কারও প্রতি ভালোবাসার অনুভূতি জন্মানো মোটেও সাধারণ কথা নয়। গল্পের মূল চরিত্রের সাথেও ঘটেছে ঠিক তেমনই। এক অজানা মেয়ের প্রতি দুর্বলতা, শেষে সময়ের সাথে সাথে আবছা হয়ে নির্বাক স্মৃতি!!

ভালোবাসার অনুভূতি গল্পঃ- ‘আবার দেখা’

সমুদ্রের তীরে অচৈতন্য অবস্থায় একটা মেয়েকে দেখতে পায় স্বয়ম্ভু। সে খুব দ্রুত মেয়েটি কে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে শুইয়ে দেয় বালির উপর।

আকস্মিক এমন একটা মেয়ে কে দেখে স্বয়ম্ভুর এখন অবাক হওয়ার চেয়েও বেশি জরুরী মেয়েটাকে বাঁচানো। 

মেয়েটা কে উপুড় করে ওর পেট থেকে সব জল বের করে চিত করিয়ে দেয় আবার। নাহ, মেয়েটার তাতেও জ্ঞান ফেরে না। 

স্বয়ম্ভু আরো চেষ্টা করে ওর জ্ঞান ফেরানোর জন্য কিন্তু মেয়েটার অবস্থা খুব খারাপ। ইতিমধ্যে আরো অনেক লোক জন হাজির হয়েছে ঘটনাস্থলে। 

আরে এই মেয়েটা কে? ও কে তো আমাদের সাথে আসতে দেখিনি পুরিতে! 

অনুভূতি গল্প edited

প্লিজ এখন এসব প্রশ্নের জবাব নেওয়ার চেয়েও বেশী জরুরি মেয়েটাকে হসপিটালে পাঠানোর। ওর জ্ঞান ফিরছে না। প্লিজ আমাকে একটু হেল্প করুন। একটা অ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা করলে ভালো হয়। 

সবাই তীব্র আপত্তি করে বলে, না না বাবা এসব ব্যাপারে না জড়ানোই ভাল। একে তো মেয়েটা আমাদের অচেনা তার উপর এমন সুইসাইডাল কেস! এ তো পুলিশ কেস এর আন্ডারে চলে গেছে ইতিমধ্যে। কোনো দরকার নেই এসবে থেকে ফাঁসার। ঘুরতে এসেছি, ঘুরে চলে যাবো বাড়ি, বৃথা ঝামেলায় জড়িয়ে লাভ কি! তোমাকেও বলছি, তুমিও এসবের মধ্যে নিজেকে জড়িও না বুঝলে ছোকরা। 

আপনাদের মানসিকতা দেখে অবাক হচ্ছি, একজন মরণাপন্ন মানুষ , তাকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে নিজেদের কথা ভাবছেন। ঠিক আছে থাক কোনো সাহায্যের দরকার নেই, আমি একাই পারব ওনাকে হসপিটালে ভর্তি করতে। অনেক ধন্যবাদ আপনাদের।  

এরপর সবার সব বারণ অগ্ৰাহ্য করে ভ্রমণ স্থানের মতো জায়গাতেই ফোনে কাছাকাছি হসপিটাল সার্চ করে অ্যাম্বুলেন্স এর নাম্বার এ ফোন করে। 

সময় মতো সবটা কম জানা জায়গায় একা হাতে করতে অনেক সমস্যা পোহাতে হলেও শেষপর্যন্ত মেয়েটিকে সে পাঠাতে পারে হসপিটালে। আর নিজেও যায়। 

সবাই তখনও বারণ করে কিন্তু স্বয়ম্ভু কারোর কথা শোনে না। 

পড়ুনঃ-  স্কুল জীবনের ব্যর্থ প্রেমের গল্প 

হসপিটালে পৌঁছে মেয়েটাকে ভর্তি করতে গিয়ে রিসেপশনিস্ট এর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় স্বয়ম্ভু কে যে স্বয়ম্ভু মেয়েটির কে হয়। 

স্বয়ম্ভু সবটা বলে। 

রিসেপশনিস্ট বলে, এটা তো পুলিশ কেস। আপনি পুলিশে ফোন না করে সোজা হসপিটালে নিয়ে এলেন কেন? 

