আজ আমরা বিভিন্ন গাছের তথা বিভিন্ন গাছের উপকারিতা তথা গুনাগুন জানব। আমাদের চারপাশেই রয়েছে অনেক ঔষধি গাছ। নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে, এই গাছগাছড়ার গুনাগুন গুলি আপনাকে জানতে হবে।।

বিভিন্ন গাছের উপকারিতাঃ-

গাজরের উপকারিতা। গাজর খাওয়ার উপকারিতাঃ-

গাজর খাওয়ার উপকারিতাঃ– গাজর খেতে যেমন অসাধারণ, তেমনি এর গুনাগুণও অসাধারণ। গাজর খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। গাজরে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন, ফ্যাট, সরকরাম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন-B ভিটামিন-C ইত্যাদি।

চোখের জন্য গাজরঃ-

গাজরের মধ্যে পাওয়া যায় এক বিশেষ ধরণের ক্যারোটিন যা আমাদের চোখের জন্য খুবই দরকারি। এতে চোখ সুস্থ থাকে। এর মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি ঠিক থাকে

ক্যান্সাররের জন্য গাজরঃ-

বর্তমানে এক মারণ অসুখ হল ক্যানসার। কিন্তু আপনি জানেন কি, নিয়মিত গাজর খেলে আপনার ক্যানসারের ঝুঁকি কমতে পাড়ে! গাজরের রসে পাওয়া যায় ফ্যালক্যারিনল নামে এক বিশেষ উপাদান, যা ক্যানসার হওয়ার প্রবণতাকে অনেকটাই ধ্বংস করে।

লিভারের রোগে গাজরঃ-

লিভারের রোগ আমাদের অনেকেরই সমস্যা। আগেই বলেছি, গাজরে রয়েছে ফাইবার আর এই ফাইবার লিভার পরিস্কার করতে সাহায্য করে। এমনকি গাজর খেলে লিভারের বিভিন্ন সংক্রমণও অনেকটাই লাঘব হয়।

বিভিন্ন গাছের উপকারিতা গাজরের উপকারিতা
বিভিন্ন গাছের উপকারিতা গাজরের উপকারিতা

শরীরের চামড়া ঠিক রাখতে গাজরঃ-

অল্প বয়সে শরীরের চামড়া ঢিলে হয়ে যাওয়া বর্তমান দিনে একটি বিশেষ সমস্যা। অনেকেই এরজন্য বিভিন্ন স্কিন থেরাপির সাহায্য নিয়ে থাকেন। কিন্তু প্রতিদিন গাজর খেলে, তার কোনো দরকার পড়ে না। কারণ গাজরে রয়েছে, এক বিশেষ ক্যারোটিন, এই ক্যারোটিন আপনার শরীরের কোষ গুলিকে সর্বদা সতেজ রাখতে সাহায্য করে। ফলে আপনার শরীরে অকাল বার্ধক্যের ছাপ দেখা যায় না। এছাড়াও ত্বককে সুস্থ রাখতেও এটি সাহায্য করে, ফলে অকালে চামড়ায় বা কপালে ভাজ পড়ে না।

ব্রণের দাগ দূর করতে গাজরঃ-

গালে রয়েছে গুটি গুটি কালো ব্রণের দাগ। দেখতেই কেমন যেন একটা লাগে! সুন্দর মিষ্টি মুখটাকেও বানিয়ে দেয় বিশ্রী। কিন্তু জানেন কি, গাজর খেলে আপনার মুখে ব্রণের ফলে সৃষ্ট হওয়া কালো দাগ সেরে যেতে পাড়ে! কিন্তু আমরা এই গাজর না খেয়ে অনেক ওষুধ খেয়ে অযথা সময়ের সাথে সাথে টাকা এবং শরীরের ক্ষতি করি। অথচ আমাদের হাতের কাছেই যে রয়েছে এর নিরাময়ের ওষুধ তা আমরা পরোয়াও করি না।

