আজ আমার সাথে ঘটে যাওয়া একটি ভয়ানক ভূতের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করব। এই হাড় হিম করা ভূতের গল্পটি আমার সাথে কয়েক বছর আগে ঘটেছিল।
হাড় হিম করা ভূতের গল্প
বন্ধুরা আমার নাম জয়। আমি থাকি শিলিগুড়িতে। আমি বর্তমানে ডাইরেক্ট সেলিং এর কাজ করি। বুঝতেই পারছেন, ডাইরেক্ট সেলিং এর কাজ, এই কাজে অনেকটা রাস্তা প্রায়, ৩০-৫০ কিমি রাস্তা আমাকে প্রতিদিন, ঘুরে বেড়াতে হয়। বিভিন্ন মানুষের সাথে দেখা করে, তাদের অর্ডার নিয়ে, সাপ্লাই করাটাই আমার মূল কাজ। কখনো কখনো কোম্পানির মালিক, ডেলিভারির জন্য আমাকে তার বাইকটি দিত, আবার কোনোদিন সে আমাকে অটো-রিক্সা ভাড়া করে দিত। এই ভাবেই চলত দিন। কিন্তু একদিন আমার সাথে, এমন এক ভূতুড়ে ঘটনা ঘটে যায়, যে আমি রীতিমত স্তম্ভিত হয়ে যাই। তাহলে এবার ঘটনাতে যাই। ভূতের গল্প
প্রতিদিনের মত, আমি কাস্টমারের লিস্ট এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে রিক্সার অপেক্ষা করছিলাম। এরপর একটি অটো- রিক্সা আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। চালকটি মধ্যবয়সী, পরিধানে সাদা কাপড়, মাথার চুল অনেক বড় বড় এবং শরীরের রং কালো। আমার কাছে এসে সে, বলল- “ কোথায় যাবেন?” আমি বললাম প্রায় চার ঘণ্টার জন্য আপনাকে ভাড়া পাওয়া যাবে? এই শহরেরই ১০-১৫ জায়গায় দাঁড়াতে হবে, এবং সেখানে জিনিস পৌঁছাতে হবে। এরপর লোকটি বলল- “ঠিক আছে, বসুন।“ আমি বসলাম, কিন্তু একটু পড়েই কেমন যেন অস্বাভাবিক অনুভব হতে লাগল। যেন আমার ভেতর থেকে কেউ আমাকে এখানে বসে থাকতে বাঁধা দিচ্ছিল।“ এরপর তিনি অটো- রিক্সা স্টার্ট করলেন এবং গান চালিয়ে দিলেন।

আমি লক্ষ্য করলাম যে, লোকটি তন্ত্র- মন্ত্রের মত কি যেন গুণগুণ করছে, আর মন্দির দেখলেই সেদিকে না গিয়ে একটু ঘুরে গিয়ে আবার আগের রাস্তায় উঠছিল। কি জানি মন্দিরের সাথে তার কিসের এত শত্রুতা। মন্দির দেখলেই সে আপন মনে চেঁচিয়ে উঠছিল। এইসব দৃশ্য দেখার পর আমার মনে কেমন যেন খটকা লাগতে থাকল। আমার মনে হতে লাগল, এই লোকটা হয়ত পাগল। কি জানি এই পাগলের গাড়িতে কেন উঠতে গেলাম? আমি ভাবছিলাম এই লোকটি পাগল, নয়ত এর ভেতরে নিশ্চয় কোনো ভুত-প্রেতের বাস আছে। আমার আর এই বদ্ধ পাগলটির সাথে বসে থাকতে একদমই মন চাইছিল না।
আরও পড়ুনঃ-
ভূত আছে কি নেই ভূত কি আত্মা কি ভূত কি সত্যি আছে
আমি গাড়ি থামাতে বললাম। লোকটি বলল- “ভাই গাড়ি ব্রেক ফেল হয়েছে, ব্রেক লাগছে না চুপচাপ বসে থাকুন” এমা বলে কি! এবার আমার মাথা থেকে সমস্ত বুদ্ধি বেড়িয়ে গেল, ইতিমধ্যে আমি ভয়ে প্রচুর ঘামতে শুরু করে দিয়েছি।