বলতে বলতে নার্স ও ডাক্তারও ঠিক একই কথা বলে ছুটে এসে। 

স্বয়ম্ভু বলে, আপনারা এমন কেন বলুন তো! মেয়েটার এত খারাপ অবস্থা , কোথায় তার দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন তা না করে খালি পুলিশ কেস নিয়ে ভাবছেন! ওটা তো পরেও দেখা যাবে নাকি! মেয়েটার ভাল মন্দ কিছু হয়ে গেলে তখন কি হবে ভেবে দেখেছেন? 

দেখুন নিয়ম তো নিয়ম ই তাই না। আমি বা আপনি কেউ তো আর নিয়ম বা আইনের ঊর্ধ্বে নই। একটা সুইসাইডাল কেস এটা, অ্যাটেম্পট টু মার্ডার কেসও হতে পারে। এসব জেনেও তো পুলিশি ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তো চিকিৎসা করতে পারি না। বলে ডাক্তার। 

ঠিক আছে আমি পুলিশ কে জানাচ্ছি কিন্তু প্লিজ আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, মেয়েটিকে বাঁচান। ওর চিকিৎসা শুরু করুন দ্রুত। প্লিজ। 

অপ্রকাশিত ভালোবাসা
অপ্রকাশিত ভালোবাসা

ঠিক আছে আমরা চেষ্টা করব। আপনি পুলিশকে জানানোর ব্যবস্থা করুন। 

স্বয়ম্ভু ভাবে, পৃথিবী আজ কত স্বার্থপর মানুষ এ ভরে গেছে। আচ্ছা এই মেয়েটির জায়গায় যদি নিজের আপনজন কেউ থাকত তাহলেও কি সবাই এমন করত? 

এরপর উড়িষ্যার স্থানীয় থানাতেই সবটা জানানো হয়। 

পুলিশের মুখেও একই কথা। 

ওদিকে চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু মেয়েটার জ্ঞান ফেরার কোনো লক্ষণ নেই। কোমায় যাওয়ার অবস্থা। ভেন্টিলেশনে রাখতে হতে পারে। মেয়েটাকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব। খুবই মরণাপন্ন অবস্থা তার। 

পেশেন্ট কো অপারেট করছে না! খুব চিন্তিত ও হতাশ হয়ে ডাক্তার বলে ওঠে নার্স কে। 

হুম স্যার ঠিকই বলেছেন। 

পেশেন্টের সাথে যেই যুবক টি এসেছিলেন ওনাকে জানানো দরকার। আর মেয়েটির পরিবার এর সাথেও যোগাযোগ করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। 

ওদিকে পুলিশের তল্লাশি তে মেয়েটার পরিবার এর খোঁজ করতে তৎপর হয়। স্বয়ম্ভুও থাকে সঙ্গে। কিন্তু তার মন পড়ে আছে হসপিটালের বেডে মৃত্যুর সাথে লড়াই করা ওই অচেনা অজানা মেয়েটার প্রতি। মনটা বড্ড অস্থির লাগছে। মেয়েটা কি বাঁচবে না সত্যি! আবার কলকাতায় ফেরারও তো সময় হয়ে এল। ওকে এখানে একলা রেখে কি ভাবে যাবে কলকাতায় ভেবে ভেবে মাথা খারাপ হয়ে যায়। 

পড়ুনঃ-  বিরহের ছোট গল্প 

এবার মাথায় যে সমস্ত প্রশ্ন গুলো আসাটা স্বাভাবিক ছিল সেই প্রশ্ন গুলো আসতে শুরু করে। মেয়েটা কে? ও কি সমুদ্রে স্নান করতে নেমেছিল? তাই যদি হয় তাহলে এভাবে ডুবে গেল কেন? ওর সাথে কি কেউই ছিল না, ওকে খেয়াল রাখার মতো? নাকি পুলিশের কথা অনুযায়ী এটা সুইসাইডাল বা অ্যাটেম্পট টু মার্ডার কেস?

মেয়েটাকে এভাবে ফেলে রেখে স্বার্থপরের মতো কলকাতায় স্বয়ম্ভু ফিরতে পারবে না। মেয়েটা সুস্থ হয়ে যতক্ষণ না ওর পরিবারের সঠিক খবর পেয়ে তাদের কাছে ফিরে যাচ্ছে, ততক্ষণ স্বয়ম্ভুর মনে শান্তি নেই। 

কিন্তু মেয়েটার কাছে তো তেমন কিছুই ছিল না যাতে বোঝা যাবে ওর সম্পর্কে বা জানা যাবে কিছু। এখন অপেক্ষা মেয়েটার জ্ঞান ফেরা অবধি, যদি ও নিজে থেকে কিছু বলতে পারে।

কিন্তু সেটাও কি হবে শেষপর্যন্ত?