দাঁতের জন্য গাজরঃ-

গাজরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আর এই ক্যালসিয়াম দাঁতের পক্ষে খুবই দরকারি। গাজর চিবিয়ে চিবিয়ে খেলে দাঁত পরিস্কার হয় এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। দাঁতের গোঁড়া মজবুত হয়, ফলে অকালে দাঁতের পড়ে যাওয়া ঠেকানো যেতে পাড়ে। এছাড়াও দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, মাড়ি ফুলে উঠা, ইত্যাদিতেও গাজর খুব উপকারী।

গাজরে প্রাপ্ত ভিটামিন- C শরীরের বিভিন্ন কোষ গঠনে সাহায্য করে।

স্ট্রোকের হাত থেকে বাঁচার জন্য গাজরঃ-

প্রতিবছর প্রায় ১৫ মিলিয়ন মানুষ স্ট্রোকের শিকার হন, আর এদের মধ্যে প্রায় ৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যান, এবং ৫ মিলিয়ন মানুষ তাদের কর্মক্ষমতা হারান। স্ট্রোক হল, মানুষের মৃত্যুর পঞ্চম বৃহত্তম কারণ। স্বভাবতই বুঝতেই পাড়ছেন যে, স্ট্রোককে অবহেলা নয়। আর এই স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে সাহায্য করে গাজর। তবে একটি বা দুটি নয় আপনাকে প্রতিদিন ৬-৭ টি গাজর খেতে হবে।

গাজর রান্না করে খাওয়ার চেয়ে চিবিয়ে খাওয়া অনেক লাভজনক। তাই ভালো ফলাফলের জন্য গাজর চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।

পড়ুনঃ- যে হেলথ টিপস গুলি আপনার জানা উচিত

কিভাবে গাজর চাষ করতে হয়?

বাজারে প্রাপ্ত গাজর গুলি বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করা হয়, তাই সেগুলিতে রাসায়নিকের ব্যবহারটাও অনেক বেশি হয়। তাই pure গাজর পেতে হলে আপনাকে বাড়িতেই গাজর চাষ করতে হবে। বাড়িতে গাজর চাষ করাটা খুবই সহজ-

কিছুটা ঠাণ্ডা আবহাওয়া গাজরের ফলন বৃদ্ধি করে। মোটামুটি ভাবে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস হল গাজ চাষের উপযুক্ত সময়।

প্রথমেই আপনি আপনার বাড়ির বাগানের এমন একটা জায়গা বেঁছে নিন, যেখানে সূর্যের আলো ভালোমত পৌছায়। এরপর মাটিকে ভালোমত নরম করে সমান করুন। বাজার থেকে সার্টিফাইড গাজরের বীজ কিনে নিয়ে আসুন, তার সাথে নিয়ে আসুন কিছু জৈব সাঁর। তবে গাজরে গোবর বা ছাইও দেওয়া যেতে পাড়ে। মাটির সঙ্গে সাঁর ভালভাবে মিশিয়ে নিন, এবার বীজ বোনার পালা, আপনি ছিটিয়ে বীজ ফেলতে পাড়েন অথবা একটি একটি করে সাড়ি সাড়ি বীজ বুনতে পাড়েন।

যদি সময় থাকে তাহলে সাড়ি সাড়ি একটি একটি করে বীজ বোনাটাই ভালো হবে। কারণ ছড়িয়ে বীজ ফেললে অনেক সময় কয়েকটি বীজ একসাথে পড়ে যায়, ফলে একসাথেই কয়েকটি গাজ গজিয়ে উঠে এবং ফল ভালো হয় না।

কিভাবে গাজর চাষ করতে হয় গাজরের উপকারিতা
কিভাবে গাজর চাষ করতে হয় গাজরের উপকারিতা

বীজ বোনা হয়ে গেলে কিছুদিন ওইভাবেই ফেলে রাখুন। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই অনেকটা ধনে পাতার মত গাছ দেখা দিয়েছে। এটিই গাজরের গাছ। প্রয়োজন হলে জল দিন। তবে বিকেলের পড় বা সকালে জল দেওয়াটাই ভাল হবে।

কয়েক মাসের মধ্যেই আপনার গাজর রেডি হয়ে যাবে, আপনার সেবায়।  

পড়ুনঃ- ডেইলি লাইফ হ্যাঁকস

মেথির উপকারিতাঃ-

মেথিতে রয়েছে ভিটামিন-A, B12 এবং ভিটামিন-C। এছাড়াও রয়েছে নিকোটিনিক অ্যাসিড। মেথির অঙ্কুরিত বীজে থাকে বায়োটিন ক্যালসিয়াম প্যানটোথেনেট, পাইরিডক্সিন, এবং সায়ানোকোবালামাইন।

