বাংলা ফানি গল্প ভুতের গল্প তো অনেক শুনেছেন, কিন্তু কখনো কি মজার ভূতের গল্প শুনেছেন? বোধ হয় খুব কম শুনেছেন। আজ থাকছে এমনই একটি হাসির ভূতের গল্প। ভূতের সাথে ঘণ্টাখানেক নামে এই অসাধারণ হাসির গল্পটির প্রেরক মানব মণ্ডল।
বাংলা ফানি গল্প ভূতের সাথে ঘণ্টাখানেক। মজার ভূতের গল্পঃ-
তাঁরাপিঠ গিয়েছিলাম, বাপি মামার সাথে। নেশায় ঢুলতে ঢুলতে শশ্মান থেকে বেরিয়ে এসে টোটো ধরে আটলা গ্রাম, বাবা ক্ষ্যাপার জন্ম ভিটা পেরিয়ে গিয়ে ক্ষ্যাপি মায়ের থানের কাছে গিয়ে গাড়ি থামলো। সেখানে কাকতাড়ুয়ার মতো রোগা এক তান্ত্রিক সাধু দাঁড়িয়ে। কুমড়োর ফালির মতো তার চওড়া হাসি। আমাকে দেখে বললো “এ তোমার লেখক ভাগ্নে বাপি? নুন ছাড়া ডিম সিদ্ধ যেমন ভালো লাগে না তেমনই, দাড়ি ছাড়া লেখক কিন্তু মানায় না।”
রসিকতা ঠিক ভালো না লাগলেও হজম করে নিলাম। কারণ উনি নাকি তার সঙ্গে পাঁচটা ভুত ধরে রেখেছেন। তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই, ওদের মুলোর মতো দাঁত, কাস্তের মতো নখগুলো কেটে দিয়েছে আগেই। এই ভুত গুলো বিভিন্ন জমিদার বাড়ি থেকে ধরা। আমার কাজ ওদের সঙ্গে ইন্টারভিউর ছলে ভাব জমিয়ে জমিদার বাড়িতে কোথাও গুপ্তধন লুকানো থাকলে তা জেনে বার করা।
প্রথম বোতলটা খুলতেই প্রফুল্লতা সাথে তুলোর মতো সাদা বাতাস বেরিয়ে এলো। এসেই খুব মিষ্টি ভাষায় “ঠ্যাঙ কিউ” বললো কেউ একজন। গলা শুনে বুঝতে পারলাম একটা স্ত্রী ভুত। মেয়েদের সাথে আমি এমনিতেই কথা বলতে ভয় পাই, তারপর আবার এ মহিলা ভুত। কোষ্ঠকাঠিন্য ভোগা লোকের মতো বললাম “আপনি যদি সামনে প্রকট হন ভালো হতো, কারণ আপনার সাথে কথা বলতে সুবিধা হতো”
উনি বললেন “ইস্ আমি বললাম আমাকে আগে-ভাগেই একটু ছেড়ে দিতে, ওরা ছাড়লো না, বিউটি পার্লার না গিয়ে ইন্টারভিউ দেওয়া যায় নাকি? একে আমার চেহারা দেখেতে রানু মন্ডলের চেয়েও খারাপ হয়ে গেছে। আমার শুধু চোখটাই জ্বলজ্বল করছে। “
আমি বললাম “আমি তো প্রিন্ট মিডিয়ার লোক। ছবি না হয় পরে পাঠিয়ে দেবেন সামনা-সামনি কথা বলতে একটু সুবিধা হবে। আপনি মহিলা বলে লজ্জা পেলে অন্য কথা”
মহিলা ভুত টা বললো- “রাতের পৃথিবীটার মালিক শয়নকক্ষ সুন্দরী মহিলা, তা রাতের বেলায় আমি ভুত হয়ে ভয় পাবো কেন, তাছাড়া আমি শাকচুন্নি মানে বিবাহিত, তাই কিছু উল্টো পাল্টা করলে তোকে মেরে পাটলাস করে দেব তুই কি ভেবেছিস তোরা আমাকে ধরেছিস না আমি , আসলে একটু পাবলিসিটি চাই তাই ধরা দিয়েছি!”
আমি বললাম “ইন্টারেস্টিং পাবলিসিটি কেন?”
