আমাদের মধ্যে সবসময় কি কেন কিভাবে ইত্যাদি সম্বন্ধীয় প্রশ্নের শেষ নেই। এমনটা কেন হয়? হুম এমনটা কেন হয়, অন্য কিছু হয়না কেন? এই চিন্তা গুলি আপনার মধ্যে হয়ত অবশ্যই এসে থাকে। আজ আমরা এরকমই কিছু অজানা তথ্য জানতে চলেছি, যেগুলি আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়ত জানে না।
এমনটা কেন হয়? মজাদার তথ্য
জল দিয়ে আগুন নেভানো যায় কেন?
আমরা জানি যে, দহনের জন্য অক্সিজেন খুবই দরকারি। অক্সিজেনর উপস্থিতিতে কোনো দহনশীল পদার্থ যখন পর্যাপ্ত উষ্ণতার সংস্পর্শে চলে আসে তখন একটি শৃঙ্খলের বা চেনের সৃষ্টি হয়। যখনই এই সম্পর্কটি স্থাপিত হয় ঠিক তখনই কোনো পদার্থে আগুন লেগে যায়। আগুন একবার জ্বলা শুরু হলেই এই চেনটি আরও মজবুত হয়, এবং আগুন জ্বলতে থাকে ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত না, এই পুরো শৃঙ্খলটি নষ্ট হয়। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই শৃঙ্খলটি নষ্ট হয়, দহনশীল বস্তুটি পুরোটাই যখন পুড়ে যায় তখন। দহনশীল বস্তু+অক্সিজেন+ পর্যাপ্ত উষ্ণতা = আগুন
সুতরাং বাইরে থেকে এই চেনটিকে বা শৃঙ্খলটিকে যদি ভেঙ্গে দেওয়া যায়, তাহলেই আগুন নেভানো সম্ভব। যদি আগুনে জল দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে, অক্সিজেনের জোগান সাময়িক ভাবে কমে যায়, এবং পাশাপাশি দহনশীল বস্তুটিও অনেকটা ভিজে যায়, যার ফলে এই শৃঙ্খলে কিছুটা বাঁধা পড়ে। এভাবে অনেকটা জল দেওয়া হলে এই শৃঙ্খলটি ভেঙ্গে যায় এবং আগুন নিভে যায়।
আবার কার্বনডাইঅক্সাইড প্রয়োগ করে ঠিক একই ভাবে এই শৃঙ্খলে বাঁধা প্রদান করা হয় এবং একসময় আগুন নিভে যায়।
![জল দিয়ে আগুন নেভানো যায় কেন এমনটা কেন হয়](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
উকিল কালো কোর্ট এবং সাদা শার্ট পড়ে কেন?
আপনার মনে কি কখনো এই প্রশ্নটি এসেছে? যে উকিল কালো রঙের কোর্টই পড়ে কেন? এর পেছনে বিভিন্ন কারণ বিদ্যমান। যেমন-
প্রথম দিকে উকিলরা সাধারণ মানুষদের মতই সাধারণ বস্ত্র পরিধান করতেন, কিন্তু উকিলদের জন্য একটি বিশেষ পোশাক নির্বাচন করা হয় ১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দের গোঁড়ার দিকে।
কালো রং সাধারণত আজ্ঞাপালন, সম্বন্ধ অধিকারের প্রতীক। সুতরাং এই রঙটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ ভাবে সম্বন্ধ স্থাপন, আজ্ঞাপালন প্রভৃতি বোঝানো হয়ে থাকে।
আপনি হয়ত একটি কথা অবশ্যই শুনেছেন যে, আইন নাকি অন্ধ। অর্থাৎ এই কালো রঙের মাধ্যমে দৃষ্টিহীনতাকেও বোঝানো হয়ে থাকে। আমরা জানি যে, একজন দৃষ্টিহীন ব্যক্তি কখনো কারো পক্ষপাতিত্ব করতে পারেরননা। ঠিক সেভাবেই উকিলদের কালো পোশাক পড়ার নিয়ম রয়েছে। যাতে তারা অন্ধ ব্যক্তির মত কারো পক্ষপাতিত্ব না করেন এবং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করেন।
আবার আপনি হয়ত লক্ষ্য করেছেন যে, উকিল কালো কোর্টের সাথে সাদা শার্ট পড়ে থাকেন। এর কারণ হল- সাদা রং হল সত্যতার প্রতীক। সাদা এবং কালোর কম্বিনেশন অর্থাৎ উকিল কোনো বিভেদ না করে, সত্যতার পথে বিচারব্যবস্থা পরিচালনা করবেন। যাতে করে আইনের উপর মানুষের বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
![উকিল কালো কোর্ট এবং সাদা শার্ট পড়ে কেন অজানা তথ্য Advocate Salemane Phafane](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
আবার আরেকদল মানুষের মতে, কালো রং-এর সাধারণত গরম বা তাপ শোষণ করার ক্ষমতা রয়েছে। উকিলরা যখন বিচারকার্য করে থাকেন তখন তারা প্রচুর পরিমাণে মাথা খাটিয়ে থাকেন, যার ফলে শরীরে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়, এই তাপকে শোষণ করে নেওয়ার জন্যই উকিলরা কালো পোশাক পড়ে থাকেন।.
