আজ ছাড়পত্রের পাতায় বাছাই করা বেশ কয়েকটি bangla kobita থাকছে। এই বাংলা কবিতা গুলিতে কোনোটিতে হয়ত খুঁজে পাবেন অপ্রকাশিত প্রেমের স্বাদ, আবার কোনোটিতে খুঁজে পাবেন ঋতু রাণী বর্ষাকে, আবার কোথাও রয়েছে শরতের লাবণ্যময়ী বন্দনা।
bangla kobita. বাংলা কবিতাঃ-
প্রেমের কবিতাঃ-
পথে দেখা
সৌগত প্রামানিক
বসেছিল স্কুলব্যাগ হাতে
ডানহাতটা চিবুকে,
ভাবছিল হয়তো কবির বেশে
কম্পিউটারের ই – বুকে।
চোখটা ছিল কাজলা দিঘি
মনের খোলা চিঠি,
ডাকপিয়নের অভাব ভীষন
ধুলোয় কাতর স্মৃতি।
ভালোলাগা ছিল আমার
পিছে পড়ে ছিলাম,
সাইকেলের গতির মন্দে
তারে দেখে নিতাম।
বলার কিছু না পেয়ে তাই
আবেগ লুকিয়ে রাখি,
প্রথম পাতার মুখবন্ধে
সকাল থেকে রাতি।
পথে তোমায় পেলাম আর কই
দিলে তুমি ফাঁকি,
আমার জীবন বৃক্ষে তুমি
পাকা দোঁয়াশ মাটি।
গাড়ির চাকায় পথের সুদূর
ছাপ ফেলে যায় মনে,
দেখা হয়তো আর হবেনা
বিবশ পথের কোণে।
তোমায় আমি রাখবো কোথায়
তুমি তো সবটা জুড়ে,
শেষ পাতায় বিরহ জাগুক
হৃদয় দগ্ধে মরে।

শরৎ কবিতা/ কবিতায় শরৎঃ-
শরতের শোভা
বাপিরুদ্দিন শেখ
কখনও পবন,কখনও বাদল, কখনও রৌদ্রের খেলা। কখনও শারদা,কখনও দেওয়ালী, কখনও লক্ষীর মেলা। গুল্মতে পাকে বাতাবীলেবু, বৃক্ষে পেয়ারা,নিম। দিবসে পরে রৌদ্র,অম্বু, রাত্রিতে পরে হিম। পুকুরেতে ভাসে পদ্ম শালুক, ডোবাতে সোনালী আঁশ। প্রান্তরে থাকে সোনালী আউশ, কাননে শিউলি কাশ। কোথাও পাকে ডুমুরের ফল, কোথাও তালের গন্ধ। স্কুল কলেজের গেট গুলো সব, পুজোর ছুটিই বন্ধ। গগনেতে সুন্দর জ্যোৎস্নার আভা। তার চেয়ে সুন্দর শরতের শোভা।
মেলা
বাপিরুদ্দিন সেখ
কোথাও মানবের ভীড়,
কোথাও মজার খেলা।
কোথাও কবির মিলন,
কোথাও বাউল মেলা।
কেউ বা চড়ে নাগরদোলা ,
কেউ বা দেখে খেলা।
কেউ বা নাচে বাউলের টানে,
কেউ বা খাই ঠেলা।
কেউ বা বেচে পুরি, চাউমিন,
কেউ বা মালাই রোল।
কেউ বা বেচে চপ, সিঙাড়া,
কেউ বা বাজায় ঢোল।
কেউ বা দেখে ফটোর দোকান,
কেউ বা চিবায় পান।
কেউ বা খেলে লটারী খেলা,
কেউ বা গায় গান ।
কেউ বা খাই জিলাপির রস,
প্যাকেট খানি মোলা।
কেউ বা খায় বাদাম, লেবু,
কেউ বা ফেলে খোলা।
কেউ বা খেলে লাফ, ঝাপ আর
কেউ বা দৌড়ের রেস।
কেউ দাঁড়াই, কেউ ছুটে বেড়ায়,
দেখতে লাগে বেশ।
আসা যাওয়ার মধ্যে আছে, কান্না এবং হাসি।
তবুও মোরা দুঃখ ভুলে, মেলাকেই ভালবাসি।
