BANGLA VUTER GOLPO HAUNTED HILL OF SHIMLA & DOWNHILL OF KURSEONG:-
আজ আমরা ভারতের দুইটি বিখ্যাত ভূতুড়ে জায়গা নিয়ে কথা বলব (BANGLA VUTER GOLPO)। এর মধ্যে একটি হল- শিমলার অভিশপ্ত পাহাড় এবং অন্যটি হল- কার্শিয়াং এর ডাউন হিল।
শিমলার অভিশপ্ত পাহাড়ঃ-
আজকের কাহিনীটি চারজন বন্ধুকে নিয়ে। এই চারজন বন্ধুর সাথে এমন কিছু হয়েছিল, যেটি তাদের পুরো জীবনটিকেই বদলে দিয়েছিল। এমন কি হয়েছিল তাদের সাথে, যে তাদের পুরো জীবনটাই বদলে গিয়েছিল? জানব আজকের এই প্রথম গল্পটিতে।
মুম্বাই শহরের বাসিন্দা প্রিয়া শর্মা তার বন্ধু রবি, সাহিল এবং বিজয়ের সাথে শিমলা ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা সবাই শিমলা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে। বাসে উঠার কিছুক্ষণ পরেই প্রিয়া ঘুমিয়ে যায়।
সে স্বপ্নে দেখে যে, সে ঘুম থেকে উঠে দেখে, বাসে কেউ নেই। পুরো বাসটিই খালি। এমনকি ড্রাইভারও নেই বাসটিতে। বাসটি একা একা চলছিল। এসব দেখে প্রিয়া খুবই আতঙ্কিত হয়ে যায়। সে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে যাবে, এমন সময় সে বুঝতে পারে, তার পিছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। সে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে একজন মহিলা পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখ ও শরীর অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনা দেখে প্রিয়া ভয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে। এমন সময় তার ঘুম ভেঙ্গে যায়, এবং সে খুব জোরে জোরে হাফাতে থাকে। সে ঘুম থেকে উঠে দেখে, সব কিছুই ঠিক-ঠাক আছে। তার পাশেই বসে থাকা বিজয়, তাকে জলের বতল দিয়ে বলল- “ তুই হয়ত কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখছিলি” এর কিছুক্ষণ পরেই তারা শিমলা পৌঁছে যায়।
সেখানে একটি হোটেলে তারা রাত কাটায়। এরপরের দিন- তারা কাছের একটি পাহাড়ে ট্র্যাকিং এর প্ল্যান করে। প্রায় আধা ঘণ্টার মধ্যেই তার পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে যায়। পাহাড়ের চূড়া থেকে নীচের ঘন জঙ্গলটিকে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল। হঠাৎ সাহিল চমকে উঠে বলে- “ নীচের দিকে দেখ, মনে হচ্ছে কোনো মহিলা দাঁড়িয়ে আছে”। বিজয় ও রবি নীচের দিকে দেখতে থাকে কিন্তু তারা কিছুই দেখতে পায় না। তারা বলে উঠে- “ ভাই তুই হয়ত পাগল হয়ে গেছিস। এই ঘন জঙ্গলে কোনো মহিলা একা একা কি করতে আসবে? তোর বোধ হয় দৃষ্টি ভ্রম হয়েছে।“ এরপর তারা একটি ফাঁকা জায়গার দিকে পা বাড়ায়।
BANGLA VUTER GOLPO ভূতুড়ে জায়গা সত্য ভূতুড়ে ঘটনা
