একটি নতুন মজার ছোট গল্প থাকছে আজ। এই মজার ছোট গল্প সম্পর্কিত মতামত নীচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
মজার ছোট গল্পঃ- ‘গ্যাস জ্ঞান’
পৃথিবীর চারিদিকে রয়েছে বায়ু আর বায়ু, যেথা যাব সেথা বায়ু। আবার এই বায়ুর অনেক প্রকার ধরন রয়েছে যেগুলি আমরা পুস্তকে পেয়েছি। আজ কথা বলব এমন এক প্রকার বায়ু নিয়ে যাহা আপনি পৃথিবীর কোনো পুস্তকে পাবেন না। আর এই বায়ুর সম্পর্কে বিস্তারিত জানব আজ।
আর কয়েক ধরনের বায়ুর থেকে একেবারে ভিন্ন এই বায়ু প্রবাহের নাম হল পশ্চাদ দেশের বায়ু প্রবাহ। এই বায়ু প্রবাহ তে প্রধান ভুমিকা পালন করে মানুষ সহ সমস্ত প্রাণীকুল। তবে আজ আমরা শুধু মানুষের মধ্যে বিরাজমান এই বিশেষ প্রকৃতির হাওয়া নিয়েই কথা বলব।
এই হাওয়ার বিশেষত্ব হল আপনি ইচ্ছে করলেই এই হাওয়ার প্রকৃতি এই হাওয়া কতটা পরিমানে প্রবাহিত হবে এই হাওয়ার মধ্যে কতটা পরিমান ঘ্রান শক্তি কে আলোড়িত করার ক্ষমতা থাকবে সব কিছুই রয়েছে আপনার নিয়ন্ত্রনে।
এই হাওয়া বেশি পরিমানে এবং ঘন ঘন প্রবাহিত করতে আপনাকে একটু তেলেভাজার দিকে চোখ বাড়াতে হবে। দেখবেন হাওয়ার প্রকৃতি বদলে গেছে। আবার এই হাওয়ার মধ্যে যদি আপনি জোরালো গন্ধ আনতে চান আপনি বাসি সিঙ্গারাও খেতে পারেন কয়েকটা। দেখবেন কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাওয়া বেড় হওয়ার প্রকৃতি বদলে গেছে।
আবার হাওয়া কে যদি অন্য জনকে বিশেষ ভাবে প্রভাবিত করতে ইচ্ছে থাকে তাহলে একটু বেশি পরিমানে চানাচুর খেয়ে একদিন টয়লেটে না বসলেই হবে। তবে সাবধান, যখন আপনি হাওয়া নির্গত করবেন তখন আপনার নাক অবশ্যই চেপে ধরবেন।
ভাবছেন কি সব অরুচিপূর্ণ কথা বলছি! দেখুন মশাই আমি হোক বা আপনি কেউই এই বিশেষ বায়ু প্রবাহ কে থামিয়ে রাখতে পারব না, তাই এই বায়ু প্রবাহ নিয়ে আলোচনা করতেও দ্বিধা থাকা উচিত নয়। আমার বাপু এই হাওয়াকে থামিয়ে রাখার ক্ষমতা নেই। তবে আপনার যদি থেকে থাকে, সাবধান চেপে রাখতে রাখতে সেই হাওয়া বজ্রপাতের মত শব্দ করে বেরিয়ে যেতে পারে।
শব্দের প্রসঙ্গ যখন এসেই গেল সেহেতু মনে পড়ে গেল যে মনুষ্য দ্বারা সৃষ্ট এই বিশেষ বায়ুপ্রবাহও বিশেষ বিশেষ শব্দ করে প্রবাহিত হতে পারে। শব্দের গতিপ্রকৃতি এবং মাত্রার উপর ভিত্তি করে এগুলোকে বিভিন্ন নাম দেওয়া যায়, যেমন- ঠুস। এই বায়ুপ্রবাহের গতি কম এবং ক্ষণস্থায়ী। তেমন শব্দ সৃষ্টি হয়না ঠিকই কিন্তু মাঝে মাঝে এই ধরনের বায়ুপ্রবাহ খুব জোরালো গন্ধের সৃষ্টি করতে পারে।
পড়ুনঃ- ছোট ছোট হাসির গল্প
আবার আরেক ধরনের বায়ুপ্রবাহ আছে যেটাকে বলা যায়- পওওওওদ। বিশেষ এই বায়ুপ্রবাহ টি বেশ দীর্ঘ স্থায়ী। এই বায়ুপ্রবাহের শব্দ বেশ জোরালো হলেও গন্ধে সৃষ্টির দিক থেকে একটু পিছিয়ে রয়েছে। এই বিশেষ বায়ু প্রবাহে গন্ধ নিয়ে আসতে চানাচুর জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে, কিছুদিন টয়লেটে না বসলেই হবে।
তৃতীয় ধরনের বায়ু প্রবাহ টি বেশ সুরেলা বায়ুপ্রবাহ। অনেকটা গানের সুরের মত সুর, তাল লয় সহযোগে প্রবাহিত হতে পারে। এই বায়ুপ্রবাহ অনেকটা সেই গর্জনশীল চল্লিশা বায়ু প্রবাহের মত, তবে অনেকটাই আলাদা। দীর্ঘস্থায়ী এই বায়ুপ্রবাহে নানান সুরের মিশ্রণ ঘটতে পারে। কখনো সুর করে পওওওওদ আবার কখনো পুউউউউৎ আবার কখনো পওওউউউৎ ইত্যাদি নানান সুরের সৃষ্টি করতে পারে।
