ভালো কাজ অপরকে দেখানোর স্বভাব, এই জিনিসটা বর্তমান জনমানসে জাঁকিয়ে বসেছে। ভালমানুষের মুখোশ পরে নিজেকে নবভাবে প্রকাশ করতে ব্যস্ত সমাজের কিছু মানুষ।

আধুনিক বাংলা গল্পঃ- “নলেন গুড়ের পায়েস”

চিত্ত মন্ডল বললো ” তুই গাছ পিছু আমাকে দুই কেজি করে গুড় না দিলে আমি তোকে গাছ কাটতে দিবুনি বলে দিলাম।”

হারাধন বললো ” ও তোর শালার গাছ, সে তো শহর থেকে এসে, আবার গুড়ে দাবি করবে। তুই দুই কেজি করে গুড় চাইছিস কীভাবে হবে , আমার জ্বালানির দাম বেড়েছে কত জানিস!”

চিত্ত বললো ” হারু দেখ ঐ জঙ্গলে ২৭টা গাছ আছে, আমার শালা আসে না কখনোই। শীত কালে গ্রাম দেশে পিকনিক করতে আসে মাঝে সাজে। তুই জোর করে দিস গুড়। তাও কিলো খানিকের বেশি গুড় কখনো নেয় না ওর ছেলেরা। তাতেই তোর খুব ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। ওরা তোদের এখানে থাকতে দিয়েছে তার বেলায়। ওদের অনেক পয়সা ওরা ছাড়লেও আমি ছাড়বো না।”

সাবিত্রী মুখ ঝামটা দিয়ে তেরে এলো চিত্তের দিকে ” বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দর বেশি। Ngo বাবুকে দিয়ে ফোন করবো নাকি, প্রনব বাবুদের, কত ধানে কত চাল বেরিয়ে যাবে। এক কেজি গুড় তোকে দেবো না। যা কি করবি করে নে।”

বাংলা গল্প

চিত্ত বললো ” মেয়ে মানুষ হয়ে পুরুষ মানুষের কথার মাঝে কেন আসছিস তুই? আমার আত্মীয় ওঁরা। বৌদিকে বললো , ওদের কচি ছেলেটাকে মাথায় হাত বুলিয়ে তোরা কত টাকা পয়সা ইনকাম করিস প্রতি বছর। ওরা শহরের মানুষ বলে বোকা বানাস তোরা ওদের।”

হারাধন বললো “সাবিত্রী তুই ভেতর যা। চিত্ত ভাই, দেড় কেজি করে নাও, দুই কিলো করে দিলে আমার কি থাকে বললো।”
চিত্ত বললো “কথা বাড়িয়ে লাভ নেই, ৩৪ কেজির জায়গায় আমায় ত্রিশ কেজি দিবি।”

হারাধন বললো “ঠিক আছে তাই হবে। আর ঝগড়া বাড়িও না”
চিত্ত বললো, “ঠিক আছে ঐ কথাই রইল, কথার নড়চড় যেন না হয়।”

চ্যাঁচামেচি শুনে হারাধনের ছেলে পচার ঘুম ভেঙে গেল।
ও বিস্ময়ের চোখে বললো “বাবা মন্ডল বাবুদের জঙ্গলে তো কেউ যায় না। ওখানে বিষাক্ত বিষাক্ত সাপ আছে তুমি যাবে?”

হারাধন “বাবা সাপের ভয়ে যায় না বলেই তো ভালো হয়েছে আমাদের। ওখানে ওরা জানে ২৭ গাছ রস হয়। এখন, ওখানে ৩৭ টি গাছ থেকে রস পাওয়া যাবে। আর আমি তোর চিত্ত কাকার মতো কুঁড়ে লোককে নাকি, শহরের বাবুরা বিশ্বাস করে জমির আমায় দায়িত্ব দিয়েছে। দূর থেকে জঙ্গল দেখলেও আমি আর তোর মা ওই ডাঙ্গাটাকে সবজি বাগান বানিয়ে ফেলেছি। এবার আমাদের সুখের দিন আসলো বলে, এ হাটে গুড় বেঁচে  যা পয়সা তার দিয়ে তোর জন্য একটা নতুন গরমের জামা কিনে দেবো। তুই ঠান্ডায় বড়ো কষ্ট পাস।”

