আজকের ব্লগে আমরা মহান মনিষী স্বামী বিবেকানন্দ এবং চাণক্যের বাণী তথা মোটিভেশনাল উক্তি জানতে চলেছি। বর্তমান যুব প্রজন্মের জন্য স্বামীজীর এই অনুপ্রেরণা মূলক উক্তি গুলি খুবই প্রাসঙ্গিক।
স্বামী বিবেকানন্দ এবং চাণক্যের বাণীঃ-
১. জীবনের একটি চরম সত্য- যখন আপনি মানুষকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেন, তারা ভাববে আপনি সবসময় ফ্রিতেই থাকেন, কিন্তু তারা বুঝতে চায় না যে, আপনি তাদের জন্যই নিজেকে ফ্রি থাকার ভান করেন।
২. ওঠো, জাগো, যতদিন না লক্ষ্যস্থলে পৌছাচ্ছ, থেমো না। জাগো জাগো, দীর্ঘ রজনী প্রভাত প্রায়। দিনের আলো দেখা যাচ্ছে। মহাতরঙ্গ উঠেছে। কিছুতেই তার বেগ রোধ করতে পারবে না। উৎসাহ বৎস, উৎসাহ- প্রেম বৎস প্রেম। বিশ্বাস শ্রদ্ধা। আর ভয় করো না। সবচেয়ে গুরুতর পাপ হল ভয়।
৩. যে যা বলে বলুক, আপনার গোঁয়ে চলে যাও। দুনিয়া তোমার পায়ের তলায় আসবে, ভাবনা নেই। একে, ওকে বিশ্বাস করার আগে নিজেকে বিশ্বাস করতে শেখো।
৪. অন্য লোকে যা ভাবার ভাবুক, যা করার করুক, কখনো নিজের পবিত্রতা, নৈতিকতা আর ভগবৎ প্রেমের আদর্শকে নিচু করো না। যে ঈশ্বরকে ভালবাসে তার পক্ষে চালাকিতে ভীত হবার কিছু নেই।
৫. আমাদের পৃথিবী প্রয়োজনের নিয়মে চলে। শীতের সময় যেই সূর্যের জন্য অপেক্ষা করে থাকি, গরমের সময় সেই সূর্যকেই আমরা গালি-গালাজ করি। আপনার মূল্য আপনার প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে।
৬. পেছনে ফিরে তাকানোর প্রয়োজন নেই। আগে চলো। আমাদের চাই অনন্ত শক্তি, অফুরন্ত উৎসাহ, সীমাহীন সাহস, অসীম ধৈর্য, তবেই আমরা বড় বড় কাজ করতে পারব।
৭. সর্বদা মনে রাখবে চালাকির দ্বারা কোনো মহৎ কাজ করা যায় না। প্রেম, সত্যানুরাগ মহাবীর্যের সহায়তায় সকল কাজ সম্পন্ন হয়।
৮. যখন তোমার সাথে কেউ দাঁড়াবে না তখন নিরাশ হইও না। চাণক্য বলেছিলেন- আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ যারা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, কারণ তারাই আমাকে শিখিয়েছে, যে আমি একাই কাজটি করতে পাড়ব।
৯. কারুর উৎসাহ ভঙ্গ করতে যাবে না। সমালোচনা করা একেবারেই ত্যাগ করবে। যতদূর ভালো বোধ হয় সকলকে সাহায্য করবে। যেখানটা ভালো বোধ না হয়, সেখানটা ভালো মত বুঝিয়ে দেবে। পরস্পরকে সমালোচনা করাই সকল সর্বনাশের মূল কারণ। যেকোনো বন্ধুত্ব ভাঙ্গার জন্য ওইটিই মূল মন্ত্র। “ও কি জানে?” “ সে কি জানে?” “তুই আবার কি করবি?” তার সঙ্গে ওই একটু ক্রূর হাসি। এইগুলিই হল ঝগড়া-বিবাদের মূলসূত্র।
১০. সবথেকে বড় গুরুমন্ত্র কি জানেন? কখনোই নিজের গুপ্তকথা অপরকে না জানানো। এটিই মানুষকে শেষ করে দেয়।
১১. শুধুমাত্র নিজের ভুল থেকে নয়, বরং অপরের ভুল থেকেও শেখার চেষ্টা করুন। কারণ আপনার কাছে ততটা সময় নেই যে, সব ভুল আপনার নিজের কাছে আসবে তারপর আপনি শিখবেন। তাই চোখের সামনে যা ঘটছে, তার থেকেও শেখার চেষ্টা করুন।
১২. তোষণকারী ব্যাক্তিদের থেকে সর্বদা দূরে থাকুন। কারণ তারা এমনভাবে তোষণ করে যে, আপনার নিজের পায়ের তলার মাটিই ধ্বসে যাবে।
১৩. যে আটজন ব্যাক্তি কখনো অপরের দুঃখ বুঝে না তারা হলেন-
রাজা, যমরাজ, ভিখারি, বেশ্যা, আগুন, ছোট বাচ্চা, চোর এবং কর প্রাপক।
স্বামী বিবেকানন্দ এবং চাণক্যের বাণী।। স্বামী বিবেকানন্দের বাণী।।
১৪. জীবনে আগে যেত চাও? তাহলে এক কাজ কর, বধিরের মত অভিনয় করতে শেখ। কারণ আমাদের চারপাশের মানুষদের একটি কথাই আমাদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
১৫. কুয়োতে বালতি যখন ঝুঁকে তখনই তাতে জল পরিপূর্ণ হয়ে যায়, আমাদের জীবনের অঙ্কটাও প্রায় এরকমই। যে ব্যাক্তি ঝুঁকতে জানে সে অনেক কিছু পেতে পারে। সর্বদা বড়াই করতে যেও না। দাদাগিরি তো আমরা মৃত্যুর পরেও করি, কারণ মানুষরা হেঁটে যায় আর আমরা তাদের কাঁধের উপর চেপে যাই। তাই যে কয়েকটা দিন বেঁচে আছেন, সেই কয়েকটা দিন অন্তত ঝুঁকতে শিখুন।
