আজ আমরা একটি চরম হাসির মজার গল্প পড়তে চলেছি। এই হাসির গল্পটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন, আশা রাখছি অনেক মজা পাবেন।

চরম হাসির মজার গল্প

আমার বাড়ি থেকে বরাবরই বলত টিউশন পড়াতে। বাড়িতে বলে রেখেছিলাম, কলেজ শেষ হলেই টিউশন পড়ানো শুরু করব।

কলেজের পরীক্ষা শেষ, একজন ছাত্রও জোগাড় হয়ে গেছে। আজ যাচ্ছি এক ছাত্রের বাড়িতে টিউশন পড়াতে। জীবনের প্রথম টিউশন পড়াতে যাচ্ছি, একটু নার্ভাসনেস কাজ করছে।

ছাত্রকে পড়াচ্ছি। আমি বসে আছি চেয়ারে, আর ছাত্রটি বিছানায়। বেশ ভালোই লাগছে পড়াতে, ছাত্রকে একটা লিখা লিখতে দিয়ে আমি একটু হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ চেক করছিলাম। চেয়ারে বসেই নিজের অজান্তে কখন যে পা দোলানো শুরু করে দিয়েছি, কিছু মনে নেই, হঠাৎ আমার পায়ের কড়ে আঙ্গুল ছাত্রের বিছানার নিচে থাকা কোনো কিছুর উপর এমন জোরে লাগল যে, নিচে থাকা জিনিসটাও প্রকাণ্ড শব্দ করে উঠল।

বাংলা চরম হাসির মজার গল্প
বাংলা চরম হাসির মজার গল্প

আর এদিকে আমার পায়ের আঙ্গুলের অবস্থা বেহাল, প্রচণ্ড যন্ত্রণা করছে, কি ঝামেলা দেখুন, না পাড়ি চিল্লাতে না পাড়ি এই যন্ত্রণা সহ্য করতে। এত পরিমাণে ব্যাথা হচ্ছে, যে চোখ দিয়েও জল আসার জোগাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশের ঘড় থেকে ছাত্রের মা চেঁচিয়ে বললেন- কি হল রে টুবলু? কিসের আওয়াজ? আমার গুণধর ছাত্র বলে ফেলল যে, “মা দাদার পা কড়াইয়ে লেগেছে।“

উমা বলে কি! বিছানার নিচে কড়াই রেখেছে। আর এদিকে এত পরিমাণে ব্যাথা হচ্ছে, যে আঙ্গুলটাও পুড়ো গরম হয়ে গিয়েছে। হাত দিয়ে আঙ্গুলটাকে ধরতে যাব, এমন সময় পাশের ঘড় থেকে ছাত্রের মা এসে বললেন- “তোর লাগে নি তো অসীম?” আমি বললাম-“না বৌদি, একদম লাগেনি” এই কথাটা শুধু মুখেই বলছি, আর এদিকে আমার আঙ্গুলের অবস্থা কেবল আমিই জানি। একদিকে আঙ্গুলের ব্যাথা অন্যদিকে আমার পাশে ছাত্রের মা, প্রথম দিন টিউশন পড়াতে এসেছি, একটু লজ্জা কাজ করছে।

আমি চেয়ারে হেলান দিয়ে পায়ের উপর পা তুলে, হাত দিয়ে চুপটি করে, আঙ্গুলটির উপরে হাত বোলাচ্ছি, আর মুখ দিয়ে ছাত্রের পড়া পড়াচ্ছি। কিছুক্ষণ পড় ছাত্রের মা চলে গেল।  

প্রায় ৩০ মিনিট পড়, ব্যাথা কিছুটা কমে গেল।  

ছাত্রকে পড়াচ্ছি। কিছুক্ষণ পড় ছাত্রটির ছোট ভাই হাঁতে একটা চকোলেট নিয়ে এল। আমার কাছে এসে সেই ছোট্ট পাঁজিটা বলল- “কাও টুমি এটা কাও” বলতে বলতেই সে তার হাতের চকোলেটটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল। আমি পাঁজিটার গাল টেনে বললাম- “তুমি খাও বাবু”। এটা বলার পড় সে কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকল, এবং তারপর তার মায়ের কাছে চলে গেল।

প্রায় ১৫ মিনিট পড় আবার সে এসে হাজির। এবার হাঁতে একটা বিস্কুট। সেই পাঁজিটা বিস্কুট আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল- “নাও টুমি এটা কাও, কাও না, কাও” বলতে বলতেই আবার বিস্কুটটি আমার মুখের কাছে নিয়ে এল। আমি আবার বললাম- আমি খাবো না তুমি খাও। তোমার দাদাকে পড়াচ্ছি না, যাও ওদিকে যাও, ওদিকে গিয়ে খেলো। সেই পাঁজিটা “হুই আমি তালে উদিকে যাই” বলে চলে গেল।

এবার ছাত্রকে লিখতে দিয়ে আমি একটু ম্যাসেজ চেক করছি, মোবাইলে। আবার সেই পাঁজিটা এসে হাজির। এবার হাঁতে বড় একটা ক্যাটবেড়ি চকোলেট। আবার সেই একই কথা-“কাও টুমি আমার টকোনেট কাও, কাও না কাও”