পড়ুনঃ- নতুন প্রেমের কবিতা
সুখপাখি
সুসময় বিশ্বাস
গভীর রাতের নিস্তব্ধতায় ফোটে কত ফুল,
সুগন্ধে তার মন ভরে যায়, খুশিতে মশগুল।
সেই সুবাসে কতজনেই তৃপ্ত করে মন,
বিভীষিকার মধ্যে খোঁজে শান্তি নিকেতন।
কেউবা আবার লোভের বশে বিষয়ে আসক্ত,
কোমলতা যাচ্ছে চুলোয় হচ্ছে গরম রক্ত।
আত্মসংযম জানেনা তাই পোড়ায় নিজের ঘর,
নিজের বিষেই জর্জরিত সারাজীবন ভর।
যাদের প্রাণে যখন তখন উৎকণ্ঠার অসুখ,
মন ক্যানভাসে তারা আঁকে বিষাদ ভরা মুখ।
সহজ পথের দিশা ভুলে ওঠে নাভিশ্বাস,
ঘুম উড়ে যায় প্রতিরাতে বাড়ে দীর্ঘশ্বাস।
ভোগবিলাসে মত্ত তবু খাচ্ছে টালমাটাল,
হতাশার মেঘ আছড়ে পড়ে জীবনের বেহাল।
জীবন ভরে নিত্য দহন ওদের বারোমাস,
সুখ হারিয়ে অশান্তিতে করে হাহুতাশ।
শেষ বিকেলে আঁধার ঘনায় ফুরায় মনের আশ,
বিষাদের মেঘ আকাশ ঘিরে ঘটায় সর্বনাশ।
সময় গেলে ফেরে না আর শেষে বৃথা রোদন,
সুখপাখিটা একান্তে রোজ করছে কৃচ্ছ্রসাধন।
পথের পাঁচালী
বুলবুলি ব্যানার্জী
নিশ্চিন্দি পুর,
আমি তাকে রাখি এমনটা নয়
তবু সে থেকে যায় আগাছার মতো
খুব নিঃশব্দে আমার ভিতর এক গভীর অরণ্য হয়ে
সেখানে সবুজের আলপথ ছুঁয়ে ছুঁয়ে
নাকছাবি ফুল ফোটে
কাশবন কথা কয় বাতাসে
কচুপাতায় টুপটাপ ঝরে পড়ে মেঘলা আকাশ
অজানারা হেঁটে যায় এই পথ সেই পথ
বেণী ওড়া আকাশে ভেসে থাকে আম কুশি গন্ধ…
আমি ক্যানভাসে বহমান জীবনের রঙ আঁকি
তরঙ্গে ভাসিয়ে দিই শব্দ কথা
নিয়নের আলো মাখা উৎসবে
বিস্ময় মুছে যায় অচেনায়।
ফিরে দেখা দিন এলে
মা সন্ধ্যার দীপ জ্বালে আঁধারে
অবেলার আলো মেখে
আমি নিশ্চিন্দিপুরের পথ হাঁটি…
অনেক দূরের সারি সারি চেনা মুখ
কালো ধোঁয়া নিয়ে ফিরে গেলে
আমার রাজা সাজা রাংতা মুকুটে রুপকথা শৈশব
ফিরিওয়ালা মিঠা লাঠি হাঁকে
পূজার নামাবলী গায়ে
না ফেরা পথেরা
কী গভীর সে ডাকলো আমায়
শ্রান্তির ঘুম এলে
কাগজের দূরবীনে চোখ রাখি
আঁচলের আবছায়ে
সাদা কালো রেখাতে
জেগে থাকে অবিরাম
হয়তো জীবন
অথবা
না জীবন গল্প।
পড়ুনঃ- বাছাই করা কিছু কবিতা
বর্ষা নিয়ে কবিতাঃ-
ঋতুরানী বর্ষা
বাপিরুদ্দিন শেখ
তাপদগ্ধ গ্রীষ্মের শেষে,
এল স্নিগ্ধ বর্ষা।
গাছপালা আর তরুলতা,
পেল বাঁচার ভরষা।
বর্ষায় হয় সবুজ শ্যামল,
শস্য ভরা মাঠ ।
বর্ষায় হয় ভরপুর ,
পুকুর নদীর ঘাট।
টিপ টিপ টিপ করে, সারাটা দিন ধরে ।
অনবরত বারিপাত ঝর্ণার মতো ঝরে।
