আজকের নতুন মজাদার হাসির গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে ফেসবুক। ফেসবুকের মজাদার প্রেমকে ঘিরেই এই গল্পটি। গল্পটি ভাল লাগলে জানাতে ভুলবেন না যেন।
নতুন মজাদার হাসির গল্পঃ- “ফেসবুকের পেলেম”
আমাদের ক্লাবের নাম হল সদা সিঙ্গেল ক্লাব। নাম শুনে ঠিক ধরেছেন, এই ক্লাব কাদের জন্য। এই ক্লাবের সূচনা তথা ইতিহাস মোটেও সাধারণ নয়। অনেক হন্যে হয়ে তন্যে করে খুঁজে খুঁজে সদস্য বেড় করেছিলাম প্রথমে। আর আজ দেখতে দেখতে আমাদের সদা সিঙ্গেল ক্লাবের সদ্য সংখ্যা ২৯৯। উঁহুঁ শপিং মলের মত সংখ্যা দেখে চিন্তা করবেন না, ওই একজন যিনি বাকি তিনি হলেন আপনি, কারণ আপনিও যে সিঙ্গেল সেটা বেশ ভালো ভাবেই জানা আছে আমার।
এই ক্লাবের সদস্য হতে গেলে রেজিস্ট্রেশন বাবদ ১১ টাকা আর নিজেকে সিঙ্গেল প্রমাণ এর যাবতীয় নথিপত্র জমা দিতে হবে।
যাক গে কথা কথা লেপ কাঁথা করে লাভ নেই, যেটা বলতে চাইছি সেই প্রসঙ্গে আসি। আমাদের ক্লাবে নানান বিষয়ে কথা হয়, আর এদের মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় বিষয় হল মেয়ে পটানোর থেরাপি। ২৯৯ জন সদস্যের মাথা ঘেঁটে ৮৯ হাজার ৪০১ খানা উপায় বেড় করেছি ঠিকই, কিন্তু আসল কথা হল এত গুলো উপায় থাকা সত্ত্বেও সবাই সিঙ্গেল।
এমনকি একে অপরকে এখানে পরামর্শ দেয় কীভাবে মেয়ে পটাতে হয়, কিন্তু খবর নিয়ে দেখো গে, যে মেয়ে পটানোর টিপস দিচ্ছে সে নিজেই জন্ম থেকে সিঙ্গেল।
আমাদের ক্লাবের নতুন সদস্য মিন্টু। একদিন ক্লাবে মেয়ে পটানোর থেরাপি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, হঠাৎ করেই দুরন্ত এক্সপ্রেসের মত হাজির সে।
বাকি ২৯৭ টা মাথা ওর দিকে তাকিয়ে। এসেই মিন্টু বাবাজির বক্তব্য, ফেসবুকে সে একটা মেয়েকে দেখেছে হেব্বি কিউট, আর তার শরীরের চামড়া নাকি মিষ্টি কুমড়োর মত ধবধবে আর লাউয়ের মত সিল্কি, তার চুল নাকি রেশমি কাপড়ের সুতোর মত ওয়াও।
মিন্টু বাবাজির আবদার হল, ওকে এমন একটি মন্ত্রণা দেওয়া হোক, যাতে করে সে ওই মেয়েটাকে নিজের বাগে আনতে পারে।
আমাদের সিঙ্গেল মন্ত্রী পরিষদের সমস্ত সদস্যরা সবাই চিন্তা করতে লাগল কি টিপস দেওয়া যায়। এরপর ২৯৭ জনের ২৯৭ টি টিপসের মধ্যে ৫ টি টিপস সবার সম্মতি ক্রমে আমাদের সেনেট এ পাশ হল।
পড়ুনঃ- মাতালের হাসির গল্প
এই টিপস গুলির সম্মিলিত রূপ এমন ছিল-
মিন্টু কে প্রথমে মেয়েটার প্রোফাইল ভালোভাবে ঘেঁটে দেখতে হবে, মেয়েটা কি কি জিনিস ভালোবাসে সেগুলির একটি তালিকা তৈরি করতে হবে, মেয়েটার প্রোফাইল দেখে বুঝে নিতে হবে সে কি কি জিনিস ভালোবাসে। এরপর মিন্টু কে সেই সব জিনিসগুলি তার প্রোফাইলে পোস্ট করতে হবে, সে মেয়েটাকে ট্যাগ করতেও পারে।
যতদিন পর্যন্ত মেয়েটি কোন কমেন্ট না করে ততদিন পর্যন্ত এরকম পোস্ট করেই যেতে হবে। আর মেয়েটার ভালো লাগার জিনিস গুলিতে মিন্টু কে কমেন্ট করতে হবে। সুন্দর সুন্দর কমেন্ট।
এই থেরাপি ১০ দিন ব্যবহার করে দেখুক মিন্টু, তারপর কাজ না করলে পরবর্তী নতুন টিপস দেওয়া হবে।
