rohossomoy bhuter golpo// আজকের রহস্যময় ভূতের গল্পটির কেন্দ্রে রয়েছে একটি স্মার্টফোন।

rohossomoy bhuter golpo ঃ- ‘মোবাইল ফোন রহস্য’

অফিসের নতুন প্রজেক্টটি সম্পূর্ণ করতে রাহুলকে রাত ১২ টা পর্যন্ত অফিসে কাজ করতে হয়। যদিও রাহুল একাই সেখানে কাজ করে না, তার সঙ্গে দুইজন কলিগও কাজ করে। নাগ পঞ্চমীর রাত ছিল, রাহুল এবং তার কলিগ দুই বন্ধু যখন অফিস থেকে বেড় হল তখন সময় কাটায় কাটায় রাত ১২.৩০। তিন জনই যে যার পথে বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে গেল।

রাহুল মাঝ রাস্তায় এসে তার ব্যাগ হাতরে দেখে তার ফোন ব্যাগে নেই। সে বাইক থামিয়ে ভাল মত ব্যাগের প্রতিটা চেইন খুলে দেখে, কিন্তু তার ফোন কোনটাতেই নেই। সে অনেক ঘাবড়ে যায়। সে ভাবে তার ফোন হয়ত সে অফিসেই ফেলে এসেছে। আবার সে ভাবে, কিন্তু অফিসে ফোন না ফেলে তার ফোন যদি অন্য কোথাও পড়ে গেছে!

সে তাড়াতাড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সে বাড়ি ফিরেই তার কি- প্যাড ফোনটা নিয়ে তার মোবাইলে ফোন করে। হুম হুম মোবাইল রিং হচ্ছে, অর্থাৎ ফোনটা কারও হাতে পড়ে নি। সে ভেবে নেয় যে মোবাইল সে তার কেবিনেই ফেলে এসেছে, যাক নিশ্চিন্ত হওয়া গেল।

rohossomoy bhuter golpo
rohossomoy bhuter golpo

তবে মোবাইল ছাড়া তার বড্ড বোরিং লাগছে, কেননা সে ইউটিউব দেখতে পারছে না। আর সবথেকে বড় কথা হল, সুনয়না এর সাথে সে কথা বলতে পারছে না।

এরপর সে সব কিছু সেরে টিভি দেখতে দেখতে রাত ৩ টে বাজিয়ে দেয়। সে টিভি অফ করে ড্রিম লাইটটা অন করতে যাবে, এমন সময় তার ফোন বেজে উঠল। সে দেখল, তার সেই কি-প্যাড ফোনে তার হারিয়ে যাওয়া মোবাইল নাম্বার থেকে কল আসছে। আশ্চর্য! মোবাইলটা কি তাহলে অন্য লোকের হাতে পরেছে!

সে ফোনটা তুলে বলে- “হ্যালো”

কিন্তু ফোনের ওপার থেকে কোন শব্দ ভেসে আসে না। রাহুল বারবার বলতে থাকে- “হ্যালো হ্যালো শুনতে পারছেন, হ্যালো।“ এরপর খট করে কলটা কেটে যায়।

রাহুল আবার কল ব্যাক করে, কেউ একজন ফোনটা তুলল। রাহুল বলল- “হ্যালো, শুনতে পারছেন”

কিন্তু ফোনের ওপার থেকে একধরনের ভারী নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ ভেসে আসছে। রাহুল কিছু কাঁপা গলায় বলে- “হ্যালো, কে কে কে বলছেন”

এরপর সেই ভারী নিঃশ্বাস ফেলার শব্দটা আরও বেড়ে যায়।

রাহুল ঘাবড়ে গিয়ে ফোনটা কেটে দেয়। রাহুল ফোনটা টেবিলে রাখতে যাবে, এমন সময় আবার ফোনটা বেজে উঠল। সে কাঁপা হাতে ফোনটা হাতে নিয়ে বলতে শুরু করে- “প্লিজ আপনি যেই হন না কেন, আমার ফোন যদি পেয়েছেন আমাকে প্লিজ ফিরিয়ে দিন। ওই ফোনে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। প্লিজ আমাকে এরকম ভাবে ভয় দেখাবেন না। প্লিজ প্লিজ“

