আজ আপনাদের জন্য রইল কিছু হাসির ছোট গল্প। সারাদিন মুখ গোমড়া করে বসে না থেকে, আমার সাথে ঘটে যাওয়া কিছু হাসির ঘটনা চট করে জেনে নিন আজকে। ভালো লাগলে বন্ধুদের কাছে পৌছে দিতে ভুলবেন না। চরম হাসির মজার গল্প।

হাসির ছোট গল্প। হাসির গল্প।

ফানি গল্প-০১

বিয়ে বাড়িতে ঢুকছি। খুব একটা ভীড় নেই। বিয়ে বাড়িতে ঢোকার সময় গেষ্ট দের বসার জায়গায় একটা কিউট মেয়েকে দেখেই ক্রাশ খেয়ে গেলাম। লাল লিপিস্টিক, লাল কানের দুল, লাল শোয়েটারে দারুন লাগছিল মেয়েটাকে। দু-চোখ ভরে দেখেও আশ মেটে না, এমন অবস্থা আমার। আমি মেয়েটার অনেকটা কাছাকাছি বসলাম আর আড়-চোখে মেয়েটার দিকে দেখতে লাগলাম। মেয়েটাও মনে হচ্ছে মাঝে মধ্যে আমার দিকে দেখছে। তার মানে চেষ্টা করলে সাফল্য আসতে পারে।

 আমাদের সুখ দৃষ্টি আর বেশিক্ষন স্থায়ী হল না কারন খাওয়ার প্যান্ডেলে যেতে হল।। সেখানে তো আরেক রহস্য, মেয়েটা আমার টেবিলেই খেতে ব্সল। উঃ মা গো আমার কিরকম যেন উৎসাহ উৎসাহ ফিল হচ্ছিল। সেখানে আরও এক ঘটনা ঘটে গেল। তরকারীতে লবণ কম হওয়ায় আমার পাশে বসা একজন লবন নিচ্ছিল। অপর আরেকজনের হাত লেগে আমাদের সবার থালায় লবন পরে একাকার।

হাসির ছোট গল্প
হাসির ছোট গল্প। হাসির ঘটনা

 আমাদের সবার খাওয়া নষ্ট হয়ে গেল। কিন্তু ভোগান্তি এখানেই শেষ নয়। আমি দেখলাম আমার ক্রাশ মেয়েটি গলা ফাটিয়ে জল জল করে চিৎকার করছে। তার চোখে  লবণ ঢুকেছে, সে চোখ খুলতে পারছে না। সবাই মিলে ধরাধরি করে তাকে কুয়োর পারে নিয়ে গেলাম। মুখে চোখে জল দেওয়ার পর, সে কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তাকে নিয়ে একটু আলোতে এলাম। এবার মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আমি তো রিতীমত ‘থ’ লেগেগেছি এ আমি কি দেখছি এ তো ‘Asian Paints’ এর আড়ালে ‘চুনের কাজ’।
আমার আজ উচিত শিক্ষা হল আজ থেকে কোনো বিয়ে বাড়িতে আমি আর মেয়েদের দিকে তাকাবো না।

পড়ুনঃ-18 টি মজার জোকস বাংলা

ফানি গল্প-০২

কিছুতেই আমাদের বাড়ির গরুটা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। যেখানে আমাদের ডন (গরুর নাম) কে বেঁধেছিলাম সে ওখানে নেই। কিজানি হয়ত কোথাও ঘুরতে গেছে। প্রতিদিন কি আর গলায় দড়ি নিয়ে মাঠে ঘাস খাওয়া যায়, একটু আধটুতো ঘুরতেও লাগে।

সে যাই হোক সারাদিন খোঁজার পড়েও কিছুতেই তার লেজের দেখা টুকুও পেলাম না। এদিকে মাথার উপর আবার গনগনে রোদ। কি জানি সবাই আমার পেছনে এত লাগে কেন! অন্যদিন আকাশ মেঘলা করে থাকে, আর আজ আমি বাইরে বেড় হতেই সূর্যটাও লেগেছে আমার উপড়ে, ওদিকে আবার আমাকে বাবা বলে দিয়েছে, ডন-কে নিয়ে বাড়ি না ফিরলে আমার পেছনে লাল করে দেবে।