১৬. নিন্দা শুনে নিজের লক্ষ্য বদলাবেন না। কারণ লক্ষ্য পূর্ণ হতেই মানুষের নিন্দা, আশীর্বাদে পরিণত হবে।
১৭. এসো, মানুষ হও। নিজেদের সংকীর্ণ গর্ত থেকে বেড়িয়ে এসে বাইরে গিয়ে দেখ, সব জাতি কেমন উন্নতির পথে চলছে। তোমরা কি মানুষকে ভালোবাসো? তোমরা কি দেশকে ভালোবাসো? তাহলে এসো, উন্নত হবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করি। পেছনে চেয়ো না। অতি প্রিয় আত্মীয়-স্বজন কাঁদুক ; পেছনে চেয়ো না, সামনে এগিয়ে যাও।
READ MORE:-
১৮. মানুষকে কিভাবে বুঝবেন জানেন?-
- কেউ সাধারণ কথাতেই রেগে গেলে, তার মানে তার ভালবাসার প্রয়োজন আছে।
- কেউ সহজে কাদে না তার মানে, সে কমজোর।
- যদি কোনো ব্যাক্তি খুবই হাঁসে, এমনকি সাধারণ কথাতেও হেঁসে ফেলে, তার মানে সে ভিতরে ভিতরে একাকীত্বে ভুগছে।
- কেউ সাধারণ কথাতেও আঘাত পেলে, এবং চোখে জল চলে এলে, তার হৃদয় অনেক কোমল, এবং তার মন অনেক পরিষ্কার।
- যে তোমার কথা শোনার সময়, এদিকওদিক তাকায়, তাকে কখনো বিশ্বাস করতে যাবে না, ভবিষ্যতে ঠকে যাবে।
১৯. আমাদের দেশের মন্ত্রীরা জনগণের সেবা করতে করতে কোটি টাকার অধিকারী হয়ে গেছেন, অন্যদিকে জনগণ, সেবা পেতে পেতে হাঁতে ভিক্ষার বাটি ধরে ফেলেছেন।
২০. কেবল সংখ্যার দিক থেকে বেশি হলেই কোনো মহৎ কাজ সম্পন্ন হয় না। অর্থ ক্ষমতা, পাণ্ডিত্য কিংবা বাকচাতুরী এদের কোনোটারই বিশেষ কোনো মূল্য নেই। পবিত্র, খাঁটি এবংপ্রত্যখানুভুতি সম্পন্ন মহাপ্রান লোকেরাই জগতে সব কাজ করে থাকেন।
২১. আপনার শব্দের শক্তি আপনার মাতা-পিতার উপর প্রয়োগ করার চেষ্টা করবেন না। কারণ তারাই আপনাকে বলতে শিখিয়েছেন।
২২. আপনার ব্যবহার আপনার পরিচয়, কাপড় বা বস্র দেখেই যদি চরিত্র বিচার হত, তাহলে এতদিন, কাপড়ের দোকানকেই মানুষ মন্দির ভাবত, এবং পূজা করত।
২৩. যারা আপনার সাথে ভাল ব্যবহার করে তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করুন, কিন্তু যারা আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে যাবেন না। কারণ জল দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করা যায়, কিন্তু রক্ত দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করা যায় না।
২৪. বাপের টাকায় অহংকার করে কি লাভ। অহংকারের মজা তো তখনই যখন টাকা আপনার কিন্তু অহংকার পিতার।
২৫. আপনি যোগ্য হয়েও যদি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ না করেন, অযোগ্য লোকেরাই আপনার উপর শাসন শুরু করে দেবে।
২৬. মন শান্ত রাখার উপায়-
- কারো কোনো কাজে ততক্ষণ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনাকে এটি করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
- ক্ষমা করতে এবং কিছু কথাকে ভুলে যেতে শিখুন। একবার ক্ষমা করেই দেখুন না, কত আনন্দ পাওয়া যায়।
- কখনো পরিচয় পাবার লালসায় ভুগবেন না।
- মানুষকে দেখে জ্বলবেন না, মন ভাল থাকবে।
- ঠিক ততটাই কাটুন, যতটা আপনি খেতে পাড়বেন। অর্থাৎ ঠিক ততটাই কাজ হাঁতে নিন, যতটা আপনি করতে পাড়বেন। বেশি কাজ নিয়ে নিলে বদনামের সম্ভাবনা বাড়ে।
- যার চরিত্র কখনোই বদল হবার নয়, তাকে সহ্য করতে শিখুন, কারণ তাকে নিয়েই আপনার পথ চলা।
২৭. মস্তিষ্ককে সবসময় খাঁটাতে থাকুন, তাকে বসে থাকতে দিবেন না। কারণ নতুন কিছু তখনই আবিষ্কার করা যায়, যখন আপনার মস্তিষ্ক বেশি খাটুনি করে। মস্তিষ্ক বসে থাকলে, বেকার চিন্তা-ভাবনা মস্তিষ্ককে গ্রাস করে।
এই স্বামী বিবেকানন্দ এবং চাণক্যের বাণী গুলি আপনাদের কেমন লাগল তা জানাতে ভুলবেন না।
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।