আজকের এই শিব ঠাকুর base গল্পটি অনেকটা রাজনৈতিক হাসির গল্প বলতে পারেন। বর্তমান পরিস্থিতির আঙ্গিকে বাস্তবতাকে সিদ্ধহস্তে ফুটিয়ে তুলেছেন ছাড়পত্রের বিশিষ্ট লেখক- মানব মণ্ডল।

রাজনৈতিক হাসির গল্পঃ- শিব ঠাকুরের সমস্যা-

মর্নিং ওয়াক করে ফিরে , কৈলাস এর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শিব ঠাকুর ভাবছেন- এইখানে একদিন শিব ঠাকুর লিখে রেখেছিলেন “my sweet home। “এখন লিখে রেখেছেন “ওম শান্তি ওম।” আসলে বিয়ে পর থেকেই শিব বুঝতে পেরেছেন কিভাবে পীড়িত হতে হয় স্বামীদের। কারনে অকারনে ঝগড়া করে দূর্গা তার সাথে।

জোর করে খাইয়ে খাইয়ে ভুড়ি করে দিয়েছে, যাতে তার দিকে কোন মহিলা না তাকায়। এখন যেই দেখলো বৌশাখী অর্পিতারা ভুড়ি ওয়ালা পার্থ শোভনের সাথে প্রেম করেছে, অথচ সালমান খানের পাত্রী জুটেছে না, ওমনি দুর্গা ওকে জিমে পাঠালো মেদ কমাতে। আচ্ছা ওকি রাজনৈতিক নেতা যে কম বয়সী মহিলা ওর প্রেমে পড়বে! টাকা থাকলে টাক পড়া মানুষকেও তো ভালো লাগে।

শিব ঠাকুর হাঁড়ে হাঁড়ে টের পেয়েছেন বিয়ে করে তিনি কি ভুল করেছেন। সোস্যাল মিডিয়া কোন কমেন্ট লাইক পর্যন্ত দিতে পারেন না তিনি। থিম পূজার নামে তো আপনারা দূর্গাকে কত ধরনের পোশাক আশাক পরতে দেখেন। দূর্গা কেন সব দেবতারই ভালো ভালো পোশাক পরে ছবি তুলে পোস্ট করে। কিন্তু মা দূর্গার কড়া নির্দেশ, বাঘ ছাল ছাড়া কিছু পড়া যাবে না।  স্টাইল ফ্যাশন কিছু করা যাবে না।

রাজনৈতিক হাসির গল্প
রাজনৈতিক হাসির গল্প

শিবের তাই শীত গ্রীষ্ম বর্ষা বাঘের ছালই একমাত্র ভরসা। গলায় সবার সোনার রূপার চেন থাকে, শিবের গলায় সাপ আছে। কারণ দুটো, প্রথমত- সাপ দেখে যাতে মেয়েরা, ওর  কাছে না ঘেঁষে। দ্বিতীয়ত-  video chat এ ও যাতে কোন মহিলার সাথেও কথা না বলতে পারে তাই ঐ সাপ। ওটা দূর্গার পোষা। সব খবর দিয়ে দেয় দূর্গার কানে। শিব ভালোই বুঝতে পেরেছেন রাধা কৃষ্ণ শ্রেষ্ঠ প্রেমিক প্রেমিকা থাকতেন না যদি ওরা বিবাহ করতেন।

পড়ুন- ২০৮৭ সালের একটি হাসির ঘটনা 

শিব একদিন বড়াই করে বন্ধু মহলে বলতো, “চালচুলোহীন সে, তুবও তাকে পার্বতী বিয়ে করছে ১০০%ভালোবেসে।” পরে তার ভুল ভেঙ্গে গেল। আসলে পার্বতী ফন্দি আঁটছিল শিবকে ঘর জামাই রাখতে। যাতে পাড়ার বৌদিদের সাথে কথা বার্তা না বলতে পারে শিব।  শিব সে ফন্দি জেনে গিয়েছিলো বলে দুর্গার সাথে, এখনো কখনো মর্ত লোকে আসে না।  তবে দূর্গা শর্ত মেনে নির্জন কৈলাশে ঘর বেঁধেছে‌। আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না ! তাই তো দেখবেন মা সপরিবারে মর্তে এলেও শিব ঠাকুর তাদের সাথে আসেন না।  অবশ্য অনেকে বলেন মা নেশা খোর শিবকে কোথাও নিয়ে যাবেন না বলেই ফোর সিটার গাড়ি কিনেছেন।