আমি মনে মনে অনেক বিরক্ত হয়ে গেছি, এই পাঁজিটার উপর।

চরম হাসির মজার গল্প
চরম হাসির মজার গল্প হাসির গল্প image source

আবার সে বলতে লাগল-“ কাওওওও না কাও, আমি টোমার জন্য এনেসি, টকোনেট” আমি যতই বলি খাব না ততই, সে চকোলেট আমার মুখের কাছে নিয়ে আসে।

“কাও কাও” বলতে বলতে সে চকোলেটটা আমার মুখের এতটা সামনে নিয়ে এল যে, চকোলেট আর আমার মুখের মধ্যে, মাত্র কয়েক মিলিমিটারের গ্যাপ। আর এদিকে আমার গুণধর ছাত্র তার মা-কে ডাকার বদলে ফ্যাল ফ্যাল করে নাটক দেখছে।

কি আর করা যায়, খেয়ে নিলাম চকোলেটটা। চকোলেটটা খাবার পড়েই সেই পাঁজিটা চলে গেল, হাঁসতে হাঁসতে। আমি মনে মনে ভাবলাম যাক শান্তি পাওয়া গেল। আবার ছাত্রকে পড়ানো শুরু করলাম।

প্রায় মিনিট পাঁচেক পড়, আবার সেই পাঁজিটা এসে হাজির। এবার এসে সে সোজাসুজি আমার পাশে দাঁড়িয়ে, হাত দিয়ে আমার মুখ খোলার চেষ্টা করতে লাগল, আমি আমার মুখ খুললাম, সে দেখে মুখের ভিতরে চকোলেট নেই, তার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি, তার চোখ জ্বলজ্বল করছে, এখনি সে কান্না করবে।

ব্যাস এবার শুরু করল সে এক মহান কান্না, কি কান্না রে বাবা! ইসস কি ফ্যাসাদেই না পড়ছি, না খেলেও মুশকিল, আর এদিকে খাওয়ার পড়েও মুশকিল। পাশের রুম থেকে ছাত্রের মা বললেন- “কি রে টুবলু, ভাই কান্দে ক্যান” এবার আমার গুণধর ছাত্রের জবাব-“ মা, অসীম দাদা ভাইয়ের চকোলেট খেয়ে নিয়েছে”

bengali funny story
bengali funny story মজার গল্প
<

লে পাঙ্গা, এ তো পদে পদে বিপদ, পাশের রুম থেকে ছাত্রের মা এসে সেই পাঁজিটাকে নিয়ে গেল, যাবার আগে, আমার দিকে অবাক হওয়ার দৃষ্টিতে দেখে গেল। এদিকে লজ্জায় আমার কান গরম হয়ে যাচ্ছে, কড়াইয়ে আঙ্গুল লাগার যন্ত্রণার থেকেও এই লজ্জার যন্ত্রণা যে, অনেক বেশি !

পাঁজিটার মা তাকে নিয়ে যেতেই, পাশের রুম থেকে তার দাদুকে বলতে শুনলাম- “কি দাদুভাই কান্দো ক্যান” ছাত্রের মা-“স্যার চকোলেট খেয়ে নিয়েছে”

READ MORE:-

বাংলা হাসির জোকস ২০২১

অবাক করা তথ্য সমূহ বিস্ময়কর তথ্য

পাঁজিটা অঝোরে কেঁদেই যাচ্ছে, এবার তাদের কাজের লোক এসে বলল- “আরে খোকা কান্দোস ক্যা?” ছাত্রের মা- “স্যার চকোলেট খেয়ে নিয়েছে।“

“কান্দো না খোকা, আমি চকোলেট আইনা দিচ্ছি, আসো আমার কোলে,স্যারকে আমি মারমু। চলো দোকানে চলো, তোমারে চকোলেট কিইন্যা দিমু”

পাঁজিটা কিছুতেই থামছে না, কেঁদেই যাচ্ছে-

হে  ভগবান এ-কি হল আমার সাথে! রাস্তায় যেতে যেতে যেই কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করবে, সে জানতে পাড়বে, “স্যার চকোলেট খেয়ে নিয়েছে”

বাংলা হাসির গল্প
বাংলা হাসির গল্প

প্রথম দিন টিউশন পড়াতে এসে প্রথমে কড়াইয়ের সাথে আঙ্গুলের সংঘাত, তারপর এই চকোলেট ঝামেলা, এই দুই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না যে, ছাত্রের রুম থেকে আমি এবার কি ভাবে বাইরে বেড় হব, বাইরে বেড় হলেই লজ্জায় আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে, আবার ছাত্রের ঘড়ের জানালাগুলিতে সব গ্রিল লাগানো, নইলে তো ওইগুলো দিয়েই লাফিয়ে পালিয়ে যেতাম!

আমাদের টেলিগ্রামে আড্ডা দেওয়ার গ্রুপ :- https://t.me/charpatraOfficial

গল্পটি কেমন লাগল তা আমাদের জানাতে ভুলবেন না। আমাদের লেখা পাঠানোর জন্য যোগাযোগ করুন- charpatrablog@gmail.com -এই ই-মেল আইডিতে।

Spread the love

Leave a Reply