শীতের দিনে এই বায়ু প্রবাহ বেশ গর্জন করে প্রবাহিত হয়, লেপের তলায়। আবার কখনো কখনো এর জোরালো গন্ধে লেপের তলায় মাথা ঢুকিয়ে রাখার জন্য রীতিমত সংগ্রাম চালাতে হয়।
যাক গে এই হল সেই বিশেষ বায়ু প্রবাহ, যাহা মানুষের পশ্চাদদেশ হতে প্রবাহিত হয়। পশ্চাদদেশ হতে প্রবাহিত হওয়ায় এই বায়ু প্রবাহ কে পশ্চাদ দেশের বায়ু বললেও অত্যুক্তি হয় না।
এই বায়ু প্রবাহের সঙ্গে বিশেষ কিছু গল্প এই মুহূর্তে আমার মনে পড়ে যাচ্ছে, আপনাদের সাথেই এই ভাগ করে নেওয়া যাক।
ঘটনা হল, যখন আমি স্কুলে পড়ি তখনকার। স্কুলের সবথেকে রাগি শিক্ষকের ক্লাস চলছিল। শিক্ষক মহাশয় একজন ছেলেকে পড়া ধরছিলেন। ছেলেটা পড়ার উত্তর দিতে না পারায়, শিক্ষক মহাশয়ের হস্ত গগন ছুয়ে পতিত হইল সেই ছাত্রের পিঠের উপর। আর এর পতিক্রিয়া হিসেবে সেই ছাত্রের পেটের মধ্যে গতকালের বাসি সিঙ্গারা আর সকালের চানাচুর এর রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে তৈরি হওয়া গ্যাস পশ্চাদ দেশের বায়ু রূপে গোটা নিস্তব্দ ক্লাসকে কাপিয়ে দিয়ে জেট বায়ুর গতিতে প্রবাহিত হয়ে গেল।
পড়ুনঃ- অং বং চং হাসির গল্প
শব্দের তীব্রতা এমন ছিল যে, সেই শব্দ কয়েক বার পর্যন্ত ক্লাস রুমের পাকা দেওয়ালে প্রতিধ্বনিত হতে লাগল, আর এই বায়ু প্রবাহের কয়েক মিলি সেকেন্ডের মধ্যেই এক ঝাঁঝালো গন্ধ গোটা ক্লাসকে আচ্ছাদিত করল।
শব্দের তীব্রতা শুনে সবার ভুরি কাঁপানো হাসি পেলেও সেই হাসি সবাইকে চেপে রাখতে হয়েছিল, কিন্তু আমার আবার হাসি চেপে রাখার ক্ষমতা নেই, আমি হেসে দিলাম রাবণের মত, সেই রাবণমুখো রাগী শিক্ষক এর সামনে। হাসির তেজ এতটাই ছিল যে, সেই রাবণমুখো শিক্ষকের মুখেও হাসির জোয়ার উপচে পরছিল।
এক রেস্তোরায় খেতে গিয়েছিলাম আমরা কয়েজন বন্ধু মিলে। খাবার আসতে দেড়ি হচ্ছে দেখে একটু এগিয়ে গেলাম সেই রেস্তোরার কিচেনের দিকে। গিয়ে শুনি সেখানে রীতিমত ব্যান্ডের আওয়াজ হচ্ছে। আওয়াজ টা অনেকটা এরকম, ঠুস ঠুস ঠুস ঠুউউউস পুইইইইউউউৎৎৎ আর মাঝে মাঝে ধিক ধিক ধিক।
মাথা বাগিয়ে দেখলাম রাধুনি পুরো আপন মনে এই সুরেলা শব্দ গুলি বেড় করে যাচ্ছে। আর মাঝে মাঝে সেই শব্দের তালে মুখ দিয়ে ধিক ধিক ধিক আওয়াজ করছে।
সেখান থেকে ফিরে এসে বন্ধুদের ঘটনা টা বলতেই তারা নাকে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে বলল, চল এখান থেকে তাড়াতাড়ি ভালোয় ভালোয় কেটে পরি নয়তো সেই গন্ধ মিশ্রিত খাবার আমাদের পেটে যাবে আর আমাদেরও সেই ভাবে আওয়াজ আসবে।
সেদিন সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে মঞ্চু কাকার দোকানের ভাজাভুজি খেয়ে বাড়ি ফিরেছি। পরের দিন শুনি আমাদের টিমের মোটা ভাই নানান সুরেলা আওয়াজ বেড় করছে।
যাক গে এই সব গল্প রাত পোহালেও শেষ হবে না। আর শুনতে ইচ্ছে হলে মুখে রুমাল চাপা নিয়ে গন্ধি দিঘির গন্ধ মিশ্রিত জলের পাশে এসে আমাকে হালকা করে একটা মিসডকল দিয়েন। আমি পৌঁছে যাব।
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
পড়ুনঃ- স্কুল জীবনের দুষ্টুমি- গন্ধ চক্রান্ত বাংলা চরম হাসির মজার গল্প
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
মজার ছোট গল্প। নতুন মজার গল্প। new bengali funny story
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।