এদিকে সূর্য আবার চলে যাচ্ছিল, তাই গোটা বন ঘন অন্ধকারে ঢেকে যেতে থাকে। তারা ঠিক করে যে, তারা আজ আর হোটেলে ফিরবে না। তারা পাহাড়ের চূড়াতেই রাতটা কাটাবে। আর এরপরেই তারা একটি ভালো জায়গা দেখে সেখানে তাঁবু টানায়, এরপর তারা খাবার জিনিস বাইরে বেড় করে। প্রিয়ার ব্যাগটি তাঁবুর বাইরে থাকায়, সে ব্যাগটি আনতে বাইরে যায়। সে হঠাৎ-ই কোনো মানুষের আওয়াজ শুনতে পায়। আওয়াজটি ক্রমশই তারদিকে এগিয়ে আসতে থাকে, এরপর সে দেখতে পায়- তিনজন ব্যাক্তি হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে। সে খুবই ভয় পেয়ে যায়, এবং দৌড়ে তাঁবুর ভেতরে চলে যায়।
সে তার বন্ধুদের এই ভয়ানক দৃশ্যের বর্ণনা দিতে থাকে, কিন্তু কেউই তার কথা বিশ্বাস করতে চাইল না। সে চিল্লাতে চিল্লাতে বলতে থাকে- “ তোমরা কি পাগল হয়ে গেছ নাকি? আমার কথা কেউই বিশ্বাস করতে চাইছ না, চলো আমার সাথে বাইরে আমি তোমাদের দেখাচ্ছি”। এরপর তারা সবাই বাইরে আসে এবং টর্চ মেরে বাইরে দেখতে থাকে। এবার তাদের মনে হল যে, কোনো তিন জন লোক তাদের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে। এরপর তারা সবাই দ্রুত তাঁবুর ভেতরে চলে যায়, এবং তাড়াহুড়ো করে নিজেদের জিনিস গুছোতে থাকে।
BANGLA VUTER GOLPO ভূতুড়ে জায়গা সত্য ভূতুড়ে ঘটনা
তারা দ্রুত তাঁবু ছেড়ে বাইরে একটি বড় পাঁথরের আড়ালে লুকিয়ে পড়ে। তারা সেখান থেকেই উঁকি মেরে ওইসব লোক গুলির কার্যকলাপ দেখতে থাকে। এতক্ষণে প্রিয়া লক্ষ্য করে যে, লোক গুলির হাত এবং মাথা সাধারণ মানুষের মত মোটেই নয়। লোকগুলি একসাথে বসে, কিছু তন্ত্র- মন্ত্র করতে থাকে। লোক গুলির মধ্যে একজন তার হাতের একটি আঙ্গুল কেটে দেয়। কিন্তু অন্ধকারের জন্য প্রিয়ারা কিছুই পরিষ্কার ভাবে দেখতে পারছিল না। হঠাৎ তারা দেখে যে, কোথা থেকে এক মহিলা এসে সেই মানুষগুলির মধ্যে শুয়ে পড়ে। তারা কিছুই বুঝতে পারছিল না, যে এই সব কি হচ্ছে! তারা ভয়ে আঁতকে উঠে।
প্রিয়া বলল- “ এই সব কি হচ্ছে? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, আমার দারুন ভয় লাগছে।“ এরপর তারা দেখে মহিলাটি উঠে বসে এবং, প্রিয়াদের দিকে আঙ্গুল বাঁড়ায়। আর সেই লোকগুলি মহিলাটিকে ছেড়ে প্রিয়াদের দিকে পা বাড়াতে থাকে। কিছু বুঝে উঠার আগেই, প্রিয়া এবং সাহিল ‘পালাও’ বলে,হোটেলের দিকে দৌড়াতে থাকে।
কিন্তু রবি এবং বিজয় এতটাই ভয় পেয়ে যায়, যে তারা সেখান থেকে পালাতে অনেক দেড়ি করে ফেলে। প্রিয়া ও সাহিল আগে আগে এবং তাদের পিছনে রবি ও বিজয় ছুটছিল। তারা সবাই জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকে, এবং তারা লক্ষ্য করে যে, সেই অদ্ভুত লোক গুলিও তাদের দিকেই আসছে। প্রিয়া এবং সাহিল হোটেল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। কিন্তু তারা রবি ও বিজয়ের কোনো চিহ্ন দেখতে পায় না।
আপনি আরও পড়তে পারেন-
ভূত আছে কি নেই ভূত কি আত্মা কি ভূত কি সত্যি আছে
তারা চিৎকার করতে থাকে এবং হোটেলের কর্মচারীদের ডাকতে থাকে। হোটেলের কর্মচারীরা তাদের চিৎকার শুনে, বাইরে আসে এবং তারা প্রিয়া ও সাহিলকে বলতে থাকে- “ আমাদের না জানিয়ে আপনাদের ঐ পাহাড়টিতে যাওয়া উচিত হয় নি। ওই পাহাড়টি অভিশপ্ত। এখন পর্যন্ত যারা ওই পাহাড়ে গেছে, তারা আর কোনোদিনই ফিরে আসেননি। আপনাদের ভাগ্য ভালো যে, আপানারা বেঁচে ফিরেছেন।“ কিন্তু প্রিয়ার বন্ধু রবি এবং রাহুল আর কোনোদিনই ফিরে আসেনি। তারা নিকটবর্তী পুলিশফারিতে গিয়ে খবর দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
