আজ একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প নিয়ে আমরা হাজির। এই গল্পের মূল চরিত্র সিয়া। সে একজন বিধবা। একজন যুবকের সাথে তার ট্রেনে দেখা হয়। তাহলে বেশি কথা না বাড়িয়ে গল্পটি শুরু করা যাক।
একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প। ট্রেনে প্রেমের গল্প।
এই যে, আমার মহারাণী, তাড়াতাড়ি উঠ, ইতিমধ্যে ৫ টা বেজে গেছে, তোর না ৭.৩০ এ ট্রেন!
উফফ মনি! উঠছি তো, আর দশটা মিনিট একটু বিছানার সাথে কাঁটাতে দাও প্লিজ। দশ মিনিট কেন, পুরোটা জীবনই কাটিয়ে, দাও। যখন ইচ্ছে উঠো, আমি চল্লুম তোমার টিফিন বানাতে, টিফিন বানিয়ে ব্যাগে দিয়ে দিব। দেড়ি হলে আমাকে যেন না বল আবার!
চলো, বাবা আমি একদম রেডি। বেড় হয়ে যাই তাড়াতাড়ি। মনি, অনেক মিস করব তোমায়। আমি জানিনা কিভাবে তোমাকে ছাড়া পুরোটা ম্যানেজ করব। কিন্তু কি আর করব বল। যেতে যে হবেই।
পাগলী টা আমার! সব হয়ে যাবে। না হলে, আমি তো আছিই। সাবধানে থাকিস মা।
ভার মুখে বেড়িয়ে যায় সিয়া আর সুজয় দাস এবং তার স্ত্রী মালতী। সিয়া যাচ্ছে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতায়। সেখানে সে চাকরির প্রস্তুতি নিবে। নিজের স্বপ্নের ঘুড়ির লাটাইটাকে একটু শক্ত করে ধরবে। যদিও এখানে থেকেও সেই প্রস্তুতি করা যেত, কিন্তু এখানেই তার কিছুতেই মন টিকছে না। আসলে অতীতের কিছু স্মৃতি তাকে বারংবার পিছনে টানছে। তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই জায়গা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবে, যদি স্বস্তি মেলে!
-পূজা তাড়াতাড়ি পা চালা, ক্লাস মনে হয় শুরু হয়ে গেল।
-আরে দাড়া, একটু দেড়িতে গেলেও কিছু হবে না।
-ইসসস তোকে নিয়ে আর পাড়ি না, এত ধীরে হাঁটিস কেন রে তুই?
-এই দাড়া দাড়া বাবা ফোন করেছেন।
-হ্যাঁ বাবা বল।
-কি করছিস রে মা?
-এই তো বাবা কিছু না, ক্লাসে যাচ্ছি।
-কেন, বাবা তোমার গলা এমন লাগছে কেন? কিছু হয়েছে কি তোমার? শরীর ঠিক আছে তো তোমার?
-হ্যাঁ রে মা, আমার শরীর ঠিক আছে, কিন্তু তোর মামনীর, শরীরটা একদম ভালো নেই রে।
-তুমি এখন বলছ আমাকে। (বলতে বলতেই সিয়ার চোখ দিয়ে জল চলে আসে) বলবেই বা কেন, আমি কি তোমাদের কেউ?