চারিদিকে মেঘেদের আনাগোনা।
শুরু হয় চাষিদের আমন ধান বোনা।
বর্ষায় সজ্জিত হয়,
কদম্ব, বেল, জুঁই।
এই সময়ে দেখা মেলে,
শাকের রাজা পুঁই।
মেঘের বাদল বজ্রের ধ্বনি,
গগনের ঐ কোলে।
মাছরাঙাটা মাছ ধরে আর,
ময়ূর পেখম দোলে।




একটি মেঘলা দিন
শ্রীমন্ত ভদ্র(শ্রী চন্দন কুমার বৈদ্য)
এই মেঘলা দিনে আমি একলা একা বসে
পেয়েছি ঘন কালো মেঘের দেখা অবশেষে
গোটা আকাশ জুড়ে কালো মেঘের খেলা
বিদ্যুৎ চমকে উঠে, ঝড়-বৃষ্টি শুরু সন্ধ্যা বেলা
ব্যঙের ডাকে উঠলো মেতে সন্ধ্যা বেলার বৃষ্টি
চমকে ওঠা বিদ্যুৎ দেখবো বলে মেলেছি দৃষ্টি
মেঘেদের গর্জনে বোঝা যায় রেগে আছে ভারি
ঝড়-বৃষ্টি থামবে কখন অপেক্ষা করেনি তা জারি
পড়ুনঃ- কাজের কথা
মুক্তোদানায় গাঁথামালা
সুলতানা রিজিয়া
আকাশ জুড়ে মেঘবালিকা
হিমেল হাওয়া উড়ছে ধীরে
ফুলবিথিকায় রঙিন নেশা
ঝরলো বাদল শরীর জুড়ে।
গাইলো চাতক পিউকাঁহা
সোহাগমাখা প্রনয় সুখে
আলিঙ্গনে ভিজলো পরাগ
লুটায় দেদার মাটির বুকে।
রঙধনুকের রঙিন তিলক
রাঙিয়ে দিলো সিঁথির রেখা
মুক্তোদানায় গাঁথলো মালা
জলবালিকার প্রাণের সখা।
বাংলার সৌন্দর্য নিয়ে কবিতাঃ-
বৈচিত্রময় বাংলা
বাপিরুদ্দিন শেখ
বাংলা মোদের পিতা মাতা, বাংলা মোদের আশা। বাংলা মোদের সুখ দুঃখ। হৃদয়ের ভালোবাসা। বাংলা মোদের শস্য শ্যামল নরম সোনালী আঁশ। বাংলা মোদের পুকুর নদীর। রুই কাতলা আর হাঁস। বাংলা মানে রবি কবির মনোমুগ্ধকর বানী। বাংলা মানে দখিনা পবন উত্তরের শৈলরানী। বাংলা মানে কবি নজরুলের বিদ্রোহের রোল। বাংলা মানে সুভাষের বানী, সবাই দিল্লি চল। বাংলা মানে বাউল, কীরতন মেঠো লালনের গান। বাংলা মানে বিবাদী,প্রীতি ক্ষুদিরাম এর প্রান। বাংলা মানে মেঘনাদ, প্রশান্ত,জগদীশের সৃষ্টি। বাংলা মানে পরিসংখ্যান তত্ব, পটোমিটারের হিস্ট্রি। বাংলা মানে বঙ্কিম, শরত, সুকান্ত ও নিমাই। বাংলা মানে সত্য, বিভূতি ও তারাশঙ্কর রায়। বাংলা মানে নীললোহিত, বেদুইন,শঙ্কর। বাংলা মানে পরশুরাম, কালকূট,যাযাবর। বাংলা মানে মেঘনাদ বধ, শ্রীকান্ত,সর্বহারা। বাংলা মানে আনন্দমঠ, গীতাঞ্জলি পড়া। বাংলা মানে রাম মোহনের নিষেধ সতীদাহ প্রথা। বাংলা মানে ঈশ্বরচন্দ্র এর বিধবার বিবাহ। বাংলা মানে পাহাড়,নদী, সমভূমি,দ্বীপপুঞ্জ। বাংলা মানে জলদা পাড়া, সুন্দরবন এর কুঞ্জ। বাংলা মানে মায়ের মমতা বাবার স্নেহের আদর। বাংলা মানে গরমের