এই বড়দের হাসির গল্প টিতে রয়েছে ভালবাসার কেলেঙ্কারি। প্রেম না করেও যখন শুনতে হয় ‘প্রেম করিস’ তখন মেজাজ টা কি আর স্থির থাকে কন তো! এই ভালবাসার হাসির গল্প টিতে সেই ঘটনাই ঘটেছে।

ভালবাসার হাসির গল্পঃ- প্রেম কেলেঙ্কারি

এইতো দুইদিন আগের কথা, আমার বাড়িতে ঘটে গেল এক হুল স্থুল কাণ্ড। আমি ফেসবুকে একটু বেশিই একটিভ থাকি। একটু একটিভ নয় খুব বেশি একটিভ থাকি। আসলে ফেসবুকে আমার একটি স্টোরি পেজ রয়েছে। সেখানে আমি প্রতিদিন গল্প লিখি। প্রায় দুই বছর থেকে পেজটা চালিয়ে আসছি কিন্তু কোন সমস্যা হয় নি। দুইদিন আগে এই ফেসবুক পেজ কে ঘিরেই ঘটে গেছে এক অ্যাটম বোমের মত কাণ্ড।

আসলে আমি ফেসবুকে একটি লাভ স্টোরি পোস্ট করেছিলাম, সেই গল্পটিতে দেখানো হয়েছে প্রেমিকের প্রতি প্রেমিকার অফুরন্ত ভালবাসা। গল্পটি ফেসবুকে প্রকাশ করার কিছুদিন পরেই গল্পটি ভাইরাল হয়ে যায়। আমি সাধারণত আমার প্রোফাইলে আমার পেজের গল্প শেয়ার করি না, কিন্তু সেদিন খুশিতে ডগমগ হয়ে প্রোফাইলে শেয়ার করি সেই লাভ স্টোরি টি। ব্যস এখান থেকেই আসল গল্প শুরু-

আমি কলেজ থেকে বাড়ি ফিরতেই বাবা তার ফোনে একটি মেয়ের ছবি দেখিয়ে বলল- কিরে চিনতে পারছিস একে?

বড়বড়দের হাসির গল্পদের হাসির গল্প
বড়দের হাসির গল্প

ছবিটি আমার কাছে কেমন যেন চেনা চেনা মনে হচ্ছিল। আমার মুখ দিয়ে বেড়িয়েই গেল- হুম চেনা চেনা লাগছে,…

আমার কথাটা শেষই হল না, একটা হাত এসে আমার গালে সপাৎ করে ঝাড়ি মারল। সেই চরের গতিবেগ সুপার সনিক বিমানের মত ছিল, আর চরটি থেকে উদ্ভুত ব্যথা গার্ল ফ্রেন্ডের ছেড়ে চলে যাবার থেকেও বেশি ছিল। গালে হাত ঘষতে ঘষতে দেখি, পিছন থেকে দাদা আমাকে চর মেরেছে।

-চর মারলি কেন?

-বল যে মেরে ফেলিনি কেন? কলেজে যাস এইসব মেয়েগিরি করার জন্য? বাবা ওকে আজকেই বাড়ি থেকে বিদেয় কর।

যা শ্লা, আমি কি মেয়ে নাকি যে, বিদেয় করবে! দাদাগিরি শুনেছি, এ আবার মেয়েগিরি! আমি বললাম- “কিন্তু হয়েছে টা কি, বলবে তো?”

