয়ার উইশ করতাম।

চকলেট দিবসের সূত্রপাত হয়েছিল ১৮৪০ এর দশকের গোঁড়ার দিকে। আগত ভ্যালেন্টাইন দিবসের জন্য সবার প্রস্তুতি তুঙ্গে। ঠিক সেই সময় রিচাড নামের একজন উদ্যোক্তা, এবং চকোলেট প্রস্তুত কারক ঠিক করেন, ভ্যালেন্টাইন দিবসের আগে তিনি সুন্দর চকলেট তৈরি করবেন এবং কার্ড-বাক্সে সেগুলি প্যাক করবেন।

যেই ভাবা সেই কাজ, চকোলেট তৈরি করে সেগুলিকে সুন্দর greetings বাক্সে ভড়তে শুরু করে দিলেন। তিনি বললেন শুধুমাত্র কার্ড এবং ফুলই নয় বরং তার সাথে সাথে প্রিয়জনের জন্য চকলেট নিয়ে যাওয়া যেতে পাড়ে। অনেকেই তার কথায় সায় দিয়ে তার চকলেট কিনলেন, এবং দেখলেন যে প্রমিকা অনেক খুশি হয়েছে। ব্যস এরপর থেকে শুরু হয়ে গেল ভ্যালেন্টাইন দিবসের কয়েকদিন আগে চকলেট ডের প্রচলন।  

পড়ুনঃ- বিজ্ঞানের মজার আবিষ্কার

History of Teddy day টেডি দিবসের ইতিহাসঃ-

ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের চতুর্থ দিন টেডি ডে। এই দিনটিতে প্রেমিক প্রেমিকাকে টেডি বিয়ার উপহার হিসেবে দেয়। তবে শুধুমাত্র টেডিই নয়, এর সাথে সাথে বিভিন্ন greetings card দেওয়ারও প্রচলন রয়েছে। কিন্তু এই টেডি ডের ইতিহাস যেমন জমজমাটে তেমনই আকর্ষণীয়।

এর ইতিহাস জানার জন্য আমাদের এক শতাব্দী পিছিয়ে যেতে হবে। সময়টা ছিল ১৯০২ সাল। আমেরিকার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি থিয়োডোর রুজভেল্ট লুসিয়ানা যাচ্ছিলেন। কাজের ফাঁকে একদিন তিনি শখ করে, সৈনিকদের সাথে শিকারের উদ্দেশ্যে জঙ্গলে যান। অনেকক্ষণ খুঁজেও সেই দিন ভাল শিকার পাননি রুজভেল্ট।

প্রেসিডেন্টকে খুশি করতে তার সঙ্গীরা ধরে আনেন এক লুসিয়ানিয়া কালো ভাল্লুক ছানা। কিন্তু গাছের গুঁড়িতে বেঁধে রাখা ভল্লুক ছানার উপর গুলি চালাতে মন চায়নি রুজভেল্টের। ছোট্ট ছানাটিকে ছেড়ে দেন তিনি। ‘ড্রইং দ্য লাইন ইন মিসিসিপি’ কার্টুনে এই গল্প তুলে ধরেন ওয়াশিংটন স্টার কার্টুনিস্ট ক্লিফর্ড বেরিম্যান। ছবিতে তিনি আঁকেন টেডি রুজভেল্ট রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার পিছনে ছোট্ট এক ভাল্লুক ছানা।

এই ঘটনাটি সাথে সাথে হাওয়ার মত সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। সকলে রুজভেল্টের এমন কীর্তি-কলাপের জন্য তাকে নিয়ে আলোচনা করতে লাগল। এমন সরগরম পরিস্থিতিতেই বেরিম্যান নামের এক কার্টুনিস্ট একটি ভালুক বানিয়ে রুজভেল্ট-এর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। মানুষজন বেরিম্যানের এই কাজটি খুবই পছন্দ করেন।