দেখতে দেখতে কেটে গেল ৯ দিন। ১০ দিনের মাথায় মিন্টু লাড্ডু নিয়ে হাজির, মেয়েটা মিন্টু কে ম্যাসেজ করে কথা বলে।
আমি কেবলা কে মার্কেট এ পাঠিয়ে দিলাম, কেননা মিন্টু আমাদের ক্লাবের প্রথম সদস্য যে একজন মেয়েকে বাগে এনেছে, তাই তাকে জয় মালা পড়াতে হবে।
এদিকে আমরা সবাই উৎসুক মিন্টু কীভাবে কি করল।
মিন্টু আগ্রহ ভরে বলতে লাগল- মেয়েটার ফেসবুকে কুকুর নিয়ে বেশ কয়েকটা পোস্ট দেখেছি। এরপর আমি কুকুরের ছবি পোস্ট করতে শুরু করি। আমার স্কুলের বন্ধুদের কাছে নানান রকমের কুকুর আছে, আমি ওদের কুকুর নিয়ে পিক পোস্ট করতে থাকি। আর কয়েকবার মেয়েটাকে শুদ্ধ আরও বেশ কয়েকজন কে ট্যাগ করি।
এরপর একদিন মেয়েটা কমেন্ট করে, ওয়াও নাইস ডগ। এরপরে আমিও কমেন্ট করি ওর প্রোফাইলে এটা অমুক কুকুর এটা তমুক কুকুর। এটার বিশিষ্টতা এমন ওটার অমন। ব্যাস ফাঁস গেয়ি চিড়িয়া জাল মে।
তারপর একদিন বললাম আমরা কি পার্সোনাল কথা বলতে পাড়ি! এরপর মেয়েটার সঙ্গে ম্যাসেঞ্জার এ কথা শুরু, এরপর WhatsApp এ।
পড়ুনঃ- হাসির গল্প- গ্যাস জ্ঞান
ইতিমধ্যে হেলতে দুলতে পিকলু এর আগমন। ১২ দিন থেকে সে ক্লাবে আসেনি। মিন্টুর সঙ্গে ওর পরিচয় করিয়ে দিলাম। সে মিন্টুকে দেখেই বলল- তুই মিন্টু সরকার, কুকুর ভালোবাসিস, বাড়ি নিমতলা ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা সবাই অবাক। কেননা পিকলুর সাথে এটাই প্রথম দেখা মিন্টুর।
আমরা অবাক হয়ে বললাম, তুই কীভাবে ওর সম্পর্কে এত কিছু জানিস।
পিকলু বলল, তোরা সবাই জানিস আমি ফেসবুকে একটা মেয়েদের ফেক প্রোফাইল চালাই, আর মিন্টু আমাকেই ম্যাসেজ করেছে। আর তোরা তো জানিস কুকুর এর ফটো পোস্ট করা আমার স্বভাব। মিন্টু আমাকে ম্যাসেজ করেছে আমিও ওকে ম্যাসেজ করেছি।
এদিকে মিন্টু মাথায় হাত দিয়ে বসে পরেছে, বেচারি কত আনন্দে ছিল কয়েক সেকেন্ডে তার আনন্দ, মাটি হয়ে কাঁদায় পরিণত হল। সে রেগে জিজ্ঞাসা করল তুই বলিস নি কেন যে তুই ছেলে।
পিকলু বলল, তুই কি কখনো জিজ্ঞাসা করেছিস আমি ছেলে নাকি মেয়ে! তুই ম্যাসেজ করতি আমিও করতাম। ব্যাস হয়ে গেল খেল খতম।
তুই কখনো আমার পিক ও চেয়ে দেখিস নি, কোন একটা ডিপি দেখে প্রেমে পড়েছিস, এতে আমার আর দোষ কীসের।
আমরা সবাই হতভম্ব। আর এদিকে মিন্টুর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে মালা নিয়ে কেবলার আগমন। সে আমাকে বলল দাদা এই নাও মালা। আমি বললাম মালাটা তুই পিকলুর গলায় পড়িয়ে দে।
বেচারি কেবলা কিছু না বুঝে পিকলুর গলায় মালা পড়িয়ে দিয়ে সবার হাসি মুখের দিকে দেখতে লাগল।
ব্ল্যাক শ্যাডো
গল্পের প্লটে-
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
পড়ুনঃ- হাসির ভূতের গল্প অসাধারণ শিক্ষণীয় গল্প
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- ফেসবুক Group - গল্প Junction ফেসবুক- ছাড়পত্র টেলিগ্রাম- charpatraOfficial WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)
নতুন মজাদার হাসির গল্প প্রচণ্ড হাসির গল্প new bengali funny story.
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।