ভয়ঙ্কর স্বপ্ন ভূতের গল্প আজ থাকছে একটি ভয়ানক ভূতের গল্প। বন্ধুদের সাথে দার্জিলিং ঘুরতে গিয়ে মহা বিপাকের সম্মুখীন গল্পের মূল চরিত্র। পরবর্তী ঘটনাক্রম গল্পে।
ভয়ঙ্কর স্বপ্ন ভূতের গল্পঃ- “ভ্রম!”
শীতের সকাল , অরুণিতার কলে ঘুমটা ভাঙলো । উত্তেজিত কণ্ঠে কলের ওপার থেকে বলে উঠলো “খাঁটি তিরিশ মিনিট দিচ্ছি তার মধ্যে তৈরি হয়ে নে , তোকে বাড়ি থেকে রিসিভ করে আমরা বের হব দার্জিলিংয়ের উদ্দেশ্যে।” আমি চটপট উঠে রেডি হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। তবে আধ ঘণ্টা কেন টানা দুপুর অবধি অপেক্ষা করার পরেও কোনো বন্ধুর গাড়ি আমায় রিসিভ করতে এলো না দেখে যথারীতি রাগের মাথায় চটে ফোনটাই সুইচ অফ করে দিলাম।
দেখতে দেখতে ঘড়ির কাটা তখন সন্ধ্যা সাতের ঘরে , হঠাৎ কলিং বেল টা বেজে উঠলো। বিরক্তি সহকারে দরজা খুলতে গিয়ে দেখলাম অরুণিতা সমেত বাকি বন্ধুরা দরজার ওপারে অপেক্ষারত। রাগের মাথায় যদিও ওদের ফিরিয়ে দিতে মন চাচ্ছিলো তবুও মনের সুপ্ত বাসনার খাতিরে যেতে রাজি হয়েই গেলাম। সন্ধ্যাবেলায় পাঁচ বন্ধুর সাথে রওনা দিলাম দার্জিলিং এর উদ্দেশ্য।
রাতের পাহাড়ের দৃশ্য এতকাল টিভি স্ক্রিনে দেখে এসেছি কিন্তু আজ সামনে এরকম চোখ ধাঁধানো দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে দেখে থাকলাম।
রাত তিনটা নাগাদ আমাদের গাড়ি পৌঁছালো কুয়াশা ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার ঘেঁষা দার্জিলিং এ। প্রত্যেক বন্ধু নিজেদের মতো হোটেল এ আগের থেকে রুম বুক করে রাখলেও এ সম্বন্ধে আমায় কিছুই জানায়নি তাই বাধ্য হয়েই কোন রুম ফাঁকা না থাকায় বেশ অসুবিধায় পড়লাম। ওরা অবশ্য রুম শেয়ার করতে ইচ্ছুক হলেও রাগের মাথায় আমি হোটেলটা থেকে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। এসব ব্যাপারে ওদের গাফিলতি আমার মোটেও ভালো ঠেকলো না ।
![ভয়ঙ্কর স্বপ্ন ভূতের গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
এই কনকনে ঠান্ডাকে আগুনে ঘি ঢালার মত বাড়িয়ে দিচ্ছে শুষ্ক শীতল উত্তুরে হাওয়া। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলাম কিন্তু তেমন কোন আশ্রয় দেখতে পেলাম না। শুনশান রাস্তা বেয়ে হাঁটতে লাগলাম। একটু এগিয়ে এসে চোখে পরল একটি ছাউনি দেওয়া ঘরে একটি হলুদ লাইট দুলে দুলে জ্বলছে। তাই আমি সামনের একটি ছাউনি দেওয়া ছোট চালা তে গিয়ে আশ্রয় নিলাম ।
কারণ এত রাতে ভূত প্রেত দানা দৈত্য সব কিছু খুব সহজে পাওয়া গেলেও , কোনো হোটেলে এর রুম অন্তত ফাঁকা পাওয়া যাবে না। এমনিতেই ঘড়ির কাঁটায় তিনটা বেজে তিরিশ মিনিট।
শুনেছি এই তিনটা থেকে চারটা তিরিশ অবধি নাকি ডেভিল হাওয়ার্স চলে , তাই বিষয়টা মাথায় আসতেই গা শিউরে উঠলো । এই কনকনে শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় কোন ভূত যদি ঘাড় মটকে রক্ত পান করেও নেয় তাও এই শুনশান জায়গায় কেউ জানতেও পারবে না ।
পড়ুনঃ- এক রহস্যময় রাতের গল্প
