best short stories in bengali দুটি বাংলা ভালো গল্প নিয়ে আজকের এই লেখাটি। এই দুটি বাংলা গল্পে গল্পটিতে খুঁজে পাবেন ব্যর্থ প্রেমের হাতছানি। গল্প দুটির প্রেরক- মানব মণ্ডল

best short stories in bengali:- বাংলা গল্প

বাংলা ভালো গল্পঃ- ০১ ( তুফান মেইল)

আজ তাপস শুভ্র পালের কথা বড়ো মনে পড়ছে । তুফান মেইল কে ‘ too fun mail “নাম  দিয়েছিলো। আসলে এই মেইল ট্রেন এখন ,লোকাল ট্রেনের মতো চলে । বলতে গেলে গরুর গাড়ির মতো।  আগে মথুরা বৃন্দাবন আসতে যেতে , এই  ট্রেন ব্যবহার করতো কলকাতার লোকজন। এখন অনেক গুলো এক্সপ্রেস ট্রেন আছে এই লাইনে । তাই প্রায় লোকাল ট্রেনের মতোই অনেক ষ্টেশনে এটাকে দাঁড়া করানো হয়। তাই এতো দেরি হয়।

তবে গল্প আছে , কলকাতায় যখন রেলগাড়ি প্রথম চলছিলো, তখন অনেকে ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে, এর সাথে প্রতিযোগীতা করেছিলো কিন্তু কেউ পেরে উঠে নি। তাইতো ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত তাঁর ‘শারদ্বর্ণন’ কবিতায় লিখেছিলেন – ‘টাকা ছেড়ে থাবড়ায়/ পার হয়ে হাবড়ায়/ চালিয়েছে রেলওয়ে পথে। হুগলির যাত্রী যত/ যাত্রা করি জ্ঞান হত/ কলে চলে স্থলে জলে সুখ। বাড়ী নহে বড়ো দূর/ অবিলম্বে পায় পুর/ হয় দূর সমুদয় দুখ’।

রেল গাড়ি বলি কিন্তু অনেকই জানে না রেল মানে কি? একটা অনুভূমিক বা হেলানো পাত বা রড যা বেড়া হিসাবে ব্যবহৃত হয়। সে হিসেবে জিনিসপত্র ঝুলিয়ে রাখার জন্য ব্যবহৃত রড ও রেল, যেমন বেসিনের পাশে তোয়ালে রাখার জন্য ব্যাবহার করা হয় সেটাও রেল। এখন  ট্রাম, রেলগাড়ি চলাচলের জন্য পাতা লাইন ,রেললাইন বোঝানো হয়। তুমি ও রেল লাইন খুব ভালো বাসতে। দুইটো লাইন একসাথে বেকে যায়, সোজা হয়, থেমে যায় দৌড়ায়। কি মিল ওদের। কি সুন্দর বোঝাপড়া।

জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম পাশাপাশি লাইন দুটো ছুটে চলেছে। আমরাও পাশাপাশি অনেকটা পথ হেঁটে চলেছি। কিন্তু আমরা কোন দিন এক হতে পরলাম না। আর এখন ইগো মান অভিমান এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেছে এ দূরত্ব বাড়বে কখনো কমেই না। রেললাইনটার মতো সম্পর্কটা হলেও , তবু ভালোই হতো। একটু মতভেদ, কিছু টা দূরত্ব থাকলেও ভালোবাসাটাতো থাকতো, হয়তো পাশাপাশি চলতাম সারা জীবন।