-এই সব কথার জন্যই তোকে বলতে চাই নি।
-আমি আজ রাতেই বাড়ি ফিরছি।
-না না রাতে আসার দরকার নেই। তুই আসলে বরং কাল সকালে আয়।
-না একদম কথা বাড়াবে না, আমি আজ যাব মানে যাবই।
এরপর সিয়া রাত আটটার ট্রেনে চেপে বসে। সে ভেবেছিল, ট্রেন বুঝি অনেক ভিড় হবে। কিন্তু ট্রেন প্রায় ফাঁকা। যাক ভালোই হল। অপরিচিতদের সাথে কথা না বলে তাদের এড়িয়ে যেতে সিয়ার বেশ সুবিধাই হবে বইকি! সিয়া তার ব্যাগ থেকে Who will cry when you die? বইটা বেড় করে চোখ বুলাচ্ছে। তার মনে হল কেউ তার ঠিক সামনের সিটে বসল। তার হাঁতে একটি গীটার রয়েছে। সিয়া যখন মুখ তুলে ছেলেটার দিকে দেখল, সে দেখে ছেলেটা হাঁ করে সিয়ার দিকে দেখে আছে।
-হাই, হ্যালো।
সিয়া– মনে মনে- (কে রে বাবা এই দজ্জাল, কোথা থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেই চেঁচানো শুরু করে দিয়েছে।)
হাইইই, আমি রাঘব। কোথায় যাচ্ছ তুমি। ইসস সরি সরি, তুমি বলে ফেললাম। আসলে আপনি কথাটার সাথে আমি তেমন ভাবে ফ্যামিলিয়ার নই তো তাই, মুখ ফসকে বেড়িয়ে গেছে।
আরে এ কেমন মেয়ে রে বাবা, কথা বলতে পাড়ে না। এই যে হ্যালো ম্যাম আমি আপনাকেই বলছি। কিছু তো বলুন। আচ্ছা কিছু না বলেন, অন্তত নামটা তো বলুন।
রাঘব গান শুরু করে দেয়- “ইয়ে রাতে ইয়ে মৌসম, ইয়ে নদী কা কিনারা….”
সিয়া উঠে চলে যায়।
রাঘব– ইসস, আচ্ছা পাগল মেয়ে তো!
সিয়া– (কেঁদে) সবকিছু ভুলে গিয়েও কেন ভুলতে পারছি না আমি। মনিকে তো কথা দিয়েছিলাম আমি আর কাঁদব না। কিন্তু আমার চোখে জল চলে আসছে কেন? আমি আমি সব ভুলে যেতে চাই।
রাঘব– excuse me. তোমাকে হার্ট করার কোনো ইচ্ছেই আমার ছিল না। প্লিজ সরি।
সিয়া– আপনাকে গান করতে কে বলেছিল? আমি কি আপনাকে গান গাইতে বলেছি? একজন কে হার্ট করতে খুব খুব ভালো লাগে না আপনাদের? এই গানটাই কেন? তুমি যান আমি শুধু তিনটে বছর কোনো গান শুনিনি। আমি যে শুধু তোমার গলাতেই গান শুনতে চাই শুভ!
রাঘব– শুভ !
এবার সিয়ার যেন, চেতনা ফিরে আসে। সে বুঝতে পাড়ে, সে আবার তার আগের দুশ্চিন্তায় ফিরে যাচ্ছিল।
রাঘব- এসো, বস। শান্ত হও।
সিয়া তার বাবাকে ফোন করে, জানায় সে ট্রেনে আছে।
রাঘব– খিচুড়ি খাবে? খিচুড়ি?
সিয়া– না, ধন্যবাদ।
রাঘব– না খেলে মিস করবে কিন্তু, বলে দিলুম। আমার মায়ের হাঁতে বানানো খিচুড়ি। যে খেয়েছে সেই খিচুরির দিওয়ানা হয়ে গেছে। -এই বলে রাঘব খিচুড়ির টিফিন সিয়ার সামনে রাখে। সেখান থেকে কিছুটা নিয়ে সিয়া বলে- “হুম অনেক সুন্দর।“
দেখতে দেখতেই কয়েক সেকেন্ডেই সিয়া পুড়ো টিফিন ঝেড়ে দেয়।
রাঘব- আমি কি খাব এবার?
সিয়া– ইসস সরি সরি, আসলে খিদের জ্বালায় কখন যে পুরোটা ঝেড়ে দিয়েছি বুঝতেই পারিনি। সরি সরি।
হাঁ হাঁ হাঁ।
-এই প্রথম বাড়ের জন্য ট্রেনে কারও সাথে এমন behave করলাম।
রাঘব– কোনো ব্যাপার না। আচ্ছা, এবার তো বল, কোথায় নামবে তুমি।
সিয়া- NJP তে।
রাঘব- ওউউ, আমিও সেখানেই নাম্ব। সেখানে নামার পড় ফুলবাড়িতে মামা বাড়িতে যাব।
সিয়া– ও আচ্ছা। (এই বলে আবার বইটা খুলতে যায়।)
রাঘব- আচ্ছা, ডেপু মেয়ে তো, সামনে একজন এত সুন্দর ছেলে বসে আছে, আর বই খুলে বই পড়ছে!