বেস্ট ট্রিটমেন্ট চলছে। স্বয়ম্ভু প্রাণপণ চেষ্টা করছে মেয়েটা যেন বাঁচে। 

দুইদিন ধরে অজ্ঞান অবস্থায় থাকে মেয়েটা। ডাক্তার অনেক চেষ্টা করেও তার জ্ঞান ফেরাতে পারেনি এখনো পর্যন্ত। স্বয়ম্ভুর কাছে ইতিমধ্যে কলকাতা থেকে ফোন আসা শুরু হয়ে গেছে। সে এখনো ফিরল না কেন? স্বয়ম্ভু সোজা জানিয়ে দেয় এখন সে ফিরতে পারবে না, আরো কয়েকদিন থাকতে হতে পারে। 

bengali untold love story
bengali untold love story
<

কেন থাকতে হতে পারে তার উত্তর দেয়না স্বয়ম্ভু। 

কিন্তু সমস্ত চেষ্টা, সমস্ত অপেক্ষা কে ব্যর্থ করে মেয়েটা কোমা থেকে আর ফিরে আসে না। মস্তিষ্ক খুব সাংঘাতিক ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল মেয়েটার। খুব বড় কোনো আঘাতে হয়েছে এটা। যার জন্য ভেন্টিলেশনে রাখতে পর্যন্ত হয়েছিল। 

শেষপর্যন্ত আর বাঁচানো যায় না মেয়েটিকে। স্বয়ম্ভু কে ডাক্তার সবটা জানায়। স্বয়ম্ভু ছুটে যায় কেবিনে। মেয়েটার গায়ে সাদা চাদর। মুখটা তখনও ঢাকা হয়নি। একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে মেয়েটার ঐ চোখবোজা নির্মল মুখটার দিকে। মেয়েটা কে যে প্রথম থেকেই স্বয়ম্ভু এই চোখবোজা অবস্থাতেই দেখেছে। আর আজকেও তাই। ওর চোখ দুটো আর দেখা হলো না তাহলে!! 

মনটা কেমন যেন কষ্টে ভরে উঠল। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে গেল নিজের অজান্তেই। মেয়েটা বাঁচল না তাহলে?? 

পুলিশ অফিসার বলে, আমরা মেয়েটির সম্পর্কে কিছু জানতে পারলে অবশ্যই আপনাকে জানাবো। আপনি নিশ্চিন্তে কলকাতায় ফিরে যেতে পারেন। 

স্বয়ম্ভু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে ব্যথিত হৃদয় নিয়ে। 

….

অ্যাই স্বয়ম্ভু, তোর হয়েছে টা কি বলতো? পূরী থেকে আসার পর তো আমাদের জানালিই না যে তোর এই দুইদিন কেন থাকতে হলো? আর এমন উদাস হওয়ার কারণ কি শুনি?

কই কিছু হয়নি তো। স্বয়ম্ভু উত্তর দেয় ওর বন্ধু সিদ্ধার্থ কে। 

উঁহু কিছু তো একটা হয়েছে তোর! বল বলছি কি হয়েছে? 

কিছু হয়নি বিশ্বাস কর। 

একা থাকার সময়ে স্বয়ম্ভুর ওই মেয়েটির কথা খুব মনে পড়ে। মেয়েটিকে কখনো দেখেনি, চেনেনা, ওর সম্পর্কে কোনো খোঁজ খবর কিছুই আজ পর্যন্ত পেল না। অথচ মেয়েটার প্রতি একটা টান অনুভব করে, যেই টানটা খুব অদ্ভুত ভাবেই জন্ম নিয়েছে আর এতোটাই প্রবল যেন মনে হচ্ছে মেয়েটার সাথে বহুদিনের পরিচয় , বহুদিনের যোগাযোগ। 

পড়ুনঃ- ব্রেক-আপ হওয়ার গল্প 

নাহ, এটা ভুল ভাবনা। মেয়েটাকে সত্যি সত্যিই তো স্বয়ম্ভু চেনে না, কখনো দেখেনি। কিন্তু তাহলে এই টান কেন হচ্ছে? কেন বারবার মনে হয় ও খুব চেনা, অনেক বছরের চেনা, অনেক পরিচিত ও অনেক কাছের? তবে চেনা হোক বা অচেনা মনে  মনে খুব আশা রেখেছিল যে মেয়েটা যেন বাঁচে, কিন্তু তা তো হলো না। 

