15+ টি শিক্ষামূলক অজানা তথ্য নিয়েই আজকের এই লেখাটি। বেশ কিছু অজানা রহস্যময় তথ্য নিয়ে আজ আবারও চলে আসা। এরকম অনেক কিছুই আছে যেগুলি আমাদের জানা থাকে না, বিশেষত বাংলা ভাষাতে এরকম অজানা তথ্য গুলি খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। তাই সম্পূর্ণ সহজ সরল বাংলাতে এই অজানা তথ্য গুলি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

শিক্ষামূলক অজানা তথ্যঃ-

১. আপনি কি জানেন, যতই দিন গড়িয়ে যাচ্ছে, ততই পৃথিবীর দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। আজ থেকে প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে, যখন পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল, মনে করা হয় যে, তখন পৃথিবীতে মাত্র ৬ ঘণ্টায় এক দিন হত। কালক্রমে ৬২০ মিলিয়ন বছর পড়ে, প্রায় ২১.৯ ঘণ্টায় এক দিন হত। বর্তমানে প্রায় ২৪ ঘণ্টায় একদিন হয়। আবার বৈজ্ঞানিকদের মতে, আগত বছর গুলিতে পৃথিবীর দিনের দীর্ঘ আরও বাড়বে। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি শতাব্দীতে দিনের সময় প্রায় ১.৭ মিলি সেকেন্ড হারে বাড়ছে।

২. বিগ ব্যাং বা অন্য যেভাবেই পৃথিবী সহ অন্যান্য গ্রহ ও উপগ্রহ গুলির সৃষ্টি হোক না কেন, বিজ্ঞানীদের মতে আমাদের সৌরজগতের ষষ্ঠ গ্রহ শনি আজ থেকে প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে সৃষ্টি হয়েছে। শনির চারপাশে বলয়ের আকারে যে বিভিন্ন পাথরের টুকরো গুলি রয়েছে সেগুলি সৃষ্টি হয়েছে শনি গ্রহ সৃষ্টির প্রায় ১০-১০০ মিলিয়ন বছর আগে।

৩. জানেন কি, একজন মা যখন সন্তান প্রসব করেন তখন তার যে যন্ত্রণা হয় তা শরীরের ২০ টি হাড় একসঙ্গে ভেঙ্গে যাওয়ার যন্ত্রণার সমান হয়ে থাকে। তাই আপনার মায়ের সাথে এরকম কোনো ব্যবহার করবেন না, যা মায়ের মনে যন্ত্রণা দেয়। কারণ ইতিমধ্যেই মাকে অনেক যন্ত্রণা আমরা দিয়ে ফেলেছি।

শিক্ষামূলক অজানা তথ্য
শিক্ষামূলক অজানা তথ্য

৪. যে সমস্ত মানুষেরা প্রায় প্রতিদিনই নিজের খাবার থালায় ননভেজ রাখতে বেশি পচ্ছন্দ করেন, তারা তাদের জীবদ্দশায় প্রায় ৭০০০ টিরও বেশি প্রাণীকে খেয়ে ফেলে।

৫. বিজ্ঞানীদের মতে আজ থেকে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন বছর আগে থেকেই হাঙ্গর বা সার্ক এর বিকাশ শুরু হয়েছিল। অর্থাৎ আমরা বলতে পারি যে, শনি গ্রহের বলয়ের থেকেও হাঙ্গরের অস্তিত্ব প্রাচীন

৬. আপনি কি জানেন চাঁদের আঁকার অস্ট্রেলিয়ার থেকেও ছোট। বিশ্বাস হচ্ছে না তো! চলুন আপনাকে একটি পরিসংখ্যান দিই।

  • চাঁদের ব্যাস হল প্রায় ৩৬০০ কিলোমিটার। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাস হল প্রায় ৪০০০ কিলোমিটার। সুতরাং অস্ট্রেলিয়ার ব্যাস চাঁদের তুলনায় প্রায় ৪০০ কিলোমিটার বেশি। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, পৃথিবীর মধ্যে প্রায় ৫০ টি চাঁদ আরামেই ধরে যেতে পারবে।

৭. টাইফুনের মত ঝড় যে কত ভয়াবহ হতে পারে সেটি আমরা সবাই জানি। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই টাইফুন দুই- দুইবার জাপানকে রক্ষা করেছিল। কিভাবে?