সেই যাই হোক, এই কারণ গুলির মধ্যে কোন কারণটি আপনার সঠিক মনে হয়েছে তা আমাদের জানাতে ভুলবেন না যেন।
পড়ুনঃ- বিস্ময়কর তথ্য
আমরা নিজেরা নিজেদের সুড়সুড়ি দিতে পাড়িনা কেন?
আপনাদের একদম সহজ ভাবে বোঝাই। আমরা নিজেই নিজেকে যখন সুড়সুড়ি দিই তখন আমাদের মস্তিষ্ক পূর্বে থেকেই প্রস্তুত থাকে, কিন্তু যখন আমাদের অন্য কেউ সুড়সুড়ি দেয়, আমাদের মস্তিষ্ক পূর্বে থেকে প্রস্তুত থাকেনা। আমরা যখন নিজেই নিজেকে সুড়সুড়ি দিয়ে থাকি তখন আমাদের মস্তিক আগে থেকেই জেনে গেছে যে এখন সুড়সুড়ি দেওয়া হবে, এবং এটি নিরাপদ যার ফলে সে কোনো রকম প্রতিক্রিয়া করেনা। আবার অন্যদিকে যখন অপর কোনো ব্যক্তি আমাদের সুড়সুড়ি দেয়, আমাদের মস্তিষ্ক এই ব্যাপারে আগে থেকেই অবগত থাকে না, তাই মস্তিষ্ক, একপ্রকারের বিপদের সংকেত পায়, যার ফলে আমাদের সুড়সুড়ি অনুভূত হয়।
সে নাহয় ঠিক আছে কিন্তু আমরা সুড়সুড়ি দিলে প্রচণ্ড পরিমাণে হাঁসতে থাকি কেন জানেন? আমাদের শরীরের যেসমস্ত স্থানে সহজেই সুড়সুড়ি অনুভূত হয় যেমন- বাহুর নীচের অংশ, পেট, পায়ের তালু ইত্যাদিতে নিউরোনের সংখ্যা বেশি থাকে। যার ফলে এই অংশগুলি একটু বেশি সংবেদনশীল। যখন আমাদের কেউ সুড়সুড়ি দেয় তখন আমাদের শরীরে একপ্রকার নার্ভ আমাদের মস্তিষ্ককে বিপদ সংকেত জানিয়ে দেয়, আমদের মস্তিষ্ক এই সংকেতটি বিবেচনা করে দেখার পড়, যখন বুঝতে পাড়ে যে, এটি কোনো বিপদ নয়, তখন তার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আমাদের হাঁসি বেড় হয়ে আসে। বিশ্বাস করুন আর নাইবা করুন এই হাঁসি হল ভয় মিশ্রিত হাঁসি।
![আমরা নিজেরা নিজেদের সুড়সুড়ি দিতে পাড়িনা কেন এমনটা কেন হয়](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
এই প্রসঙ্গে আপনাকে জানিয়ে রাখি যে, মানুষের যেমন সুড়সুড়ি লাগে ঠিক তেমনই ইঁদুরেরও সুড়সুড়ি লাগে। ইঁদুরকে সুড়সুড়ি দিলে সে একপ্রকার আওয়াজ বেড় করতে থাকে।
পড়ুনঃ- কি ও কেন?
সাবানের ফেনার রং সবসময় সাদা হয় কেন?