রেলে চেপে আমি ভারতের প্রায় সব শহরেরই ঘুরেছি । চাকরি পরীক্ষা দিতে ছুটতাম এ শহর থেকে অন্য শহরে। এ সময় এক গুজরাটী ছেলে বলেছিলো “আমরা সরকারি চাকরি পাবার জন্য, যে পরিমাণ সময় আর টাকা পয়সা নষ্ট করি তাতে ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়া যায়।”

best short stories in bengali ট্রেন
best short stories in bengali ট্রেন

দুর্ভাগ্য চাঁদ সওদাগর, ধনপতি সদাগরের জাতকে আজ চাকরি জীবি, চাকর জাত হিসেবে অপমানিত হতে হয় সব জায়গায়তেই। তুমি বলবে, মঙ্গলকাব্য তে হয়তো বাঙালি জাতিকে, ব্যবসায়ীজাতি হিসেবে দেখানো হয়েছে কাব্য আর কাহিনীর স্বার্থে।
কিন্তু এই রেল লাইনটাই দেখো  বাঙালি উদ্যোক্তাদের গল্প বলে। ১৮৪২ সালে ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন এক বাঙালি উদ্যোক্তা, সেখানে রেল দেখে  বুঝতে পারেন ভবিষ্যতে এটাই হবে দেশের lifeline । দেশে ফিরেই ১৮৪৩ সালে প্রতিষ্ঠা করে ফেললেন ‘গ্রেট ওয়েস্টার্ন অব বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি’।  তিনি এই কোম্পানিটিকে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করান।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের কথা বললাম এটা। তখন কিন্তু রেল ছিল বেসরকারি। এছাড়া আরও একজন বাঙালির কথা বলতে পারি , যাঁরা ভূমিকা ছিল এই রেলপথ গড়ে তোলাতে, তিনি রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ব্রিটিশ-বাঙালি যৌথ মালিকানায় গড়ে তুলেছিলেন মার্টিন লাইট রেলওয়ে। ইংরেজ ব্যবসায়ী টমাস অ্যাকুইনাস মার্টিনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই রেল-পরিষেবা গড়ে তুলেছিলেন, এই বাঙালি উদ্যোগপতি। ১৮৯০ সালে তাঁরা গড়ে তোলেন তাঁদের কোম্পানি ‘মার্টিন অ্যান্ড কোং’।

রেলপথ মানে, বাঙালির কাছে আবার একটি ছবির দৃশ্য মনে করায়। শরতের এক ঝলমলে রৌদ্রপোড়া সকালে, কাশবনের মাঝখান দিয়ে, বিলি কেটে কালো ধোয়ার কুন্ডুলী পাকিয়ে কু কু ঝিক ঝিক করে ছুটে আসছে এক লম্বা রেলগাড়ি । আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের নৌকা। এই দৃশ্য দেখতে বাড়ি থেকে এসেছে দুই ভাইবোন দুর্গা আর অপু।  ভাই বোনের বন্ধনে সরল সম্পর্কের ছবির মাঝেই আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে আধুনিকতা আসছে গ্রামের সহজ সরল জীবনে। আরে বাবা সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালীর কথা বলছি। সত্যি জীবনের পথ চলতে আধুনিকতা বোধহয় অনেক সময় ভালোবাসার গুরুত্ব হারিয়ে যায়।

আধুনিকতা জীবনে আনছে যান্ত্রীকতার হৃদয় বৃত্তি এখানে আর জায়গা নেই। জীবনের প্রাথমিক চাহিদা গুলো মিটিয়ে নেবার ক্ষমতা আমাদের থাকে। কিন্তু আধুনিক জীবন বাড়িয়ে তুলেছে চাহিদার তালিকা। আর একে ঘিরে বিবাদে সম্পর্ক ভেঙে যায় কত সম্পর্ক। ভালোবাসা আর চাহিদা মেটানো এক নয়। তাই সংসারটা বোধহয় করা হলো না।  রেল লাইনের মাঝখানে দাড়িয়ে, কেউ যেমন কেউ বুঝতে পাড়ে না লাইনের কোথায়, শেষ কোথায় শুরু, তেমন বুঝতে পারলাম না এ জীবনের আসলে লক্ষ্য তথা গন্তব্যটা কোথায়?