শাকচুন্নিটা বললো “মানে তোরা ফেসবুক, টুইটার, ইস্টাগ্রাম করে পাবলিসিটি করিস আমরা করলে দোষ? Google সার্চ করে দেখবি রামজি ফিল্ম সিটিতে রাতের বেলায় ভুতের উপদ্রব হয়। কারণ ওরা ফ্লিমে অভিনয় করতে চায়, ভুত বলে কি সাধ-আলাদ নেই।”
আমি বললাম “তা ঠিক…”
উনি বেশ উৎসাহ পেয়ে বললেন “কোলকাতায় national লাইব্রেরি তে ভুত আছে, কারণ ভুতেরা বই পরতে ভালোবাসে। কিন্তু কোনো হাসপাতালে ভুত পাবে না। শরীর নেই তাই শরীর খারাপ হয়না। রেড রোডে ট্যাক্সি দাঁড় করানো ভুতের গল্প শুনবে কারণ আমরা ভুতেরাও লং ড্রাইভে যেতে ভালোবাসি। রাজ কিরন হোটেলের নাম শুনেছেন। সুন্দর এই হোটেলটিকে ভারতের সব থেকে বড় ভৌতিক হোটেল হিসেবে অনেকেই দাবি করেন। হোটেলের রিশেপশনের কর্নারে থাকা একটা ঘরকে ভূতুড়ে ঘর হিসেবে দাবি করে থাকেন সবাই। মানে কি দাঁড়ালো ভুতরা ঘুরতে যেতে ভালোবাসে।”
আমি বললাম “হুঁ”
more from the Author- ছোটদের ভূতের গল্প। দিদিমণি
উনি বললেন “আচ্ছা আমি তো বলে যাচ্ছি আপনিতো কিছুই জিজ্ঞেস করছেন না…”
আমি হেসে বললাম “আসলে মহিলাদের সাথে আমি কথা বলতে বিব্রত বোধ করি, আমার স্ত্রী আমার শক্তি, কিন্তু বাকি সব মহিলারা আমার দুর্বলতা”
কথা শুনেই দেখি উনি আমার সমানে হাজির হলো। হেসে বললো “পেত্নী আর পত্নী দুটোই সমার্থক শব্দ জানেন তো, ঘাড়ে চাপলে নামবো না সহজে।”
আমি বললাম “না না আমি এখনো সিঙ্গেল “
পেত্নী বললেন “এ বাবা বয়সতো অনেক হলো বিয়ে করলেন না কেন?”
আমি বললাম “সে দুঃখের কাহিনী নাইবা শুনলেন।”
উনি বললেন “দুঃখ এর কথা ভাগ করলে ব্যাথা কমে, বলে ফেলুন না, আমারও জানার জন্য শরীলটা কেমন যেন ওটাং-পাটাং করছে।”
বললাম “বিয়ে করার ইচ্ছা যে ছিলো না, তা নয়। চাকুরী পেতে দেরি হয়ে গেলো। যাইহোক প্রথম দেখাতেই পাত্রী পছন্দ হয়ে গেলো। মিষ্টি মুখ করাতে পাত্রীর মা এসে যখন আবার এলেন, তখন বলেই ফেললাম আপনাকে কিন্তু খুব চেনা চেনা লাগছে। উনি বললেন, ‘ থাক সে কথা পরে হবে।’ কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা, অনেক পেরাপেরি করতে রেগে গিয়ে বললেন ‘ দুই বছর পিঁপড়ার মতো পিছু পিছু ঘুরে সরস্বতী পূজার দিন love letter দিলে তাকে তুমি ভুলে গেলে? তাহলে, আমার মেয়ের জন্মদিন বিয়ে বার্ষিকী দিন কিভাবে মনে রাখবে তুমি? রোজ তো ঝগড়া তোমাদের। বিয়ে ভেঙে গেলো, আর পাত্রি দেখতে যেতে সাহস পাইনি”
গল্পটা শুনে উনি গাড়ি ইনঞ্জিন স্টার্টের মতো একটা হাসি হাসলেন।
মনে মনে কষ্ট হলো তাই প্রসঙ্গ ঘুরাতে জিজ্ঞেস করলাম “আপনি কি করে ভুত হলেন। “
উনি বললেন “আমার স্বামীর কপালের দোষে”
আমি বললাম “সে কি কথা স্বামীকে দোষ না দিয়ে তার কপালকে দোষ দিচ্ছেন যে!”
উনি বললেন “আমার স্বামীর সাথে সেদিন আমার খুব ঝগড়া হয়েছিলো। মুড অফ নিয়ে কাজে গিয়ে চাকরিটা হারালো। মনের দুঃখে ঘরের বসে ক্লোড-ড্রিংক্স ঢেলে খেতে যাচ্ছিল, আমি দেখে ওটা ওর হাত থেকে নিয়ে ঢক ঢক করে খেয়ে ফেললাম। কিন্তু ওর কপাল খারাপ, ও ক্লোড-ড্রিংক্সে বিষ মিশিয়ে ছিলো, তাই আমার গল্পটা ওখানেই end হয়ে গেলো। “
আমি একটু দীর্ঘ শ্বাস ফেলে দেখলাম পূর্ব আকাশটা লাল হবে হবে করছে। তাই আমাদের আড্ডাটা আজ এখানেই শেষ করতে হলো।
গল্পের লেখকঃ- মানব মণ্ডল (facebook)
“বাংলা ফানি গল্প। মজার ভূতের গল্প। হাসির ভূতের গল্প। সেরা হাসির গল্প। new bengali funny story”
For regular updates- facebook-গল্প আর গল্প টেলিগ্রাম- ছাড়পত্র
Recommended by ছাড়পত্র- বিস্কুট রহস্য। মজার গোয়েন্দা গল্প
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।