আজকের হাসির গল্প গুলি একটু অন্যরকম। আজকের এই দুটি বাস্তব হাসির গল্পে, হাসির সাথে সাথে কিছু বাস্তব চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা রাখছি, এই হাসির গল্প দুটি আপনাদের পছন্দ হবে।
বাস্তব হাসির গল্প। funny story in bengali:-
বাস্তব হাসির গল্পঃ- ১
সরকারি দপ্তর ঘুরতে ঘুরতে নতুন জুতো, মানে চটি জোড়ার আয়ু অনেকটাই ক্ষয়ে গিয়েছিল। তাই বলে ওই মুল্যহীন চটি জোড়াও চুরি যাবে! বাংলায় এখন যদিও রাজনৈতিক কারণে জুতোর থেকে চটির দাম বেশি। তাই মন্দিরে সামনে থেকে আমার চপ্পল জোড়া নিয়ে ধাঁ হয়ে গেলো কেউ! যাইহোক বাজার কমিটির সভাপতি নিজের গাঁটের পয়সা দিয়ে এক জোড়া নতুন জুতো কিনে দিলেন। জানি এর পিছনে অনেক বড় মতলব আছে। জুতো দেওয়ার সময় কয়েকটি ফটো তুলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে, দাতা কর্ণ হিসেবে বাহবা কিনবেন।
ওই ফটো দেখিয়ে হয়তো পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট জোগাড় করবেন! তারপর সেখান থেকে কাটমানিতে , অমন জুতো কেন ,জুতা ফ্যাক্টরি খুলে ফেলতে পারবেন! সে যাইহোক আমরা সাধারণ জনগণ। খুব বেশি হলে টিভি ক্যামেরার সামনে , দুর্নীতি গ্রস্থ্য নেতাকে জুতো ছুড়ে মেরে একটু হম্বিতম্বি করব। পরে ঠিক চোর বদলে ডাকাতকে নির্বাচন করে আসবো।
ওসব ভেবে কাজ নেই, মনের আনন্দে নতুন জুতা পরে ফিরছি। অনেক সাবধানতা অবলম্বনের পরেও সাঁকো পার হবার সময় হোঁচট খেয়ে, জুতো জোড়া পা থেকে পরে গেলো নদীর জলে। ও মা! জুতো তো নয়, যেন নেতাদের ভাঁড়ি ভুঁড়ি! জলে পড়তেই জুতোটা বেমালুম ডুবে গেল! জীবনে অনেক রাজনৈতিক দলের ডুবে যাওয়া দেখেছি, কিন্তু চটী জুতো জলে ডুবে যাওয়ার মত বিরল ঘটনা এই প্রথম দেখলুম! বুঝতেই পাড়লাম, জুতো গিফট কারী ব্যক্তি একদিন হেবিওয়েট নেতা হবেন!
নতুন জুতা পায়ে ফোঁসকা পড়েছিলো। ভীষন কষ্টে কাঁন্না কাটি শুরু করে দিলাম। কারণ আমার বৌ ঐ জুতোর কথা জানে। বলেছিলো আমাকে খালি পায়ে বাড়িতে চলে যেতে, ওটা ওর ভাইকে উপহার দেবে। কান্না কাটি দেখে জল দেবতা এলেন। গল্প শুনলেন। গপ করে ডুব মারলেন জলে-
একটা সোনার জুতো এনে দেখালেন। আমি অত বোকা নাকি! ছোট্ট বেলায় কাঠুরিয়া আর জল দেবতার গল্পটা আমিও শুনেছি। আমি জানি খুশি হলে তো সোনার জুতো আর আমার জুতো দুটোই আমাকে দেবে। সোজা জানিয়ে দিলাম, সেটি আমার জুতো নয়! পরেরবার আবার হীরা জহরত দিয়ে কারুকাজ করা আরো একটা রূপার জুতো নিয়ে হাজির হলো। আমি সেটা নিতেও রাজী হলাম না। তখন সেই লোক কথা প্রচলিত গল্পের মতো আমার হারানো জুতো সহ, তিন জোড়া জুতা আমাকে দিয়ে দিলো। আমি মহা আনন্দে বাড়ি গেলাম।
বাড়ি যেতে বৌ সব কিছু শুনে, একটা ফন্দি আটলো। সে বলল ” আমি সাঁকো পার হবার সময় পরে যাবো জলে। তুমি কান্নাকাটি করলে, ওনি নিশ্চিত সোনার আর রূপার গড়া বৌ তোমাকে দিতে চাইবেন। তখন তুমি তোমার সততার প্রমান দিয়ে , আমাকে আর আমার সোনার, রূপার গড়া মুর্তি নিয়ে আসবে। আমরা রাতারতি অনেক বড়ো লোক হয়ে যাবো গো!”