রেলপথ মানেই পুজার ছুটি, দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। নতুন বন্ধু পাওয়া। তুমি বলবে ” নতুন  girl friend পাওয়া।” সত্যি বলছি মৌপ্রিয়ার সাথে, আমি তেমন কিছুই করিনি যেটার জন্য ভালোবাসা হয়ে যায়। অনেক ছেলেই মানে রাহুল, তথাগত ,ওরা ওকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিল। আমি কিছু করি নি। ও বলেছিলো “তোমাকে ভালোলাগে, কারণ তুমি এই রেল গাড়ীটার মতো। তুমি বাসে চড়বে চড়ানোর সময় কত পেরাপেরি,ডাকাডাকি। চড়ার পর আর চেনে না। কিন্তু এই রেল নিজের মতোই চলে। কিন্তু মায়ের কোলে কিংবা নিজের ঘরের মতো নিশ্চিত ভাবে রেলে ঘুমিয়ে যাওয়া যায়। রেল যেমন সবার আপন হয়ে যায় তুমিও কম সময়ে আপন হয়ে গেছো।

বাসে আমরা প্রতিদিন যাতায়াত করলেও কেউই বন্ধু হয় না। কিন্তু ট্রেনে‌ বন্ধু হয়ে যায়। তুমি তো আমার ভালো বন্ধু ছিলে, কতো সন্ধ্যা বেলায় এই ট্রেন লাইন দিয়ে হেঁটে গেছিলাম। শপথ করেছিলাম এক সাথে পথ চলবো এভাবেই।
রেলপথে যাতায়াত করার সময় , আমি কিন্তু বাড়ি থেকে আনা খাবারই খাই। মাসি রুটি করে, একটা খবরের কাগজে মুড়ে দিয়েছিলো। পুরাতন খবরে চোখ পড়লো ঐ কাগজে। কোলকাতার পাতাল রেলের খবর। কথায় কথায় আত্মহত্যা করে, কিছু মানুষ পাতালরেলকে আত্মহত্যার জায়গায় পরিনত করেছে। একটা O.T র বাইরে এদের কে দাঁড়া করিয়ে দেওয়া উচিত , তাহলে বুঝতে পারবে জীবনের মূল্য কত খানি। বাবা মা ভাই বোন কতটা ভালোবাসে তোমাকে। আর তোমারা ছোট ছোট ছোট কারণে হেরে যাও জীবনের কাছে।

বাংলা ভালো গল্প
বাংলা ভালো গল্প ভালোবাসার গল্প

তোমার বাবার কাছেও বংশ মর্যাদা , নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বড়ো ছিলো তাই আত্মহত্যা করলো। প্রতিশ্রুতি দেবার আগে একবার তোমার সাথে কথা বলতে পারতেন উনি। মেয়ে বলেই কি , তোমার ইচ্ছে অনিচ্ছার কোন দাম নেই। বংশ মর্যাদা রক্ষার জন্য একটা মেয়ে অন্য একটি বাড়িতে গিয়ে,  সংসার নামে শুধু সব কিছুর সাথে এডজাস্ট করে যাবে এটা হয় নাকি! তুমি অভিমান করে আছো জানি আমার উপর। কিন্তু উনার মৃত্যু পর আমি তোমাকে আর আপন করতে পারিনি। কারণ উনার মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী।

হুঁ ভালোবাসাতে হয়তো কোনো প্রতিযোগিতা থাকে না। কিন্তু একটি মেয়ের মন জয় করলেই তো হয় না। নিজেকে যোগ্য করতে হয়, তার সামাজিক নিরাপত্তার দেবার। আজ তুমি স্বনির্ভর। নিজের মাকে নিয়ে ছোট তোমার পরিবার। একাই চলেছো জীবন পথে। জীবনের পথটা এই রেলপথের মতোই কঠিন তবু আমিও চলছি। তোমার পাশে পাশে সমন্তরাল ভাবে। জানি এপথ আর কোন দিন এক হবে না রেল পথটার মতো। তবু  যদি কোন জংশনে তোমার লাইনে সাথে মিশতে পারে, আমার লাইন। এই আশায় চলছি পথ, যেভাবে টেনে নিয়ে যাচ্ছে জীবনের ইঞ্জিন। আমি মানতে শুরু করেছি আজকাল, জীবনের রেল গাড়ীটা চালায় বোধহয় ঈশ্বর নামের ইঞ্জিনটা।