ইউনিভার্সিটি শেষ করে এবার চাকরির খোঁজ শুরু হয়ে গেল স্বয়ম্ভুর। আর হয়ে গেল প্রচন্ড ব্যস্ত। আর ব্যস্ততার যাঁতা কলে মানুষ নিজের আপনজনকেও খুব একটা মনে করার সময় পায় না আর সে জায়গায় ঐ মেয়েটির কথা তো আরোই ভুলে যাওয়ার কথা। 

হ্যাঁ সেটাই হলো। প্রচন্ড ব্যস্ত হওয়াতে মনের সমস্ত কষ্ট, দুঃখ গুলোর সাথে সাথে সেই মেয়েটির কথাও আবছা হতে হতে পুরোপুরি মুছে গেল। 

মুছে যাওয়া টা অতটাও সহজ ছিল না। আগে দিনের বেশিরভাগ সময়েই তার কথা মনে পরত। তারপর সেটা একটু একটু করে কম হয় যত কাজ বাড়তে থাকে তার সাথে সাথে। 

তারপর আরো কমতে কমতে শেষ হয়ে গেল সময়ের সাথে। 

তবে নতুন করে এখনো কোনো মেয়ের প্রতি দুর্বলতা তৈরি হয়নি স্বয়ম্ভুর। তার মন হয়ত গোপনে মেনে নিয়েছিল যে ওই মেয়েটিকেই ভালোবেসে ফেলেছে সে। 

তবে পেরিয়ে গেছে অনেক টা সময়। কর্মব্যস্ত কলকাতার বুকে আজ স্বয়ম্ভুও সেই বয়স একুশের কলেজপড়ুয়া ও ছটফটে যুবকটি নেই। 

আজ সে অনেক দায়িত্ববান একজন ব্যক্তি। তার পরিশ্রম আজ তাকে এইজায়গায় এনেছে। আজ সে একজন উচ্চপদস্থ ডব্লিউ.বি.সি.এস অফিসার। 

স্বয়ম্ভু এখন এত দায়িত্ববান এর সাথেও একজন বিবাহিত পুরুষ। তার কর্মজগৎ ছাড়াও তার স্ত্রী ও পরিবারও তার জগৎ।

এরপর আরো কয়েকটা বছর কেটে গেছে। আজ স্বয়ম্ভু আবারো ঘুরতে গেছে পুরীতে।

কয়েকদিন ঘোরার পর হঠাৎ করেই একটা জায়গা খুব চেনা লাগল। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল ঐ চেনা জায়গার টানে। মনে থাকল না স্ত্রী ও পরিবার এর কথা। তারা নিজেরা নিজেদের মতো আনন্দ করতে ব্যস্ত। 

আর স্বয়ম্ভুর মন কেমন অস্থির হয়ে উঠেছে। এই অচেনা কিন্তু আসলে খুব চেনা চিরপরিচিত জায়গায় দাঁড়িয়ে। 

কি যেন ছিল এখানটায়, এই তীরে, ঠিক এইখানটায়! ছটফট করে আপন মনে বলে ওঠে স্বয়ম্ভু তীরের বালি মুঠো করে তুলে নিয়ে। 

চোখ যতদুর যাচ্ছে শুধুই দিগন্ত। কিন্তু ওই দিগন্তের মাঝে কে যেন হাঁটছে খুব ধীর গতিতে। 

স্বয়ম্ভু আরো ভালো করে চেয়ে দেখে। এ যে বড্ড চেনা একটা অবয়ব!

আরো স্পষ্ট হতে থাকে সেই অবয়ব। স্বয়ম্ভুর সামনে দাঁড়িয়ে এখন সেই অবয়ব। 

একটি মেয়ে। হ্যাঁ বয়স আঠারো উনিশের একটি মেয়ে। মুখটা খুব চেনা। খুব চেনা। 

চিনতে পারছ আমায়? 

পড়ুনঃ- আমার প্রথম প্রেম! 

