অসাধারন কয়েকটি মোটিভেশনাল গল্প থাকছে আজ। এই BENGALI MOTIVATIONAL STORY দুটি আশা রাখছি আপনাদের পছন্দ হবে।
জীবনের স্বাদঃ-(BENGALI MOTIVATIONAL STORY)
একদা কিছু ছাত্র তাদের পুরোনো শিক্ষকের বাড়িতে গেল। ছাত্ররা সবাই নিজ নিজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত।
তারা তাদের শিক্ষকের সঙ্গে জীবন নিয়ে আলোচনা করতে লাগল, যে কার জীবন কেমন চলছে। তাদের মধ্যে কেউ দামি গাড়ি কিনেছে, কেউ বা আবার ফ্ল্যাট কিনেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এইভাবে কিছুক্ষণ গল্প করার পর শিক্ষক মহাশয় তাদের জন্য চা নিয়ে এলেন। কিন্তু তিনি নিয়ে এলেন তিন প্রকার কাপ। চিনামাটির কাপ যা দেখতে খুবই সুন্দর। প্লাস্টিকের কাপ যেগুলি দেখতে মোটামুটি সুন্দর। এবং অন্যটি হল কাগজের কাপ। যেগুলি দেখতে ততটাও ভালো নয়।
এই কাপগুলি দেখার পর ছাত্ররা মজা করতে লাগল। তারা বলতে লাগল যে ওই চিনামাটির কাপগুলি কাদের প্রাপ্য!
এই নিয়ে অনেক মজা চলতে লাগল- কেউ বলল স্যারের সাথে দেখা করার পরিকল্পনা আমার ছিল তাই চিনামাটির কাপটি আমারই প্রাপ্য। আবার কেউ বলল আমি পড়াশোনায় ভালো ছিলাম তাই সেই কাপ আমারই প্রাপ্য। আবার কেউ বলল আমি সবাইকে গাড়ি চালিয়ে এখানে এনেছি তাই চিনামাটির কাপ আমারই হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাদের এই কথার মাঝেই শিক্ষক মহাশয় বললেন- আমি ইচ্ছা করেই এই তিন রকমের কাপ নিয়ে এসেছি। এর থেকে জীবনের একটা সত্য তোমাদের বোঝানোর জন্য। সবাই মন দিয়ে শোনো- এই কাপটাকে ধর আমাদের জীবন-যাপনের বিভিন্ন বিলাসিতা, যেমন-দামি গাড়ী,দামি বাড়ি,অঢেল টাকা ইত্যাদি ইত্যাদি। আর এই কাপে রাখা চা টাকে ধর আমাদের জীবন। তুমি যে কাপেই চা টা খাও না কেন প্রতিটি কাঁপের চায়ের স্বাদ কিন্তু একই। অর্থাৎ জীবন-যাপনের স্ট্যাটাস আলাদা হলেও জীবনের স্বাদ সবার একই।
(বাংলা মোটিভেশনাল গল্প)
BENGALI MOTIVATIONAL STORY-যা হয় ভালোর জন্যই হয়:-
একদিন মুঘল সম্রাট আকবর তাঁর তলোয়ারটিকে পরিষ্কার করছিলেন। তলোয়ার পরিষ্কার করতে করতে হঠাৎই তলোয়ারের কিনারা লেগে আকবরের আঙ্গুল কেটে যায় এবং প্রচুর রক্ত বেড় হতে থাকে। সেই সময় আকবরের প্রিয় ভৃত্য বীরবলও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বীরবল মহারাজকে বললেন ‘যা হয় ভালোর জন্যই হয়’, এই কথা শোনামাত্র আকবর রেগে গেলেন। তিনি রেগে গিয়ে বললেন-‘বীরবল তোমার এত সাহস আমার আঙ্গুল কেটে গেছে আর তুমি বলছ যা হয় ভালোর জন্যই হয়।‘ মহারাজ রেগে গিয়ে সেনাপতিকে আদেশ দিলেন বীরবলকে বন্দী করার জন্য। সেনাপতি বীরবলকে বন্দী করলেন।
