পৃথিবীতে অনেক কিছুই আবিষ্কার বা আবিষ্কৃত হয়েছে। কেমন হবে যদি নিজেকে অদৃশ্য করার একটি যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়! আজকের কল্প বিজ্ঞানের গল্প টিতে সেই ‘বিশেষ যন্ত্র’ কে নিউক্লিয়াসে রেখেই গোটা আবহ, ইলেকট্রনের মত তার চারদিকে প্রদক্ষিণ করবে।

কল্প বিজ্ঞানের গল্পঃ- ‘পটলা কোম্পানির গোয়েন্দাগিরি’

বাপি যা বলছে , তাতে আপ্পুর দাবি সঠিক। বাপি বলছে কেউ একজন যে অদৃশ্য, ওর দোকানে আসে আর জিনিস পত্র নেয় , পয়সা দিয়ে চলে যায়। ফলে বাপির কথা অনুযায়ী এটাই বোঝা গেলো। আপ্পু যা বলছে সেটাই ঠিক। রাঙা দাদুকে কেউ কিডন্যাপ করেনি উনি নিজেই লুকিয়ে আছেন আমাদের থেকে আর আপনারাও রাঙা দাদুকে চিনতে পারছেনা। পটলা কোম্পানি আগে পড়েছেন যারা তাদের তো ওনাকে চেনার কথা। উনি ভৌত বিজ্ঞানের প্রফেসর। বয়স কমানোর মেশিন আবিষ্কার করেছিলেন, সে গল্পতো আপনাদের আগেই বলেছি।

এবার মূল ঘটনায় আসি। কিছুদিন আগেই আমরা লক্ষ্য করেছিলাম কিছু সন্দেহ জনক লোকজন আমাদের অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করছে। আপ্পু গোয়েন্দাগিরি চালিয়ে যায় এবং পুরো ব্যাপারটা পুলিশ জ্যেঠুকে বললে তিন জনকে গ্রেফতার করে। জানা যায়, তাঁরা নাকি রাঙা দাদুর প্রতিরক্ষা জন্য এখানে চা ওয়ালা , ভিখারি , পথচারী সেজে লক্ষ্য রাখতেন।

আপ্পুর চোখকে ফাঁকি দেওয়া অতো সহজ নাকি? তবে যে কেউ লক্ষ্য করলেই ওটা ধরে ফেলতো। ভিখারির কখনো ভুড়ি থাকে নাকি? সে যতোই অন্ধ হোক! চায়ের দোকানেদারের চুল কদম ছাঁট। চায়ের স্বাদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম। জমি দালালি, ভাড়া বাড়ির খোঁজ খবর রাখতে আগ্রহী নয়। পথচারীরা চায়ে দোকানে বসে থাকে কিন্তু কারো সাথে খেজুরে আলাপ করে না।

কল্প বিজ্ঞানের গল্প
কল্প বিজ্ঞানের গল্প

যাইহোক ওদের কথা অনুযায়ী রাঙাদাদু কিছু একটা আবিষ্কার করেছে। সে কথা সে নিজে তার আমেরিকার এক বিজ্ঞানী বন্ধু বলেছিলেন।আর সেখান থেকেই সবাই খবরটা যেনে গেছে। তবে কিছু আতঙ্কবাদী সংগঠন ওটা নিতে চায়। তাঁর জন্য এই নিরাপত্তা।

কিন্তু কি আবিষ্কার করেছেন রাঙাদাদু সেটা কেউ জানে না। আসলে এ ব্যাপারে কারোর কাছে মুখ খোলেননি রাঙাদাদু। রাঙা দাদু বরং মজা করে বলেছিলেন ” পটলা কোম্পানি গোয়েন্দাগিরি চালিয়ে দেখুক না আমি কি আবিষ্কার করেছি।”

তার কথা আমি আপ্পু বাপি বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখলাম। আর দাদুর চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করলাম। কি আবিষ্কার করেছে সেটার কাছাকাছি একটা অনুমান করেছি তখনই খবর রটলো রাঙা দাদু কিডন্যাপ হলো। কিন্তু আপ্পু বলছে রাঙাদাদু কিডন্যাপ হয় নি নিজেই নিজেকে কিডন্যাপ করিয়েছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে খুঁটিনাটি অনেক বিষয় লক্ষ্য করা গেলেও তাকে কোথাও দেখা যায় নি। অচেনা অজানা মানুষ হলে লুকানো ক্যামেরা কথা কিভাবে জানবে। মাংকি ক্যাপ পড়া মানুষ গুলো তাদের কাছে বন্দুক আছে সেটা ক্যামেরাতে দেখাবে কি করে ।

আর গত এক বছরে দাদু তার গাড়ি কোন দিন বেড় করে নি। হঠাৎ দুই দিন আগে সে গাড়ি সারানো হলো । আবার সেই গাড়িতে করেই রাঙাদাদু কিডন্যাপ হলো কি করে? যাইহোক রাঙাদাদু নিজে থেকে কিডন্যাপ হয়েছে আর কেন হয়েছে সেটাও স্পষ্ট । কারণ রাঙাদাদু চায় না তার আবিষ্কৃত যন্ত্রটা খারাপ মানুষ দের হাতে চলে যাক।