কে তুমি? চিনতে পারছি না তোমাকে আমি । খুব অস্থির হয়ে মনে করার চেষ্টা করতে করতে বলে স্বয়ম্ভু। 

সমুদ্রের পাড় থেকে তুমিই তো নিয়ে গেছিলে আমায় হাসপাতালে। কিন্তু আমি তো চেয়েছিলাম তোমার সাথে শেষ দেখা করতে তাই হয়ত সত্যি সত্যি শেষবারের মতো দেখা হলো! 

মানে? 

মেয়েটা হেসে ওঠে আর বলে, তোমার টানেই তো ছুটতে ছুটতে এতদূর আসা। সেই কতবছর ধরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি তোমার সাথে আবার দেখা কবে হবে… আজ হয়ে গেল। তুমি আমাকে আগেও চেনোনি, আজও চেনোনা। তোমার কাছে আমি শুধু মাত্র একটা ডুবে যাওয়া মেয়ে ছাড়া আর কিছুই না কিন্তু তুমি আমার কাছে আমার ছোটবেলাকার ভালোবাসা যা আজীবন ছিল, আছে ও এখনো থাকবে। আমি চলি কেমন। আর হয়তো তোমার সাথে আমার কখনোই দেখা হবে না। তুমি ভালো থেকো। 

কি গো, তুমি এখানে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে কিভাবে? স্বয়ম্ভু অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে তার স্ত্রীর কোলে তার মাথা রাখা আর স্ত্রী চিন্তিত হয়ে একথা বলছে। আর বাকি সদস্যরাও।  

স্বয়ম্ভু বলে, ঐ মেয়েটি কে? কোথায় গেল ও? 

কে? কার কথা বলছ!! উফ, এখন কোনো কথা নয়, সোজা হোটেল। তোমার রেস্ট দরকার। 

ভালোবাসার অনুভূতি গল্প new
ভালোবাসার অনুভূতি গল্প new

স্বয়ম্ভু কে নিয়ে সবাই ফিরে আসে হোটেলে।মনের মধ্যে যে অনেক অনেক অনেক  প্রশ্ন রয়ে গেল। মেয়েটা কি সত্যিই তার অনেক চেনা, অনেক কাছের? কিন্তু কে মেয়েটা? আর ছোটবেলার ভালোবাসা মানে? 

ঠিক এইখানেই তো মেয়েটাকে পেয়েছিল অচেতন অবস্থায়, সেটাও মনে পড়ে গেছে। ওকে হসপিটালে ভর্তি করা হয় কিন্তু  মেয়েটা বাঁচেনা শেষপর্যন্ত। ও জলে ডুবে গেল কিভাবে, ওর পরিবার ইত্যাদি অন্য কোনো খোঁজ খবর পুলিশ পরে আর দিতে না পারায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ওর ফাইল। 

আর আজ এতবছর পর ওর সাথে আবার দেখা হলো ঠিক এই জায়গাটাতেই। মেয়েটা তো বেঁচে নেই তাহলে কি ওটা ওর আত্মা ছিল যে ওর সাথে আবার দেখা হওয়ার অপেক্ষায় ছিল!

তুই আমার জন্য কতটা আসতে পারবি! আমি তো কলকাতায় চলে যাবো! 

তুই যেখানেই যাস, তোর টানে আমি ঠিক ছুটে যাবো। 

ধর সমুদ্র পেরিয়ে গেলাম। 

সমুদ্র পেরিয়ে আমিও যাবো তোর কাছে তোকে খুঁজে খুঁজে। যদি ডুবেও যাই বা মরেও যাই তবুও বুঝবি তোর সামনে গিয়েই হাজির হবো… 

অবাস্তব কথা বলিস না পাগলী। তুই কি একদম সমুদ্র পেরিয়ে আসবি, বাস, ট্রেন করবি না নাকি? 

যতোটা যানবাহন দরকার ততটা তো আসতেই হবে বাকিটা সমুদ্রে পাড়ি তুই দেখিস। তোকে যে অনেক ভালবাসি, তোর সাথে আবার ঠিক দেখা হবে আমার !! 

সুস্মিতা গোস্বামী

গল্পের ভাবনায়-
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে। 
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও  বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
পড়ুনঃ- 
আধুনিক শিক্ষামূলক গল্প- অশ্লীল আসক্তি 

করুন প্রেমের গল্প- ভালোবাসার খুনি 

ছাড়পত্রের সমস্ত আপডেট পাওয়ার জন্য যুক্ত হন- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

ভালোবাসার অনুভূতি গল্প। অপ্রকাশিত ভালোবাসা। bengali untold love story

Spread the love

Leave a Reply