একটি সত্যিকারের ভুতের গল্প থাকছে আজ। ভুতের গল্প বলাটা একটু শ্রবণ কটু, কেননা এটি ভুতের গল্প নয় এটি একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে লিখিত।
একটি সত্যিকারের ভুতের গল্পঃ- “অদৃশ্য মা ডাক”
ভূত বা আত্মা তে বিশ্বাস আমার বরাবরই ছিল না। কিন্তু একটি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে আজ আত্মাতে বেশ বিশ্বাস জন্মেছে। তাহলে প্রথম থেকেই সব শুরু করি।
গ্রামের মাঝে বসবাস ভোম্বল দম্পত্তির। মধ্যবিত্তের সংসার ঘরে রয়েছে দুইজন মেয়ে আর এক ছেলে। আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে তাদের বড় ছেলে মারা গিয়েছিল। মারা গিয়েছিল বলা ভুল হবে, বলা চলে হত্যা করা হয়েছিল ওকে।
যদিও ছেলেটা মাত্র 2 বছর বয়সে মারা গেছে তবুও তাকে বড় ছেলে বলার কারণ হলো বর্তমানে যে ছেলেটি ওদের আছে তার চেয়ে আগের ছেলেটির জন্ম আগে।
এবার পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে হত্যা কেন করা হয়েছিল, আর কে-ই হত্যা করলো এমন ছোট্ট একটা শিশু কে, তার তো কোনো দোষ করার কথা নয়, তাহলে তাকে হত্যা করার কারণ কি?
![একটি সত্যিকারের ভুতের গল্প](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
পুরো গোড়া থেকেই শুরু করি। সেই ছেলেটি যখন মায়ের পেটে তখন তার মায়ের পা বটি দিয়ে কেটে যায়, এরপর নিজে ডাক্তারি ফলাতে গিয়ে নানা ধরনের ওষুধ সে গিলতে থাকে।
যখন প্রসব এর সময় হলো আর সেই বাচ্চাটির জন্ম হলো তখন দেখা গেলো বাচ্চাটির চোখ বন্ধ। সবাই আশ্বস্ত করলো ধীরে ধীরে চোখ ফুটে যাবে, কিন্তু চোখ ফুটেছে ঠিকই কিন্তু তার চোখের মণি নেই।
মায়ের গহ্বরে থাকাকালীন যে অন্ধকার পরিবেশে সে বাস করছিল সেই অন্ধকার পরিবেশকে সাথে নিয়েই তার জন্ম হয়। রঙিন এই দুনিয়া তার কাছে একটি কালো যবনিকা ছাড়া আর কিছুই নয়।
পড়ুনঃ- অভিশপ্ত বাড়ি
আবর্তন গতির ন্যায় আবর্তিত হতে লাগলো সময় আর সেই সময়কে সাথে নিয়েই ধীরে ধীরে বাচ্চাটি বড় হতে লাগল।
বে-রঙ্গিন দুনিয়ার সাক্ষী শুধু মাত্র পবনকে উপলব্ধি করা এই শিশুটির নাম রাখা হলো অনিল।
প্রথম এক বছর সবকিছু ঠিক চলছিল। কিন্তু এরপরেই এই সন্তান কে নিয়ে শুরু হয় মস্তিষ্ক যন্ত্রণা। যখন শিশুটি খাবার খেতে শিখে যায় ধীরে ধীরে কমিয়ে দেওয়া হয় তার খাবারের পরিমাণ।
ক্ষুধার তাগিদে সে খাবার চাইলেও বিনিময়ে সে পেত আঘাত। শিশুটির অন্ধকার জীবনের সাথে আরেকটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হয়, সেটির নাম অভুক্ততা।
পড়ুনঃ- রহস্যময় গল্প- ভুতুড়ে গ্রাম
এইভাবে প্রায় আরো এক বছর চলে যায়। একদিন সেই অনিলের প্রাণ বায়ু ছেড়ে চলে যায় শরীরকে। এরপর যথারীতি শেয়াল কান্নায় ভেঙে পরে অনিলের মা। কিন্তু আসল ঘটনা এখান থেকেই শুরু।
অনিলের মৃত্যুর কেটে গেছে প্রায় ছয় মাস। রাত তখন আনুমানিক ৩ টে, অনিলের মায়ের কানে এলো কে যেন তাকে মা মা করে ডাকছে আর ডাকটা শুনে তার মনে হলো খুব কাছে থেকেই কেউ ডাকছে। ঘুমের ঘোরে থাকা অনিলের মা আতঙ্কিত হয়ে ঘরের লাইটটা অন করতেই নিমেষের মধ্যে ডাকটা হওয়ায় মিলিয়ে গেল। সেই রাতে আতঙ্কে আর তার ঘুম আসেনি।
দুই দিন পর ঠিক একই সময়ে আবার ‘মা মা’ ডাক কানে আসে তার। মনে পরে গেলো এই ডাক তার ছেলে অনিলের। কিন্তু সে তো মারা গেছে, তাহলে কে ডাকছে! তবে কি অনিলের আত্মা এখনো ছায়া হয়ে ঘুরছে!
