জানেন গতকাল আমার বউ… আমার বউয়ের কথা ছাড়ুন। নীচের নতুন ছোট হাসির গল্প দুটি পড়ে দেখুন, আপনার অনেক ভালো লাগবে। বি.দ্র- “সর্দি থাকলে পড়বেন না, কারণ হাঁসতে গিয়ে সর্দি ব্যালেন্স হারাতে পারে।
নতুন ছোট হাসির গল্পঃ-
ছোট হাসির গল্পঃ- ০১
বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ পূজা যে দুর্গা পূজা সেটা বোধয় দেশ বিদেশের সবারই জানা। কেউ পূজার জন্যই মেতে ওঠে আবার কেউ পূজা দেবীর জন্য। যাই হোক এবার আসল কথায় আসি –
পাড়ার বিশু দা বিদেশে পড়াশোনা করেছে , ছেলেটা ভালোই তবে দেশে বোধয় মেয়ের অভাব হতে পারে ভেবে বিয়ে করে এনেছে এক সুদূর বিদেশিনী কে। বৌদি হয়েছে বেশ খাসা, তবে জেঠিমার একটু ও পছন্দ না। তাই যখন খুশি জেঠিমা কথা শোনায় আর বৌদি বুঝতেও পারেনা। তবে সেটা ছিল প্রথম কিছু মাসের কথা। এখন বৌদি পাক্কা গিন্নি হয়ে গেছে , আর বাংলা ভাষাটাও অনেকটাই আয়ত্তে আনতে পেরেছে।
সপ্তমীর সকাল বৌদি লাল টুকটুকে শাড়ি পরে গিন্নি সেজে পাড়ার মন্দিরে যাচ্ছে জেঠিমার সাথে। এদিকে জেঠিমা গম্বুজের মত মুখ করে বৌদিকে নিয়ে হাঁটছে। মাইক এ শুধু একটাই গান “পুজো পুজো পুজো প্রেমের গন্ধ লেগেছে” । বৌদি কৌতূহলের সাথে জিজ্ঞাসা করল ” আচ্ছা শাশুরি মা বোলোটো প্রেমের গণ্ড মেনেডা কি?” জেঠিমা আসে পাশে কেউ আছে কিনা দেখে দাঁত পাটি টা উঁচু করে উত্তর দিলো অভদ্রর মত কথা বার্তা বলোনা, চুপচাপ হাঁটতে থাকো।
মাইক এ আবার একই গান শুনে বৌদির তো বেশ কৌতুহল জেগে উঠলো তাই বললো এই শাশুরি মা উত্তর দাও না , গণ্ড মানে গন্ধ , I mean গন্ধ মানে তো পারফিউম টাই না। জেঠিমা বললো হুমম ওটাই। বৌদি জিজ্ঞাসা করলো এই শাশুরি মা টুমি আমাকে ওই গন্ধটা কিনে দাও। প্রেমের গন্ধ লেগেছে টাই আমিও প্রেমের গন্ধ লাগাবো ” । জেঠিমা লজ্জায় মুখ চোখ নাক কি ঢাকা নেবে খুঁজে না পেয়ে বৌমাকেই এক থাপ্পড় দিয়ে দিলো।
এ কি রাস্তার মাঝে বধু নির্যাতন! প্রতিমা দর্শনের জায়গায় সবাই এই শাশুড়ি বৌমাকে দর্শন করতে জড়ো হলো। কাছে দারোগা বাবুও ছিলেন তিনিও এসে উপস্থিত হলেন। বৌদি কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো “সুডু মাটরো প্রেমের গন্ধ কিনে ডিতে বললাম বলে শাশুরি মা আমাকে চড় মারলো।” কেউ তো বিষয় টা কিছুই বুঝলো না আর জেঠিমা লজ্জাতে কিছু বলতে না পেরে সবার সামনেই দারোগা বাবুর সাথে থানা গেলো।
বিশু দা জানতে পেরে থানায় পৌঁছে নিজের মা কে ছাড়িয়ে আনলো । সুদূর বিদেশিনী বৌমা দাদাকে কিছু না জানিয়ে নিজের দেশে রওনা দিল সাথে রেখে গেলো একটা চিঠি “আমি সুডু শুনেছিলাম কিনটু আজ দেখেও নিলাম যে ইন্ডিয়ার শাশুরি গুলো কত ভয়ানক । একটা পারফিউম কিনে ডিতে বলার জন্য যে এভাবে নির্যাতন করবে টা আমি কখনো ভাবিনি। তাই আমি চললাম নিজের ডেসে , টুমি থাকো নিজের মায়ের কাছে। “
বিশু দা বউয়ের খোঁজে বিদেশে পাড়ি দিলো আর জেঠু পাড়ার লোকের অপমানে হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারালো। পুজো পণ্ড করে ‘পূজা দেবী’ বিদায় তো নিলো তবে জেঠিমার সোনার সংসার ভেঙে টিনের বাক্সে পরিণত হলো।
পড়ুন- মজার গল্প- বিস্কুট রহস্য
ফানি গল্পঃ-
” বুড়ো বয়সে ভীমরতি হয়েছে ” এই কথাটা অনেককেই আমরা বলতে শুনি। আজ আমার গল্পটাও একটা দুষ্টু মিষ্টি কচি বুড়ো কে নিয়ে। কি শুনতে চান তো? তাহলে আসুন শোনাই-
