জানেন কি প্রথম দেখার অনুভূতি কেমন। প্রেমে না পড়লে সেটা হয়ত উপলব্ধি করা যাবে না। প্রথম দেখায় ভালো লাগার গল্পটিতে এক অন্যরকম প্রেমের ছোঁয়া ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক।
প্রথম দেখায় ভালো লাগার গল্পঃ- “জন্মদিনের উপহার”
আজ ওর জন্মদিন। আমার সাথে ও সময় কাটাবে বলেছিলো। কাল রাতে পাইপ বেয়ে অত কষ্ট করে ওদের ছাদে ওঠলাম, কেক কাটলাম। বিনিময়ে বলেছিলাম আজ প্রিন্সেপ ঘাটে সূর্য ডোবা দেখতে দেখতে ঘটি গরম ভাজা খাবো। কিন্তু ও এলো না। ওর বোন বলে ফেললো, ফোনে পাওয়া যাবে না ওকে আজ। কারণ ওকে অদ্রি আজ নাইট ক্লাবে নিয়ে গেছে।
বাড়িতে জানে প্রমীলা দির বাড়ি গেছে ও। আমিতো অদ্রি থেকে কম যাই না। অদ্রি বড়লোক। কিন্তু আমিও পড়াশোনায় ভালো। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট কি হয়েছে। কলেজটা শেষ করতে পারলেই ভালো চাকরি পেয়ে বসে আছি। ও ওর বাবার টাকায় ফুর্তি করে। আমি তো ওর জন্য যা করি সব কিছু নিজের টাকায়। ওর বোন ঠিক বলেছে, ওর মতো মেয়ে আমার যোগ্য নয়। আমি ওর কথা ভাববো না।
সত্যি ওর সাথে ব্রেক আপ করে নিতে হবে। ও দুই নৌকায় পা দিয়ে চলছে। অদ্রির সাথে প্রতিযোগিতা করে আমি পারবো না। ক্যাম্পাস ইন্টারভিউতে আমার চাকুরিটা হয়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু ফাইনালে ভালো রেজাল্ট করতে হবে। সবাই বলে তাছাড়া কলেজ শেষে রিয়া আমাকে ছেড়ে দেবে এমনিতেই। কারণ ওর ড্রইং করে দেওয়া নোট কপি করে দেওয়া জন্য নাকি ও আমার সাথে প্রেমের অভিনয়টা করে।
ভালো লাগছে না কিছু। চাকুরি পেয়েছি শুনে ছোট ভাই বলছিলো ” এবার তাহলে আমাকে আঁকার স্কুলে ভর্তি করে দিবি তুই, আমার ছবি আঁকাতে খুব ভালো লাগে…”
আমার ভাই আমার চেয়ে ভালো পড়াশোনায়। কিন্তু আমাকে পড়ানোর খরচ সামলাতে ওকে ইংলিশ মিডিয়াম ছাড়িয়ে , বাংলা মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করেছে মা বাবা। ওর আঁকার স্কুলটাও ছাড়িয়ে দিয়েছে। খুব আফসোস হচ্ছে। শহরে এসে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে, ছাত্র পড়িয়ে, সার্ভের কাজে গিয়ে, অনেক টাকাই রোজগার করছি। কিন্তু সব নষ্ট করেছি ওই রিয়া মতো একটি হৃদয়হীন মেয়েটার জন্য। আর ওর জন্য, কোন সময় , অর্থ কিছু নষ্ট করব না। আজ থেকে শুধু লড়াই করবো নিজের জন্য আর আমার পরিবারের জন্য।
তাপসের বাইকটা নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম রেপিডো খাটবো বলে। আরে শাবাশ, দুই পা এগোলেই ভাড়া। প্রিন্স আনর শাহ রোড রেলব্রিজ থেকে হাওড়া ব্রিজ।
পড়ুনঃ- ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে গল্প- জীবনসঙ্গী
ব্রিজের মাঝখানে যেতে কাউকে চোখে পড়লো। তারপর শুনলাম একজন মেয়ে ফোনে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলছে “আমি আজ ফিরবো না, তোরা আমাকে ফোন করিস না প্লিজ… আমি ফোন রাখলাম”
আমার বাইকে ওঠে পড়লেন উনি। বেশ ভালোই সাজে গুঁজে আছেন। কৌতূহল বলেই ফেললাম ” ঘুরতে যাচ্ছেন বুঝি, কিন্তু লাগেজ ব্যাগ নেননি তো “
উনি বললেন ” মরতে যাচ্ছি, লাগেজ ব্যাগ নেবো কেন?”
আমি থতোমতো খেয়ে গেলাম, ” মরতে মানে!”