আমার আবার নিষ্পাপ মন। ক্লান্ত হয়ে একটু জলের খোঁজ করতে লাগলাম। জানি আশেপাশে জল পাওয়া যাবে না। তাই গেলাম পাশের একটা পার্কে। দুপুর বেলা, লোকজন বিশেষ নেই। যা দেখা যাচ্ছে শুধু দুই উড়তি বয়সে ফুর্তি করা লোকজন। জল খেয়ে বিশাল গাছটার নীচে গিয়ে বসলাম।

হাসির ঘটনা। চরম হাসির মজার গল্প
হাসির ঘটনা। চরম হাসির মজার গল্প

আগেই বলেছি, আমার নিষ্পাপ মন। আমি জানিই না, যে আমার পেছনে একজোড়া কপোত-কপোতির উড়তি বয়সে ফুর্তি চলছে। আমি শুনলাম ছেলেটা বলছে- “তোমার চোখে চোখ রাখলে আমি গোটা দুনিয়া দেখতে পাই। এই কথাটি শোনার পড়, আমার মনেও কেমন যেন আনন্দ হল। দাঁড়িয়ে পড়লাম। আমার সাদা মনে কোনো কাদা নেই। আমি তাদের কাছে গিয়ে ছেলেটিকে বললাম- “দাদা, বলছিলাম যে আমার গরুটা খুঁজে পাচ্ছিনা, তা একটু ওনার চোখে, চোখ রেখে বলবেন কি যে কোথায় আছে আমার গরুটা। আর হ্যাঁ গরুটার নাম ডন। উচ্চতা চার ফুট দুই ইঞ্চি। গাঁয়ের রং সাদা, কপালের মাঝে কালো দাগ আছে। নিখোঁজ হওয়ার সময় গায়ে কিছুই পড়ে ছিল না। মাথায় সিং আছে। একটু বলুন না প্লিজ।“

আমার শিশুর মত নিষ্পাপ মন। কিজানি তারা কি বুঝল না বুঝল আমাকে এত জোড়ে কেলালো ছেলেটা যে, গরু খোঁজা তো দূরের কথা, আমাকে এখান থেকে কে খুঁজে বেড় করবে সেটাই প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াল।

পড়ুনঃ- ভালোবাসার সঙ্গে যুক্ত সাইকোলজি ফ্যাক্ট

ফানি গল্পঃ-০৩

আমার বন্ধু অমর, নতুন নতুন প্রেমে পড়েছে। সে আর কি বলব তার কথা- আগে যে ছেলেটা দিনে কয়েক বার খোঁজ নিত, সেই ছেলেটা প্রেমে পড়ে বন্ধুকেই ভুলে গেল। কি আর করা যাবে জামানা টাই এরকম।

তবে বন্ধু আমার হারামি খুবই। মেয়েটার ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসা করলেই, শুধু স্কিপ করতে চায়। অনেক বায়নার পড় অবশেষে সে তার গার্লফ্রেন্ডকে দেখাতে নিয়ে যাবে আমাকে। হুম বৌদির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। কেমন যেন উৎসাহ ফিল হচ্ছে। নিজের পোড়া কপালে তো আর কোনো মেয়ে জুটল না, তাই বন্ধুর গার্লফ্রেন্ড টাকেই দেখি।

আমাকে একটা গাছের নীচে অপেক্ষা করতে বলে, বন্ধু আমার তার গার্লফ্রেন্ডকে আনতে গেল। কিছুক্ষণ পড় দেখলাম সে একটি ১২-১৩ বছর বয়সী ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে এল। আমি ভাবলাম তার বোন হবে হয়ত। আমার আবার নিষ্পাপ মন। তাকে বলেই দিলাম। হ্যাঁ রে আনতে গেলি কি, আর তোর বোনকে নিয়ে চলে এলি।