মিশ্র পাড়ার সাত নম্বর গলির ছয় নম্বর বাড়ির পাঁচ নম্বর রুমে সতীশচন্দ্র মিশ্র থাকেন । অর্থাৎ এই ব্যক্তিই আজ আমার গল্পের হিরো, যিনি জিরো থেকে নিজেকে হিরো বানিয়েছেন । বড়দের মুখে শুনেছি সতীশ বাবু নাকি খুব বুদ্ধিমান ছিলেন। সব পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করাটা ছিল তার কড়ি আঙ্গুলের খেলা। সবকিছু ঠিক চলছিল তার জীবনে তবে হঠাৎ করে কোনো এক দুর্ঘটনা ঘটার ফলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন তিনি বিয়ে , প্রেম এসব কিছুই করবেন না। তাই কৃষ্ণ প্রেমে গা ভাসিয়ে সোজা বৃন্দাবনে গিয়ে পৌঁছান।
তিনি শুধু যে কৃষ্ণ ভক্ত তা নয়, সাথে সাথে লেখালিখি তেও তার বেশ ভক্তি। কয়েকখানা বই লিখেছেন সহস্তে। বছর পঞ্চাশ এভাবে কাটানোর পর তার মনে হঠাৎ কি উদয় হলো তা শুধু তিনিই জানেন। তাই বৃন্দাবন থেকে সোজা টিকিট কেটে জিন্দাবন মানে মিশ্র পাড়ায় ফিরে এলেন।
পাড়ার pnpc করা কাকিমা দের মুখে শুনলাম সতীশ বাবু নাকি হটাৎ করে সখ জেগেছে প্রেম করার মানে প্রেম বিবাহ করার । এসব কথা কানে শুনাও পাপ ভেবে পাত্তা দিলাম না ।
তবে একমাস পর শুনছি সতীশ বাবু নাকি প্রেমে প্রত্যাখ্যিত হয়েছেন তাই আবার বৃন্দাবন ফিরে যাবেন । কি হলো বেপার টা বুড়োর আবার প্রেম তার আবার প্রত্যাখ্যান সবটাই বেশ গোলমেলে ব্যাপার। একটু খোঁজ নেওয়ার পর কি জানলাম জানেন…! শুনুন তাহলে –
শুনলাম সতীশ বাবু নাকি প্রেমিকা খোঁজার জন্য পাড়ার মোড়ে বসে থাকা চ্যাংড়া ছেলে গুলোর কাছে টিপস নিতে গিয়েছিলেন । সেই ছেলে গুলো তাকে বুদ্ধি দেয় সোশ্যাল মিডিয়ায় কম বয়স্ক কোনো ছেলের ছবি রেখে মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করার। কারণ কোনো মেয়ে তার মতো বুড়োর ছবি দেখলে হয়তো তার friend request অ্যাকসেপ্ট করবে না । সতীশ বাবু ওদের কথা মতোই কাজ করেছিলেন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার , কোনোটাই বাকি রাখেননি । আর তার এক প্রেমিকাও জুটে গিয়েছিল।
মেয়েটির সাথে ম্যাসেজে যতদিন কথা হয়েছিল ঠিক ছিল, যখন দেখা করার পালা এলো তখন ১৬ বছর বয়সের ওই মেয়েটি ৫০+ বুড়োকে দেখে ওখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছিলো। তাই সতীশ বাবুকেই ওই মেয়েটিকে নিয়ে হাসপাতাল যেতে হয়েছিল । হাসপাতালে মেয়েটির পরিবার মেয়েটিকে সতীশ বাবুর পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে মেয়েটি রাস্তার এক পরিচিত দাদু বলে পরিচয় দেয়। বাবু থেকে সোজা দাদু বানিয়ে দেবে মেয়েটি একথা সতীশ বাবু কল্পনাও করেন নি। তাই প্রেম কি ? প্রেমের অর্থ কি? এসবের চরম শিক্ষা পাওয়ার পর ব্যাগ গুছিয়ে দাদু আমাদের আবার বৃন্দাবনে রওনা দিলেন ।
তাহলে বলুন বাপু আপনারাই বলুন বুড়োদের কি সখ থাকতে নেই নাকি ? থাকতে আছে বৈকি তবে তার গতিক যেন সতীশ বাবুর মত না হয় !
হাস্যরসের পরিবেশনায়- ছোট হাসির গল্প
আলোরানির লেখা বিশেষ কিছু গল্প- রোগা মানুষের উপাখ্যান সেরা বন্ধুত্বের গল্প- রুনিমা তুমি রবে নীরবে
পড়ুন- সেরা হাসির গল্প আকবর বীরবলের গল্প
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
“নতুন ছোট হাসির গল্প। ফানি গল্প”
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।