আজ আমরা কিছু অজানা রহস্যময় প্রাণীর সত্যতা যাচাই করব। সত্যতা বলতে, তাদের অস্তিত্ব কি আদতেও হয়ে থাকে, বা একসময় কি সত্যি ছিল, অথবা আজও কি কোথাও লুকিয়ে আছে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব।

অজানা রহস্যময় প্রাণীঃ-

পরী কি সত্যি হয়ে থাকে?

অনেক সিনামায় পরীদের দেখানো হয়ে থাকে। সেখানে ডানা যুক্ত এমন এক নারীকে দেখানো হয়, যে দেখতে খুবই সুন্দর এবং নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী যা খুশি তা মুহূর্তের মধ্যে বানিয়ে দিতে পাড়ে বা নিয়ে আসতে পাড়ে।

ছোট বেলায় আমরা অনেক পরীর গল্প শুনেছি তাদের নাকি একটি আলাদা রাজ্যও আছে, সাধারণ মানুষ সহজে তাদের দেখা পায় না। কিন্তু এই পরী কি সত্যি সত্যি থাকে, নাকি এটি আমাদের অবচেতন মনের কল্পনা মাত্র! চলুন বিস্তারিত জেনে নিই।

অজানা-রহস্যময়-প্রাণী-পরী-কি-সত্যি-হয়ে-থাকে
অজানা রহস্যময় প্রাণী পরী কি সত্যি হয়ে থাকে

অনেক ফটোগ্রাফার ক্যামেরায় পরীর ছবি তুলেছেন। প্রফেসর জন হায়াত, ক্যামেরাতে সুন্দর সুন্দর পরীর ছবি তুলেছিলেন। সেই ছবি গুলি দেখে, সবাই ভেবেছিলেন যে এটি আসলে ইডিটিং করে বানানো হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে এরকম আরও অনেক ফটোগ্রাফ প্রকাশ পায়, যাতে বোঝা যায় যে, পরী নামের সত্যি কিছু এই পৃথিবীতে আছে। আবার অনেক সিসিটিভি ক্যামেরাতেও পরী বা সেইজাতীয় কিছু ধরা পড়ার ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে।

জন হায়াতের ফটোগ্রাফ গুলি প্রকাশিত হওয়ার অনেক আগেই কিছু মানুষ পরী দেখার কথা বলেছেন। অনেকেই বলেছেন, পরীরা পৃথিবীর বাসিন্দা নন, তার ভিনগ্রহের বাসিন্দা। সে যাই হোক পরী যে সত্য এবং এদের অস্তিত্ব যে থাকে, তা নিশ্চিত। তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে, সিনেমায় যেমন দেখানো হয়, তাদের আকার মানুষের মত, বাস্তবে তা নাও হতে পাড়ে। এমনকি তাদের দৈবিক শক্তি সম্পর্কেও বিশেষ কিছু জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত যতগুলি পরীর আসল ছবি প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলিতে দেখা গেছে, পরীরা মানুষের মত বড় হয়না তবে হ্যাঁ একথা ঠিক যে এরা অনেক উজ্জ্বল হয়ে থাকে।  

ড্রাগন কি সত্যি হয়ে থাকে?

অনেক সিনেমায় আমরা ড্রাগন নামে এক জীবকে দেখে থাকি। দেখা যায় যে, এদের চারটি পা রয়েছে, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডানাও দেখা গেছে। আবার এরকম অনেক ড্রাগন দেখা গেছে, যারা মুখ দিয়ে আগুন বেড় করে। বিশালরূপী দেহের শেষ পর্যায়ে একটি লেজ থাকে। এর পীঠের উপর কাঁটার মত জিনিস থাকে। দেখা গেছে কোনো বড় গুহা থেকে এরা উড়ে আসে।

আবার আপনি যদি চীন বা জাপানের সিনেমা গুলি দেখেন, সেখানেও ড্রাগনকে নিয়ে অনেক সিনেমা বানানো হয়েছে। বিভিন্ন সাহিত্যে এই ড্রাগনের পরিচয় পাওয়া যায়। চলুন এবার আরেকটু গভীর ভাবে আলোচনা করা যাক।

প্রথমেই বলে রাখি এই প্রাণীটি সম্পূর্ণ রুপে কল্পিত এবং বর্তমানে এর কোনো অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই আর অতীতেও ছিল না। পরন্তু পুরাতাত্ত্বিক আলোচনা তাই বলে। বিভিন্ন উপকথায় এদের একটি পৃথক দেশের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সত্য হল যে, আজ পর্যন্ত এরকম কোনো দেশের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ড্রাগন-কি-সত্যি-হয়ে-থাকে
ড্রাগন কি সত্যি হয়ে থাকে

যুক্তিঃ-

ড্রাগনের কোনো অস্তিত্ব নেই বা অতীতেও ছিল না। যদি সত্যি সত্যি এরকম কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব থেকে থাকে, তাহলে নিশ্চয় আমরা তাদের কোনো না কোনো প্রমান পেতাম। আজ থেকে প্রায় ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে যেদিন মানুষের কোনো অস্তিত্বই ছিল না, সেদিন বিলুপ্ত হওয়া ডাইনোসরের অস্তিত্বের প্রমান আমরা পেয়েছি। সুতরাং ড্রাগন বা সেই জাতীয় কোনো জীবের অস্তিত্ব যদি সত্যি থাকে বা থাকত তাহলে বর্তমানে নানান উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে তার সন্ধান আমরা অবশ্যই পেতাম।

স্যাটেলাইটের দৌলতে গোটা পৃথিবীতে আজ নজরদারী চালাচ্ছে মানুষ। পৃথিবীর প্রতিটি কোণায় মানুষের চোখ চলে গেছে, সুতরাং বলা যায় ড্রাগনের কোনো অস্তিত্ব থাকলে তা অবশ্যই মানুষের নজরে আসত।

তাই, ড্রাগন নামের কোনো জীবের অস্তিত্ব বর্তমানে পৃথিবীতে নেই, বা অতীতেও ছিল না। এটি সম্পূর্ণ ভাবে একটি কাল্পনিক প্রাণী। মিথ বা উপকথার হাত ধরেই এদের আগমন, এবং সেই উপকথার হাত ধরেই এদের পরিপূর্ণতা প্রাপ্তি।

আরও পড়ুনঃ- ভূত আছে কি নেই! ভূত কি আত্মা কি?

