আজকের গভীর ভালোবাসার গল্পতে দেখবেন রেগে থাকা মেয়েটির রাগ ভাঙ্গাতে গিয়ে ছেলেটি নিজেই রেগে বসে আছে। শেষে কি রাগ ভাঙল তাদের শেষ পরিণতিই বা কি পুরোটা জানতে পারবেন গল্পটিতে।

গভীর ভালোবাসার গল্পঃ- “নীড়”

সুদীপ অনেকক্ষণ ধরে ফোনের স্ক্রিনের দিকে চেয়েই বসে আছে । বারেবারে ভাবছে কখন নোটিফিকেশন আসবে! কিন্তু না কোনো ম্যাসেজ আসছে না। না না এটা আর মেনে নেওয়া যায় না। প্রত্যেক দিনের মজা পেয়ে গেছে মেয়েটা ,একটু তেই রাগ করবে , তারপর কথা শোনাবে আবার নিজেই ফোন সুইচ অফ করে আমায় টেনসন এ ফেলবে। এটা আমার পক্ষে আর মেনে নেওয়া সম্ভব নয় , কিছুতেই নয়।

মিনিট পাঁচেক পর হঠাৎ সুদীপের ফোন টা বেজে উঠলো। বারবার রিং হচ্ছে দেখেও সুদীপ কিছুতেই ফোন টা তুললো না । রেগে মেগে আবার নিজেই ফোন টা অফ করে রেখে দিল। দেয়ালে রাখা ছবি টার দিকে তাকিয়ে কিসের ভাবনায় ডুব মারলো এক্কেবারে…
অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে ,প্রথম দেখা হয়েছিল দিপার সাথে। আষাঢ় মাসের প্রবল বর্ষন , বারিধারা বয়ে চলেছে রাস্তার ধার সমেত আমার চক্ষু দিয়ে। আসলে সেদিন আমার প্রাক্তন প্রেমিকা নিজের বিয়ের কার্ডটা আমার হাতে থামিয়ে চির বিদায় দিয়ে , চলে গেছিলো ওই বাস স্ট্যান্ড এর মাঝের গলিটার চায়ের দোকানের সামনে।

গভীর ভালোবাসার গল্প
গভীর ভালোবাসার গল্প

কম মাইনের একটা বেসরকারি কোম্পানির কর্মচারীর সাথে সে প্রেম করতে পারলেও বিয়ে করতে পারবে না , ” আমি নাকি তার ওকাত এর বাইরে ” এই ছিল তার শেষ উক্তি। আমিও কথা না বাড়িয়ে তাকে চলে যেতে দিলাম । আর ভাগ্যিস সেদিন ঐভাবে ও যাওয়ার পরেই প্রবল ধারায় বর্ষণ শুরু হলো। আমি বাস স্ট্যান্ড এর ছোট ছাউনীটার ভেতরে আশ্রয় নিলাম। সমানে চোখ দিয়ে বারিধারা বর্ষার বারিধারা কে যেন টেক্কা দিতে চাইছে।

হঠাৎ পেছন থেকে কে যেন , পিঠে খুব জোরে একটা থাপ্পর মারলো। কিন্তু তাতেও আমার কিছুই যায় আসল না , হঠাৎ করে দেখি কে খুব জোরে কান টা কষিয়ে মলতে মলতে বলছে ” লজ্জা করে না আপনার, আমার প্রিয় রুমালটার ওপর বসে পড়েছেন , নিজের এই ভেজা পোশাক নিয়ে , এবার আমি মুখ মুছবো কি করে ? ” উঠুন উঠুন নয়তো টেনে ফেলে দেবো উপর থেকে, বলে রাখলাম ।

মুখ ফিরিয়ে দেখলাম , একটা শ্যামলা বর্ণের ছিপছিপে গড়নের মেয়ে টানা টানা তার সুবিস্তৃত চোখ দিয়ে আমার দিকে করাল ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

হঠাৎ কানে এলো , ” ললিপপ খাবেন নাকি ? ছোট্ট বাচ্চাদের মতো কাঁদতে বসেছেন যে , সামান্য থাপ্পড় মারলাম এতেই কেঁদে ফেললেন , উফফফ কিসব মানুষ এর অবস্থান এই পৃথিবীতে। ধুর ধুর আমার রুমাল টায় নষ্ট করে দিলো ” এই বলে মেয়েটা আমার সামনে মনে মনে কি হিজী বিজি বকতে বকতে বেরিয়ে গেলো , ছাতা নিয়ে।