উনি বললেন ” আমি মরতে চাই। মেট্রো স্টেশন গিয়ে ছিলাম কিন্তু ভাবলাম, ইলেকট্রনিক শকে আমার সুন্দর মুখটা নষ্ট হয়ে যাবে। তারপর এখানে এলাম, কিন্তু উচু থেকে পড়ে আমার হাত পা ভাইংগা যাবে, দেখতে খারাপ লাগবে তাই হাওড়া ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দেবো। জলে পড়লে তো আমার মেকআপ হয়ত নষ্ট হবে কিন্তু দেখতে তো খারাপ হবো ন।”
আমি বুঝতে পারলাম মেয়েটির মাথার স্ক্রু ঢিলা আছে। আমি তাড়াতাড়ি বললাম ” হাওড়া গিয়ে লাভ নেই। কারণ ওখানে আপনি মরতে পারবেন না। জল পুলিশ বাঁচিয়ে নেবে।”
মেয়েটা থত মত খেয়ে বললো ” প্লিজ একটা এমন জায়গায় নিয়ে চলুন, যেটা মরা জন্য নিরাপদ। আপনার যত টাকা লাগবে তত দেবো।”
হঠাৎ মুখ ফসকে বেড়িয়ে গেলো ” এক বাক্স প্যাস্টেল কালার কিনে দিলেই হবে।”
তারপর আর কি উনি আমার জীবনের গল্পটা শুনলেন। আমিও ওনার জীবনের গল্পটা শুনলাম। ওর বয়ফ্রেন্ড ফেসবুক অনেক মেয়ের সাথে প্রেম করে, সেটা জেনেই উনি আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নয়তো উনার জীবন বিন্দাস। বোধহয় মরার ইচ্ছে টা হারিয়ে গেলো আমার সাথে শহরময় ঘুরে।
পড়ুনঃ- শিক্ষণীয় গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
উনার আজ জন্মদিনও, মানে বারোটার পর আমি তাই উনাকে উপেন দার ফুচকা খাওয়াই প্রি বার্থ ডে সেলিব্রেট করলাম। বদলে অনুরোধ করছি বারোটার পর মরতে। যাতে উনার নতুন বন্ধু হিসেবে,উনাকে আমি প্রথম বার জন্মদিন উইশ করতে পারি । উনি রাজি হয়ে গেলান। আরো কিছুক্ষণ হাসাহাসি কথাবার্তা, আড্ডা হলো। বারোটা বাজতে একটা কাপ কেকের ওপর মোমবাতি জ্বালিয়ে ওনার জন্মদিন পালন করলাম আমরা।
এরপর ওনার মরার পালা। আমি মনে করে দিলাম এবার মরুন তাহলে। উনি আমাকে ঘুরিয়ে প্রশ্ন করলেন “আচ্ছা, আপনি। মরার জন্য কেন এতো দূরে আপনার নিজের পাড়ায় নিয়ে এলেন?”
আমি বললাম ” ঐ যে আগেই বললাম ,আপনি মরে পর আপনার গলার সোনার হার, আংটি খুলে নেবো, ওগুলো রিয়াকে দেবো। ও আমাকে অনেক ভালোবাসবে।”
উনি বললেন ” তাহলে আমি মরবো না “
আমি বললাম” কেন?”
উনি বললেন “রিয়াকে ছাড়া কি অন্য কাউকে আপনি ভালো বাসতে পারবেন না?”.
আমি বললাম” কাকে ভালোবাসাবো!”
উনি বললেন ” আমাকে ভালোবাসুন না, আমাকে আইফোন দিতে হবে না, কোন দামি গিফট চাইবো না, শুধু ভালো বাসলেই হবে লয়েল থাকলেই হবে।”
আমি বললাম ” কম দামি উপহার ও চাইবেন না তো”
জড়িয়ে ধরে উনি বললেন ” না”
আমি বললাম “কিন্তু আমি তো উপহার দেবোই”
বলে কপালে একটা চুমু দিলাম। আমাদের প্রেমের দৃশ্য দেখবেনা বলে চাঁদটাও মুখ লুকালো।
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
গল্পকথায়-
সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
নিচে দেওয়া wp গ্রুপ টি শুধু মাত্র অ্যাক্টিভ মেম্বারদের জন্য। যাদের মনে হবে ব্যস্ত জীবনের অল্প সময় ও এখানে ব্যয় করতে পারবেন আড্ডা আলোচনার মধ্যে তাদের জন্য।
বি.দ্র. - ইউটিউবার দাদা দিদিরা যারা কনটেন্ট খুঁজতে গ্রুপ এ আসেন তারা এখানে অহেতুক ভিড় জমিয়ে নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনবেন না।
WHATSAPP GROUP LINK- ছাড়পত্রিয়ানস (CHARPATRIANS) 👈🏻 ক্লিক করুন
পড়ুনঃ- অবহেলার কষ্টের গল্প- অজুহাতের বলি হাসির গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে-
ফেসবুক Group - গল্প Junction
ফেসবুক- ছাড়পত্র
টেলিগ্রাম- charpatraOfficial
প্রথম দেখার অনুভূতি। প্রথম দেখায় ভালো লাগার গল্প। love at first sight bengali love story.
কি কেন কীভাবের উপর গড়ে ওঠা মানুষের জিজ্ঞাসু মন সর্বদাই নতুন দিগন্তের সন্ধানে পা বাড়ায় ৷ প্রতিটি পদক্ষেপেই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আমাদের ঝুলিতে জমা হয় ৷ সেই অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে এক অফুরন্ত আনন্দ লুকিয়ে থাকে ৷ আর সেই কাজেই হাত বাড়িয়েছে ছাড়পত্রের টিম।
ধন্যবাদ।।