দাদা বাবার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে, মেয়েটির ছবিটি দেখিয়ে বলতে লাগল- “পাশের বাড়ির অঞ্চুর ছেলে পঞ্চু এই মেয়ের ছবিটা তোর ফেসবুক প্রোফাইলে পেয়েছে। তুই একে নিয়ে কত্ত স্বপ্ন দেখিস, সব প্রমাণ তোর ওই ফেসবুক পোস্ট। এখন বুঝলাম, এর জন্যই তুই আমাদের ফেসবুকে ব্লক করে রেখেছিস।“

এবার আমি বুঝলাম যে, ফেসবুকে আমার ভাইরাল হওয়া গল্পটিতে যে মেয়েটির ছবি ছিল সেই মেয়েটিকে দাদারা আমার গার্লফ্রেন্ড ভাবছে।

-কিন্তু আমি…

-চুপ একটাও কথা বলবি না।

-আরে শোন তো, আস…

-আরেক গালে চর খাবি এখন তুই, ছিঃ পরিবারের মান সম্মান টা কাঁদায় মিশিয়ে দিলি তুই।

যা শ্লা, লোকে বলে মান সম্মান ধুলোতে মিশে গেছে দাদা আবার কচ্ছে, কাঁদায় মিশে গেছে। আমি নিজের অজান্তেই হো হো করে হেসে উঠলাম।

-দেখেছ বাবা দেখেছ, আবার কেমন রাবণের বেটার মত হাসছে নির্লজ্জটা।

আমি- বাবা তোমাকে দাদা রাবণ বলছে, বাবা তোমার মান সম্মান দাদা ফানুসের মত আকাশে উড়িয়ে দিল।

আমার কথা শুনে দাদা বলল- দেখেছ বাবা দেখেছ, কেমন মুখ চালাচ্ছে মুক্ষু টা। একে আজকেই বাড়ি থেকে বিদেয় কর।


এই হাসির গল্প গুলি কি পড়েছেন?- 

অং- বং -চং হাসির গল্প 

২০৮৭ সালের কথা! 

মজার হাসির গল্প 

মা এতক্ষণ চুপচাপ সবকিছু শুনছিল। এবার মা বলল- সত্যি করে বল বাবা, মেয়েটা কে? কোথায় থাকে, কিই বা তার পরিচয়!

বাবা চেঁচিয়ে বলল- খামোশ! সেই সব জেনে লাভ নেই, এই ছেলেকে তো আমি… বলেই জুতো খুলে মারলেন আমার দিকে এক ঢিল।

আমি- আরে আমার কথা তো শোনো। আমি ফেসবু…

দাদা- চুপ, বেয়াদব কোথাকার। দাদা আমার দিকে আবার তেড়ে এল।

আমাদের চিৎকার শুনে রাস্তার লোকজন জড় হওয়া শুরু হয়ে গেছে। কি হচ্ছে, সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। সবার চোখে আমি অপরাধী। কারন আমি নাকি প্রেম করি, আর এতে পরিবারের নাক কাটা গেছে। আচ্ছা প্রেম করাটা কি, পাপ!

কিন্তু যেখানে আমার এই বাঁদর মুখো থোবড়া দেখে, কোন মেয়ে ক্রাশ তো দুরের কথা, একবার ফিরেও তাকায় না, সেখানে আমাকে মিছেমিছি অপমানিত হতে হচ্ছে। যে ভাবেই হোক, সত্য কথা সবার সামনে তুলে ধরতেই হবে।

আমি বললাম- দেখো তোমরা আমাকে ভু…

দাদা- কি আর দেখব, সব কিছুই তো দেখাচ্ছিস হারামজাদা। প্যান্টের চেইন পর্যন্ত বন্ধ করেনি, নির্লজ্জ কোথাকার।

কমেডি গল্প
কমেডি গল্প

ইসস রে, বাড়ি ফেরার সময় টয়লেট সেরে এসেছি, তখনই একটা ফোন এসেছিল, আর কথা বলতে বলতে বাড়ি ফিরে এসেছি, আর প্যান্টের চেইন বন্ধ করার কোন খেয়ালই ছিল না। গোটা রাস্তা এভাবে এসেছি, পাড়ার এতগুলো লোক দেখছে, ছে ছে আমার নাকটা কাটা গেল রে…!

-তুই আগে বলবি তো, আমার চেইন খোলা আছে! হে ভগবান, এবার লোকে ভুলভাল না ভেবে বসে!