পড়ুনঃ- নিশি রাতের ভয়ানক গল্প 

ওপার থেকে, দুইবার ভারী নিঃশ্বাসের শব্দ ভেসে এল।

রাহুল ফোনটা কাটতে যাবে, এমন সময় ফোনের ওইপাশ থেকে নাকি সুরে আওয়াজ এল- “এই ফোন যদি নিতে চাও এখনই মন্দিরের বট গাছের নীচে আসো।“ এরপরেই ফোনটা কেটে যায়।

রাহুল অনেক ঘাবড়ে যায়। সে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত ৩.৩০। ফোনের জন্য এত রাতে বট গাছের নীচে যাওয়া কি ঠিক হবে! সে যাই হোক একটা ফোনের জন্য সে নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে পারবে না।

কিন্তু তার মনে পড়ে যায়, সুনয়নার সাথে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলি সে ওই ফোনেই ছবি তুলে রেখেছে। যে ভাবেই হোক সেই ফোন হাতছাড়া হতে দেওয়া যাবে না। আর এতক্ষণে সুনয়না হয়ত অনেক ম্যাসেজ ও করেছে। সে সিন্ধান্ত নেয়, যা হয় হোক সে ফোন নিতে সেই বট গাছের নীচে যাবে।

সে রান্না ঘরে চলে যায়, সেখান থেকে একটি চাকু নেয়। হাই ভোল্ট এর টর্চ লাইট টা নিয়ে হাতে একটা ছোট রড নিয়ে সে বেড়িয়ে পড়ে বিশাল মাঠটার শেষে যে বড় বট গাছটা আছে সেটার উদ্দেশ্যে।

মাঠ পেরোতে পেরোতে তার নানান কথা মনে পড়ে যেতে থাকে। এই মাঠ দিয়েই গভীর রাতে পচু কাকা শ্বশুর বাড়ি থেকে ফিরছিল, তারপর কে যেন তাকে পিছন থেকে ডাকে আর তার পর সব অন্ধকার। পরের দিন তার নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়। কে জানে কাকার আত্মা হয়ত এখনও এই মাঠে ঘুরছে। এই সব ভাবনা কে আলোড়িত করে শেয়ালের উদ্ভট ডাক। রাহুলের শরীর শিউড়ে উঠে।  

রহস্যময় ভূতের গল্প
রহস্যময় ভূতের গল্প

ওই তো আরেকটু, বিশাল বট গাছটা দেখা যাচ্ছে। এই সময় হঠাৎ করেই রাহুলের মনে পড়ে যায়, আজ থেকে পাঁচ বছর আগে সেই বট গাছের ডালেই আত্মহত্যা করেছিল পাড়ার ছেলে অংশু। তার বাবা একদিন তাকে খুব মেরেছিল, কারণ সে পরীক্ষায় ফেল করেছিল। রাগে অভিমানে অংশু গভীর রাতে সেই বট গাছের ডালে আত্মহত্যা করেছিল।

রাহুল ভাবে সে আর এগিয়ে যাবে না, কেননা অংশুর আত্মা হয়ত এখনও সেই বট গাছের নীচে আছে। এই মুহূর্তে আরেকটি বিষয় তার মাথায় এল, যে মোবাইলটা পেয়েছে সে বট গাছটার নিচেই আসতে বলল কেন! আর ওরকম নাকি সুরেই বা কথা বলছিল কেন!