  • আনুমানিক ১২৭৪ সালে মোঙ্গল বাহিনী কুবলাই খানের নেতৃত্বে চীন থেকে জাপানে আক্রমণের পরিকল্পনা চালায়। কিন্তু জাপানে প্রবেশের পথে তাদের এক বিশাল টাইফুনের কবলে পরতে হয়। তাদের সমস্ত রসদ বিদ্ধস্ত হয়ে যায়। তারা বাধ্য হয়ে জাপান আক্রমণের পরিকল্পনা ত্যাগ করে।

এই ঘটনার প্রায় ৭ বছর পর ১২৮১ সালে আবার সমুদ্র পথে কুবলাই খানের বাহিনী জাপান আক্রমণে অগ্রসর হয়। কিন্তু এবারেও সমুদ্রে তাদের বিশাল টাইফুনের কবলে পরতে হয়। যার ফলস্বরূপ এবারেও তাদের পরিকল্পনা নষ্ট হয়। জাপানের বুদ্ধদের মতে, স্বয়ং ঈশ্বর তাদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ঝড় হয়ে নেমে এসেছিলেন।  

অজানা তথ্য 2022
অজানা তথ্য ২০২২

৮. অনেকেই শুনে থাকবেন যে, পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা নাকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আপনি কি জানেন, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে পর্বত গুলির উচ্চতা ১৫,০০০ মিটারের অধিক কক্ষনোই বৃদ্ধি পাবে না

পড়ুনঃ- 
মুরগী আগে নাকি মুরগীর ডিম- কি বলছে বিজ্ঞান 

মানব দেহের সঙ্গে অজানা তথ্য 

অজানা তথ্য ২০২২ঃ-

৯. আমরা জানি যে, প্রজাপতি সাধারণত ফুলের মধু বা ফলের রস খায়। কিন্তু আপনি জানেন কি, প্রজাপতি বিভিন্ন বর্জ্য বস্তু এমনকি আপনার শরীরের ঘাম পর্যন্তও খায়। অনেক সময় দেখবেন শরীরে প্রজাপতি বসলে, সে তার চোষক দিয়ে আপনার শরীরে কিছু একটা করছে। আসলে এইভাবে তারা আপনার শরীরের ঘাম শোষণ করে। ঘামে থাকে সোডিয়াম, আর এই সোডিয়াম, মিলনের সময় পুরুষ প্রজাপতি স্ত্রী প্রজাপতির শরীরে পাঠিয়ে দেয়।

আর এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় Puddling. উল্লেখ্য যে প্রজাপতি প্রাণীর মল, রক্ত বা বিভিন্ন পচনশীল পদার্থ থেকেও রস শোষণ করে। স্ত্রী প্রজাপতির তুলনায় পুরুষ প্রজাপতি এই জাতীয় পদার্থ থেকে রস বেশি সংগ্রহ করে।

১০. ইন্দোনেশিয়ার কোমোডো দ্বীপ এবং জাভা দ্বীপপুঞ্জে এক প্রকার গোসাপ প্রজাতির প্রাণী পাওয়া যায়। ইউরোপের একটি চিড়িয়াখানায় এই প্রজাতির দুটি স্ত্রী গোসাপ কোনো পুরুষ গোসাপের সঙ্গে মিলন ছাড়াই ডিম পেরেছিল।

অর্থাৎ এটি এমন একটি প্রাণী যার বংশ বিস্তারে, পুরুষের মিলনের প্রয়োজন হয় না (গবেষণা চলছে- TENTAIVELY)

১১. কয়েক শতক আগে পর্যন্তও নাকি পৃথিবীতে অনেক বড় বড় কচ্ছপের বসবাস ছিল। কিন্তু বর্তমানে অনেক বিশাল বড় বড় কচ্ছপ শুধুমাত্র গ্যালাপাগস এবং সেসেলস দ্বীপের কিছু কিছু জায়গাতেই দেখতে পাওয়া যাবে। আর এদের সংখ্যাও অনেক কম। কচ্ছপ বৃদ্ধি পেতে সাধারণত অনেক বছর লেগে যায়, কিন্তু মানুষের আগ্রাসনের কাছে তারা হার মানতে বাধ্য হয়।

বড় বড় কচ্ছপ গুলির বিলুপ্ত হওয়ার প্রধান কারণ হল অনিয়ন্ত্রিত শিকার। ভোজন রসিক দের মতে বড় বড় কচ্ছপ গুলির স্বাদ নাকি ছোট গুলির তুলনায় অনেক অনেক গুনে বেশ জমজমাটি।

বড় কচ্ছপের স্বাদ বেশি ভালো এটি জানার পর কচ্ছপ শিকারে আবার বের হবেন না যেন, অন্তত তাদের তো ছেড়ে দিন। আর লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের রক্ষা করা দায়িত্ব শুধুমাত্র রাষ্ট্রের নয়, বরং সাধারণ মানুষদেরও।