পচা বললো “আমার জামা লাগবে না। মায়ের শাড়িটা ছিড়ে গেছে, মায়ের জন্য কাপড় কিনে আনো। Ngo বাবু বলছে , শহরের থেকে কিছু লোক আসবে ওরা এইবছর এখানকার গরীব বাচ্চাদের জামাকাপড় দেবে। আমাদের জামাকাপড় দিয়ে ফোটো তুলবে, লোকজন দেখাবে তারা কত মহান। তুমি আমাকে বই খাতা কলম কিনে দাও। আমি শুধু খিচুড়ির লোভে স্কুলে যেতে চাই না আমি পড়তে চাই।

পড়ুনঃ- দুঃখের গল্প-  অজুহাতের বলি 

পটলা মাস্টার বলে তোমরা পড়াশোনা করো বেশি করে পড়াশোনা করো। যদি মানুষের মতো মানুষ হতো পারো তাহলে প্রমাণ করে দেবে ঐ শহরের বড়লোক মানুষগুলোর জন্যই তোমার গরীব। তাই দু’টো পুরোনো জামা কাপড় দিয়ে মহান সেজে লাভ নেই। গ্রামের মানুষের শ্রমের সঠিক মূল্য দিলেই গ্রামের মানুষরা গরীব থাকবে না।

সাবিত্রী বললো “দেখ দেখ, তোর ছেলে তো পটলা মাস্টার, আর নক্সাল দিদিমনি মতো বক্তৃতা দিচ্ছে।”
পচা একটু বিস্ময়ে সাথে জিজ্ঞেস করলো “আচ্ছা, তোমরা নীলাঞ্জনা দিদিকে নক্সাল দিদিমনি বললো কেন?”

হারাধন বললো “তোদের পটলা মাস্টার, নীলাঞ্জনা দিদি সব কথায় প্রতিবাদ করে, গত বারে ওদের পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়াতে বললো। কিন্তু ওরা দাঁড়ালো না। বললো যে লঙ্কায় যাবে সে রাবণ হবে। নক্সালরা এমন বলতো।”

পচা বললো “নীলাঞ্জনা দিদি তো ঠিক বলে। মন্ডল বাবুরা আমাদের ঘর না দিলে কোথায় থাকতাম। গত দুই বছর হয়ে গেল , বর্ষায় আমাদের ঘর ভেঙে গেছে। ঘোষরা সরকারি চাকুরি করে, মীনুদের চালকল আছে, ওরা পঞ্চায়েত থেকে ঘর পেলো। কেন আমরা পেলাম না।”

বাংলা গল্প

হারাধন কিছু বলতে যাবে এমন সময় Ngo বাবু এসে হাজির। শহরের মানুষ এসে খেজুর গুড় তৈরি নিয়ে ভিডিও বানাবেন। এখন এটা নতুন ট্রেন্ড তৈরি হয়েছে। ইউটিউব ফেসবুকে ভিডিও উপলোড করে লাইক পাওয়ার লোভে শ্মশানে জল জঙ্গলে সব জায়গায় হাজির হয় কিছু মানুষ।

নলেন গুড় তৈরির গল্পটা বলি আপনাদের। খেজুর  রস থেকে তৈরি গুড়কেই নলেন গুড় বলে। খেজুর গাছের রস থেকে তৈরি হয় নলেন গুড়। বাংলায় জনপ্রিয় এই গুড়ের ব্যবহার ছিল প্রাচীনকাল থেকেই দক্ষিণ ভারতে । কারণ বাংলা-দ্রাবিড় অভিধানে ‘ণরকু’ শব্দের অর্থ হল কাটা বা ছেদন করা। আবার বঙ্গীয় শব্দকোষ অভিধান মতে নরুন বা নরশনি মানেও কিন্তু কাটা বা ছেদন করা। 

নরুন হল গ্রাম বাংলার নাপিতের ক্ষৌর অস্ত্র। খেজুর গাছ থেকে রস বের করতে গুড় প্রস্তুতকারীরা প্রথমে দা বা কাটারি দিয়ে চেঁছে দিতে হয়। তারপর নরুন দিয়ে ফুটো করে সেখান থেকে একটা বাঁশের ছিলা বা নল লাগিয়ে দেওয়া হয় হাঁড়ি পর্যন্ত, এই নল দিয়ে রস চুঁইয়ে হাঁড়িতে আসে। এর থেকেই এই গুড়ের নাম নলেন গুড় হয়। যাঁরা এই খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করেন তাদের বলা হয়  শিউলি, কথ্য ভাষায় ‘গাছি’-ও বলা হয়।  নলেন গুড় তৈরি করতে শিউলিদের ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত খাটতে হয়৷

