এই আজব দুনিয়া-তে কতই না আজব মানুষের বসবাস। আর এই আজব দুনিয়া -তেই হয়ে চলেছে আজব ঘটনা যত। কোনো কিছুর অভ্যাস হওয়াটা খারাপ কিছু নয়, কিন্তু কোনো কিছুর নেশায় পড়ে যাওয়া বা কোনো কিছুতে আসক্ত হয়ে পড়াটা নিতান্তই বেমানান।
আবার এই আসক্ত হয়ে পড়ার অনেক খারাপ দিক এবং অনেক ভালো দিক রয়েছে। কিন্তু দেখা যায় পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই ভালো নয় বরং খারাপ নেশাতেই আবদ্ধ। আমরা আমাদের চোখের সামনেই দেখি,অনেকেই বর্তমানে গেম খেলায় আসক্ত, আবার অনেকেই জুয়ো খেলায়, এদের কোনোটিই ভালো নয়। আজকের এই ব্লগটিতে থাকছে, এরকমই কিছু বেমানান জিনিসের প্রতি আসক্ত হওয়া মানুষ ও তাদের কাহিনির কথা।
আজব দুনিয়া।। আজব মানুষ ।।আজব ঘটনা যত
ঘটনা- ০১
দিল্লীতর নিকটবর্তী এক ছোট্ট এলাকায় সনি নামের এক ছেলে বাস করত। ছোট্ট বেলা থেকেই তার শখ একজন বডিবিল্ডার হবে। তার এই শখ পরবর্তীতে নেশায় পরিণত হয়ে যায়। যখন ঘোড়াদের ময়দানে নামানো হয় খেলার জন্য, তখন তারা যাতে ভালোমত পারফর্মেন্স করতে পারে, তার জন্য তাদের একপ্রকার ইনজেকশন দেওয়া হয়ে থাকে। আর এই ইনজেকশনেরই নেশায় পড়ে যায় সনি। তার বডিবিল্ডার হওয়ার স্বপ্নে আবদ্ধ হয়ে, সে প্রতিদিন এই ইনজেকশনটি নিতে থাকে, ইনজেকশনটি নেওয়ার পর সে সাময়িক ভাবে তার স্বপ্ন পূরণ করতে লেগে পড়ে।
এরপর এমন একটা পর্যায় আসে, যখন সে এই ইনজেকশনের নেশায় আবদ্ধ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে দাঁড়ায় যে সে, ইনজেকশন না নিলে আর কিছুতেই থাকতে পারছিল না। এরপর তার বাড়ির সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে,তাকে দ্রুত হসপিটালে ভর্তি করায়। দীর্ঘ কয়েকমাস লড়াই করার পর সে তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে, কিন্তু ইনজেকশনের প্রভাব তার শরীর থেকে যায়নি। এখন সে পূর্বের মত আর ততটাও সক্ষম নয়।
ঘটনা-০২
আমেরিকার মিশিগান রাজ্যের ডেট্রয়েট শহরের বাসিন্দা লিজা নামক এক মহিলার নেশা একটু অন্য রকমের। সে তার পোষা বেড়ালটির চুল খেতে ভালোবাসে। অনেক সময় বেড়ালের দেহ থেকে এক চিমটি চুল নিয়ে খেতে থাকে সে। যেভাবে, একটি পশু অন্য আরেকটি পশুকে জিহ্বা দিয়ে চেটে দেয়, ঠিক সেভাবেই সে তার বেড়ালের সাথেও করে। তার মতানুসারে, এতে সে এক অদ্ভুত রকমের আরাম পায়, এবং তার মনে সে অবাক রকমের ফিলিং অনুভব করে। সে আরও জানায় প্রায় কুড়ি বছর ধরে সে এই নেশায় আবদ্ধ। তবে এর জন্য তার কোনো শারীরিক সমস্যা হয় কি না, সে ব্যাপারে মুখ খুলেননি লিজা।
ঘটনা- ০৩
মহিলাটির স্বামীর মৃত্যু হয়েছিল ২০১১ সালেই, কিন্তু স্বামীর মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই মহিলাটি। তার স্বামীর চিতা ভস্ম একটি পাত্রে সুন্দর করে সে সাজিয়ে রেখে দিয়েছে। প্রতিদিন সকালে সে তার আঙ্গুল সেই ভস্মের ভিতর দিয়ে দেয়, এবং তার আঙ্গুলে যে পরিমাণ ভস্ম লেগে যায়, সেটি সে খেয়ে নেয়। এটিও এক প্রকারের নেশা বা addiction।
ঘটনা- ০৪