সে থেমে যায়, সে ঠিক করে সে আর এগিয়ে যাবে না, সে বাড়ি ফিরে যাবে। কেননা মোবাইলের থেকেও জীবনটা তার কাছে অনেক দামী। কিন্তু তার মনে আবার কৌতূহল জন্মায়, দেখাই যাক না কে পেয়েছে ফোনটা আর সে এতটা রাস্তা যখন এসেই গেছে তখন আর মাত্র কয়েক মিটার যেতে প্রশ্ন থাকা উচিত নয়।

পড়ুনঃ-  রহস্যের ছোট গল্প- নিখোঁজ 

দুরু দুরু বুকে সে বট গাছটার নীচে গিয়ে দাঁড়াল, আর কি-প্যাড ফোনটা দিয়ে তার সেই হারিয়ে যাওয়া ফোনের নাম্বারে কল করল। তার কানে একটা মৃদু শব্দ ভেসে এল। শব্দটা অনেকটা তার সেই হারিয়ে যাওয়া মোবাইলের রিং-টোনের মত।

হ্যাঁ হ্যাঁ সে একদম ঠিক শুনছে, এটা তারই ফোনের শব্দ। কিন্তু ফোনটার শব্দটা এরকম ঘুরে বেড়াচ্ছে কেন। কখনো শব্দ শোনা যাচ্ছে গাছের নীচে কখনো উপরে কখনো পাশে কখনো একদম মগডালে। না ব্যাপারটা কিছুতেই তার ভাল ঠেকছে না।

সে কোমর থেকে ছুরিটা বেড় করতে যাবে এমন সময়, একটা ছায়া মূর্তি তার সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেল। মূর্তিটার মুখ দেখা যাচ্ছে না। রাহুল নীচে দেখল, সেই ছায়া মূর্তির পা নেই, আর মাথা পুরো সাদা কাপড়ে মোড়ানো আছে। রাহুল ভয়ে ঘামতে লাগল, তার মনে হতে লাগল তার আত্মা শরীর থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে, তার চোখে সে তারার মত কিছু দেখছে, এই মনে হয় সে অজ্ঞান হয়ে যাবে। কিন্তু মূর্তিটা আবার সেই নাকি সুরে বলল- ভয় পেও না, এই নাও ফোন। আমার ফোনকে যত্ন করে রাখবে। রাহুলের হাতে ফোনটা দিয়ে সেই ছায়া মূর্তি আবার হাওয়াতে মিলিয়ে যায়।

bangla rohossomoy bhuter golpo
bangla rohossomoy bhuter golpo
<

ব্যাপারটা কিছুই রাহুলের মাথায় ঢুকছে না! একটা ভয়ানক ছায়া মূর্তি তার হাতে তারই হারিয়ে যাওয়া ফোন দিয়ে চলে গেল!

রাহুল সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগল, সে এই ফোনটা একটা চোর বাজার থেকে কিনেছিল। তার মনে হতে থাকল, এই ফোনটা হয়ত এরকম কারও ছিল যে হয়ত আজ আর নেই। আর এই ফোনটা হয়ত সেই ছায়া মূর্তির ছিল, কেননা সে বলেছে “আমার ফোনকে যত্ন করে রাখবে” তবে মোবাইলের প্রতি সেই ছায়া মূর্তির অদ্ভুত আকর্ষণ দেখে বেশ অবাক হয়েছিল রাহুল।

তবে রাহুল এখনও ভাবে, সেই ছায়া মূর্তিটা কিভাবে তার ফোন নিয়ে এল, আর এটা যদি সত্যি সত্যি সেই ছায়া মূর্তির ফোন হয়, তাহলে!! তাহলে কি সে এতদিন এক মৃত মানুষের ফোন ব্যবহার করে আসছে! তার মাথাতে কিছুই ঢুকছে না, সে শুধু ঠায় মোবাইলটা হাতে নিয়ে সেই নাগ পঞ্চমীর রাতে বট গাছটার নীচে দাঁড়িয়ে আকাশ পাতাল ভেবেই চলেছে। হঠাৎ করেই তার পিছন দিক দিয়ে একটা…।।

গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 

সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।

পড়ুনঃ- 
রহস্যময় গল্প- অভিশপ্ত পেইন্টিং

ভুতের গল্প- হোস্টেলের শেষ রাত
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

bangla rohossomoy bhuter golpo. রহস্যময় ভূতের গল্প।

Spread the love

Leave a Reply