মজার ছোট গল্প হাসির গল্প
মজার ছোট গল্প হাসির গল্প
<

আমার কথা শুনে মেয়েটি সঙ্গে সঙ্গে রেগে গিয়ে বলল- “সাট আপ ইয়োর ব্লাডি মাউথ। রাসকেল, ইউ ননসেন্স। আমি অমরের গার্লফ্রেন্ড।“ লে ঠেলা এ তো ছোটা প্যাক বড়া ধামাল। কোথায় অমরের বয়স ২৩ আর প্রেম করছে হাঁটুর বয়সী মেয়ের সাথে।

শুধু কি এখানেই শেষ আমি বললাম- “ইয়ে মানে বুঝতে পাড়িনি বোন।“ মেয়েটা আমার কাছে এসে ফটাস করে চড় মেরে দিয়ে বলল-“হোয়াট দ্য হেল, আমি তোমাকে বোন দেখি?”

না এই কাজ টা মোটেই ঠিক হল না, একটা ছোট মেয়ের কাছে এভাবে অপমানিত হব ভাবিনি। সে যাই হোক, বাড়িতে আমার বোন তো আমাকে মাড়েই, তাই এই অমরের অকালপক্ক, ডানা কাঁটা পড়িটাকেও বোন ভেবে মাপ করে দিয়ে, গালে হাত ঘষতে ঘষতে বাড়ি ফিরে এলাম।

আরও পড়ুনঃ- বাংলা চরম হাসির মজার গল্প

ফানি গল্পঃ-০৪

স্কুল ছেড়ে আমার কলেজ জীবনের সূত্রপাত। কলেজে ফর্ম ফিলাপ করি। কিছুদিন পড় মেরিট লিস্টও চলে এল। তখন থেকেই একটা নামের দিকে খুবই চোখ যাচ্ছিল। নামটা হল কাজল। বেশি চোখ যাওয়ার আরেকটি কারণ হল, আমার আর সেই নামের টাইটেল একই। মানে বুঝতেই পাড়ছ, নিজ জাতির প্রতি টানটা একটু বেশিই থাকে।

হুম কাজল, মেয়েটা আমারই টাইটেলের। মেরিট লিস্টে নাম রয়েছে আমার ঠিক পড়েই। তার মানে পড়াশোনায় আমরা প্রায় একই। করোনাভাইরাসের জন্য কলেজ বন্ধ, তাই নতুন বন্ধু গুলোর মুখ চেনাও হয়নি। কলেজ থেকে একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বানিয়ে দিয়েছে, সেখানেই সবার কথা হয়। তবে কেউই কারও মুখ দেখিনি।

আমি আবার দাদাদের কাছে শুনেছি, কলেজ মানেই খালি আড্ডা আর প্রেম আর ইনজয়। সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ টা থেকেই কাজলের নাম্বার জোগাড় করি। তাকে ডাইরেক্ট ম্যাসেজ করি। মানে একটি ডানা খুলে উড়ার ইচ্ছে হয়েছিল আর কি।

আবার আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে যে, নিজের টাইটেলের মেয়েকেই বিয়ে করতে হবে। তাই ভাবছিলাম এই কাজল কেই যদি একটু নিজের বশে আনতে পাড়ি। তাহলে প্রেম কেমন সেটাও চেখে দেখা হয়ে যাবে, আর পড়ে বিয়েটাও বিনা বাধায় হয়ে যাবে।

কাজলও আমার ম্যাসেজের দ্রুত রিপ্লাই দিয়েছিল। তার রিপ্লাই দেখে আমার হার্টবিট বেড়ে গিয়েছিল। মানে সঠিক পথেই গাড়ি এগোচ্ছে। সে রাতে ম্যাসেজে অনেকক্ষণ কথা বলেছিলাম। এভাবেই চলে যায় দুই মাস। তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি।

আমি ভেবে রাখি, তাকে নিয়ে কোথায় ঘুরতে যাবো। আমি ঠিক করি যে, দার্জিলিংয়ে হানিমুনে যাব কাজলের সাথে। আরও অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম।

হাসির ঘটনা হাসির গল্প চরম হাসির মজার গল্প
হাসির ঘটনা হাসির গল্প চরম হাসির মজার গল্প