সিয়া– এই যে, খিচুড়ি খেয়েছি, ভেবে আমাকে লাইন মারার চেষ্টা করবে না, কিন্তু।
রাঘব- হাঁ হাঁ হাঁ। আচ্ছা তুমি কোথায় যাচ্ছ?
সিয়া– আমার বাড়ি।
পড়ুনঃ- এক তরফা প্রেমের গল্প
রাঘব এক দৃষ্টিতে সিয়ার দিকে দেখেই থাকে। মাথায় চলতে থাকে নানান প্রশ্ন। এত সুন্দর মুখ। স্নিগ্ধতায় ভরা। নিষ্পাপ কথাবার্তা। কিন্তু ‘শুভ’ কে এই ‘শুভ’ সে জিজ্ঞেস করতে গিয়েও থমকে দাঁড়ায়।
-বাইরে দেখ, আকাশে তারাগুলি কেমন যেন ফুলের মত মনে হচ্ছে। চাঁদটাও অনেকটা বড় হয়ে গেছে, মনে হচ্ছে আজ পূর্ণিমা।
হঠাৎই সিয়া রাঘবের হাঁতে হাত রেখে বলে- জানো তো, আমার মনে আমি এক নিদারুন যন্ত্রণা সবসময়ের জন্য বয়ে নিয়ে বেড়াই। আমি চাই আমার কথা কেউ শুনুক, যদি একটু শান্তি পাই। আজ মনে হচ্ছে তোমাকে সব কিছু খুলে বলি। যদিও তুমি অচেনা। কিন্তু মন চাইছে তোমাকে সবকিছু জানিয়ে দিয়ে হালকা হয়ে যেতে। রাঘব সিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে, সিয়ার দুই চোখ দিয়ে জল উপচে পড়ছে।
রাঘব– অবশ্যই শুনব, যদি শোনাও।
সিয়া শুরু করে তার গল্প- তখন আমি কলেজে প্রথম বর্ষে পড়তাম। হঠাৎ করেই আমাদের ইংরেজি শিক্ষক বদলি হলেন, তার জায়গায় এলেন একজন অন্য শিক্ষক। নাম সুভ্রজিত দাস। তাকে সবাই ‘সব মেয়ের ক্রাশ’ নামেই চিনত। কারণ স্যার দেখতে নাকি অনেক ভালো। যদিও আমার সেরকম কিছু মনে হয়নি।
একদিন বাড়ি ফিরে দেখি, তার মা আমার জন্য সম্বন্ধ নিয়ে হাজির। আমাদের বাড়ির সবাই রাজী। আমার মাথায় কিছুই ঢুকছিল না, যে কি হচ্ছে! মুখ দিয়ে কোনো কথা বেড় হচ্ছিল না। যেটা কখনো ভাবতে পারিনি, তাই হয়ে গেল। আমার বিয়ে হয়ে যায়। ভালো সম্বন্ধ, তাই বাড়ি থেকেও আমার কথা শোনেনি।
আমার চাওয়া- পাওয়া সব কিছুই পূর্ণ করে শুভ। নিজেকে যেন ধীরে ধীরে চিনতে শিখে গেলাম। ইচ্ছে ছিল, নাচ শেখার। সেটাও পূর্ণ হয়ে গেল। কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভেবেছিলাম, ভগবান যা করেন মঙ্গলই করেন। কিন্তু আমার কপালে যে অন্য কিছু লিখা ছিল। একদিন নাচের ক্লাস থেকে বাড়ি ফিরতেই দেখি, রাস্তায় বহরে বহরে গাড়ি। চারিদিকে রজনীগন্ধার সুভাষ। কিছুতেই মাথায় ঢুকছিল না, আসলে ব্যাপারটা কি? কলেজে যাওয়ার পথে শুভর অ্যাকসিডেন্ট হয়ে যায়, ও আর নেই! আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।
এরপর আর কিছুই মনে নেই। শুধু এটুকু মনে আছে যে, আমার চোখ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরপর যখন জ্ঞান ফিরে পাই, তখন দেখি আমাকে সবাই ঘিরে রেখেছে। আর জল নিয়ে আমার মাথায় ঢালছে।
এরপর কেটে যায় একটা বছর। কিন্তু নিজেকে কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। নিজের স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরে আসতে চেষ্টা করি। কিন্তু মন থেকে তাকে কখনোই ভুলতে পাড়ি না। আর যে গান টা তুমি করলে সেটিই ছিল তার প্রিয় গান। আমরা প্রতিদিন রাতে খোলা আকাশে ছাঁদে যেতাম। ও গান করত, আর আমি চুপটি করে তার গান শুনতাম।
রাঘব– জানিনা, আমি যেটা বলতে চাইছি, সেটা কতটা প্রাসঙ্গিক! তবুও বলছি। আমি কি, শুভর জায়গা নিতে পাড়ি?