সাধারণত দেখা যায়, বাচ্চারা খেলনার প্রতি বেশি আসক্ত হয়। কিন্তু একজন যুবক যদি খেলনার প্রতি বেশি আসক্ত হয়, তাহলে সেই বিষয়টি একটু খতিয়ে তো দেখতেই হয়। মার্ক নামের এক ব্যাক্তি তার নিজের জীবনের থেকেও তার সাথে থাকা ১৫ টি খেলনাকে বেশি ভালবাসেন। আর এই খেলনাগুলি হাওয়াযুক্ত খেলনা। খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে, স্নান এমনকি ঘুমোতে যাওয়া সবকিছুই এই খেলনার সাথে সম্পূর্ণ হয় তার। সে জানায়- সে এই খেলনা গুলির সাথে relationship এ আছে। সে যেমন খেলনা গুলিকে ছাড়া বাঁচবে না, ঠিক তেমনই নাকি খেলনাগুলিও তাকে ছাড়া বাঁচবে না। সে নাকি খেলনা গুলির মধ্যে প্রাণ খুঁজে পেয়েছে।
আরও পড়ুনঃ-
ঘটনা- ০৫
এবারে যে ব্যাক্তির কথা বলব তার বাড়ি ব্রাজিলে, আর তার নাম হল- লুইস। ৩৭ বছর ধরে সে মৃত মানুষের যাত্রায় ভাগ নেওয়া এবং মৃত দেহের পাশে গিয়ে, তার গন্ধ শোকার মত নেশায় সে আবদ্ধ। ১৯৮৩ সালে তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে সে এই নেশায় আবদ্ধ হয়। সে তার এলাকার কোনো মানুষের মৃত্যুর শোভাযাত্রায় থাকবে না এমনটি ভাবা যায় না। আর তার এই অদ্ভুত নেশার জন্যই কর্মহারা হয়েছেন অনেকবার কিন্তু কিছুতেই তিনি তার এই অভ্যাসটি ছাড়তে নারাজ। তার মতে সে এক অপ্রকাশিত আনন্দ খুঁজে পায় এর মধ্যে।
ঘটনা- ০৬
বিভিন্ন সিনেমা বা কার্টুনে আমরা বড় বড় ভ্যাম্পায়ার- এর নাম নিশ্চয় শুনেছি। কিন্তু মনে হচ্ছে, সেই ভ্যাম্প্যায়ার বুঝি সত্যি নেমে এল পৃথিবীতে। অ্যামেরিকার JULIA CAPLES নামের এই মহিলা মানুষ এবং শুয়োরের রক্ত খেতে বেশি পছন্দ করে। পূর্ববর্তী ১৫ বছরে সে যে পরিমাণ রক্ত খেয়েছে, তাতে প্রায় ২৩টি বাথটব অনায়াসেই ভড়া যেতে পারে, এমনই মনে করছেন, তার নিকট আত্মীয়রা। প্রতিদিন কমপক্ষে তার ২ লিটার রক্ত চাইই, নাহলে সে নাকি কাজ করার শক্তি পায় না। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল যখন সে, ১৮ বছরের ছিল। তার বয়ফ্রেন্ডকে কিস করতে গিয়ে JULIA CAPLES তাকে কামড়ে দেয়, তখনই নাকি কিছু রক্ত JULIA CAPLES এর মুখের ভিতরে চলে যায়, আর তখন থেকেই তার এই addiction.
ঘটনা- ০৭
কয়েকদিন আগেই ফেসবুকে একটি মানুষকে জ্বলন্ত আগুন খেতে দেখেছিলাম। কিন্তু এখন যার কথা বলছি, সে আগুন নয় বরং ইট খেতে বেশি ভালবাসে। ১৮ বছর বয়স থেকেই Patrice Benjamin Ramgoolam নামের এই মহিলা ইট খাওয়া শুরু করেন। ইটের প্রতি তার এই ভালবাসা তার বাড়ির দেওয়ালের জায়গায় জায়গায় ফুটো করে দিয়েছে।
ঘটনা- ০৮
সাধারণত pregnancy –র সময় মহিলারা আচার বা সেই জাতীয় টক জিনিস খেতে ভালবাসেন। কিন্তু ব্রিটেনের বাসিন্দা জেড এক অদ্ভুত addiction এ আবদ্ধ। ৫ জন শিশুর মা জেড, নিজের pregnancy-র সময় আচার নয়, বরং টয়লেট পেপার খেতেই বেশি ভালবাসেন। তার মতে এই সময় টয়লেট পেপারের গন্ধ তার খুব ভালো লাগে।
ঘটনা- ০৯
এবারের মহান ব্যাক্তিটি সোফা খেতে খুবই ভালবাসেন। তার এই ভালবাসায় কয়েকটি সোফা ইতিমধ্যে ভ্যানিস হয়ে গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই ব্যাক্তিটির ব্যাপারে আর কিছু বিস্তারিত জানা যায়নি।
দেখলেন তো কতই না আজব দুনিয়া। আর তার সাথে তাল মিলিয়েই চলে আসে কিছু আজব মানুষ।। এই ছিল কিছু অদ্ভুত ধরনের নেশা বা আসক্তি। আশা করছি ব্লগটি ভালো লেগেছে। প্রতিদিনের আপডেটের জন্য আমাদের ফেসবুক পেজে ফলো করতে ভুলবেন না যেন।
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।