পড়ুনঃ- বাংলা গল্প- হঠাৎ দেখা 

বাংলা গল্প- কালো শাড়িঃ-

আমি এখন গোয়াতে। গোয়া মানেই সবাই জানে সি বিচ, মেয়ে মানুষ, মদ আর ফুর্তি। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা নয়। জীবনে যখন ভাবলাম একটু সেটেল হয়েছি তখনই বিপর্যয় নেমে এলো। খুব কম মাইনেতেই একটা চাকরি জোগাড় করে এলাম গোয়াতে। মা বাড়ি ফিরে যেতে বলছে বারে বারে। জাহাজে চাকুরী করতে আসে লোকে একটা আড়ম্বর পূর্ণ  জীবন এর আসায় কিন্তু। এটা সিপ ইয়ার্ডে দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজ নুন্যতম সুবিধা টুকু নেই।

সাপকে আমি ভীষন ভয় পাই কিন্তু, আমার খারাপ সময় সাথে যেনো এই সাপ এর উপস্থিতি একটা রোজনামচার মতো হয়ে গেছে। মুম্বাইয়ে প্রথম স্টাফ হাউজ নামে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থেকে একটা নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলাম এবং সাপের দর্শন পেয়েছিলাম। এখানে সাপের পিছনে পিছনে আলো নিয়ে ছোটাছুটি করতে হলো আমাকে। সাপ আছে শুনে পিসির বাড়ি যাওয়া বন্ধ করা ছেলে আমি। সাপুড়ে কিংবা চিড়িখানাতে সাপ দেখা অন্য ব্যাপার কিন্তু অন্ধকারে নাম গোত্র না জানা সাপের পিছু করা ভয়ঙ্কর ব্যাপার আমার কাছে।

যদিও দিন পোনেরো পর সমীর ভাইকে সাপটির ছবি দেখিয়ে নিজেকে বড়ো দোষী মনে হতে লাগলো। ও হ্যাঁ সমীর ভাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিই। ও রঙ্গিলা মুসলিম। বাংলার সাথে হিন্দি আর মারাঠা টা ভালো ই শিখেছে। মুম্বাই এর ভাইদের দুনিয়াটা এখন ইসলামীরা নিয়ন্ত্রণ করে। ও চাইলেও ওখানে যোগ দিতে পারতো। কিন্তু ওয়েলডিংএর কাজটা ও দেশেই শিখেছিলো, পেটে একটু বিদ্যাও ছিলো। তাই  গোয়াতে গা ঢাকা দিয়েছে সাইড সুপার ভাইসার হিসাবে। অপরাধ ওর ওই সাপটার মতো অনুপ্রবেশ কারী। NRC CAB চালু হলে ওর খবর আছে।

ভালোবাসার গল্প বাংলা গল্প
ভালোবাসার গল্প বাংলা গল্প
<

এবার আসি সাপটির কথায়। ওটা পাইথন বা ময়াল সাপ। অজগর বা পাইথন  হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সাপ। অজগরকে ময়াল নামেও ডাকা হয়। এরা বিষহীন আদিম সাপ। এদের পিছনের পা-এর চিহ্ন পুরো বিলুপ্ত হয়নি।এরা শিকারকে জোরে পেঁচিয়ে, তার দম বন্ধ করে মেরে ফেলে। এরা শীকারকে সাধারনত মাথার দিক থেকে আস্ত গিলে খাওয়া শুরু করে। কারণ, এতে শীকারের বাধা দেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। শীকার হজম করতে তাদের কয়েকদিন সময় লাগে। এরা আবার মৃত প্রাণী খায়না।এদের তাপরশ্মি দেখার বিশেষ তাপদৃষ্টি ইন্দ্রিয় আছে।