সিয়া– না কক্ষনোই না। আমি পাপী। আমি সবার মাথার ভাঁড়। কেউই আমার সঙ্গে সুখে থাকতে পাড়ে না।
রাঘব- বিশ্বাস করো, এই কয়েক ঘণ্টায়, তোমার অনেকটা কাছে চলে এসেছি আমি। আমি তোমার জীবনে এসে তোমার সব কষ্ট ভুলিয়ে দিতে চাই।
সিয়া চুপচাপ থাকে। কিছুক্ষণ পড় ট্রেন NJP ষ্টেশনে থেমে যায়। সিয়া চোখের জল মুছে নেমে পড়ে। বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।
মনি মনি কোথায় তুমি! বরণ এর থালা নিয়ে।
এসেছিস মা!
সিয়া- বাবা তুমি ইচ্ছে করে এইসব করেছো।
হাঁ হাঁ হাঁ।
সিয়া– উফফ, তোমরাও না সত্যি। উঃ। কেন করো তোমরা এমন বলতো?
রাধিকা- শুভ জন্মদিন মা। তুই ছাড়া আর কে আছে মা! আচ্ছা শোনো কাল বিকেলে তৈরি থেকো। তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাব।
পরের দিন বিকেলে, তারা এক বাড়িতে যায়। সেখানে পরিচয় পড় চলতে থাকে।
ও হল আমার বন্ধু সুজয় দাস। আর ও হল সিয়া।
আর আমাদের পরিচয়টাও দিয়ে দিই- আমি সুজিত চৌধুরী। আর আমার স্ত্রী কমলা। আমার দুই পরম আদুরে মেয়ে রাই আর সই।
কমলা– বা কি মিষ্টি মেয়ে গো তুমি।
সিয়া– প্রনাম।
সই– আর একজনের সাথে কিন্তু পরিচয়টা হল না। সে তো উড়ে বেড়াচ্ছে। কমলার তাড়া খেয়ে সই চুপ করে যায়।
সবাই কথা বললেও সিয়া কিছু না বলেই মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে। তার মনে হল কেউ একজন ঘড়ে ঢুকল।
আয় আয় ও ভেতরে আয়। এই যে এ হল আমার ভাগ্নে।
রাধিকা– বসো বাবা। তা তুমি কি করো যেন?
রাঘব- এই তো একটা ব্যাঙ্কে আছি, আর গান-বাজনা এই নিয়েই চলে আমার।
রাঘবের কথা শুনে সুজয় দাস এবং রাধিকার মুখে মলিনতা নেমে আসল।
সিয়া (মনে মনে)- গলাটা অনেকটা পরিচিত মনে হচ্ছে।
সুজয়– হুম অনেক তো কথা হল কিন্তু বাবা তোমার নামটা জানা হল না।
রাঘব– (গলা ঝেড়ে) আজ্ঞে রাঘব।
সিয়া চমকে উঠে। রাঘব! তার সাথে তো ট্রেনে দেখা হয়েছিল।
বা বেশ বেশ।
তাহলে আজ আসি। পড়ে কথা হবে।
এরপর সিয়ারা বাড়ি ফিরে আসে।
রাধিকা– হ্যাঁ রে মা, কেমন লাগল রে রাঘব কে?
সিয়া- কেন? ভালই। কিন্তু আমাকে এই সব জিজ্ঞেস করছ কেন?