বাজারে বিভিন্ন রঙের সাবান আপনি হয়ত অবশ্যই দেখেছেন, বা ব্যবহারও করেছেন। কিন্তু সাবান ব্যবহার করার সময় আপনি হয়ত অবশ্যই দেখেছেন যে, ফেনার রং সাদা হয়। কিন্তু আপনার মনে কি কখনো এই প্রশ্নটি এসেছে যে, সাবানের রং লাল বা বিভিন্ন রঙের হলেও তার ফেনার রং লাল হওয়ার কথা কিন্তু তার ফেনার রং সাদা হয় কেন?
আপনার মনে আছে কি না জানিনা, আমাদের ছোট বেলায় বিদ্যালয়ে পড়ানো হয়েছিল, কোনো বস্তুর নিজস্ব কোনো রং হয়না, সেই বস্তুর উপর সূর্যের আলো পড়ার পড়, সেই বস্তুটি সূর্যের আলোর মধ্যে উপস্থিত রংগুলিকে শোষণ করতে থাকে, এবং যে রংটি অবশিষ্ট থাকে অর্থাৎ যে রঙটিকে সেই বস্তুটি প্রতিফলিত করে, সেটিই আমরা বস্তুটির রং দেখে থাকি।
এই নিয়ম অনুসারে কোনো বস্তু যদি তার উপর পতিত হওয়া সূর্যের রশ্মি বা আলোর বিভিন্ন রংগুলি পুরোপুরি শোষণ করে নেয়, তাহলে সেই বস্তুটি কালো দেখায়। আবার সেই বস্তুটি যদি রশ্মির সব রংগুলিকে প্রতিফলিত করতে পাড়ে তাহলে সেই বস্তুটি সাদা দেখায়।
ঠিক একই নিয়ম কাজ করে সাবানের ক্ষেত্রেও। সাবানের ফেনা কোনো কঠিন পদার্থ নয়, এটি হল জল এবং হাওয়ার ক্ষুদ্র এককে গঠিত একটি পাতলা আবরণ। এই পাতলা আবরণগুলি পরস্পর মিলিত হয়ে গোল-গোল আকার ধারণ করে, আমরা এই ছোট ছোট গোল গুলিকে বুদ্বুদ বলে থাকি। আসলে সাবানের ফেনা অসংখ্য ছোট ছোট এরকম বুদ্বুদ দিয়ে গঠিত।
সূর্যের রশ্মি বা আলো সাবানের একটি বুদ্বুদের মধ্যে প্রবেশ করা মাত্রই এটি দিশাহীন ভাবে নানান দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অর্থাৎ বুদ্বুদের অভ্যন্তরে সূর্যের কিরণ কোনো একটি পথে না গিয়ে বিভিন্ন পথে ছড়িয়ে পড়ে। আপনি হয়ত কোনো বড় বুদ্বুদের মধ্যে লক্ষ্য করেছেন যে, বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ দেখা যায়, ঠিক এখানেই বিজ্ঞানের নিয়ম- কোনো বস্তু যদি সাতটি রঙ কেই প্রতিফলিত করে তাহলে সেই বস্তুটি সাদা দেখা যাবে, এই নিয়মটি কার্যকর হয়ে থাকে।
![সাবানের ফেনার রং সবসময় সাদা হয় কেন কি ও কেন মজাদার তথ্য](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
এবার আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পাড়ে, তাহলে সাবানের রঙটি কোথায় যায়। আসলে সাবানের রঙটি জলে মেশার সাথে সাথে স্বচ্ছ হয়ে যায়, এতটাই স্বচ্ছ হয়ে যায় যে, আমরা এত বুদ্বুদের মধ্যে সাবানের সেই রঙটিকে দেখতে পাইনা।
পড়ুনঃ- ইতিহাসের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা
আপনি কি এই অজানা তথ্যগুলি জানতেন? প্রতিদিনের আপডেটের জন্য আপনি আমাদের ফেসবুক পেজ এবং আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন হতে ভুলবেন না। আর আমাদের হয়ে লিখতে চাইলে যোগাযোগ করুন পেজের ইনবক্সে অথবা ইমেল করুন charpatrablog@gmail.com এই ঠিকানাতে। এমনটা কেন হয়?অজানা তথ্য অবাক করা তথ্য কি ও কেন?
![charpatra.com ছাড়পত্র](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।