এক জঙ্গলে রাত কাটানোর ভয়ানক অভিজ্ঞতা রয়েছে আজকের ভুতের গল্পটিতে। এই জঙ্গলের ভয়ানক ভূতের গল্প সম্পর্কিত মতামত জানাতে ভুলবেন না যেন।

সেরা ভূতের গল্পঃ- ” ভূতুড়ে জঙ্গলে একরাত”

যেদিন থেকে বাবার মুখে ডাউন হিলের গল্পটা শুনেছি সেদিন থেকেই মাথায় অদ্ভুত নেশা চেপে বসেছে, ডাউন হিলে রাত কাটাব। আমি জানি এই বিষয়ে বাড়িতে বললে তারা কোনোদিন রাজী হবে না। আমার বন্ধু রাজেশ কে যখন ডাউন হিলের ঘটনা গুলি বলি সেও আমার সাথে সেখানে রাত কাটাতে রাজী হয়ে যায়। একজন সঙ্গী পেয়ে নিজেকে বেশ সুরক্ষিত মনে হল।

আমরা ঠিক করলাম রবিবার অমাবস্যার দিন ডাউন হিলে রাত কাটাব। বাড়ি থেকে ডাউন হিল তিন ঘণ্টার রাস্তা। বাবা মাকে আমি জানাই আমি এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছি। বাবা রাজী হলেও মা কিছুতেই রাজী হচ্ছিল না। কাজেই মায়ের সাথে একটা ছোট মত তর্ক বেঁধে গেল আমার। এক নতুন অ্যাডভেঞ্চার এর জন্য মনটা প্রস্তুত হচ্ছিল কিন্তু সেই প্রস্তুতি তে জল মিশে গেল।

একমতন জেদ করেই বাড়ি থেকে ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে গেলাম। ব্যাগে রাতের খাবার জিনিস টর্চ দেশলাই দড়ি ইত্যাদি সব প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়েছি এবার যাচ্ছি রাজেশের বাড়ি। সকাল থেকে ওকে ফোন করেছি কিন্তু একবারও পাই নি, কাজেই মাথা আগে থেকেই গরম হয়ে ছিল আবার এদিকে মায়ের সাথে তর্ক করে মাথায় একটা রাগ চেপে আছে।

সেরা ভূতের গল্প
সেরা ভূতের গল্প

আমি রাজেশের বাড়ি গিয়ে ওকে ডাকলাম। রাজেশের মা বেড়িয়ে এল ঘর থেকে আর জানাল রাজেশ সকালেই তার মামা বাড়ি গেছে। মাথাটা আরও বেজায় ঝমঝম করে উঠল রাগে। যাবেই না যখন আমাকে মিছেমিছি কথা দেওয়ার কি দরকার ছিল। কি ভাবে নিজেকে ও ছাড়া আমি যেতে পারব না! আমি একাই যাব ডাউন হিলের সেই ভুতুড়ে জঙ্গলে। দেখি আমিও কেমন ভূত নামের কিছু হয় কি না!

মনের জেদকে আরও বাড়িয়ে দিল জমে থাকা রাগ। হনহন করে বেড়িয়ে পরলাম রাজেশের বাড়ি থেকে। এরপর অটোতে চেপে সোজা শিলিগুড়ি। শিলিগুড়িতে গাড়ি ধরে সোজা কালিম্পং এ নামলাম। আমি যখন নামলাম তখন সন্ধ্যা নেমেছে। মাথার উপর দিয়ে পাখিরা সাঁই সাঁই আওয়াজ করে নিজেদের আস্তানায় ফিরছে।

যেখানে নামলাম সেখান থেকে ডাউন হিল হেঁটে মাত্র ১৫ মিনিটের রাস্তা। রাস্তায় একজন লোক আমাকে দেখে এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল আমি কোথায় যাব, রুম লাগবে কি না এইসব। আমি তাকে বললাম আমি ডাউন হিলের জঙ্গলে রাত কাটাতে এসেছি। আমার কথা শুনে সে যেন নিজেকে বিশ্বাস করতে পারল না। সে আবার জিজ্ঞাসা করল কি বললে?

পড়ুনঃ- রহস্যময় গল্প- ভয়ানক রাত 

আমি উত্তর দিলাম অনেক শুনেছি ডাউন হিলের জঙ্গলের ভুতের কথা আজ তাই নিজের চোখে দেখতে এসেছি সেই ভূতকে।
আমার কথা শুনে লোকটা বিব্রত হয়ে বলল- “এমন কাজ করতে যেও না, নিজের জীবন নিয়ে খেলো না।“ লোকটা নেহাত আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। আমি আজ রাত কাটাবই ডাউন হিলে। লোকটির বারণ না শুনেই আমি ডাউন হিলের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম।

চারিদিকে উঁচু উঁচু পাইন গাছ তার মাঝে দিয়ে চলে গেছে একটা রাস্তা পাহাড়ের গা বেয়ে সোজা উঁচুতে। সেই রাস্তা ধরে ধীরে ধীরে পা ফেলে অবশেষে পৌঁছে গেলাম আমার ডেসটিনেশন ডাউন হিলে।

জঙ্গলের সেরা ভূতের গল্প
জঙ্গলের সেরা ভূতের গল্প

যখন ডাউন হিলে পৌঁছালাম তখন আধার নেমেছে। আমার সামনে বাবার বলা সেই ভুতুড়ে বাড়ি আর ভুতুড়ে জঙ্গল। অজানা এক অ্যাডভেঞ্চার অপেক্ষা করছে আমার জন্য।

খোঁজ করতে লাগলাম একটি ভালো জায়গার যেখানে আমি তাঁবু টাঙ্গিয়ে থাকব। হ্রদের পাশে খুঁজে পেলাম সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গাটি। সেখানে তাঁবু টাঙ্গিয়ে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন ভূত বেড় হবে সেই মুহূর্তের!