এই ঘটনার কয়েকদিন পর আকবর শিকারে গেলেন এবং জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে তিনি সবার থেকে আলাদা হয়ে গেলেন। অনেক ডাকা-ডাকি করেও কারও সারা-শব্দ পেলেন না তিনি।
কিছুক্ষণ পর আকবর জঙ্গলের অধিবাসীদের সামনা-সামনি হলেন। অধিবাসীরা তাকে বন্দী করে ফেলল এবং তারা মহারাজকে নিয়ে গেল একটা মন্দিরের সামনে সেখানে তারা আকবরের বলি দেওয়ার জন্য তৈরি হতে লাগল। তারা পূজা আরম্ভ করল এবং বলির আয়োজন করতে লাগল।
হঠাৎ অধিবাসীদের মধ্যে একজন দেখতে পেল রাজার একটা আঙ্গুল কাটা, আর তাদের নিয়ম অনুযায়ী কোনো অসম্পূর্ণ মানুষকে বলি দেওয়া যাবে না। তাই তারা বাধ্য হয়ে আকবরকে ছেরে দিলেন।
READ MORE:-
মায়ের ভালোবাসা শিক্ষণীয় গল্প
তিনি নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়ে দ্রুত বীরবলের কাছে গেলেন এবং বীরবলকে আগাগোড়া সব ঘটনা খুলে বললেন। সবকিছু শোনার পর বীরবল বললেন-‘আমি তো আগেই বলেছিলাম মহারাজ যা হয় তা ভালোর জন্যই হয়।‘
মহারাজ এবার বললেন- ‘আচ্ছা সে না হয় বুঝলাম আমার সঙ্গে ভালো হয়েছে কিন্তু তোমার সঙ্গে কি ভালো হয়েছে শুনি।‘ তখন বীরবল হেসে বললেন- ‘আমার সঙ্গে তো আরও ভালো হয়েছে মহারাজ।‘
মহারাজ এবার একটু অবাক হয়েই বললেন-‘কিভাবে?’
বীরবল বলল-‘দেখুন মহারাজ আপনি যদি আমাকে জেলে বন্দী না করতেন তাহলে আমিও আপনার সঙ্গে শিকারে যেতাম আর আপনার আঙ্গুলতো কাটা আছে বলে তারা (জঙ্গলের অধিবাসীরা)ছেরে দিত,কিন্তু আমাকে ওরা বলি দিয়ে দিত। সুতরাং, মহারাজ যা হয় তা ভালোর জন্যই হয়।‘
আমাদের জীবনেও মাঝে-মধ্যে এমন খারাপ কিছু হয় যার জন্য আমাদের মনে হয় আমার সঙ্গে এত খারাপ কি করে হতে পারে! দুনিয়ার সবথেকে দুর্ভাগ্যবান হয়ত আমিই। কিন্তু আসলে আমরা যেটাকে এত খারাপ ভাবি আসলে সেটা ততটাও খারাপ নয়, উল্টে এই খারাপের আড়ালেই ভালো কিছু আমাদের জীবনে হয়ে যায়, যা আমরা অনুভব করতে পারি না।
আর এটি বোঝার জন্য শুধুমাত্র সময়ের প্রয়োজন, সময় পেরিয়ে গেলে আপনি ঠিকই বুঝে যাবেন যে সেই খারাপের আড়ালে কি ভালোটি আপনার জীবনে ঘটে গেছে। আচ্ছা ভাবুন তো এমন কোনো ঘটনা যা আপনার সঙ্গে অতীতে ঘটে গিয়েছিল। আর তখন আপনার খুবই খারাপ লেগেছিল আর এখন ভাবুন তার জন্য আপনার কতটা ভালো হয়েছে বা কি কি ভালো হয়েছে বা ভালো হচ্ছে। তাই “যা হয় তা ভালোর জন্যই হয়।“
READ MORE- HOW TO SUCCESS IN LIFE
বাংলা নীতিকথার গল্প-আত্মবিশ্বাস:-
এক ব্যক্তি একটা হাতিদের ক্যাম্পের কাছ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন যেখানে ছোটো-বড় নানান আকারের হাতি দড়ি ও শেকল দিয়ে বাঁধা ছিল।