নিজের অজান্তেই আমি চিল্লাতে শুরু করে দিলাম। সেই লোকটি জোরে জোরে হাঁসতে হাঁসতে, তার মাথা হঠাৎ ১৮০ ডিগ্রী ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকালো, তার চোখে তাকিয়ে দেখি, চোখ দুটি অস্বাভাবিক রকমের লাল, এবং মাঝখানে কালোর জায়গায় পুরো অংশটি সাদা। এই দৃশ্য দেখে আমার অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা। আমার আগেই লোকটির মুখে দেখা উচিত ছিল, তাহলেই এর পাল্লায় আর পড়তাম না। সে বলল- “যদি চিল্লাও, আমি তোমাকে আমার পৃথিবীতে নিয়ে যাব।“ বলে কি? আমার পৃথিবী! এবার আমার বুঝতে দেড়ি রইল না যে, আমি এক ভূতের পাল্লায় পরেছি। তার কর্কশ কণ্ঠী আওয়াজ শোনার পর, আমার মুখ দিয়ে আর কোনো কথা বেড় হচ্ছিল না। এখন আমি পুরোপুরি এই রহস্যময় ব্যাক্তিটির নিয়ন্ত্রণাধীন।




এদিকে আমার মাথায় অটো-রিক্সা থেকে ঝাঁপ দেওয়ার মতনও শক্তি উধাও হয়ে গিয়েছিল। আমি ভয়ে কাঠ হয়ে গেছি। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে, শহরের বিভিন্ন জায়গায় সে আমাকে ঘোরাতে থাকে। হঠাৎ করেই সে তার গাড়ি থামিয়ে দেয়, এবং আমার দিকে ঘুরে বলে- “ তোর মত, শান্ত- মানুষ আমার কোনো কাজেই আসবে না। আমার রিক্সা থেকে পালিয়ে যা, নাহলে তোকে এখানেই ছিঁড়ে দেব।“ আমি দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমারা হাত পা ভয়ে সম্পূর্ণ অবশ হয়ে গিয়েছিল। নড়ার মত শক্তিও আমার ছিল না। আমার নিশ্বাসও ছোট হয়ে আসছিল।
আর এদিকে ঘেমে- নেয়ে আমার শরীর একাকার। আমি নড়ছি না দেখে, সে তার হাতটি উপরে উঠাল, এবং চিল্লাতে চিল্লাতে আমার মুখে সজোরে এক ঘুষি মেরে দিল, আমি ছিটকে গিয়ে রাস্তায় পড়লাম। এরপর আমার আর কিচ্ছু মনে, নেই যখন আমি চোখ খুললাম, তখন ঘড়িতে দেখি ১.১৫ বাজে। আমার চারপাশের লোকগুলি আমাকে কেমন যেন ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখছিল। তারা হয়ত মনে মনে ভাবছে, আমি কোনো মাতাল। নেশা করে রাস্তায় পড়ে আছি। আমার উঠে বসার শক্তিটুকুও ছিল না। আমি আমার এক বন্ধুকে ফোন করলাম, সে কিছুক্ষণ পর, আমাকে সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে। আমার জীবনে এরকম ঘটনার সাক্ষী আর কোনোদিনই হয়নি। কিন্তু এখনও ভয় নিয়ে ঘুরে বেরাই, যদি আবার সেই মানুষটির সাথে আমার দেখা হয়!




বি.দ্রঃ- আপনি যদি আমাদের লেখা পাঠাতে চান, তাহলে আমাদের ফেসবুক পেজে জানাতে পাড়েন। আপনার লেখা প্রকাশিত হবে, আমাদের ফেসবুক পেজ, এবং ওয়েবসাইটে। আপনার লেখা যদি দর্শকদের পছন্দ হয়, তাহলে আপনাকে একটি বিশেষ উপহার দেওয়া হবে।




কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।