দাদা- বাবা দাড়িয়ে দাড়িয়ে কি দেখছ, বের করে দাও ওকে বাড়ি থেকে।

এতক্ষণ পর আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে, জলোচ্ছ্বাস দেখা দিল। আমি চেঁচিয়ে বললাম- চোপ সবাই, আমার কথা তো কেউই শুনছে না, কিসের প্রেম, কে ওই মেয়েটা সেটা আমি নিজেও জানি না।

আমার এরকম চেঁচানি শুনে, বাবা-দাদা চুপচাপ, আর উৎসুক জনতা অ্যাকশন এর অপেক্ষায়। আমি বলতে শুরু করলাম- ফেসবুকে আমি গল্প লিখি, আর গল্পের সাথে থাকা মেয়েটির ছবিটি আমি গুগল থেকে ডাউনলোড করেছি। বিশ্বাস না হলে চেক করে দেখো।

আমার এরকম চেঁচামেচিতে দাদার টনক নড়ল। সে আমার মোবাইলে সব কিছু চেক করতে লাগল। উৎসুক জনতা আগ্রহ ভরে আমাদের রঙ্গতামাশা উপভোগ করছে। কিছুক্ষণ পর দাদা নিচু স্বরে বলল- “হ্যাঁ বাবা, ভাই ঠিকই বলেছে। এটা একটা গল্প, যেটা ভাইরাল হয়ে গেছে, আর ওর প্রোফাইলে ও শেয়ার করেছে। অঞ্চুর ছেলে পঞ্চু কোন কিছু বিচার বিবেচনা না করেই আমাদের ভুল তথ্য দিয়েছে। পোস্টের নিচের কমেন্ট গুলিই প্রমাণ করছে যে, ভাই ফেসবুকে গল্প লেখে।“

ভালবাসার হাসির গল্প
ভালবাসার হাসির গল্প
<

এরপর সবাই শান্ত হয়ে গেল। উৎসুক জনতার চোখে মুখে, নিরাশার ছাপ। আর এই নিরাশার ছাপকে আরও বাড়িয়ে তুলতে আমি তাদের উদ্দেশ্যে চেঁচিয়ে বললাম- “চোখের মাথা খেয়েছিস মিন্সেরা! দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভ্যাবলা কান্তের মত কি দেখছিস তোরা। পালা এখান থেকে নয়তো সব কটার নামে হ্যারাশমেন্টের কেশ দিয়ে দিব।“

আমার এই কথাটি যেন অণুঘটকের মত কাজ করল। আর বিক্রিয়া অতি দ্রুত শুরু হয়ে গেল। পড়িমরি করে সব কটা দর্শক পালাতে লাগল। সেই যাই হোক, দাদার চরটা কিন্তু হেব্বি লেগেছিল। আমিও সুযোগের অপেক্ষায় আছি ওকেও আমি সহজে ছাড়ছি না। আর অঞ্চুর ব্যাটা পঞ্চুকে তো আমি পঞ্চ ভূতে বিলীন করেই ছাড়ব।

©সমস্ত কপিরাইট ছাড়পত্র দ্বারা সংরক্ষিত। গল্পটির ভিডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে অন্যত্র প্রকাশ আইন বিরুদ্ধ। ছাড়পত্র এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবে।
গল্প পাঠাতে পারেন- charpatrablog@gmmail.com -এ অথবা সরাসরি WhatsApp -এর মাধ্যমে এখানে ক্লিক করে।
আরও মজার মজার হাসির গল্পের লিংক এখানে- 

ছোট ছোট মজার মজার হাসির গল্প 

রোগা মানুষের দুক্কু

সেরা মজার গপ্পো  
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- 

ফেসবুক Group - গল্প Junction 

ফেসবুক- ছাড়পত্র

টেলিগ্রাম- charpatraOfficial

WhatsApp Group- ছাড়পত্র (২)

ভালবাসার হাসির গল্প। কমেডি গল্প। বড়দের হাসির গল্প।

Spread the love

Leave a Reply