এদিকে পেটে ইঁদুর দৌড় শুরু হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি করে খাবার সেরে নিলাম। ব্যাগ থেকে ক্যামেরা টি বেড় করে একটি গাছে আমার তাবুর দিকে মুখ করে অন করে রাখলাম। এদিকে ভূত বাবাজির জন্য অপেক্ষা করতে করতে রাত ১২ বেজে গেছে। আজ মনে হয় ভূত বাবাজির দর্শন মিলবে না।

পড়ুনঃ- একজন তান্ত্রিকের গল্প 

তাবুর ভিতরে ঘুমিয়ে পরলাম। ভিতরে জ্বালিয়ে রাখলাম টর্চ টা। রাত তখন আনুমানিক দুটো হবে। মনে হলে আমার তাঁবু টা নড়ছে। ভাবলাম ভূত এসেছে, কিন্তু না এ যে হাওয়া এসে আমাকে ভয় দেখানোর বৃথা চেষ্টা করছে।

আমি হেসে উঠলাম। এরপর আবার দেদার ঘুম। প্রায় ত্রিশ মিনিট পর মনে হল একটা ঝুনঝুন শব্দ আমার তাবুর দিকে এগিয়ে আসছে। আমি উঠে বসতেই শব্দটা হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। এরপর মনের ভুল ভেবে নিয়ে আবার শুয়ে পরলাম। মিনিট পাঁচেক পর পুনরায় ঝুনঝুন শব্দ ভেসে এল। আবার উঠে বসলাম। এবার মনে হল শব্দটা আমার তাবুর চারিদিকে গোল গোল করে ঘুরছে। এটা কি কোন নাম না জানা বন্য পশুর আওয়াজ!

আমার শরীর কাটা দিয়ে উঠল। এবার সত্যি আমার ভয় লাগছে। কারণ এই বিশাল জঙ্গলের আশেপাশে মানুষ তো দূর একটি কুকুর বেড়াল এরও দেখা মেলে না। কাজেই আমি গলা ফাটিয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ ছুটে আসবে না।

পড়ুনঃ- অসাধারণ কিছু শিক্ষণীয় গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আমার মনে হতে লাগলো সেই ঝুনঝুন শব্দটি প্রচণ্ড গতিতে আমার তাবুর চারিদিকে ঘুরতে লাগল। হাওয়ায় ভেসে এলো আজব আজব কিছু শব্দ। আমার মনে হতে লাগল আমার পিছনে তাবুর কাপড় কেউ ছিঁড়ছে। অবস্থাটা এমন হয়ে গেছে যে পা যেন মাটিতে কেউ শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে, চাইলেও পা সড়াতে পারছি না।

কোনোমতে অনেক শক্তি খাটিয়ে পিছনে ঘুরে দেখি তাবুর কাপড় নিজে থেকেই ছিঁড়ে যাচ্ছে আর একটা ছায়া মূর্তির মত কালো জিনিস ধীরে ধীরে ভিতরে ঢুকছে। আমি ভয়ে তাবুর এক কোণায় গিয়ে দাঁড়ালাম। সেই ছায়া মূর্তিটা ধীরে ধীরে একটা কঙ্কালের মত রূপ ধারণ করল, সেই কঙ্কালের চোখ রক্তিম, চোখ দুটো যেন ঠিকরে বাইরে বেড়িয়ে আসছে।

bengali sera bhuter golpo
bengali sera bhuter golpo
<

সেই ছায়া মূর্তিটি ধীরে ধীরে আমার দিকে এগিয়ে এলো, আমাকে এক ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিল। আমার বুকের উপরে একটি চাপ অনুভব করতে লাগলাম। এদিকে ভয়ে আর চাপে আমার নিশ্বাস ছোট হয়ে আসছে, কেমন যেন অন্ধকার…।।

বাবার ডাকে ঘুমটা ভেঙে গেল। আমি তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠে দেখি আমি বিছানায়। বাবা বলল- “এত ঘামছিস কেন?” আমার মুখ দিয়ে শুধু একটা কথা বেড়িয়ে এল- “সে আজব দর্শন জিনিস টি কি ছিল!”

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

ব্ল্যাক শ্যাডো

গল্পের ভাবনায়-
নিচে দেওয়া WhatsApp গ্রুপ টি শুধু মাত্র অ্যাক্টিভ মেম্বারদের জন্য। যাদের মনে হবে ব্যস্ত জীবনের অল্প সময় ও এখানে ব্যয় করতে পারবেন আড্ডা আলোচনার মধ্যে তাদের জন্য।  
বি.দ্র. - ইউটিউবার দাদা দিদিরা যারা কনটেন্ট খুঁজতে গ্রুপ এ আসেন তারা এখানে অহেতুক ভিড় জমিয়ে নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনবেন না। 

WHATSAPP GROUP LINK- ছাড়পত্রিয়ানস (CHARPATRIANS)  👈🏻 ক্লিক করুন
পড়ুনঃ-
অজানা ও অবাক করা কিছু তথ্য পড়ুন। 

আসুন একটু হাসুন, হাসির গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

সেরা ভূতের গল্প। জঙ্গলের সেরা ভূতের গল্প new bengali sera bhuter golpo. bangla horror story.

Spread the love