কল্প কাহিনী
কল্প কাহিনী

আপনি বলবেন কি আবিষ্কার করেছে রাঙাদাদু! আমাদের অনুমান এমন একটি কোন যন্ত্র মা মানুষকে অদৃশ্য করে রাখতে পারে। পুরোটা আমাদের অনুমান নয় এটা সত্য। কারণ কিছু দিন ধরে দাদু বলতো মানুষের চেয়ে দেবতা কিংবা ভুত শক্তিশালী কারণ তারা অদৃশ্য হতে পারে। সে ইউটিউব থেকে আমাদের ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ বইটা ডাউনলোড করেছিলো। আলোক বিজ্ঞান পড়াশোনা করছিলো।

সে বার বার বলছিলো প্রিজম যেমন রঙকে ভেঙে দিতে পারে তেমন সাতরঙ শুষে নিতে পারে এমন একটা জিনিষ আবিষ্কার করতে হবে। যেমন কালো রঙ সব রঙ শুষে নিতে পারে তাই অন্ধকারে আমরা কিছু দেখতে পারি না। সে বলছিলো এমন একটা যন্ত্র চাই যা শুধু রং-ই শুষবে না, সেই যন্ত্র থিডি এফেক্ট দিয়ে আর একটা ছবি তৈরি করবে , যা ঐ পরিবেশের সাথে মিলে যাবে।তাহলে অদৃশ্য হয়ে যাবে বস্তুটি। আমাদের ধারণা ওই যন্ত্র তৈরি করা হয়ে গেছে দাদুর, আর দাদু কিডন্যাপের গল্প রটিয়ে বাড়িতেই আছে। কারণ রাঙাদিদাকে দাদু খুব ভালো বাসেন, তাকে ছাড়া সে কখনোই থাকবেনা কোথাও!

পড়ুনঃ-
 কল্প কাহিনী-কুমিকম্প 

রহস্যময় গল্প- হোস্টেলের শেষ রাত 

কিন্তু প্রমান করতে হবেই রাঙা দাদু বাড়িতে আছেন। ‘পটলা কোম্পানি’- সদস্যরা রাঙাদিদার হাতে নারকেল নাড়ু খাবার অজুহাতে রাঙাদাদুর বাড়িতে ঢুকলাম। আগে থেকে পরিকল্পনা মাফিক, সোজা বইের ঘরে গেলাম। একটা বিড়ির প্যাকেট আর দেশলাই বাক্স টেবিলে রেখে, বই খোঁজা অভিনয় করলাম। রাঙা দাদু চুরি করে বিড়ি খায়। বাড়িতে দাদু ঢুকলে দিদা তার তল্লাসি চালায়। ফলে রাঙাদাদু বিড়ি নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে পারে না।

কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের বিড়ি জাদু দেখাতে শুরু করল। আমরা আড়চোখে দেখলাম বিড়ি হাওয়াতে দুলছে, এরপর দেশলাইটি হাওয়াতে উঠতে লাগল। এবার আমরা নিশ্চিত যে, দাদু সেই যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলেছে, আর সেই যন্ত্রের সাহায্যেই নিজেকে অদৃশ্য বানিয়ে নিয়েছে। বিড়ি দেখে লোভ সামলাতে না পেরে বিড়ি নিয়ে সে চললো ছাদে। সে নিজে অদৃশ্য হতে পারে, কিন্তু বিড়ি দেশলাই তো অদৃশ্য নয়। বাপিও সুযোগ মতো দিদাকে খবর দিল দাদু বিড়ি খেতে ছাদে গেছে। দাদুর স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তাতে থাকা দিদা ভুলে বলেই ফেলল- দাদুকে বিড়ি খেতে না দিতে। বিড়ি ধরাতেই, আমরাও রাঙাদাদুকে ধরে ফেললাম। ধরা পরে কিন্তু রাঙা দাদু যা বললো তা সত্যি আমাদের চিন্তা ফেলে দিলো।

বিজ্ঞানের মজার গল্প
বিজ্ঞানের মজার গল্প
<

সত্যি বিজ্ঞান সব কিছু আবিস্কার করে সমাজের কল্যাণের জন্য, কিন্তু মানুষ তা করে না। পরমাণু ভেঙে শক্তি পাওয়া যায়। সুতরাং পরমাণু আবিষ্কার হয়েছিল শক্তি উৎস হিসেবে। কিন্তু সেটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ তৈরিতে নয়, সেটা দিয়ে পরমাণু বোম তৈরি করা হল। তাই দাদুর আবিষ্কারটা মানুষের ভালোর চেয়ে খারাপ কাজেই ব্যবহার হবে, তাই দাদুর আত্মগোপনের খবরটা আমারও গোপন করে গেলাম।

মানব মণ্ডল

কল্পনায় রয়েছেন যিনি-
© গল্পটির স্বত্ব ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। স্বত্ব লঙ্ঘনে ছাড়পত্র উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে খুশি হবে। 
ছাড়পত্রে লেখা পাঠানোর জন্য- লেখাটি WhatsApp -এর মাধ্যমে পাঠানোর জন্য এখানে ক্লিক করুন। ইমেলের মাধ্যমে লেখা পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ। 
মানবের যে লেখাগুলি পাঠকের মন কেড়েছে- 

ছোট হাসির গল্প- বউ নাকি গোয়েন্দা! 

ছোটদের রহস্যময় গল্প- আনিসা 

একটি মজাদার প্রেমের গল্প- সারপ্রাইজ 
ছাড়পত্রের সমস্ত নিউট্রন- প্রোটনের খোঁজ পাবেন যেখানে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

কল্প বিজ্ঞানের গল্প। বিজ্ঞানের মজার গল্প। কল্প কাহিনী। কল্প বিজ্ঞানের মজার কাহিনী। bengali science fiction story

Spread the love

Leave a Reply