ছোটো একটা হলুদ লাইট জ্বলছিল ছাউনি টা তে , তবে এসব ভাবনা আসার পর কেন জানি না লাইট টা বারবার অন অফ হতে শুরু করলো । দ্বীপ দ্বীপ করে জ্বলতে জ্বলতে শেষমেশ লাইট টা বন্ধই হয়ে গেলো। ঘুটঘুটে অন্ধকারে আমার প্রাণ তখন ওষ্ঠাগত । ভাবছি আজকেই বোধহয় স্বয়ং ভূতের দেখা মিলবে , এতদিনে ঠাকুরের দেখা না মিললেও শেষমেশ ভূতের ভবিষ্যৎ হয়ত আমার কপালেই লেখা। ফোনের ফ্ল্যাশ তে জ্বালালেও মনে কোনোরকম ভরসা পেলাম না।
হঠাৎ মনে হলো সামনের রাস্তা দিয়ে কেউ একজন হেঁটে আসছে আর এই সুনসান রাস্তায় এও রাত্রে কেই বা হেঁটে আসতে পারে এই চিন্তা মাথায় আসতেই মন সাড়া দিলো , সে যে আসছে আসুক , শেষমেশ দোকা তো কাউকে পাওয়া যাবে।
![ভয়ানক ভূতের গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
কিন্তু না মিনিট পাঁচ ধরে শব্দটা শোনা গেলেও কোনো মানুষের দেখা মিলল না । এমনকি মাঝে মাঝে একবার করে ভূকম্প অনুভূত হতে লাগলো। আমার মনে হতে লাগল আমার সামনে কোন একটি সাদা ছায়া প্রচণ্ড গতিতে চলে গেল। প্রাণটা তড়াক করে উঠল। এদিকে সারাদিনের ক্লান্তি আর এই ঘুমহীন রাতে আমার চোখ জ্বালা করছে।
এবারে মনে হল একটি বড় সাদা ছায়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মাথা তুলতেই কোনোকিছুর দেখা পেলাম না। মনে হতে লাগল ঘুমের ঘোরে এইসব আমার অবচেতন মনের কল্পনা।
পড়ুনঃ- ভুতুড়ে তান্ত্রিকের গল্প
আবার মনে হলো এক সময় মাথার ওপর থেকে ছাউনি টা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে । একের পর এক এমন এমন কাণ্ড ঘটতে দেখে হাত পা এমনিতেই ঠান্ডা ছিল এবার পুরো শরীর এই শিথিল হতে শুরু করলো । তারপর কেন জানি না মনে হলো আমি ধীরে ধীরে জ্ঞান হারাচ্ছি আর কেউ একজন আমার ঘাড়ের পাস দিয়ে তার লম্বা লম্বা নখ বের করে গলাটা কেটে ফেলার চেষ্টা করছে। আর খুব তীব্র ভাবে আমার শ্বাসরোধ করতে চাইছে।
হঠাৎ মায়ের গলার আওয়াজে আমি একেবারে লাফিয়ে উঠলাম । মা চিৎকার করে বললো ” কখন থেকে তোর বন্ধুরা অপেক্ষা করছে এখনো কি তুই উঠবি না ?”
![bhoyongkor vuter golpo](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে উঠলেও , ধীরে ধীরে নিজেকে স্বাভাবিক করে বুঝলাম, না তার মানে এতক্ষণ যা দেখেছি সেটা পুরোটাই স্বপ্ন । আর এখন সকাল নটা বাজে। তার মানে অরুণিতা কল করার পর আমি আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আর তারপরেই এমন স্বপ্ন দেখেছি। যাই হোক বাবা তার মানে আমি জীবিত। কিন্তু এখন একটাই ভাবনা, আপনারাই বলুন তো , এরকম একটা ভয়ানক স্বপ্ন দেখার পর, আমার কি যাওয়া আদৌ ঠিক হবে ?
নাকি পুরোটাই আমার স্বপ্নের ভ্রম ভেবে উড়িয়ে দিয়ে রওনা দেবো দার্জিলিং এর দিকে!
গল্পের ভাবনায়-
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
পড়ুনঃ- রহস্যের গোয়েন্দা গল্প জীবনকে সুন্দর করে তুলুন
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- ফেসবুক Group - গল্প Junction ফেসবুক- ছাড়পত্র টেলিগ্রাম- charpatraOfficial WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
ভয়ঙ্কর স্বপ্ন ভূতের গল্প। ভয়ানক ভূতের গল্প। 1 bhoyongkor vuter golpo. bengali top horror story.
![charpatra.com ছাড়পত্র](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।