HISTORY OF VALENTINE'S DAY BENGALI History-of-Teddy-day-টেডি-দিবসের-ইতিহাস
টেডি ডে এর ইতিহাস HISTORY OF VALENTINE’S DAY BENGALI History-of-Teddy-day-টেডি-দিবসের-ইতিহাস image
<

মেরিস মিকটম নামের আরেকজন কার্টুনিস্ট বেরিম্যানের এই ভাবনার দ্বারা প্রভাবিত হন এবং তার পত্নীকে তার মতামত জানান। এরপর তার পত্নী একটি সুন্দর ভালুক তৈরি করেন এবং এই ভালুকটির নাম টেডি রাখার জন্য রুজভেল্টের কাছে দাবি করেন। কারণ রুজভেল্টের ডাক নাম ছিল টেডি। এরপর রুজভেল্ট সেই কার্টুন চরিত্রটির নাম টেডি রাখতে সম্মতি দেন।

 ঠিক সেই বছর থেকেই এই টেডি ডে পালন হয়ে আসছে। যদিও টেডি ডে- প্রতি বছর ৯ সেপ্টেম্বর পালন করা হয়ে থাকে, কিন্তু কালক্রমে ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের সঙ্গে একে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

History of promise day প্রমিজ ডে-র ইতিহাসঃ-

ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের পঞ্চম দিন হল প্রমিজ ডে। এই দিনটি হল একে অপরকে প্রমিজ বা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার দিন। এই দিনটি নানান ভাবে পালন করা যেতে পাড়ে। আপনি যদি প্রেমিক হয়ে থাকেন তাহলে সারাজীবন প্রেমিকার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে পাড়েন, অথবা আপনি যদি দাদা হয়ে থাকেন সারাজীবন বোনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে পাড়েন। এমনকি আত্মীয়দেরও বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিতে পাড়েন এর জন্য প্রেমিক-প্রেমিকা হতেই হবে এমনটা জরুরী নয়।

তবে এই প্রতিশ্রুতি দিবসের পিছনে থাকা গল্পটা কি তা আজও জানা যায় নি।

পড়ুনঃ- অজানা রহস্যময় প্রাণী। 

History of hug day। আলিঙ্গন দিবসের ইতিহাসঃ-

ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের ষষ্ঠ দিন হল hug day। একে অপরের কাছে আসার দিন এটি। hug এর মাধ্যমে ভালোবাসা, নিরাপত্তা এবং সুরক্ষিত থাকার কথা বলা হয়। বিজ্ঞানও hug সম্পর্কে অনেক কিছুই বলেছে- hug আপনার খিটখিটে মেজাজকে মুহূর্তে খুশি করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। hug আমাদের শরীরে ইমোশনাল শক্তি বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে মানুষ অনেক হাসিখুশি থাকে। মানুষ ইমোশনালি ঠিক থাকলে সে সুস্থ থাকে। hug মানুষের একাকীত্ব দূর করে। সুতরাং hug শুধুমাত্র সম্পর্ককেই নয় তার সাথে সাথে স্বাস্থ্যকেও মজবুত বানাতে সহায়তা করে। আর এই কারণেই বিজ্ঞান বলে রিলেশনশিপে hug অতি-অবশ্যই দরকার।

তবে এই hug day র নিজস্ব একটি ইতিহাস আছে। আসলে hug-day পালন করা হয়ে থাকে জানুয়ারির ২১ তারিখে। এর সূচনা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে মিচিগান প্রদেশের কেভিন জাবোরনি নামের এক ব্যক্তির হাত ধরে। তার মাথায় এই নতুন দিবস পালনের কথা আসে। তিনি ২১ জানুয়ারি এই দিনটিকে বেঁছে নেন, কারণ এই দিনটি Christmas এবং valentine’s day র প্রায় মাঝ বরাবর পড়ে।