সুগারের সমস্যায় মেথিঃ-

সুগারের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে মেথি খুবই কার্যকরী। মেথি শরীরের কোলেস্টেরল শরীর থেকে বেড় করতে সাহায্য করে।

ব্রণের কালো দাগ দূর করতে মেথির ব্যবহারঃ-

মেথির সাহায্যে সহজেই ব্রণের কালো দাগ দূর করা যায়। এর জন্য আপনাকে প্রথমে কিছুটা গরম জলে নিয়ে তাতে মেথি ফেলে দিন। ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, জল থেকে বীজ গুলি আলাদা করুন। মেথির জলটি তুলো বা নরম ও পরিস্কার কাপড়ের সাহায্যে ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে দিন। প্রতিনিয়ত এভাবে মেথির জল ব্রণের জায়গায় লাগালে, কিছুদিন পরই ব্রণের কালো দাগ গায়েব হয়ে যাবে।

লিভারের সমস্যা দূর করে মেথিঃ-

মেথি খেলে লিভারের সমস্যা অনেকটাই কম হয়। বিশেষত যে সমস্ত ব্যক্তি অ্যালকোহল আসক্ত, তাদের পক্ষে মেথি খুবই উপকারী।

মাথার চুল পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে মেথিঃ-

মেথির সাহায্যে অকালে মাথার চুল উঠে যাওয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এর জন্য আপনাকে প্রথমে কিছুটা পেঁয়াজের রস নিয়ে নিতে হবে। এরপর মেথির পাউডার সেই পেঁয়াজের রসে পরিমান মত দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করতে হবে। ধীরে ধীরে সেই পেস্টটিকে চুলের গোঁড়ায় লাগালে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার চুল পড়া অনেকটাই কমে যাবে।

পেস্ট দেওয়ার পর ৩০ মিনিটের মত চুল শুঁকিয়ে নিন, এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিস্কার করে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য মেথি আর পেঁয়াজের রস সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করা যেতে পাড়ে। তবে প্রতিদিন ব্যবহার করার ভুল করবেন না যেন!

মেথির উপকারিতা
মেথির উপকারিতা
<

ওজন কমাতে মেথির ব্যবহারঃ-

জানেন কি, মেথি ওজন কমাতে সাহায্য করে! মেথির বীজে থাকা ফাইবার সহজে শরীরের সাথে মিশে যায় এবং শরীরের মেটাবলিসম কে বৃদ্ধি করে, যার ফলে অতিরিক্ত ওজন কমে যায়।

মাসিকের যন্ত্রণা দূর করতে মেথিঃ-

মেয়েদের মাসিকের যন্ত্রণায় মেথি খুবই কার্যকরী উপদান। এরজন্য আপনাকে মেথি দিয়ে চা তৈরি করতে হবে। এই চা গরম গরম পান করলে দেখবেন পিরিয়ড পেইন গায়েব।

কোমরের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে মেথিঃ-

আজকাল অনেকেই কোমরের ব্যাথায় ভুগে থাকেন। মেথির বীজের গুঁড়ো বা ফেনুব্রিক পাউডার দুধের সঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন, এরপর কোমরের ব্যাথার জায়গায় এই পেস্ট লাগালে অনেকটাই উপকার পাবেন।

এছাড়াও, মেথি ক্যান্সার, রক্তচাপ, হজম শক্তি, কিডনি সুস্থ রাখতে শরীরের ব্যাথায় বিশেষ উপকারী।

পড়ুনঃ- রিলেশনশিপ টিপস 

চোখ ভালো রাখার উপায় 
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবেঃ- 

ফেসবুক- ছাড়পত্র 

টেলিগ্রাম- CharpatraOFFICIAL 

WhatsApp-ছাড়পত্র 

“বিভিন্ন গাছের উপকারিতা। গাজরের উপকারিতা। মেথির উপকারিতা।”

Spread the love

Leave a Reply