ইউনিকর্ন বা পেগাসাস কি সত্যি হয়ে থাকে?

আপনি নিশ্চয়ই অনেক সিনেমায় বা গল্পে এই ইউনিকর্ন নামক প্রাণীটিকে দেখে থাকবেন। এদের মাথায় সাধারণত একটি শিং থাকে। আবার অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় এদের পাখাও থাকে, যার ফলে এরা অনায়াসেই আকাশে উড়তে পাড়ে। আকারে সাধারণত একটি ঘোড়ার মতনই হয়ে থাকে, তবে মাথায় একটি শিং থাকে।

বলা হয়ে থাকে, সবাই এই ইউনিকর্ন এর দেখা পায় না, বা একে ধরতে পাড়ে না, কেবলমাত্র পবিত্র এবং সৎ ব্যক্তিরাই এর দেখা পায়। তবে বলে রাখি যে বাস্তবে এরকম কোনো জীবের অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই। এটি সম্পূর্ণরুপে একটি কাল্পনিক প্রাণী।

অনেক প্রাচীন কথাতে এই প্রাণীটির কথা বলা হয়েছে। বর্তমান দিনেও এরকম অনেক প্রাণী দেখা যায় যাদের মাথায় কেবলমাত্র একটি শিং থাকে। সিন্ধু সভ্যতাতেও এরকম অনেক প্রাণীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে যাদের মাথায় শুধু একটি শিঙের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, তবে এরা সকলই ষাঁড় বা সেইজাতীয় প্রাণী ছিল।

ইউনিকর্ন বা পেগাসাস কি সত্যি হয়ে থাকে
ইউনিকর্ন বা পেগাসাস কি সত্যি হয়ে থাকে
<

অনেক সাহিত্যে বিশেষত গ্রিক সাহিত্যে এদের অস্তিত্বের কথা প্রথম খুঁজে পাওয়া যায়। দেখতে সাদা এবং উজ্জ্বল এই এক শিং বিশিষ্ট প্রাণীটির ছবি বিভিন্ন প্রাচীন সাহিত্যে পাওয়া গেলেও বর্তমানে এদের কোনো অস্তিত্ব নেই এবং অতীতেও ছিল না। এটি শুধুমাত্র একটি কাল্পনিক প্রাণী, এবং অতিরঞ্জিত ভাবে কাহিনী গুলিকে ফুটিয়ে তোলার জন্যই কাহিনীতে এই কাল্পনিক প্রাণীটিকে শামিল করা হয়েছে।

পড়ুনঃ- এমনটা কেন হয়?অজানা তথ্য

জলপরী কি সত্যি হয়ে থাকে? (মৎস্য কন্যা MERMAID)

অনেক সিনেমা বিশেষত জাপান এবং চীনের সিনেমা গুলিতে জলপরী নামে এক অর্ধ নারী এবং অর্ধেক মৎস পুচ্ছ যুক্ত এক অর্ধমানবীকে দেখা যায়। অনেকে একে মৎস কন্যাও বলে থাকেন। রামায়ন সহ আরও অনেক সাহিত্যে জলপরীর কথা বলা হয়েছে।

অনেকের মধ্যে প্রবাদ প্রচলিত আছে যে, বিভিন্ন সামুদ্রিক দুর্ঘটনার পিছনে জলপরীর হাত রয়েছে। অনেকের মতে জলপরী গান গাইতে খুব পছন্দ করে।

গ্রিসের অনেক গল্পকথাতেও এই জলপরীর কথা জানা যায়। তবে আদতে বিজ্ঞানের মতে জলপরীর অস্তিত্ব পৃথিবীতে কোনোদিন ছিল না এবং বর্তমানেও নেই। ইন্টারনেটে আপনি যত জলপরীর ছবি বা ভিডিও দেখে থাকেন, সেগুলি সম্পূর্ণ রুপে fake।

২০১৬ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা সামনে এসেছিল, সেখানে এক বাচ্চার জন্ম হয়েছিল যে দেখতে অনেকটাই জলপরীর মত ছিল, তবে সেই শিশুটি মাত্র ১০ মিনিটের মত বেঁচে ছিল। তারপর সে মারা যায়।

জলপরী-কি-সত্যি-হয়ে-থাকে অজানা রহস্যময় প্রাণী
জলপরী কি সত্যি হয়ে থাকে অজানা রহস্যময় প্রাণী image

তবে সে যাই হোক, জলপরী বা সেই জাতীয় কোনো জীবের অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে নেই।   

আশা করছি এই অজানা রহস্যময় প্রাণী গুলির অস্তিত্ব সম্পর্কে একটি ধারণা পেয়েছেন। প্রতিদিনের আপডেটের জন্য আমাদের ফেসবুক পেজ অবাক বিশ্ব- তে যুক্ত হতে ভুলবেন না। চাইলে আমাদের গ্রুপ AMAZING FACTS (অজানা তথ্য) -তেও যুক্ত হতে পাড়েন।

Spread the love

Leave a Reply