নলেন গুড় তৈরি করার অনেক ধাপ আছে৷ প্রথম ধাপ হল ‘গাছ কাটা’৷ হেমন্তের হিমেল হাওয়ায় হালকা শীত  শুরু হয় , সেই সময় থেকেই গাছ কাটার কাজ শুরু করতে হয়  শিউলিদের৷ প্রথমে খেজুর গাছের পাতা কেটে পরিষ্কার করতে হয়৷ কেটে ফেলতে হয় অধিকাংশ পাতা৷ এই কাজকে গ্রাম্য ভাষায় বলে ‘গাছ কাটা’৷

পড়ুনঃ- কলেজ লাইফের ব্যর্থ প্রেম কাহিনী  

গাছ কাটার পর খেজুর গাছের একেবারে উপরের দিকের পাতার ঠিক নিচের কাণ্ড কেটে পরিষ্কার করতে হয়৷ চেঁছে পরিষ্কার করার পর খেজুর গাছের কাণ্ডের ওই অংশ কিছুটা নরম হয়ে যায়৷ তখন কাণ্ডের নরম অংশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় একটা কাঠি বা নল৷

এই কাঠি বেয়ে টুপটুপ করে বেরিয়ে আসে খেজুর রস৷ এই নল বা কাঠি সাধারণত বাঁশের কঞ্চির একটা অংশ কেটে নিয়ে সেটাকে লম্বালম্বি মাঝখান থেকে চিরে ফেলতে হয়৷ ফলে মাঝখানে একটা সরু পথ তৈরি হয়৷ এই পথ দিয়েই রস বেরিয়ে আসে।

শীতের শুরু থেকে গাছে রস আসতে শুরু করে৷ তখন শুরু হয় নলেন গুড় তৈরির দ্বিতীয় ধাপ৷ সূর্য ডোবার আগে মাটির কলসি গাছে এমন ভাবে ঝুলিয়ে দিতে হয় যাতে কলসির মুখটা কাঠির নিচে থাকে৷ সারারাত ধরে কলসিতে জমা হতে থাকে রস। পরদিন ভোরবেলা, সূর্যের আলো ফোটার আগে গাছ থেকে কলসি নামিয়ে নিতে হয়৷

নলেন গুড় তৈরির তৃতীয় তথা শেষ ধাপ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ভাল গুণমানের নলেন গুড় তৈরি করতে তৃতীয় ধাপে যথেষ্ট মুন্সিয়ানার প্রয়োজন৷ মাটির উনুনে কাঠের জ্বালানি ব্যবহার করে রস ফোটাতে হয়৷ রস ফোটার সময় তার মধ্যে বিশেষ ধরনের হাতা দিয়ে সারাক্ষণ নাড়তে হয়৷ মূলত নারকেলের মালার অর্ধেক অংশে লম্বা কাঠ লাগিয়ে এই হাতা তৈরি করা হয়৷

কয়েকঘণ্টা ধরে রস ফোটাতে হয়৷ যত সময় এগোয়, ততই নলেন গুড়ের গন্ধ পাওয়া যায়৷ গন্ধ যত বাড়বে, বুঝতে হবে গুড়ের মান ততই ভালো হচ্ছে৷

গুড়ের গুণমান রসের উপর নির্ভর করে৷ টানা তিনদিন রস সংগ্রহের পর বন্ধ করে দিতে হয়৷ একে বলে গাছের জিরেন৷ কারণ, প্রতিদিনই গাছে হাঁড়ি ঝোলানোর সময় কাণ্ডের কিছুটা অংশ চাঁছতে হয়৷ গাছকে জিরেন দিলে ওই তিনদিন, তা চাঁছতে হয় না৷ এরপর চতুর্থদিন বা জিরেনের পর প্রথমদিন যে রস সংগ্রহ করা হয়, তার স্বাদ অন্য রসের তুলনায় একেবারেই আলাদা৷ এই রস জিরেন-কাটের রস নামে পরিচিত৷

পড়ুনঃ- রহস্যময় গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন। 

জিরেন-কাটের রস থেকে জিরেন-কাটের গুড় তৈরি হয়৷ এই গুড়ের স্বাদ সব থেকে ভাল৷

পচা স্কুলে চলে গেলো। সাবিত্রী বললো “বাচ্চাটার জন্য একটু গুড় দেবে গো, ওকে একটু পায়েস করে দিতাম..”

