আজকের মজাদার গল্প দুটি ফেসবুক কে কেন্দ্র করে লিখা হয়েছে। ফেসবুক কে ঘিরে লিখা এই ফানি গল্প গুলি আপনাদের পছন্দ হবে এই আশা রাখি।।

মজাদার গল্পঃ- ১

আমার বন্ধু কালী। উঁহুঁ ওর পুরো নাম অবশ্য কালীপদতারানাথ শিকদার, সংক্ষেপে কালী। ওর খুব ইচ্ছে রিলেশনে যাবে। একদিন শুনি সে ফেসবুক প্রোফাইল খুলেছে। আর ওতে নাকি দারুণ হাসির হাসির পোস্ট করছে। তবে ওর দুঃখ এটাই যে কোন মেয়েই ওকে কমেন্ট করে না।

আর অনেক অনেক মেয়েকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালেও মেয়েগুলো নাকি ওর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করে না। তাই সে এসেছে আমার আরেক বন্ধু জগার কাছে। আপনার জ্ঞাতার্থে বলে রাখি যে, এই জগার পুরো নাম হল, শ্রী জগদিনদয়ালবন্ধুনাথ মালাকার।

যাই হোক আসল কথায় আসি। জগা বলল, “তুই তোর প্রোফাইল পিক বদলে দে, ওতে একটা ক্লোজ শর্ট নিয়ে নিজের পিক দে। যেন তোর মুখ শুধু অল্প বোঝা যায়। আর এইসব হাসির পোস্ট করা ছেড়ে দে, এতে মেয়ে গুলো তোকে ছ্যাবলা ভাববে।”

মজাদার গল্প
মজাদার গল্প

“তুই বরং বিজ্ঞের মত পোস্ট করবি। আর কোনো মেয়ে তোর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করলে সঙ্গে সঙ্গে ওর ম্যাসেঞ্জারে গিয়ে হাই, তোমার ঘর কোথায় বাথরুম কোথায় এইসব জিজ্ঞাসা করা ছেড়ে দে।”

“তুই কয়েকদিন অপেক্ষা করবি। এরপর মেয়েটার প্রোফাইল ভালোমতো দেখবি। দেখবি ওর বাড়ির ঠিকানা। এরপর তোর কাজ হবে, সেই ঠিকানার আশেপাশের কোন নামি জিনিস সম্পর্কে জানতে চাওয়া। এই বলেই ম্যাসেজ করবি তবেই সে রিপ্লাই করবে।”
সত্যি এরকম একজন সুদক্ষ শিক্ষক প্রতিটি স্টুডেন্ট এর লাইফে থাকলে সবাই হয়ত টপ করত।

এরপর মাঝে কেটে গেছে ১৫ দিন। কালী হাসতে হাসতে এসে জগা কে থাঙ্কু জানিয়ে বলল “তোর টিপস কাজ করেছে, আর আজ আমি মেয়েটার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।”

আমরা ওর কাছে জেদ ধরলাম যে ওর সাথে আমরাও যাব। অনেক অনেক বলার পর সে রাজী হল, তবে শর্ত একটাই দূর থেকে আমাদের দেখতে হবে, কাছে যাওয়া চলবে না।

ওরা ফোন করে কোথায় দেখা করবে ঠিক করে নিল। এরপর কালী পার্কের একটা বেঞ্চে বসে মেয়েটিকে ফোন করে বলে দিল যে এই বেঞ্চে সে বসে আছে।

আমি আর জগা একটু দূরের একটি বেঞ্চে বসে কালীকে দেখছি।

কিছুক্ষণ পর বয়স ১০-১৫ এর একটি মেয়ে এসে কালীর সামনে দাঁড়াল। ওদের কথোপকথন আমরা বেশ শুনতে পাচ্ছি।
মেয়েটা এসে কালীকে বলল- “তুমি কি কালী!”

কালী মাথা নাড়ল। সে বলল- “কিন্তু তুমি কে বোনটি।“

পড়ুনঃ- স্বপ্ন নিয়ে মজার গল্প 

মেয়েটা বলল, “বোন! আমি তোমার বোন! আমি তোমার ফেসবুকের সেই রীতি মানে রিতিকা।”

কালী কিছুটা তথমত হয়ে বলল- “কিন্তু তোমার পিক দেখে তো তোমাকে বেশ বড়ই লাগছিল, আমি কখনো ভাবতেও পারিনি যে তুমি একজন বাচ্চা।”

মেয়েটা রেগে গিয়ে বলল- “হাউ ডেয়ার ইউ! আমাকে বাচ্চা বললে! তোমার এত সাহস আসে কীভাবে!”