পড়ুনঃ- প্রথম দেখায় প্রেমে পরার গল্প 

এরপর থেকে প্রায় দিন বাস স্ট্যান্ড এ আমাদের দেখা হতো । আমায় দেখলেই ও বাচ্চাদের মতো ভেংচি কেটে মুখ ফিরিয়ে নিতো। বেশ বুঝতে পারছিলাম , দেখতে বড়ো হলেও মেয়েটার মনটা এক্কেবারে ছোট্ট বাচ্চাদের মতো। আর ওর সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে প্রাক্তন এর ওই অভিজ্ঞ অহংকারী মুখটা একবারও মনে পড়ত না। তাই বেশ কৌতূহল জন্মেছিল মেয়েটাকে নিয়ে। আর অবাক করা বিষয় ছিল , সে আমায় দেখলেই ঝগড়া করতে চলে আসতো , না না প্রথম প্রথম অবাক হলেও পরে বুঝলাম ও কথা বলার বাহানা খোঁজে তাই এই পন্থা অবলম্বন করে। এভাবেই একে অপরকে চেনা জানার শুরু হলো। শেষ মেষ কয়েক মাস চেষ্টা করার পর বন্ধুত্ব আর বছর ফিরতেই বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসার বন্ধনে জড়িয়ে পড়লাম দুজনে।

আর আজ দেখুন সকাল সকাল কল করেই যা না তাই ভাষায় অপমান করেছে , আমার দোষ এটুকুই , আমি বলেছিলাম নিজে ড্রাইভ করে অফিস যাবে না , ড্রাইভার কে সাথে নিয়ে যাবে। কিন্তু কে সোনে কার কথা , আমি নাকি আগের দিন রাত্রে ওর কথা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তাই সে আমার কোনো কথা শুনবে না । রাগ করে আবার ফোন অফ করে দিয়েছে। আমিও আজ আর ফোন অন করবো না । জানি রাত একটা হলেও সে এখানে ক্ষমা চাইতে আসবে তাই না ঘুমিয়েই ব্যালকনি এর সামনে বসে আছি ওর অপেক্ষায়।

সকাল হয়ে গেছে , সারাটা রাত কাটলেও সে আমার কাছে ফেরেনি। কেমন যেন একটা দুশ্চিন্তা কাজ করছে মনে। ফোন টা হাতে নিয়ে সোজা ওর বাড়িতে রওনা হলাম। পৌঁছে দেখি সব শেষ !

ওদের মাঝে যাবো সেই মানসিক অবস্থা আমার নেই , দূরে গিয়ে ফোন টা অন করতেই দেখলাম দিপার ৩০ টা ম্যাসেজ আর ১৬ টা মিসড কল।

bengali best love story
bengali best love story

সব কটাই ভয়েস ম্যাসেজ করেছে ও , তাতে বারেবারে বলছে , ফোন টা তুলো , আমি রিজাইন দিয়ে চলে এসেছি , খুব কষ্ট হচ্ছে আমার , ড্রাইভ করতে পারছি না , ওরা অনেক অপমান করেছে আমাকে , প্লিজ তুমি এসো , প্লিজ ,….. তারপর ওর বিকট চিৎকার এর আওয়াজ উঠতেই ম্যাসেজ টা শেষ হয়ে গেলো। বুঝতে পারলাম আমার জেদ , আমার জীবন শেষ করে দিলো। আর কিছু দেখতে পারছিনা আমি সব অন্ধকার আমার কাছে … যেন তলিয়ে যাচ্ছি কোনো অন্ধকার গহ্বরে…

বারবার কলিং বেলের আওয়াজ এ আমার তন্দ্রা টা ভেঙে গেলো। ছুট্টে গিয়ে দরজা খুলতেই , দিপা খুব জোরে কান টা মলে দিলো। আমি ওকে বারেবারে মুখে হাতে স্পর্শ করে যাচাই করলাম , সত্যি আমি ঠিক দেখছি তো ? মুহূর্তে ওকে বুকের মধ্যে টেনে নিলাম। জড়িয়ে ধরে কেঁদেই চলেছি আর সেও আমার কান্না দেখে নিজেও কাঁদতে শুরু করেছে , বারেবারে আমার কাছে ক্ষমা চাইছে। আমিও নিশ্চুপ ভাবে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে সব কথা শুনে যাচ্ছি…

পড়ুনঃ- ভয়ানক ভূতের গল্প 

ভালোবাসার মানুষটা কাছে থাকতে তাকে গুরুত্ব দেওয়াটা যে কতটা জরুরি সেটা সেদিন ভালো মতোই টের পেয়ে গেছিলাম । তাই আজ দেখুন পাগলিটাকে নিয়ে দশটা বছর কাটিয়ে দিলাম , হ্যাঁ বয়স ওর ও হয়েছে তবে পাগলামি গুলো বয়সের সাথে সাথে আরো বেড়ে চলেছে । তবে আমি এতেই খুশি ….. কারণ ওর মধ্যেই যে আমার বসবাস।

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 

সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

পড়ুনঃ- 

না পাওয়া ভালোবাসার গল্প- অসমাপ্ত প্রেম

একে অপরকে বুঝতে পাড়ার গল্প  
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

ছাড়পত্র এর WhatsApp community 

WhatsApp Group- ছাড়পত্র () 

সুন্দর গভীর প্রেমের গল্প। গভীর ভালোবাসার গল্প। 1 new bengali best love story

Spread the love

Leave a Reply