১২. আপনি যদি এক-বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বা তার কিছু আগে পড়ে জন্ম গ্রহণ করে থাকেন, আপনি হয়ত ডিভিডী বা ক্যাসেটের বা সিডি প্লেয়ার অবশ্যই দেখে থাকবেন। কিন্তু আপনি জানেন কি, ‘Twister’ হল প্রথম ছবি যেটি ডিভিডী তে রিলিজ হয়েছিল।

১৩. আপনি হয়ত অনেক ছবিতেই দেখে থাকবেন যে, কচ্ছপ তার খোলস থেকে বাইরে বেড়িয়ে আছে। কিন্তু আপনি জানেন কি, খোলস থেকে বাইরে বেড়িয়ে আসা, কচ্ছপের পক্ষে সম্ভব নয়। আসলে কচ্ছপের খোলস তারই কঙ্কালের একটি অংশ। তাই কচ্ছপ যতই চেষ্টা করুক না কেন, তার পক্ষে সেই খোলস থেকে বাইরে বেড়িয়ে আসা সম্ভব নয়। আর মানুষ যেমন জামা কাপড় পরিবর্তন করে ঠিক তেমনই কচ্ছপও খোলস পরিবর্তন করে, এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।

amazing facts in bengali
amazing facts in bengali
<

১৪. আমরা জানি যে, সীসা আমাদের চামড়ার পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। এটি চামড়ায় ক্ষত সৃষ্টির সাথে সাথে বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু আপনি কি জানেন, এমন একটা সময় ছিল যেখানে সীসাকে মেয়েরা মেকআপ করার কাজে ব্যবহার করত।

  • প্রাচীন মিশরে মেয়েরা সীসা দিয়ে আই- ভ্রুতে লাইন বানাত। বিভিন্ন দ্রবের সাথে সীসা মিশিয়ে সেটি মুখে লাগানো হত। প্রাচীন রোমান মহিলারা মুখ সাদা করতে সীসা দিয়ে তৈরি একপ্রকারের ক্রিম ব্যবহার করত। এমনকি রানি প্রথম এলিজাবেথ ভিনিগার এবং সীসা একত্রে মিশিয়ে একটি লোশন তৈরি করতেন, যেটা তিনি নিয়মিত তার মুখে ব্যবহার করতেন। 

১৫. পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত ডাইনোসরের অনেক জীবাশ্ম পাওয়া গেলেও কিন্তু ২০১৭ সালে কানাডার আলবার্টায় এক খনিতে শ্রমিকরা অক্ষত ত্বক এবং বর্মবিশিষ্ট এক ডাইনোসরের মমি খুঁজে পান।  বিজ্ঞানীরা মতে, এটি নেসোডার প্রজাতির ডাইনোসর এবং এরা ১১ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে বসবাস করতো। বর্তমানে এই জীবাশ্ম রুপী মমীটি কানাডার আলবার্টার রয়্যাল টাইরেল মিউজিয়াম অফ প্যালিওন্টজিতে সংরক্ষিত আছে। এর ত্বক এবং বর্মগুলো এতোটাই অক্ষত যে, জীবাশ্মবিদরা একে ফসিল না বলে মমি বলার পক্ষে। জীবাশ্মবিদরা বলছেন যে, এটাই পৃথিবীতে বর্তমান পর্যন্ত প্রাপ্ত ডাইনোসরের সবচেয়ে ভালো সংরক্ষিত নমুনা।

১৬. যদি অকারণে আপনার হাত-পা ব্যাথা করছে, হতে পাড়ে যে এর পিছনে দায়ী হল, চা (tea). হ্যাঁ একদম ঠিক পড়েছেন, চা। অতিরিক্ত চা-পানের ফলে আমাদের শরীরের হাড় নরম হতে থাকে। কম বয়সেই ব্যাথা অনুভূত হয়। ঘুমানোর সময় ব্যাথা অনুভূত হওয়া, এই সবই চায়ের কুফল। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

© সমগ্র কপিরাইট ছাড়পত্রের অ্যাডমিন কর্তৃক sngrokkhit

এগুলি আপনার পছন্দ হতে পাড়েঃ- 
ছেলেদের সাইকোলজি ফ্যাক্টস 

শিক্ষণীয় গল্প- যেগুলি আপনার জীবন বদলাবে 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

” শিক্ষামূলক অজানা তথ্য। অজানা তথ্য ২০২২। amazing facts in bengali”

Spread the love

Leave a Reply