BANGLA VUTER GOLPO ভূতুড়ে জায়গা সত্য ভূতুড়ে ঘটনা
এতক্ষণ আপনারা যেটি পড়লেন, সেটি কোনো, বানিয়ে বলা গল্প নয়। এই গল্পটি বেঁচে ফিরে আসা প্রিয়া শর্মার মুখ থেকে শোনা। এবং আজ আপনি যদি শিমলাতে গিয়ে এই পাহাড়টিতে যেতে চান, আপনি যেতে পারবেন না। কারণ এই পাহাড়টিকে এখন ব্যান করে দেওয়া হয়েছে।
কার্শিয়াং এর মাথা কাটা বালকঃ–
পশ্চিমবঙ্গের, দার্জিলিঙের একটি অন্যতম হিল স্টেশন হল কার্শিয়াং। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৮৬৪ ফুট উচ্চতায় এবং দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩০ কিমি দুরেই এই জায়গাটি অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর, এবং মন মাতানো এই জায়গাটিতে আপনি যদি একবার আসেন তাহলে আপনার মন চাইবে, আবারও আসতে। দিনের বেলা সূর্যের ঝলমলে আলোয় ফুটে থাকা সাদা ফুল গুলি, দারুন প্রভা চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়।
BANGLA VUTER GOLPO ভূতুড়ে জায়গা সত্য ভূতুড়ে ঘটনা
কিছু ব্যক্তির মতে, দিনের বেলা এই জায়গাটি যতটাই না সুন্দর ঠিক ততটাই ভয়ানক রাত্রের বেলা। কিছু মানুষের মতে ইংরেজি- “kurse” কথাটির অর্থ হল- “অভিশপ্ত”। আর সেখান থেকেই এই জায়গাটির নাম হয়েছে- “Kurseong”. কার্শিয়াং এর স্থানীয় নাম হল- ‘খারসিয়াং’। এর অর্থ হল- ‘সাদা অর্কিডের ভূমি’। কার্শিয়াং মূলত পর্যটন কেন্দ্রের জন্যই বিখ্যাত হয়ে রয়েছে।
এর নিকটবর্তী একটি জায়গা হল- ডাউন হিল। এই জায়গাটির সঙ্গে যুক্ত আছে, অনেক ভূতুড়ে গল্প। কিন্তু তার কোনটি কতটা সত্যি, সেটি আমি জানি না।
বলা হয়ে থাকে যে, এই জায়গাটিতে অনেক মানুষ আত্মহত্যা করেছে। হুম তবে একটি কথা সত্য যে, এই জঙ্গলে গেলে আপনি এদিকে-সেদিকে পড়ে থাকা মানুষের অনেক হাড় দেখতে পাবেন। আর এটিই প্রমান করে যে, এই জঙ্গলে অনেকেই আত্মহত্যা করেছে। আর এর জন্যই এই জায়গাটিকে ভূতুড়ে মানা হয়ে থাকে।
BANGLA VUTER GOLPO ভূতুড়ে জায়গা সত্য ভূতুড়ে ঘটনা
স্থানীয় মানুষদের মতে- ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত যখন স্কুলটি বন্ধ থাকে, তখন সেখান থেকে অনেক আজব আজব চিৎকার এবং হাঁটাচলার শব্দ শোনা যায়। তাদের মতে, অনেক দিন আগে, একজন কাঠুরে, একটি মুণ্ড বিহীন কিশোর বালককে এই জঙ্গলে ঘুরতে দেখেছিলেন। আজও কেউ কেউ এই মুণ্ড বিহীন কিশোরকে জঙ্গলে ঘুরতে দেখে।
আরও পড়ুন-
মেয়েদের অজানা তথ্য UNKNOWN FACTS ABOUT GIRLS IN BENGALI
রিলেশনশিপ টিপস RELATIONSHIP ADVICE IN BENGALI
স্থানীয়দের মতে, রাতের বেলা ডাউন হিলের জঙ্গলে, যাওয়া মানেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা। তবে আজ পর্যন্ত কেউই এই ভূতুড়ে কার্যকলাপের শিকার হয়েছে কি না, তা জানা যায় নি।
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।