পৃথিবীর আজব তথ্য।। ভূগোলের আজব তথ্য.
১. আমরা জানি যে, পৃথিবীকে সর্বমোট চারটি হিমস্ফিয়ারে ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, আফ্রিকা পৃথিবীর একমাত্র মহাদেশ, যেটি উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম এই চারটি হিমস্ফিয়ারে অবস্থান করছে।
২. গ্রিসের জাতীয় সংগীতে সর্বমোট ১৫৮টি পঙক্তি রয়েছে। আমার তো মনে হয় না, যে এরকম কোনো গ্রিক নাগরিক রয়েছেন, যিনি এতগুলি পঙক্তি হৃদয় থেকে, জাতীয় সংগীত গেয়ে থাকেন। এব্যাপারে আপনার কিছু কি বলার রয়েছে?
৩. পৃথিবীর সবথেকে বড় জায়গার নাম নিউজিল্যান্ডের পোরাঙ্গাহাউ এর Taumatawhakatangihangakoauauo tamateaturipukakapikimaungahoronuku pokaiwhenuakitanatahu. এবং পৃথিবীর সবথেকে ছোট জায়গাটির নাম হল- “Å” এটি আসলে একটি গ্রামের নাম, নরওয়ে এবং সুইডেনে এই নামের গ্রাম দেখতে পাওয়া যাবে। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ভাষায় “Å” এর অর্থ হল- নদী।
পৃথিবীর আজব তথ্য।। ভূগোলের আজব তথ্য
৪. আপনি কি জানেন, নিউইয়র্ক প্রতি বছর প্রায় ১ ইঞ্চি হারে, লন্ডন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এটি প্লেট স্থানান্তর তত্ত্বের একটি বড় উদাহরণ।
৫. আফ্রিকার সাহারা থেকে ফ্লোরিডার দূরত্ব প্রায় ৬,৪৩৪ মাইল। কিন্তু এত দূরত্ব হওয়া সত্যেও সাহারা মরুভূমির ধুলো ফ্লোরিডাতে উড়ে চলে যায়।
৬. হিমালয় পর্বতমালা ইন্ডিয়ান প্লেট এবং ইউরেশীয় প্লেট সীমান্তে অবস্থিত। এই দুইটি প্লেট এখনও পরস্পরের কাছে আসছে। যার ফলে হিমালয়ের উচ্চতা প্রতি বছর প্রায় ০.৬ সেন্টিমিটার হারে বেড়েই চলেছে।
৭. এতদিন, আমরা সবাই ভালোবাসা বোঝাতে যে, symbol টি ব্যবহার করে এসেছি, কখনো কি ভেবে দেখেছেন, ঠিক একইরকম আকৃতির প্রাকৃতিক জিনিস পৃথিবীতে থাকতে পারে। গ্রেট ব্যারিয়ার রীফ এর একটি অন্যতম অংশ হল এই Heart Reef. এর দৃশ্য প্লেন বা হেলিকপ্টার থেকে আপনি উপভোগ করতে পাড়বেন। এখানে আপনি শামুক কুড়োতে বা ডাইভিং করতে পাড়বেন না। সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এখানে এগুলি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৮. আমরা সকলেই জানি ইজিপ্টকে বলা হয় “পিরামিডের দেশ”. এখানকার সবথেকে বড় পিরামিডের নাম হল “পিরামিড অফ খুফু”। প্রায় 4500 বছর আগে যখন এটির নির্মাণকার্য সম্পন্ন হয়েছিল তখন এর উচ্চতা ছিল প্রায় 481 ফুট 3 ইঞ্চি। কিন্তু ক্ষয় কার্যের ফলে বর্তমানে এর উচ্চতা দাঁড়িয়েছে প্রায় 451 ফুট 1 ইঞ্চি।।
৯. আপনি কি জানেন, মেক্সিকো সিটি একটি হ্রদের উপর গড়ে তোলা হয়েছিল। বর্তমানে মেক্সিকো সিটি প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৪-৬ ইঞ্চি মাটির ভিতরে চলে যাচ্ছে। পূর্ববর্তী ৬০ বছরে, মেক্সিকো সিটি প্রায় ৩২ ফুট নিচে ডুবে গেছে।
আরও পড়ুনঃ-
পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত প্রাণী
১০. সাহারা পৃথিবীর গরম জায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম। এখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কম। কিন্তু ভাবুন তো কেমন হয়, যদি এখানেও বরফ পড়ে। হ্যাঁ ঠিক এমনটাই হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারিতে। তাপমাত্রা এতটাই নেমে গিয়েছিল, যে বরফ পড়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালেও এখানে বরফপাত হয়েছিল।
১১. মৃত সাগর বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪২৯ মিটার নিচে অবস্থান করছে। এটি প্রতিবছর প্রায় ১ মিটার নিচে চলে যাচ্ছে।
পৃথিবীর আজব তথ্য।। ভূগোলের আজব তথ্য
১২. রাশিয়া দেশটি এত বড় যে, একে সর্বমোট ১১ টি টাইম জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। রাশিয়ার একপ্রান্তে যখন সকাল ৭ টা হয় অন্যপ্রান্তে তখন সন্ধ্যা ৬ টা হয়।