সমীর ভাইয়ের কথায় আমাদের জাহাজে ঢোকা পাইথন এর বয়সটা খুব বেশি হলে এক মাস। যেদিন বৃষ্টি হয় সেই ওর বাড়ি মানে ঘরে উঠানে কাছে একটা বড়ো পাইথন মাঝে মাঝে নেমে আসে। কোনও দিন ওদের কোনও ক্ষতি করে নি। সত্যি মানুষ বোধহয় সবচেয়ে ক্ষতিকারক প্রানী। সমীর ভাই এর সাথে আলাপ হতে বুঝতে পারলাম, রঙ্গিলা মুসলিমরা অতোটাও খারাপ হয়তো নয়। কিন্তু ও বিপদে পরবে হয়তো CAB এলে। ভেবে দেখুন যদি ঈশ্বর এই পৃথিবীর সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে , সেতো কোন বর্ডার টানে নি আকাশে, কিছু মানুষ, ধর্ম, জাত, ভাষা দিয়ে বিভাজন করেছে জমিটাকে নিজেদের স্বার্থে। তাই মানুষ সবচেয়ে বড় বিষধর।

আপনারা চেনেন ফুর্তিবাজ গোয়াকে। আমি চিনি এক অন্য গোয়াকে একা একন্তে থাকা এক গোয়া। দুই পাহাড়ের মাঝখানে একটুকরো সমুদ্র ঢুকে পড়েছে। সকালটা এখানে সুন্দর, কিন্তু তা দেখার সময় কোথায়, সমুদ্র এখানে কথা বলে, একটা শঙ্খচিল উরন্ত অবস্থায় আপনার কুশল সংবাদ নেয়, অজানা পাখি গান করে। কিন্তু হাতুড়ির শব্দে হারিয়ে যায় সব কিছু। যান্ত্রিক জীবনে দিনে কয়েকটিবার প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলে একটুখানি শান্তি পাই। আমার আবার প্রিয়জনদের সংখ্যা একটু কম, শুধু মা।

কিন্তু কয়েকদিন ধরে তাকে কল করতে ইচ্ছে করছে না। খালি এক কথা ঘেনোর ঘেনোর। বাবা আমার সাথে খুব একটা কথা বলে না, সেও বলতে শুরু করেছে , “জীবন টা আগে, টাকা পরে।” কল কেটে দিলাম‌। মন খারাপ বেশিই চ্যাচামি করে ফেলেছি। আসলে আমিও তো ভিতরে ভিতরে হতাশ। বড়ো সস্তায় বিক্রি করছি আমার শ্রম। আচ্ছা আরোতো দুশো মানুষ এখানে কাজ করছে, আমার চেয়ে অনেক কম মাইনেতেও। তাহলে চুক্তি স্বাক্ষর করে চাকুরী অতো সহজে ছাড়তে পারবো নাকি! ” দুই পেক মারলেই ঠিক হয়ে যাবে।” ওরা বললো।

আমি বললাম ” জানোতো ওটা আমার চলে না। চলো না বরং ঐ ওয়াটার ফল টায়, যেখানে ময়লা গুলো ঝুলন্ত অবস্থায় মাছ ধরছে”

সমীর  বললো “পাগল হলে নাকি, এখন ফরেস্টের গার্ড নামতে দেবে না জলে। আর স্নান করার বাহানায় অনেক কাছে গিয়ে দেখছিলাম, আর ঐ টা video করেছিলাম। আর ওতে ঝুঁকি আছে, তুমি নতুন লোক বস। বরং সি বিচ চলো, একটা বিয়ার খেলে মন ফ্রেস হয়ে যাবে।”