বৌ যা বলে তাই শুনতেই হবে কারণ বৌ-রা গুগল এর থেকে বেশি জানে। তাই বৌ এর কথা মতো জলে যখন বৌ ডুবে গেলো , আমিও কান্না কাটি শুরু করলাম। তবে চোখে জল আনতে পিঁয়াজ এর সহযোগীতা নিয়েছিলাম।
জল দেবতা এলেন। সব শুনে, বলিউড অভিনেত্রী কেয়ারা আদবানীকে নিয়ে এসে বললেন, “এটা কি তোমার বৌ। “
আমি একটু ভেবে বললাম ” হ্যা এটাই আমার বৌ”
জল দেবতা রুষ্ট হয়ে বললেন।” তোমাকে আমি সৎ মানুষ হিসেবে ভেবেছিলাম। কিন্তু তুমি তো লোভী চরিত্রহীন পুরুষ, নিজের বৌকে চিনতে পারছো না”
ভীষন রেগে গেছে দেখে আমি জল দেবতাকে বললাম ” প্রভু আমার দিক থেকে একটু ভেবে দেখুন। আমি যদি কেয়ারা আদবানীকে না করে দিই, তো আপনি সারাকে নয়তো পল্লবীকে নিয়ে আসবেন, শেষ আমার নচ্ছার বৌকে নিয়ে আসবেন। পরে সন্তুষ্ট হয়ে , তিন জনকেই নিয়ে যেতে বলবেন। তখন বাড়ি গিয়ে বৌএর হাতে মারধর তো আমাকেই খেতে হবে। তারচেয়ে বরং কাজ করুন, আমার পাপের শাস্তি হিসেবে আমার বৌ টিকে ফিরত দিতে হবে না আর। নয়তো বৌএর হাতে আমার আজ খবর আছে!”
প্রেরক- মানব মণ্ডল।
উপরোক্ত হাঁসির গল্পটি পরিপূর্ণতা পেয়েছে যার কলমে-
পড়ুন-
মজার গোয়েন্দা গল্প- বিস্কুট রহস্য
বাস্তব হাসির গল্পঃ- ২
৩ বছর ৩ মাস ৩ দিনের পাকনা বাচ্চা গুড্ডু। সদ্য কথা বলতে শিখেছে। একদিন গুড্ডু তার বাবার সাথে একটি সভায় গেল। সেখানে একজন হেবিওয়েট নেতা আসবেন!
নেতা দেখছেন, গুড্ডু তখন থেকেই তার বাবাকে কি যেন জিজ্ঞেস করছে। কিন্তু তার বাবা তাকে বারংবার চুপ করিয়ে দিচ্ছেন। নেতা বললেন- “ছোট্ট বাচ্চাটির কথা আগে শুনব!” গুড্ডুর বাবা গুড্ডু কি বলেছে তা নেতা মশাইকে বলতে নারাজ। ওদিকে নেতা মশাই আবার জেনেই ছাড়বেন, যে গুড্ডু কি বলছে! তিনি নাকি বাচ্চাদের খুবই ভালোবাসেন।
গুড্ডুকে মাইক দেওয়া হল। গুড্ডু আধো আধো গলায় বলল- “কাকু, তোমার পেতে কি উনেক গুনো বাসচা আসে নাকি?” গুড্ডুর এই কথা শুনে উপস্থিত সবাই উন্মাদের মত হেঁসে উঠল!
নেতা মশাই নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে বললেন- “কেন তোমাকে কে বলল বাবু, আমার পেটে বাচ্চা আছে?”
গুড্ডু- “কেউ বনে নিই। যকন আমান মাসির ছেনে টুকুর জল্ম হুলো তকন মাসির পেত এতু বড় সিলও না, তুমার পেত অনেক বনও। তাই আমান মনে অয় তোমান পেতে অনেক বাসচা আসে! বনও না তোমার পেতে কত গুলও বাসচা আসে!”
নেতা মশাই কিছু বলতে যাবেন, এমন সময় পেছন থেকে কে যেন, চিৎকার করে বলে উঠল- “সেখানে একটি-দুটি নয়, আছে হাজারো বাচ্চার মিড-ডে-মিল, গুড়ো দুধের চুরি করা সম্ভার!”
নেতা মশাই সেই কথায় কান না দিয়ে বললেন- “বাচ্চা শুধু মায়েদের পেটেই, মানে মহিলাদের গর্ভ বা পেট থেকেই জন্ম হয় বাবা! ছেলের পেট থেকে না!”
গুড্ডু- “আমার মা বলেসে সব কিসুর বিতিকরম থাকে, আমি তুমার মত বড় পেত কারও দিকি নি! আমান মনে অয়, তমান পেতে অনেক বাসচা আসে!”
এদিকে গুড্ডুর বাবা ছেলের কথা শুনে আনন্দ তো পাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু লজ্জায় তার গাল লাল হয়ে যাচ্ছে। আর ওদিকে বিপুল জনতা হেঁসেই যাচ্ছে। আর স্টেজে সবার প্রিয় ইয়া বিশাল ভুঁড়ি যুক্ত হেবিওয়েট নেতা মশাই ছোট্ট গুড্ডুর প্রশ্নে কোণঠাসা!
আপনার লেখা গল্প পাঁঠাতে চাইলে যোগাযোগ করুন- charpatrablog@gmail.com -এ
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক গ্রুপ- গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
পড়ুনঃ-
18 টি জোকস। নতুন মজার জোকস।
“bastob hasir golpo।। funny story in bengali।। বাস্তব হাসির গল্প”
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।