তিনি দেখলেন অনেক বড় বড় হাতি শুধুমাত্র একটা দড়ি দিয়েই বাঁধা আছে, তারা ইচ্ছে করলেই সেই দড়ি গুলি অনায়াসেই ছিঁড়ে ফেলতে পারে, কিন্তু তারা সেই দড়ি গুলি ছেড়ার কোনো চেষ্টাই করছে না। আবার সেই বড় হাতিগুলির পাশেই দুটি ছোট্ট হাতিকে সেই একই রকম দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা রয়েছে, কিন্তু তারা সেই দড়িগুলি ছেঁড়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তারা বরাবরই ব্যর্থ হচ্ছে।
এই দৃশ্য দেখে কৌতূহল বশত সেই ব্যাক্তিটি, হাতিগুলির পরিচালককে জিজ্ঞাসা করলেন-“ আচ্ছা আপনারা যে এত বড় বড় হাতিগুলিকে শুধুমাত্র একটি দড়ি দিয়েই বেঁধে রেখেছেন কই এরা তো কেউই পালিয়ে যাচ্ছে না বা পালানোর কোনোরকম চেষ্টাও করছে না। তবে তাদের পাশের ছোট্ট হাতিদুটোকে দেখছি আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে দড়ি ছিঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার!”
তখন পরিচালক বললেন- “এই যে ছোট্ট হাতি দুটোকে দেখছেন এদের নতুন আনা হয়েছে, আর এই দড়িটা কিন্তু এই ছোট্ট হাতি গুলিকে বেঁধে রাখার জন্য যথেষ্ট মজবুত।তাই যতই এরা চেষ্টা চালাক না কেন এরা এই দড়িকে ছিঁড়তে পারবে না। আর অনেক চেষ্টা করার পরেও যখন এরা দড়ি ছিঁড়ে পালিয়ে যেতে পারে না তখন এরা বিশ্বাস করে নেয় যে এদের পক্ষে এই দড়ি ছেঁড়া অসম্ভব তাই এরা বড় হয়েও আর এই দড়িটি ছেঁড়ার কোনো চেষ্টাই করে না। কিন্তু বড় হাতিদের ক্ষেত্রে এই দড়িটা ছেঁড়া একটা সামান্য ব্যাপার, কিন্তু এরা এখনও মনে করে যে এই দড়িটা ছেঁড়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
আমরাও জীবনে চলার পথে এই হাতিদের মতই একই ভুল করে থাকি। অনেক সময় আমরা কোনো কাজ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে যাই এবং পুনরায় আর সেই কাজটি করার চেষ্টা করি না। হয়ত পরে আমরা অনেক উপযুক্ত হয়ে গেছি সেই কাজটি করার জন্য, কিন্তু তবুও আমরা আর চেষ্টা করি না এটা ভেবে যে ওই কাজটা আর আমাদের দ্বারা হবে না। তাই কক্ষনো নিজের উপর আত্মবিশ্বাস হারানো উচিত নয়,আর চেষ্টা সে তো অবশ্যই করতে হবে। কারণ পরিশ্রমীর পরিশ্রম কোনোদিনও বিফলে যায় না।
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
পড়ুনঃ-
শিক্ষামূলক গল্প- প্রকৃত শিক্ষা
নিচে দেওয়া wp গ্রুপ টি শুধু মাত্র অ্যাক্টিভ মেম্বারদের জন্য। যাদের মনে হবে ব্যস্ত জীবনের অল্প সময় ও এখানে ব্যয় করতে পারবেন আড্ডা আলোচনার মধ্যে তাদের জন্য।
বি.দ্র. - ইউটিউবার দাদা দিদিরা যারা কনটেন্ট খুঁজতে গ্রুপ এ আসেন তারা এখানে অহেতুক ভিড় জমিয়ে নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনবেন না।
WHATSAPP GROUP LINK- ছাড়পত্রিয়ানস (CHARPATRIANS) 👈🏻 ক্লিক করুন
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।