রাধিকা– তোর জন্যই দেখতে দিয়েছিলাম।
সিয়া– তোমার মাথা ঠিক আছে তো? না না না আমি কিছুতেই শুনব না।
রাধিকা- আর কত দিন এভাব থাকবি বল মা! এই বুড়ি টাকেও একটু শান্তি দে। তোর চিন্তায় আমি যে মরেও শান্তি পাব না।
সিয়া– তুমি আবার শুরু করলে?
সুজয়– না বলিস না রে মা। প্লিজ।
এরপর সবাই সিয়াকে রুমে রেখে চলে যায়। কিছুক্ষণ পড় সিয়ার ফোন বেজে উঠে।
-হাই, চিনতে পাড়লে?
-হ্যাঁ,
-দেখেছো, ভগবানও চায় আমাদের মধ্যে সম্পর্ক হোক।
-কিন্তু আমি চাই না, আমি চাই না আর কাউকে জড়াতে।
-তা কি করে হয় ম্যাম, আমি তো জড়িয়ে গেছি।
-প্লিজ আমার কথা বোঝার চেষ্টা করো।
-উঁহু আর কোনো কথা হবে না, আমি বাড়িতে বলে ফেলেছি, মেয়ে আমার খুউউব পছন্দ।
এরপরই রাঘব ফোন কেটে দেয়। এবার সিয়ার মনে হল, সে যেন না চাইতেও রাঘবের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে। অবশেষে নানান জোয়ারভাটার মধ্য দিয়ে তাদের বিয়ের দিন ঠিক হয়ে যায়।
এরপর বিয়ের বাজার শুরু হয়। সিয়া নিজেই বেনারসি পছন্দ করে। তবে বেনারসির রং কালো। এতে অবশ্য কমলা দেবীর ঘোর আপত্তি ছিল। কিন্তু রাধিকা দেবী বলেন- অত শত নিয়ম করে কি হবে। আগের বার মেয়েকে লাল বেনারসিতে সাজিয়েছিলাম। কিন্তু পাঁচ মাসেই সে তার ভালোবাসাকে হারালো। এবার বিয়েটা নাহয় একটু অনিয়মেই হোক। এরপর আর কেউ কোনো আপত্তি জানায়নি।
এরপর সেজে উঠে দাস বাড়ি নতুন এক আনন্দে। চারিদিকে ফুলের গন্ধে ভেসে যেতে থাকে বাতাস। খুব ধূমধামে বিয়ে হয়ে যায় সিয়া আর রাঘবের।
রাধিকা দেবী, তার ছেলের ফটোর সামনে বসে কাঁদতে থাকে- দেখ বাবা তোর সিয়ার মুখে আবার হাঁসি ফোটাতে পেড়েছি। তুই চলে যাওয়ার পড় থেকে মেয়েটা একদম ভেঙ্গে পড়েছিল। তুই ওকে আশীর্বাদ কর বাবা।
সিয়া- মনি আমি জানি তুমি একন মন খারাপ করছ। এই বাড়িতে আসার পড় থেকে তুমিই আমার মা এর ভালোবাসা পূর্ণ করেছো। তোমার ছেলে আমাকে একা করে দিলেও তুমি আর বাবা সবসময় আমার পাশে থেকেছো। এই বলে সিয়া রাধিকাকে জড়িয়ে ধরে, কাঁদতে থাকে।
পড়ুনঃ- শরীর নাকি প্রেম?
রাধিকা– আরে পাগলী, কাঁদে নাকি। তুই আমাদের মেয়ের মতন।
হঠাৎ রাঘব সেখানে চলে আসে-
রাঘব– আর আমি?
-হাঁ হাঁ হাঁ।
আজ সিয়া-রাঘবের বিয়ের পাঁচটা বছর কেটে গেছে। ওদের সুন্দর ফুটফুটে একটা মেয়ে আছে- নাম রেখেছে সুভ্রা। হয়ত শুভর স্মৃতিকে মনে করেই এমন নাম করন।
একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প ট্রেনে প্রেমের গল্প ট্রেনে প্রেম bengali love story নতুন প্রেমের গল্প
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।