ঘাম, শীতের সাথী চাদর। বাংলা মানে প্রভাত রবির উষ্ণ স্নিগ্ধ ছোঁয়া। বাংলা মানে সবুজ ক্ষেতে গাঙ শালিকের গাওয়া। বাংলা মানে দীঘার সৈকত, দার্জিলিং এর হাওয়া। বাংলা মানে হুগলি, তিস্তা, দামোদরকে পাওয়া। বাংলা মানে কুহু কাকলি ময়ুরের কেকা। বাংলা মানে হিক্কা হুয়া ভেকেদের ভেকা। বাংলা মানে হিয়ার মাঝে কান্না এবং হাসি। বাংলা মানে দশ কোটির জয় কেই ভালোবাসি। বাংলা মানে আর্যভট্টের মহাস্রৃষ্টি শূন্য। বাংলা মানে উন্নয়ন মেহনতী মানুষের জন্য। বাংলা মানে চা, পাট আর রয়েছে ধানের গোলা। বাংলা মানে সৎ সাহসে সত্যের কথা বলা।




মরীচিকা
তারকনাথ দত্ত
আমি যখন তেপান্তরে তুমি তখন খেলা ঘরে পুতুল খেলায় মগ্ন ছিলে কোমল রাঙা ছোট্ট হাতে সেই সেদিনের সু প্রভাতে আমার সকল অঞ্জলি! আমি যখন খেলার মাঠে তুমি তখন স্কুলের পাঠে ছিলে কেবল পরবাসী! আমি যখন ঘরের দাওয়ায় তুমি তখন দক্ষিণ হাওয়ায় নয়ন জুড়ে এলোকেসি! আমি যখন ঘুমের শেষে তুমি তখন পরির দেশে উড়িয়ে আঁচল চোখ ভরা জল ভাবাবেগে নিথর দেহে চুপি চুপি বললে শেষে ভালোবাসি ভালোবাসি! আমি যখন লিখতে বসি কলম নিয়ে গড়িমসি তুমি তখন মনের কোণে লজ্জা রাঙা লাজুক মনে বললে কিছু চুপি চুপি! বুকের ভেতর জমাট গাঁথা হৃদয় বাঁশি করুন সুরে থেকে থেকে বে সুরো হয় তোমার ছায়া নিথর জলে! এখন আমি অনেক দূরে অতন্দ্র মোর দেশ পাহারায়! তুমি যখন ঘুমিয়ে খাটে কানের কাছে এফ এম হাতে কখনো ফের দীঘির ঘাটে ডাক ওয়ালার চিঠির হাঁকে তাকিয়ে থাকো পথের বাঁকে ওই বুঝি মোর পদধ্বনি! সময় কতক অপেক্ষামান তার পরতেই ঘরে ফেরা বুকের কাছে মধ্যমনি! দুএক ফোঁটা চোখের জলে ক্ষণিক কোথা হারিয়ে গেলে আত্মহারা সেদিন দুজন গেয়ে ছিলেম কুহুকুজন হারিয়ে যাওয়া দিন গুলি! আমি যখন বিদেশ বিভুঁই কবিতা নিয়ে হাজির সেথায় তুমি তখন দর্শনে আর দৈনিকের ই পাতায় পাতায় খুশিমনে আঁকছ ছবি জীবন খাতার প্রতি পলে খুশির ছটায় সয়সম্বলে! এখন আমি বড্ড একা পাইনা চেয়ে তোমার দেখা বিনিদ্র রাত পেরোয় না আর ভাবছি বসে তোমার কথা।।
“বাংলা কবিতা। বর্ষা নিয়ে কবিতা। প্রেমের কবিতা। bangla kobita”
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবেঃ- ফেসবুক-ছাড়পত্র টেলিগ্রাম-charpatraOfficial WhatsApp- ছাড়পত্র




কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।