হারাধন বললো “এবার দিচ্ছি, কিন্তু ও সব বড়লোকদের অভ্যাস ছেলেকে করি দিশ না। পটলা মাস্টার একে ছেলে পুলেদের মাথা বিগড়াছে। পঞ্চায়েত সদস্য বলছিলো পটলা মাস্টার মশাইের কাছে পড়তে পাঠালে আর রাস্তার সরকারি গাছ কাটতে দেবে না ওরা।”

সাবিত্রী বললো ” পটলা মাস্টার মশাই তো সবার ভালো চায়, তবে ওদের সবাই এতো শত্রু কেন?”

হারাধন বললো ” জানি না। কিন্তু সদস্য বলছিলো , ইটখোলায় কাজ আছে, সবাই এই সময় ছেলেমেয়েদের ওখানে কাজে পাঠাতে। যারা কাজে যাবে খিচুড়ি স্কুল থেকে তাদের পরিবারকে চালডাল এমনিতেই দেওয়া হবে। টাকা চাল এলে সংসারে কিছুটা অভাব দূর হবে। কিন্তু পটলা মাস্টার ওখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলছে তার ছাত্রদের সে শিশু শ্রমিক হতে দেবে না। ওসব কথা ভেবে লাভ নেই চল হাটে যাই।”

bengali story
<

হাটে আজ ভালো বেঁচে কেনা হয়েছে। পচার জন্য একটা উলের তৈরি সোয়েটার কিনলো হারাধন। আজ তো পচার জন্মদিন। আবার নবান্ন উৎসবও। নতুন কাপড় পরে আজ নলেন গুড়ের পায়েস খাবে ছেলেটা। কি শান্তি হারাধনের। সাবিত্রী খুব খুশি।

ঘরে ঢুকতে গিয়ে হারাধন বুকে ছ্যাঁকা খেলো। উঠানে হাত-পা ছড়িয়ে বসে আছে সাবিত্রী। চিত্ত ওর বৌ ওকে সামলাছে।
হারাধন কিছু বলার আগেই চিত্ত বললো ” চল আগে হাসপাতালে, Ngo বাবু, পটলা মাস্টার, সবাই তোর ছেলেকে নিয়ে গেছে ওখানে।”

হারাধন কাঁপা কাঁপা গলায় বললো “কেন?কি হয়েছে?””

পথে যেতে চিত্ত বললো “গুপু সর্দার, মিডে মিলের চাল, সবজি, মালপত্তর বেঁচে দোতলা বাড়ি হাঁকিয়েছে সে খবর কি পার্টি রাখে না। হিসাবে চেয়েছিলো পার্টি, সামনে ভোট , মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা চেয়েছে ওর কাছে থেকে পার্টি। বলছে ভালো ভালো খেতে দিতে হবে বাচ্চাদের, ভোট হবার আগে পর্যন্ত। তাই ও ওর শালা শহরের কোন বিয়ের বাড়ি থেকে বেঁচে যাওয়া খাবার নিয়ে এসে বাচ্চাদের মাঝে মাঝে খাওয়াও।

আজ মাংস ভাত খেয়েছে কিন্তু মাংসের তরকারিটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এখন সবার শরীর খারাপ হয়েছে এই তরকারি খেয়ে। গ্রামের লোকজন খুব রেগে, জানি না কী হবে!”

হারাধন ফিস ফিস করে বললো “আমার বেটা এবার নলেন গুড়ের পায়েস খেতে পাবেনি তাহলে?”

মানব মণ্ডল

গল্পের কথনে-
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
পড়ুনঃ-
মধ্যবিত্তের প্রেম- সাইকেল 

অসম্পূর্ণ প্রেমের গল্প 
নিচে দেওয়া wp গ্রুপ টি শুধু মাত্র অ্যাক্টিভ মেম্বারদের জন্য। যাদের মনে হবে ব্যস্ত জীবনের অল্প সময় ও এখানে ব্যয় করতে পারবেন আড্ডা আলোচনার মধ্যে তাদের জন্য।  
বি.দ্র. - ইউটিউবার দাদা দিদিরা যারা কনটেন্ট খুঁজতে গ্রুপ এ আসেন তারা এখানে ভিড় জমাবেন না অহেতুক নিজেদের ক্ষতিসাধনে।

WHATSAPP GROUP LINK- ছাড়পত্রিয়ানস (CHARPATRIANS)  👈🏻 ক্লিক করুন
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

আধুনিক বাংলা গল্প। অসাধারণ বাংলা গল্প। 1 Wonderful bengali story you must read.

Spread the love

Leave a Reply