১৩. গডউইন অস্টিন বা K2 পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ। কিন্তু আপনি কি জানেন, যে প্রতি বছর শীতের সময়, এর চূড়াতে এত পরিমাণ বরফ জমে যায় যে, কখনো কখনো এর উচ্চতা পৃথিবীর উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের থেকেও বেশি হয়ে যায়।
১৪. হল্যান্ড পৃথিবীর এমন একটি দেশ, যার অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকেও নিচে। হল্যান্ডের মোট আয়তনের 40%-ই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নিচে।
১৫. সুইডেনে এমন একটি হোটেল রয়েছে, যেটি সম্পূর্ণ বরফ দিয়েই তৈরি। প্রতি বছর এই হোটেলটিকে নতুন করে, বানানো হয়ে থাকে।
১৬. বিজ্ঞানীদের গবেষণা মতে, একসময় থর মরুভূমি আর কয়েকটি সাধারণ স্থানের মতই ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্য, এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কমে যায়, যার ফলে ধীরে ধীরে এটি মরুভূমিতে পরিণত হয়। তবে তারা এটাও বলেছেন যে, একটি ছোট অঞ্চল থেকে এর বিস্তার শুরু হয়েছিল।
১৭. আপনি কি জানেন পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগর প্রশান্ত মহাসাগর ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসছে। সমুদ্র তলের সম্প্রসারণের ফলে প্রতি বছর উত্তর আমেরিকা এবং এশিয়া পরস্পরের কাছাকাছি চলে আসছে, যার ফলে প্রশান্ত মহাসাগর বছরে প্রায় ২-৩ সেন্টিমিটার হারে সংকুচিত হচ্ছে।
১৮. Sargasso Sea পৃথিবীর একমাত্র সমুদ্র যার কোনো উপকূল নেই। এটি আটলান্টিক মহাসাগরের একটি অংশ। এটি চারটি সামুদ্রিক স্রোত দ্বারা পরিবেষ্টিত।
১৯. পৃথিবীর সবথেকে বড় পাথর অস্ট্রেলিয়াতে রয়েছে। যদিও এটিকে মাউন্ট অগাস্টাস বলা হয়ে থাকে। কিন্তু আদতে এটি একটি বৃহৎ শিলাখণ্ড। এটি ২৩০০ ফুট উঁচু।
২০. পৃথিবীর পৃষ্ঠে এবং গভীরে এত পরিমাণ সোনা রয়েছে, যে এটি দিয়ে সম্পূর্ণ পৃথিবীকে প্রায় ১.৫ ফুট গভীর আবরণে ঢেকে ফেলা যাবে। এখন আমার প্রশ্ন তাহলে সেগুলি তোলা হচ্ছে না কেন?
২১.
প্রকৃতির আরেক বিস্ময় হল তাসমানিয়ার Eaglehawk Neck. Eaglehawk Neck হল প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট খুব স্রু ভূমি বা রাস্তা যা দুটি আলাদা ভূখণ্ড Tasman Peninsula এবং Forestier Peninsula –কে এক করেছে। স্থানীয়ভাবে এটি ‘NECK’ নামে পরিচিত। ভূতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিক উভয় দিক থেকেই Eaglehawk Neck বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। একসময় ব্রিটিশ নির্বাসিত বন্দীরা Port Arthur কারাগার থেকে পালানোর সময় এটি ব্যবহার করত। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্রিটিশরা ১৮৩০ সালে এখানে কিছু হিংস্র কুকুর পাহারা বসায়। এই স্থানটিই পৃথিবীর বিখ্যাত “Bog Line’নামে পরিচিত।
২২.
মাউন্ট রোরাইমা সমতল শীর্ষ বিশিষ্ট পর্বতমালা। খুবই দুর্গম এবং মেঘে ঢাকা এই জায়গাটি পৃথিবীর অন্যতম নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। ১৫৯৬ সালে প্রথম এর খোঁজ মেলে। প্রায় ৩১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এর অবস্থান এবং চারদিক ৪০০ মিটার লম্বা ক্লিফ দ্বারা বেষ্টিত এই পর্বতমালার অবস্থান ভেনিজুয়েলা, ব্রাজিল এবং গায়ানা এই তিনটি দেশের সীমান্তে।
২৩.
উপরে যে ছবিটি দেখা যাচ্ছে, এটি দেখে আপনার সুনামির বিশাল ঢেউ মনে হলেও, এটি কিন্তু আদতে একটি শিলা। ঢেউ এর মত দেখতে এই ভূমিরূপটি অস্ট্রেলিয়াতে অবস্থিত। এটি প্রায় ১৫ মিটার উঁচু এবং ১১০ মিটার লম্বা। এটিকে বলা হয়- Wave Rock.
পৃথিবীর আজব তথ্য।। ভূগোলের আজব তথ্য
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।