দুইমাস পড়, আজ কাজলের সাথে দেখা হবে। শুধু কাজলের সাথেই নয়, ক্লাসের বাকি বন্ধুদের সাথেও দেখা হবে। কারণ আজ কলেজে একটি নবীনবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন হয়েছে। মনে খুব আনন্দ হচ্ছিল। কাজলকে ইমপ্রেস করার জন্য প্রতিদিন আমি আমার WhatsApp DP পরিবর্তন করতাম। কিন্তু তার কোনো DP ছিলই না।

শপিং মল থেকে একটি ভালো জামা কিনে নিয়ে আসি। সাথে একটি দামী সেন্টের বতল। কাজলের সাথে দেখা হবে বলে কথা। ইমপ্রেস তো করতে হবে নাকি। তবে আমি কিন্তু তার গলার আওয়াজটাও এখনও শুনিনি। যা কথা হত সব ম্যাসেজেই। তবে তাকে আমার ভালো লাগার কথা কোনদিন বলিনি। শুধু পড়াশোনা সম্পর্কিত আলোচনাই করেছিলাম।

আজ অবশেষে আমাদের দেখা হবে। সময়মত কলেজে যাই। আমাদের ক্লাসের সবাই চলে আসে। কিন্তু এতজন মেয়ের মধ্যে কাজলটা কে? সব মেয়ে গুলিকেই তো দেখতে হেব্বি লাগছে। এমন সময় একটি ছেলে আমার কাছে এসে বলল- “হাই, তুমি অসীম না?” আমি বললাম হ্যাঁ। এরপর সে আমার সাথে হ্যান্ডসেক করে বলে- “আমি তোমার সেই হোয়াটসঅ্যাপের বন্ধু কাজল।

এ ভাই এ কি বলছে এ। আমি স্বপ্ন দেখছি না তো? আমার কাজল ছেলে হল কি করে? কোনো মতে নিজেকে সেদিন সামলে নিয়ে ছিলাম। নিজের মূর্খতার জন্য বাড়ি ফিরে নিজেই হাঁসতে হাঁসতে বিছানায় লুটিয়ে পড়েছি।

যা, আমার শুধু ২০০০ টাকা দিয়ে নতুন জামা আর ৫০০ টাকা দিয়ে সেন্টের বতল টাই কেনা হল। কাজল কে নিয়ে দেখা স্বপ্ন, তাকে নিয়ে হানিমুনে যাওয়ার স্বপ্ন সবই হাঁসতে হাঁসতে নিরাশ হয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলাম।

কাজল নামে ছেলেও যে থাকতে পাড়ে, এটা আমার একদম জানা ছিল না। সাবধান বন্ধুরা আমার মত এরকম ভুল করতে যেও না যেন!

আমার এখনও খুব হাঁসি পাচ্ছে। দাড়াও আরেকটু হেঁসে নিই।

আপনিও কি লিখতে ভালবাসেন? তাহলে আর দেড়ি কিসের, আপনার লেখা প্রকাশ করুন আমাদের সাইটে। যোগাযোগ করুন আমাদের পেজের ম্যাসেঞ্জারে অথবা এই পেজের নীচে “কিভাবে আপনার লেখা পাঠাবেন” নামক বোতামে প্রেস করে সরাসরি আপনার লেখা কিভাবে আমাদের পাঠাতে পাড়েন জেনে নিতে পাড়েন। আপনার লেখার অপেক্ষায় রইলাম।

প্রতিদিনের আপডেটের জন্য আমাদের অজান তথ্যের পেজ অবাক বিশ্বতে যুক্ত হতে পাড়েন, অথবা আমাদের গল্পের পেজ গল্প আর গল্প তেও যুক্ত হতে পাড়েন।

YOU DON’T HAVE THE RIGHT TO RE-CREATE ANY PART OF THIS POST. YOU HAVE TO GET PERMISSION FOR USE. OTHERWISE LEGAL OPTION WILL BE TAKEN. all copyright reserved to charpatra.com

Spread the love

Leave a Reply