কালী শান্ত ভাবে বলল- “দেখো বোন, আমি তোমাকে আমার বয়সী ভেবেছিলাম, যেভাবে ক্লোজ পিক দিয়ে ডিপি দিয়েছ, তাতে যে কেউ তোমার বয়স নিয়ে ভুল ভাববে। আমার পক্ষে তোমাকে ভালোবাসা সম্ভব নয়।”

মেয়েটা রেগে বলল- “আমার পক্ষেও তোর মত মটু কে ভালোবাসা সম্ভব নয়। এত বড় ভূরি টা ফটোতে না দিয়ে, মুখের একটা ক্লোজ শর্ট দিয়ে প্রোফাইল পিক দিয়েছিস, ওটা দেখে তো যে কেউ ফিদা হবে। কিন্তু কে জানে ওরকম ক্লোজ পিকের আড়ালে এত বড় একটা ব্যাঙের মত পেট রয়েছে।”

কালী এবার রেগে গেল। সে মেয়েটাকে বলল, “এই নাও ১০ টাকা বাড়ি যাওয়ার সময় চকোলেট কিনে বাড়িতে গিয়ে পড়তে বসবে। এখনো দুধের দাঁত ভাঙ্গেনি, পড়াশোনা করার বয়সে এসে ভালোবাসা করতে।”

ফানি গল্প ফেসবুক
ফানি গল্প ফেসবুক

এরপর মেয়েটা কালীকে থাপ্পড় দেখিয়ে চলে গেল।

মেয়েটা যেতেই আমরা ওর কাছে ছুটে গিয়ে বললাম- “কি রে শেষমেশ একটা বাচ্চার প্রেমে পরলি! কোথায় তোর বয়স ২৮ আর ওর ১৫ হবে হয়ত। মানছি ভালোবাসা বয়স মানে না, কিন্তু এত ছোট্ট বয়সে ফল পেকে গেলে কি সেটা ভালো দেখায় বল!”

এরপর কালী সেখানেই কান ধরে বলল- “আমি জীবনে ফেসবুকে মেয়ের পিছনে ঘুরঘুর করব না। আর এই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আমি আজকেই উড়িয়ে দেব।”

“ভাল থাক বোন, পড়াশোনা করে সফল হও। দুগ্গা দুগ্গা।।”

ব্ল্যাক শ্যাডো

গল্পের হাস্যরসে-
পড়ুনঃ-  জীবনকে সুন্দর করে তুলুন এই গল্প গুলির মাধ্যমে, গল্প গুলি পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ফানি গল্প ফেসবুকঃ- ২

পাশের বাড়ি কাকার ছেলে রাজু ফেসবুকে মেয়েদের ছবিতে খালি ভালো ভালো কমেন্ট করেই একটা মেয়ে পটিয়ে বিয়ে করে ঘরে এনেছে। এখন পর্যন্ত গ্রামের মধ্যে সব থেকে দেখতে সুন্দরী বৌ তার। দেখাদেখি গ্রামের ছেলেরা ঘতুদা কে রীতিমতো উসকানি দিতো ভাইয়ের মতো ফেসবুকে মেয়ে পটাতে, গ্রামের মধ্যে তার ভাইয়ের থেকেও সেরা বৌ ঘরে আনতে। ঘতুদার বয়স হাঁটু ছাড়িয়ে গেলেও বুদ্ধিটা এখনো সেই হাঁটুর নিচে রয়ে গেছে।

ঘতুদাকে কে যেন মন্ত্রণা দিয়েছে ফেসবুকে সুন্দরী মেয়ে পটাতে গেলে মেয়েদের ছবিতে সব সময় ভালো ভালো কমেন্ট করতে হবে, লাভ রিয়্যাক্ট দিতে হবে, তবেই নাকি মেয়েরা পাত্তা দিবে চ্যাট করতে চাইবে। উদাহরণ স্বরূপ গলার আওয়াজ না শুনলেও বলতে হবে কি সুন্দর তোমার গলার আওয়াজ।

bengali funny golpo
bengali funny golpo
<

রাতদিন ফেসবুকে চোখের সামনে কোন সুন্দরী মেয়ের ছবি দেখতে পাওয়া মাত্র,” ও সোঁ নাইস, লুকিং ভেরি হট, বিউটিফুল, ভগবান তোমাকে খুব যত্নে বানিয়েছে,” ইত্যাদি ইত্যাদি।

এককথায় এটা তার একটা হ্যাবিটে পরিণত হয়েছে। আর যদি কোন মেয়ে ঘতুদার কমেন্টে কদাচিৎ রিয়্যাক্ট কিংবা রিপ্লাই দিতো তাহলে তো হয়েই গেলো। তো হয়েছে কি আমি একদিন ফেসবুক খুলতেই দেখি নিউজ ফিডে রুপা নামে একজন মেয়ে একটা ছবি পোস্ট করেছে। ছবিতে একটা হাতের উপর বেশ কয়েকটা ব্লেড দিয়ে কাটা দাগ, পাশে বিছানায় রাখা ব্লেডে কিছুটা রক্তের দাগ লেগে রয়েছে। বলাবাহুল্য হাতটা মেয়েটারই কারণ যে হাতে ব্লেডের কাটা দাগ রয়েছে ওই হাতেই তার নামে ট্যাটু করা আছে। ঠিক তখনই নজরে আসে আমাদের ঘতুদার করা কমেন্ট, “ওয়াও,

কি সুন্দর লাগছে এইরকম ছবি আরও দেখতে চাই।”

মানিক বাসুলী

গল্পের কলমে-

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।

সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

পড়ুনঃ-  
অসাধারণ সব হাসি গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

অজানা ও অবাক করা সব তথ্য পড়তে এখানে ক্লিক করুন 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র () 

মজাদার গল্প। ফানি গল্প ফেসবুক bengali funny golpo

Spread the love

Leave a Reply