রাতে ফোন করতে মা খুব খুশি। মা আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করছে। সংসার খরচা বাঁচানো সাথে সাথে আয় করছে , শাড়ি বিক্রি করে। অথচ নিজের  জন্য কোনো দামি শাড়ি কেনে না। এ বছর আমরা শাড়ি কিনে দেবো বলেছি। ভাইএর বৌ রূপা ওদের পচ্ছন্দ মতো একটা দামী শাড়ি দিয়েছে। আমি নিজে ইন্টারনেট দেখে একটা শাড়ি পচ্ছন্দ করে ছবি পাঠাবো বলেছিলাম। সন্ধ্যায় আজ পাঠালাম আমার পছন্দের শাড়ি নমুনা।

মা বললো ” আমি কালো শাড়ি পরবো কি বলিছিস তুই, আমাকে মানবে? এ বয়সে!”
আমি বললাম” বয়স হয়েছে তোমার আর কতো, মানাবে ঠিক , দেখো কিনে পড়োতো একবার , আমার ইচ্ছা টা রাখো না।”
মা বললো ” একটা কথা জিজ্ঞেস করবো , বললবি?”
বললাম ” বললো”
মা বললো ” টুবাই বললো তুই যে ছবিটা পাঠিয়েছিস গোয়াতে তোলা?”
আমি বললাম ” হুঁ , “

মা বললো ” মৌপ্রিয়ার সাথে তোর কথা হয়েছে? তোদের কি মিটমাট হলো?”
আমি বললাম ” নেটওয়ার্ক নেই কথা বুঝতে পারছি না , রাখলাম।”
গোয়ার বিচ নির্লজ্জের মতো উল্লঙ্গ, তবে সন্ধ্যায় কালো অন্ধকার যখন তাকে ঢেকে দিতে যাবে, তখনই গুন গুন রবীন্দ্র সংগীত ভেসে এলো কানে, মদ্যপ অবস্থায় থাকলেও রবীন্দ্র সংগীত রস আস্বাদন করতে পারবো না এমন নেশা করি না, রূপকথার মতো লাগছিলো , DSLR টা ব্যবহার করতে ভুললাম না। কিন্তু কখনো ভাবিনি ছবিতে বন্দী হয়ে যাচ্ছে, আমার হারিয়ে যাওয়া প্রেম।

কালো শাড়ি হারিয়ে গেলো অন্ধকারে। কালো রঙটা তো আমার প্রিয় কখনোই নয়। নীল রং আমার প্রিয়, আকাশের রঙ নীল বলে নয়, শুনেছি মৃত্যুর রঙ নাকি নীল। কিন্তু আজকাল কালো রং টাই প্রিয়। আসলে মরতে চাই না আর, কালো অন্ধকারের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তে চাই, একটু বিশ্রাম চাই। তাই কালো রঙটা আজকাল ভালো লাগে। কালো শাড়ি পরা মেয়েটি খুব সুন্দর ছিলো। একটা কবিতা ও লিখলাম তাকে নিয়ে। কালো আঁচলে মুখ ঢেকে দিয়ো মা আমার তুমি, যখন আমি ঘুমিয়ে পড়বো। কোনো রঙীন স্বপ্ন দেখা যেনো ঘুম না ভাঙে হঠাৎ করে।

অসাধারণ গল্প দুটির লেখকঃ- মানব মণ্ডল facebook

বাংলা ভালো গল্প বাংলা গল্প
পড়ুনঃ- সেরা গোয়েন্দা গল্প- লোহার বিস্কুট রহস্য 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবেঃ- 

ফেসবুক-ছাড়পত্র 

টেলিগ্রাম- CharpatraOFFICIAL 

WhatsApp Group- ছাড়পত্র 

“best short stories in bengali. বাংলা ভালো গল্প। ভালোবাসার গল্প। বাংলা গল্প”

Spread the love

Leave a Reply