![ভালো ভূতের গল্প edited](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
এরপরের দিনই অনিলের মা বাবা চলে যায় এক তান্ত্রিকের কাছে সেখানে তাবিজ কবজ নিয়ে ঘরে ফেরে তারা।
একদিনের ঘটনা, অনিলের মা গাছের ডাল ভাঙতে বাঁশ বাগানে গেছে। হঠাৎ তার মনে হলো কেউ যেন তার আঁচল ধরে টানছে, সে ভয়ে ভয়ে ঘুরে দেখে কিছু নেই। ঠিক সেই সময় হাওয়ায় ভেসে এলো ‘মা মা’ ডাক। আতঙ্কিত অনিলের মা, সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।
তারপর যখন তার জ্ঞান ফেরে তখন সে কোনো কথা বলতে পারছে না।
এইভাবে আরেকটা বছর কেটে যায়। একদিন অনিলের মা বাড়িতে একাই আছে, সময় দুপুর 2 টো। তার মনে হতে লাগল কুয়ো পারে রাখা বালতিতে কে যেন স্নান করছে, এইসময় তার হঠাৎ মনে পড়ে গেলো তার ছেলে অনিলের কথা, তার মনে পড়ে গেল সে অনিলকে কুয়ো পারে জল তুলে রেখে দিত নিজে স্নানের জন্য। সব স্মৃতি যেন ঝলক খেলে গেল তার চোখের সামনে।
পড়ুনঃ- হাসির গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সেদিন রাতে তার প্রচুর জ্বর আসে। জ্বরের ঘোরে সে আবছা ভাবে দেখতে পায় বন্ধ কপাট টি ধীরে ধীরে খুলে গেল, একটি শিশুর ছায়া মূর্তি ধীরে ধীরে ঘরে প্রবেশ করল। অনিলের মায়ের এমন অবস্থা সে কাউকে ডাকতেও পারছে না। আর সে প্রচুর ঘেমে যাচ্ছে।
সে আবছা ভাবে দেখতে পায় ছায়া মূর্তিটি ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে তার কপালে হাত দিল, একটি বাচ্চার হাতের স্পর্শ সে স্পষ্ট বুঝতে পেলো। আতঙ্কে তার মুখ দিয়ে একটি কথাও আসছে না। সে চোখ বুঝে রইল, তার মনে হতে লাগল কেউ যেন তার চোখ খোলার চেষ্টা করছে, কিন্তু পারছে না। ঠিক এই সময় অনিলের বাবা হাজির হলে অনিলের মায়ের সাথে ঘটে যাওয়া যাবতীয় ঘটনা সেখানেই থেমে যায়।
রহস্যজনক ভাবে পরের দিন সকালেই কোনো ওষুধ না খেয়ে অনিলের মা সুস্থ হয়ে উঠে।
![bengali horror story](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
এরপর একদিন এক সাধুবাবা তাদের বাড়িতে আসে, অনিলের মা সবকিছু তাকে জানালে, সাধুবাবা বলে ছেলেকে যেখানে কবর দেওয়া হয়েছিল সেখান থেকে তুলে তার অস্থি গঙ্গায় বিসর্জন দিতে।
সাধুবাবার কথা মত কাজ করে অনিলের আত্মা কে চিরতরে নিস্তব্ধ করে তার মা বাবা। মরে গিয়েও বেচারি মায়ের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত রয়েই গেল।।
গল্প কথায়-
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
নিচে দেওয়া wp গ্রুপ টি শুধু মাত্র অ্যাক্টিভ মেম্বারদের জন্য। যাদের মনে হবে ব্যস্ত জীবনের অল্প সময় ও এখানে ব্যয় করতে পারবেন আড্ডা আলোচনার মধ্যে তাদের জন্য।
বি.দ্র. - ইউটিউবার দাদা দিদিরা যারা কনটেন্ট খুঁজতে গ্রুপ এ আসেন তারা এখানে অহেতুক ভিড় জমিয়ে নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনবেন না।
WHATSAPP GROUP LINK- ছাড়পত্রিয়ানস (CHARPATRIANS) 👈🏻 ক্লিক করুন
পড়ুনঃ- একটি ভয়ানক রাতের গল্প শিক্ষণীয় গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
একটি সত্যিকারের ভুতের গল্প। একটা ভালো ভূতের গল্প। 1 emotional bengali horror story.
![charpatra.com ছাড়পত্র](http://charpatra.com/wp-content/plugins/a3-lazy-load/assets/images/lazy_placeholder.gif)
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।