প্রেমিক-প্রমিকাদের মধ্যেও hug একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, তাই ধীরে ধীরে valentine’s week এ জায়গা করে নেয়, হাগ ডে।

পড়ুনঃ- ইতিহাসের কিছু খারাপ শাস্তির প্রথা

History of kiss day। চুম্বন দিবসের ইতিহাসঃ-

ঠিক ভ্যালেন্টাইন দিবসের আগের দিন পালন করা হয় কিস ডে। প্রেমিকার প্রতি/ প্রেমিকের প্রতি নিজের ভালোবাসা উজার করে দেখানোর সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মানা হয়ে হয়ে থাকে kiss-কে।

এগুলি সবই পশ্চিমা সংস্কৃতি। তাই পালন করার আগে সাবধান ভাই/বোন।

যেহেতু এগুলি পশ্চিমা সংস্কৃতি তাই তাদের মত করেই কিস ডে-র ইতিহাসটি তুলে ধরছি।

ষষ্ঠ শতাব্দীতে ফ্রান্সে এক বিশেষ ধরনের অনুষ্ঠান হত, এই অনুষ্ঠানের অন্যতম একটি অংশ ছিল ডান্স (dance) এই নাচটি ছিল শুধুমাত্র couple দের জন্য। এই নাচটি শেষ করা হত একে অপরকে kiss করার মাধ্যমে। আবার রাশিয়ায় বিবাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর hug এবং এরপর kiss দেওয়ার প্রথা প্রচলিত রয়েছে আদি-কাল থেকেই। মনে করা হয় এখান থেকেই ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহে স্থান পেয়েছে kiss day.

পড়ুনঃ- কুসংস্কার ও তার পেছনের আসল সত্য

History of Valentine’s day। প্রেম দিবসের ইতিহাসঃ-

অবশেষে ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইনস ডে। অর্থাৎ একে অপরকে প্রেম প্রদর্শন করার দিন। কিন্তু জানেন কি, এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের ইতিহাস?

বর্তমানে valentines day অত্যন্ত উদ্দীপনার সাথে পালন করা হলেও, এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে একটি মর্মাহত কাহিনী।

রোমের রাজা ক্লডিয়াস তার সেনাবাহিনীতে সবসময় অবিবাহিত সৈন্য নিয়োগ করার দিকে জোর দিতেন। কারণ তার বিশ্বাস ছিল যে, একজন অবিবাহিত সৈন্য একজন বিবাহিত সৈন্যের তুলনায় অনেক ভালো যুদ্ধ লড়তে পাড়বে। তিনি বলতেন, একজন বিবাহিত সৈন্যের মাথায় যুদ্ধের সময় তার পরিবারের চিন্তা তার স্ত্রী-পুত্রের চিন্তা ঘুরতে থাকে। যার ফলে সে ভালোভাবে যুদ্ধ লড়তে পাড়ে না।

 কিন্তু একজন অবিবাহিত সৈন্যের এই সব কোনো চিন্তাই থাকে না, তাই সে অনেক ভালভাবে লড়তে পাড়বে। আর এই কারণেই তার সেনাবাহিনীর কেউই বিবাহ করতে পাড়ত না। এমনকি প্রেম পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল। আর আদেশ অমান্যকারীদের কঠোর শাস্তি দানের প্রথা প্রচলিত ছিল। 

রাজার এমন সিদ্ধান্তের কথা শুনে সিপাহীদের মধ্যে সোরগোল পড়ে যায়। কিন্তু কেউই রাজার মতের বিরোধিতা করার সাহস পাচ্ছিল না। কারণ রাজার মতের বিরোধিতা মানেই প্রাণদণ্ড। এমতাবস্থায় পরিত্রাতা হিসেবে ভ্যালেন্টাইন নামের একজন সন্ত আসেন। তিনি সৈন্যরা যাতে তাদের প্রেমিকাকে বিবাহ করতে পাড়েন তার ব্যবস্থা করতে থাকেন। অনেক যুবক সৈন্যের বিবাহ তাদের প্রেমিকার সাথে হয়ে যায়, শুধুমাত্র ভ্যালেন্টাইন এর সাহায্যেই। ধীরে ধীরে সৈন্যরা ভ্যালেন্টাইনের সাহায্যে বিবাহ করতে থাকে, কিন্তু সত্য বেশিদিন চাঁপা থাকে না। একদিন সম্রাটের কানে পৌঁছে গেল, ভ্যালেন্টাইনের এমন কর্মকাণ্ডের কথা।