তবে বেকার শিব ঠাকুরকে দূর্গা ঠাকুরের বিয়ে করার আরও একটা কারণ ছিল। ঘরের কাজ গুলো সব শিব ঠাকুরকে দিয়ে করিয়ে নিতো। আসলে স্বর্গে সংসার চালাতে টাকা পয়সা লাগে না তেমন। কারণ, লক্ষী ভান্ডার, খাদ্যশ্রী, কন্যাশ্রী নানা প্রকল্প থেকে টাকা পাওয়া যায়। এমন কি নিন্দুকেরা বলে রূপশ্রী নামে একটা প্রকল্প থেকে রূপ চর্চার জন্যেও সরকার টাকা দেওয়া হয় লক্ষী সরস্বতীকে।

funny story on politicians in bengali
funny story on politicians in bengali হাসির গল্প

আগের সরকার ওকে চিরকুট চাকুরী পাইয়ে দেবে বলেছিলো। কিন্তু ও বোধহয় নেয় নি। আসলে শিব ঠাকুর বেকার হলে কি হবে তার অনেক সাঙ্গ পাঙ্গ আছে। তাই সরকার থাকতে হলে শিব ঠাকুরকে একটু তেলিয়ে চলতে হয় সবাইকে। শিব সেবক সংঘে বছর বছর মোটা অনুদান আসে নেশা ভান ফুর্তি করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে। রাস্তা তৈরির, ড্রেন তৈরির, কাট মানি ঢুকে যায় ক্লাবে।  জননেত্রীর সভায় ভিড় বাড়ানো থেকে ছাপ্পা ভোট সব কিছুতেই তো লোকজন দরকার। তাই শিবরা তো হলেন দলের সম্পদ।

তবে শিব সৎ মানুষ। নয়তো মাগুর মাছ বেঁচে সেও কোটি পতি হতে পারতো। তারও দশবারোটা চাল কল, গাড়ি , বাড়ি থাকতো। কার্তিকটা s.s.c না দিয়েও, কোন স্কুলের শিক্ষকতার চাকরি করতো। কষ্ট করে সেনাবাহিনীতে চাকরির করতে হতো না। গনেশ পেরেক, রঙ বেঁচে কোটি পতি হয়ে যেতো। কোলকাতায় বুকে 30-40 টা জমি থাকতো। তবে মাঝে মাঝে শিবেরও কষ্ট হয়। কেষ্ট বেটা চুরি করেও সবার কাছে কতো জনপ্রিয়, আর ও কিছুই করতে পারলো না!

তবে শিব এসব নিয়ে ভাবেছে না এখন। পূজা আসছে ও খুব খুশি। তিন চারদিন বৌএর মুখ ঝামটা ওকে খেতে হবে না। তবে একটা কষ্ট ওর বুকের ভিতরে চিনচিন করেছে। মর্ত লোকে কথায় বিরোধী দের গাজা কেস দেবার ফলে; এখন গাঁজা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। নেশাটা না হয় ও করবে না। কিন্তু তবুও আরো একটা ভয় ঘোরাফেরা করছে ওর মনে ভিতরে।

রাজনৈতিক রম্য রচনা
রাজনৈতিক রম্য রচনা
<

পূজা আসছে বলে আবার শিব ঠাকুরের ভয় করছে খুব। দূর্গা কে শিব ঠাকুর হাজার হোক ভালোবাসে। মোটামুটি ভাবে পশ্চিম বঙ্গের সব পুজার মাথাতেই বড় বড় নেতাদের হাত থাকে। কেউ দূর্গাকে সোনার গয়না পড়ালো দূর্গাও পড়ে নিলো। তাহলে তো দূর্গাও ফেঁসে যাবে। দূর্নীতি সাথে কে কোথায় থেকে জ্ছেড়িয়ে কেউ জানে না। তখন মা দূর্গাকেও না আবার কোন তদন্তের মুখোমুখি হতে হয় এটা শিব ঠাকুরের ভয়। যদিও কলকাতা পুলিশ কর্মকর্তার ভুড়ি, ভারতে জ্বালানি তেলের দাম, আর বাংলায় নেতাদের হঠাৎ সম্পত্তি বেড়ে যাবার সঠিক কারণ কেউই বোধহয় ঠিক মতো ঠিক ভাবে বিশ্লেষণ করে বলতে পারবে না!

প্রেরক- মানব মণ্ডল facebook

গল্পটির পরিপূর্ণতা প্রাপ্তি যার হাতে-
অতি সহজে আমাদের গল্প পাঠান- charpatrablog@gmail.com -এ 
মানব মণ্ডলের লেখা কয়েকটি সেরা লেখনী- 

হাসির গল্প- ভূতের সাথে ঘণ্টাখানেক। 

বউ নাকি গোয়েন্দা! 

কয়েকটি ছোট গল্প 

প্রতিদিনের আপডেটের জন্য- 

ফেসবুক গ্রুপ- গল্প Junction

ফেসবুক- ছাড়পত্র 

টেলিগ্রাম- CharpatraOfficial

WhatsApp Group- ছারপত্র (২) 

“রাজনৈতিক হাসির গল্প। রাজনৈতিক রম্য রচনা”

Spread the love

Leave a Reply