History of Valentine’s day। প্রেম দিবসের ইতিহাস
History of Valentine’s day। প্রেম দিবসের ইতিহাস HISTORY OF VALENTINE’S DAY BENGALI. ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস

এতে সম্রাট বেজায় চটে গেলেন। বন্দী করে নিয়ে আসা হল ভ্যালেন্টাইনকে। এরপর রাজাদেশ লঙ্ঘন করতে সাহায্য করায় তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হল। ভ্যালেন্টাইন যে জেলে ছিলেন সেই জেলের জেল রক্ষকের মেয়ে অন্ধ ছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে, ভ্যালেন্টাইনের অদ্ভুত জাদু শক্তি ছিল, যার মাধ্যমে তিনি অনেক মানুষের সেবা করেন। এটি শুনে সেই জেল রক্ষক তার অন্ধ মেয়েকে ভ্যালেন্টাইনের কাছে নিয়ে আসেন।

ভ্যালেন্টাইন এমন সুন্দর একটি মেয়ের এই অবস্থা দেখে মর্মাহত হন এবং তাকে ঠিক করার চেষ্টা করতে থাকেন। অবশেষে ভ্যালেন্টাইন সেই মেয়েটির চোখ ঠিক করতে সক্ষম হয়ে যান। এরপর ভ্যালেন্টাইন এবং সেই জেল রক্ষকের মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়ে যায়। এদিকে ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ডের দিন ঘনিয়ে আসছিল।

ভ্যালেন্টাইনের প্রেমিকা সম্রাটকে অনেক অনুরোধ করা সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অবশেষে যেদিন ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, সেদিন জেল রক্ষকের হাঁতে ভ্যালেন্টাইন একটি প্রেম পত্র দেন এবং তার প্রেমিকাকে দিতে বলেন। কিছুক্ষণ পর তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ভ্যালেন্টাইনকে যেদিন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় সেই দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি। 

এই প্রেম-পত্রের শেষে লেখা ছিল- “Your Valentine” এরপর থেকে তার প্রেমিকার তত্ত্বাবধানে এই দিনটিকে সমস্ত প্রেমিক-প্রেমিকারা, প্রেমের জন্য বলিদান দিয়ে দেওয়া ভ্যালেন্টাইন কে স্মরণ করতে ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

আর এর মাধ্যমেই পুড়ো ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের সমাপ্তি হয়। 

 নিচে দেওয়া wp গ্রুপ টি শুধু মাত্র অ্যাক্টিভ মেম্বারদের জন্য। যাদের মনে হবে ব্যস্ত জীবনের অল্প সময় ও এখানে ব্যয় করতে পারবেন আড্ডা আলোচনার মধ্যে তাদের জন্য। 
  বি.দ্র. - ইউটিউবার দাদা দিদিরা যারা কনটেন্ট খুঁজতে গ্রুপ এ আসেন তারা এখানে অহেতুক ভিড় জমিয়ে নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনবেন না।  WHATSAPP GROUP LINK- ছাড়পত্রিয়ানস (CHARPATRIANS)  👈🏻 ক্লিক করুন
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

SECRET HISTORY OF VALENTINE’S DAY BENGALI. ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস। ভ্যালেন্টাইন দিবস কেন পালন করা হয়? ভালোবাসা দিবস কেন পালন করা হয়?

Spread the love

Leave a Reply